ঢাকা ১০:৫৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞপ্তি :
সারাদেশের জেলা উপোজেলা পর্যায়ে দৈনিক স্বতঃকণ্ঠে সংবাদকর্মী নিয়োগ চলছে । আগ্রহী প্রার্থীগন জীবন বৃত্তান্ত ইমেইল করুন shatakantha.info@gmail.com // দৈনিক স্বতঃকণ্ঠ অনলাইন ও প্রিন্ট পত্রিকায় বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন ০১৭১১-৩৩৩৮১১, ০১৭৪৪-১২৪৮১৪

মুসলিমরা হামলার মূল লক্ষ্য দিল্লির সহিংসতায় বেড়েছে নিহতের সংখ্যা

বার্তাকক্ষ
  • প্রকাশিত সময় ০৮:৪৯:০২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২০
  • / 123

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ দিল্লির সহিংসতার তৃতীয় রাতেও বেশীরভাগ ঘটনায় মুসলিমদের বাড়িঘর ও দোকানপাটে হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে।

রোববার রাত থেকে শুরু হওয়া সংঘর্ষে এ পর্যন্ত কমপক্ষে ২১ জন নিহত হয়েছে বলে নিশ্চিত করা হয়েছে। গত কয়েক দশকের মধ্যে চলমান ঘটনাবলীকে ভারতের সবচেয়ে ভয়াবহ সহিংসতা বলে উল্লেখ করা হচ্ছে।

গত রবিবার দেশটির বিতর্কিত নাগরিকত্ব আইনের পক্ষ ও বিপক্ষ গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষের সূচনা হয়েছিল, যা পরে সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় রূপ নেয় বলে সংবাদদাতারা জানাচ্ছেন।

সোশ্যাল মিডিয়ায় এই সহিংসতার ছবি ও ভিডিও অনায়াসলব্ধ হয়ে গেছে । এসব ছবিতে দেখা গেছে যে, সংঘর্ষকারীরা অগ্নিসংযোগ ছাড়াও লাঠি-রড নিয়ে মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছে।

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, নিহতদের মধ্যে মুসলমান ও হিন্দু – এই দুই ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মানুষই আছেন।

এছাড়া আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও অন্তত ২০০ জন। সংবাদদাতারা বলছেন, আহতদের মধ্যে গুলিবিদ্ধসহ সব ধরণের হামলার শিকার ব্যক্তিরাই রয়েছেন।

তবে মঙ্গলবার রাতে পুলিশ জাফরাবাদ মেট্রো স্টেশন ও মৌজপুর চক থেকে বিক্ষোভকারীদের জোরপূর্বক সরিয়ে দিয়েছে। নাগরিকত্ব আইনের পক্ষ-বিপক্ষের মানুষেরা এখানে পরস্পরের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলো। বুধবার সকাল নাগাদ পুরো এলাকায় পুলিশ ও প্যারামিলিটারি সদস্যরা অবস্থান নিয়েছে।

ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল সহিংসতা হয়েছে এমন কিছু এলাকা ঘুরে দেখেছেন এবং শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলেছেন। তিনি সিলমপুর, জাফরাবাদ, মৌজপুর এবং গোকুলপুরি চক এলাকা পরিদর্শন করেন।

দিল্লিতে ব্যাপক সহিংসতার প্রেক্ষিতে আলোচনার জন্য আজ বৈঠকে বসতে যাচ্ছে নিরাপত্তা বিষয়ক কেবিনেট কমিটি। দোভাল এই কমিটির সামনে পরিস্থিতির বিস্তারিত তুলে ধরবেন।

জানা যায়, স্কুল বন্ধ আছে এবং বোর্ডের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে।

ওদিকে জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় এবং জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়ার শিক্ষার্থীরা মঙ্গলবার রাতে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের বাড়ির সামনে গিয়ে বিক্ষোভ করেছে। পুলিশ জলকামান দিয়ে রাত সাড়ে তিনটা নাগাদ তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

আবার রাতেই এক নজিরবিহীন আদেশে তিনদিন ধরে চলা সহিংসতায় আহতদের হাসপাতালে নেয়া ও জরুরি চিকিৎসা প্রদানেরর জন্য প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
বিচারপতি এস মুরলীধরের বাসায় দুজন বিচারপতির বেঞ্চে বিভিন্ন হাসপাতালের ডাক্তারদের পিটিশনের শুনানি হয়েছে রাতেই।

সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ পুলিশ ও অন্যান্য উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক করেছেন। বৈঠকে মঙ্গলবার স্পেশাল পুলিশ কমিশনার হিসেবে নিয়োগ পাওয়া এসএন শ্রীবাস্তবও তার পদে যোগ দিয়েছেন।

তবে সহিংসতার ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে এখন তীব্র সমালোচনাও হচ্ছে। প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে সংবাদদাতারা বলছেন যে, সংঘর্ষকারীদের কারও কারও হাতে অস্ত্র দেখা গেছে।

মূলত উত্তর-পূর্ব দিল্লিতে মুসলিম অধ্যুষিত এলাকাগুলোতেই সহিংসতা হয়েছে বলে জানা যায়। এসব এলাকার সড়কগুলো অনেকটা ধ্বংসস্তূপে রূপ নিয়েছে, রাস্তায় পুড়ছে যানবাহ।

সংবাদদাতারা আরও জানান, একটি মসজিদের আংশিক পুড়ে যাওয়া কথা, যেখানে মেঝেতে কুরআনের পাতা ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকতে দেখা যায়। আরেকটি মসজিদেও হামলা হয়েছে মঙ্গলবার বিকেলে। ব্যাপক প্রচার হওয়া একটি ভিডিওতে দেখা গেছে একদল লোক মসজিদের মিনারে উঠছেন। সংঘর্ষ হওয়া এলাকাগুলো দিল্লি-উত্তর প্রদেশ সীমান্তের কাছে। এখানে সীমান্ত বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

সাংবাদিকসহ অনেকেই টুইট করে বলেছেন যে হামলাকারীরা তাদের ধর্মীয় পরিচয় সম্পর্কে জানতে চেয়েছে। একজন ফটো সাংবাদিক বলেছেন, তাকে তার প্যান্ট খুলে ধর্মীয় পরিচয় নিশ্চিত করতে বলা হয়েছিল।

তবে দিল্লি পুলিশের মুখপাত্র এমএস রাধোয়া মঙ্গলবারই বলেছেন যে পরিস্থিতি এখন তাদের নিয়ন্ত্রণে। তিনি জানান, পর্যাপ্ত পুলিশ ও প্যারামিলিটারি সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।

সূত্রঃ বিবিস।

মুসলিমরা হামলার মূল লক্ষ্য দিল্লির সহিংসতায় বেড়েছে নিহতের সংখ্যা

প্রকাশিত সময় ০৮:৪৯:০২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২০

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ দিল্লির সহিংসতার তৃতীয় রাতেও বেশীরভাগ ঘটনায় মুসলিমদের বাড়িঘর ও দোকানপাটে হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে।

রোববার রাত থেকে শুরু হওয়া সংঘর্ষে এ পর্যন্ত কমপক্ষে ২১ জন নিহত হয়েছে বলে নিশ্চিত করা হয়েছে। গত কয়েক দশকের মধ্যে চলমান ঘটনাবলীকে ভারতের সবচেয়ে ভয়াবহ সহিংসতা বলে উল্লেখ করা হচ্ছে।

গত রবিবার দেশটির বিতর্কিত নাগরিকত্ব আইনের পক্ষ ও বিপক্ষ গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষের সূচনা হয়েছিল, যা পরে সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় রূপ নেয় বলে সংবাদদাতারা জানাচ্ছেন।

সোশ্যাল মিডিয়ায় এই সহিংসতার ছবি ও ভিডিও অনায়াসলব্ধ হয়ে গেছে । এসব ছবিতে দেখা গেছে যে, সংঘর্ষকারীরা অগ্নিসংযোগ ছাড়াও লাঠি-রড নিয়ে মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছে।

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, নিহতদের মধ্যে মুসলমান ও হিন্দু – এই দুই ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মানুষই আছেন।

এছাড়া আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও অন্তত ২০০ জন। সংবাদদাতারা বলছেন, আহতদের মধ্যে গুলিবিদ্ধসহ সব ধরণের হামলার শিকার ব্যক্তিরাই রয়েছেন।

তবে মঙ্গলবার রাতে পুলিশ জাফরাবাদ মেট্রো স্টেশন ও মৌজপুর চক থেকে বিক্ষোভকারীদের জোরপূর্বক সরিয়ে দিয়েছে। নাগরিকত্ব আইনের পক্ষ-বিপক্ষের মানুষেরা এখানে পরস্পরের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলো। বুধবার সকাল নাগাদ পুরো এলাকায় পুলিশ ও প্যারামিলিটারি সদস্যরা অবস্থান নিয়েছে।

ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল সহিংসতা হয়েছে এমন কিছু এলাকা ঘুরে দেখেছেন এবং শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলেছেন। তিনি সিলমপুর, জাফরাবাদ, মৌজপুর এবং গোকুলপুরি চক এলাকা পরিদর্শন করেন।

দিল্লিতে ব্যাপক সহিংসতার প্রেক্ষিতে আলোচনার জন্য আজ বৈঠকে বসতে যাচ্ছে নিরাপত্তা বিষয়ক কেবিনেট কমিটি। দোভাল এই কমিটির সামনে পরিস্থিতির বিস্তারিত তুলে ধরবেন।

জানা যায়, স্কুল বন্ধ আছে এবং বোর্ডের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে।

ওদিকে জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় এবং জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়ার শিক্ষার্থীরা মঙ্গলবার রাতে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের বাড়ির সামনে গিয়ে বিক্ষোভ করেছে। পুলিশ জলকামান দিয়ে রাত সাড়ে তিনটা নাগাদ তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

আবার রাতেই এক নজিরবিহীন আদেশে তিনদিন ধরে চলা সহিংসতায় আহতদের হাসপাতালে নেয়া ও জরুরি চিকিৎসা প্রদানেরর জন্য প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
বিচারপতি এস মুরলীধরের বাসায় দুজন বিচারপতির বেঞ্চে বিভিন্ন হাসপাতালের ডাক্তারদের পিটিশনের শুনানি হয়েছে রাতেই।

সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ পুলিশ ও অন্যান্য উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক করেছেন। বৈঠকে মঙ্গলবার স্পেশাল পুলিশ কমিশনার হিসেবে নিয়োগ পাওয়া এসএন শ্রীবাস্তবও তার পদে যোগ দিয়েছেন।

তবে সহিংসতার ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে এখন তীব্র সমালোচনাও হচ্ছে। প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে সংবাদদাতারা বলছেন যে, সংঘর্ষকারীদের কারও কারও হাতে অস্ত্র দেখা গেছে।

মূলত উত্তর-পূর্ব দিল্লিতে মুসলিম অধ্যুষিত এলাকাগুলোতেই সহিংসতা হয়েছে বলে জানা যায়। এসব এলাকার সড়কগুলো অনেকটা ধ্বংসস্তূপে রূপ নিয়েছে, রাস্তায় পুড়ছে যানবাহ।

সংবাদদাতারা আরও জানান, একটি মসজিদের আংশিক পুড়ে যাওয়া কথা, যেখানে মেঝেতে কুরআনের পাতা ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকতে দেখা যায়। আরেকটি মসজিদেও হামলা হয়েছে মঙ্গলবার বিকেলে। ব্যাপক প্রচার হওয়া একটি ভিডিওতে দেখা গেছে একদল লোক মসজিদের মিনারে উঠছেন। সংঘর্ষ হওয়া এলাকাগুলো দিল্লি-উত্তর প্রদেশ সীমান্তের কাছে। এখানে সীমান্ত বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

সাংবাদিকসহ অনেকেই টুইট করে বলেছেন যে হামলাকারীরা তাদের ধর্মীয় পরিচয় সম্পর্কে জানতে চেয়েছে। একজন ফটো সাংবাদিক বলেছেন, তাকে তার প্যান্ট খুলে ধর্মীয় পরিচয় নিশ্চিত করতে বলা হয়েছিল।

তবে দিল্লি পুলিশের মুখপাত্র এমএস রাধোয়া মঙ্গলবারই বলেছেন যে পরিস্থিতি এখন তাদের নিয়ন্ত্রণে। তিনি জানান, পর্যাপ্ত পুলিশ ও প্যারামিলিটারি সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।

সূত্রঃ বিবিস।