শাশুড়ির অত্যাচার ও স্বামীর ওপর অভিমানে গৃহবধুর আত্মহত্যা
- প্রকাশিত সময় ০৩:৪৫:২৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২১ ফেব্রুয়ারী ২০২০
- / 135
নাটোর প্রতিনিধিঃ নাটোরের লালপুর উপজেলার কেশবপুর গ্রামে গলায় ফাঁস দিয়ে ফাতেমা খাতুন (২০) নামের এক গৃহবধুর আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। ফাতেমা উপজেলার কেশবপুর গ্রামের জাহিদুল ইসলাম রতন এর স্ত্রী ও বড়াইগ্রাম উপজেলার বলিদাঘাটি গ্রামের আব্দুল মান্নানের মেয়ে।
এলাকাবাসী জানান, বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারী) দুপুরে ফাতেমা ও তার স্বামী এক সাথে খাওয়া দাওয়া করে স্বামী জাহিদুল গোপালপুর বাজারে নিজ কর্মস্থলে যায় এবং ফাতেমার শাশুড়ি ছাগল নিয়ে মাঠে চলে যায়। বিকেলে তার শাশুড়ি বাড়ি ফিরে দেখে ফাতেমার নিজ কক্ষের দরজা ভিতর থেকে আটকানো। অনেক ডাকাডাকি করেও কোন সাড়া না পেয়ে জানালায় গিয়ে ডাকাডাকি করতে থাকে। এ সময় জানালার ফাঁক দিয়ে ফাতেমাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পেয়ে চিৎকার করে উঠলে আশেপাশের লোকজন জড়ো হয় এবং জানালা ভেঙ্গে ভিতরে গিয়ে ফাতেমাকে উদ্ধার করে স্থানীয় ক্লিনিকে নিয়ে গেলে ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষনা করে।
জনৈক ব্যক্তির মুঠোফোন থেকে খবর পেয়ে মৃতের ভাইসহ আত্মীয়-স্বজন ফাতেমার স্বামীর বাড়িতে আসলে বেরিয়ে আসে কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য। ফাতেমার ভাই কাজল কান্না জড়িত কন্ঠে সাংবাদিকদের জানান- প্রায় আড়াই বছর আগে বিনা যৌতুকে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় ফাতেমার। বোনের সুখের জন্য নগদ অর্থসহ সাধ্যমত দেবার চেষ্ঠা করেছে তারা। কিন্তু থেমে থাকেনি অর্থলোভী শাশুড়ির অত্যাচার। স্বামীর সংসার করার লক্ষ্যে শত অত্যাচার মুখবুজে সহ্য করেছে ফাতেমা।
মৃতের বড়ভাই হারেজ আলী জানান- গত ৫ মাস আগে ফাতেমার গর্ভে থাকা সন্তানকে সু-পরিকল্পিতভাবে নষ্ট করে অত্যাচারী শাশুড়ি এবং মায়ের সকল অত্যাচার সমর্থনকারী ফাতেমার স্বামী রতন। এই ঘটনাকে পরিকল্পিত হত্যা বলেও দাবি করেন মৃত ফাতেমার পরিবার।
পরে সাংবাদিকদের মাধ্যমে খবর পেয়ে লালপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। এ বিষয়ে ফাতেমার ভাই কাজল বাদী হয়ে অত্যাচারী শাশুড়ি ও অত্যাচার সমর্থনকারী স্বামী রতনের বিরুদ্ধে মামলা করতে গেলে লালপুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেলিম রেজা ঘটনাটির গুরুত্ব না দিয়ে কোনো অভিযোগ নেই মর্মে একটি অপমৃত্যু মামলা ডায়েরীভুক্ত করে লাশ ময়না তদন্তের জন্য নাটোর সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেন।