ঢাকা ০৪:১৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞপ্তি :
সারাদেশের জেলা উপোজেলা পর্যায়ে দৈনিক স্বতঃকণ্ঠে সংবাদকর্মী নিয়োগ চলছে । আগ্রহী প্রার্থীগন জীবন বৃত্তান্ত ইমেইল করুন shatakantha.info@gmail.com // দৈনিক স্বতঃকণ্ঠ অনলাইন ও প্রিন্ট পত্রিকায় বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন ০১৭১১-৩৩৩৮১১, ০১৭৪৪-১২৪৮১৪

এনায়েতপুরে মাদ্রাসার হুজুরের থাপ্পরে কান ফাঁটলো শিশুর

বার্তাকক্ষ
  • প্রকাশিত সময় ০৯:১৮:৩৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ৪ মার্চ ২০২০
  • / 122

আমিনুল ইসলাম, সিরাজগঞ্জঃ সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুরের গোপালপুর গ্রামের বন্ধন তালিমুল কোরআন নুরানিয়া ও হাফিজিয়া মাদ্রাসা এখন শিক্ষার্থীদের জন্য আতংক।

মাদ্রাসার মুহতামিম সহ শিক্ষকদের হাতে মাঝে মধ্যেই ঘটছে শিশু নির্যাতনের ঘটনা। গত দুদিন আগেও মাদ্রাসার মুহতামিম মাওঃ আমিরুল ইসলাম ১ম শ্রেনীর ছাত্র রিফাত হোসেনকে (৬) থাপ্পর দিয়ে কানের পর্দা ফাটিয়ে ফেলছেন। তাকে চিকিৎসার পর বাড়িতে আনা হলেও ঐ কান দিয়ে কিছু শুনতে পারছেনা বলে তার বাবা বুলবুল ইসলাম অভিযোগ করেছেন। মাদ্রাসায় অহরহ নির্যাতনের ঘটনায় রুপনাই সহ আশপাশের এলাকার আহত অন্তত ১৫/২০ জন শিশু ছাত্র-ছাত্রী মাদ্রাসা থেকে ভয়ে বের হয়ে এসেছে। অন্যদেরও মাঝে বিরাজ করছে আতংক। তবে কর্তৃপক্ষ যথাযথ ব্যবস্থা না নেয়ায় এই ধরনের ঘটনা চলছেই মাদ্রাসাটিতে।

জানা যায়, গত ১৩ বছর আগে গোপালপুরে বন্ধন তালিমুল কোরআন নুরানিয়া ও হাফিজিয়া মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার পর থেকেই এখানে শিশু শিক্ষার্থীদের নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে। বছর খানেক আগেও এলাকার এক শিশুকে মারধরের কারনে মাদ্রাসার এক শিক্ষককে বরখাস্ত করেছে পরিচালনা পরিষদ। তবে তার পরও এখানে শিশুদের নির্যাতন থেমে নেই।

গত ২ মার্চ মাদ্রাসায় লেখা-পড়া অবস্থায় মুহতামিম ইসলামী ঝালসার আলোচক মাওঃ আমিরুল ইসলাম রুপনাই পুর্ব পাড়া গ্রামের শিশু রিফাত (৬) কে কানে থাপ্পর দেয়। তখন যন্ত্রনায় চিৎিকার শুরু করে সে বাড়ি চলে আসে। এরপর রাতে অসুস্থ্য হলে কান দিয়ে রক্ত ঝড়তে থাকে। পরে সিরাজগঞ্জে একটি ক্লিনিকে ডাঃ শফিউল ইসলামের কাছে নেয়া হলে তিনি ঘটনা শুনে বিষ্মিত হন। বুধবার সকালে চিকিৎসা শেষে বাড়িতে আনা হয়।

ঘটনা জেনে স্থানীয় সংবাদ কর্মীরা ঐ বাড়িতে গেলে তার বাবা বুলবুল ইসলাম ঘটনার বর্ণনা দিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেন। এসময় তিনি অভিযোগ করে জানান, আমার এই শিশু সন্তানকে গত বছর খানেক আগেও এক শিক্ষক মারধর করেছিল। পরে অভিযোগ দিলে শালিশ বসে মিমাংসা করে দেয়। আবারো আমার সন্তান রিফাতকে মেরে কান ফাটিয়ে দিয়েছে মুহতামিম আমিরুল ইসলাম। আমি তার বিচার চাই।

এছাড়া শিক্ষকদের দ্বারা নির্যাতীত হয়ে রুপনাই পুর্ব পাড়া গ্রামের আসাদুল ইসলামের মেয়ে জুবায়দা (৬), রিপনের ছেলে আলিফ (৫), হারুনের ছেলে অজ্ঞাত (৮) সহ অন্তত ১৫/২০ জন ছাত্র-ছাত্রী নির্যাতীত হয়ে মাদ্রাসা ছেড়েছে।

নির্যাতীত জোবায়দার দাদা নওশাদ আলী অভিযোগ করে জানান, মাদ্রাসাটি এখন শিশুদের জন্য আতংক। কোমলমতি শিশুদের আদর করে পাঠদান করানো যেখানে রাষ্ট্রিয় আইন। সেখানে তার ব্যতিক্রম ঘটনা ঘটাচ্ছে বন্ধন মাদ্রাসা। আমরা সাধারন মানুষ অভিযোগ করলেও তারা আমলে নেননা। তাই প্রশাসনের কাছে দাবী ঐ মাদ্রাসার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হোক।

এদিকে মাদ্রাসার নির্যাতন কারী মুহতামিম মাওঃ আমিরুল ইসলামের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ০১৭১২-০৭৬৮৯১ নম্বরে বার-বার যোগাযোগ করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।

তবে বন্ধন তালিমুল কোরআন নুরানিয়া ও হাফিজিয়া মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সেক্রেটারী বিষয়টি জেনে হাজী বাবুল মোল্লা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তিনি জানান, আমাদের মাদ্রাসায় শিশু নির্যাতনের ঘটনাটি খুবই বেদনা দায়ক। আর আগেও এরকম ঘটনার দায়ে এক শিক্ষককে বরখাস্ত করা হয়েছে। তাই মুহতামিম আমিরুল ইসলামের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ ব্যাপারে বেলকুচি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ রহমত উল্লাহ জানান, ঘটনাটি হৃদয় বিদারক। তদন্ত পুর্বক দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এনায়েতপুরে মাদ্রাসার হুজুরের থাপ্পরে কান ফাঁটলো শিশুর

প্রকাশিত সময় ০৯:১৮:৩৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ৪ মার্চ ২০২০

আমিনুল ইসলাম, সিরাজগঞ্জঃ সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুরের গোপালপুর গ্রামের বন্ধন তালিমুল কোরআন নুরানিয়া ও হাফিজিয়া মাদ্রাসা এখন শিক্ষার্থীদের জন্য আতংক।

মাদ্রাসার মুহতামিম সহ শিক্ষকদের হাতে মাঝে মধ্যেই ঘটছে শিশু নির্যাতনের ঘটনা। গত দুদিন আগেও মাদ্রাসার মুহতামিম মাওঃ আমিরুল ইসলাম ১ম শ্রেনীর ছাত্র রিফাত হোসেনকে (৬) থাপ্পর দিয়ে কানের পর্দা ফাটিয়ে ফেলছেন। তাকে চিকিৎসার পর বাড়িতে আনা হলেও ঐ কান দিয়ে কিছু শুনতে পারছেনা বলে তার বাবা বুলবুল ইসলাম অভিযোগ করেছেন। মাদ্রাসায় অহরহ নির্যাতনের ঘটনায় রুপনাই সহ আশপাশের এলাকার আহত অন্তত ১৫/২০ জন শিশু ছাত্র-ছাত্রী মাদ্রাসা থেকে ভয়ে বের হয়ে এসেছে। অন্যদেরও মাঝে বিরাজ করছে আতংক। তবে কর্তৃপক্ষ যথাযথ ব্যবস্থা না নেয়ায় এই ধরনের ঘটনা চলছেই মাদ্রাসাটিতে।

জানা যায়, গত ১৩ বছর আগে গোপালপুরে বন্ধন তালিমুল কোরআন নুরানিয়া ও হাফিজিয়া মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার পর থেকেই এখানে শিশু শিক্ষার্থীদের নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে। বছর খানেক আগেও এলাকার এক শিশুকে মারধরের কারনে মাদ্রাসার এক শিক্ষককে বরখাস্ত করেছে পরিচালনা পরিষদ। তবে তার পরও এখানে শিশুদের নির্যাতন থেমে নেই।

গত ২ মার্চ মাদ্রাসায় লেখা-পড়া অবস্থায় মুহতামিম ইসলামী ঝালসার আলোচক মাওঃ আমিরুল ইসলাম রুপনাই পুর্ব পাড়া গ্রামের শিশু রিফাত (৬) কে কানে থাপ্পর দেয়। তখন যন্ত্রনায় চিৎিকার শুরু করে সে বাড়ি চলে আসে। এরপর রাতে অসুস্থ্য হলে কান দিয়ে রক্ত ঝড়তে থাকে। পরে সিরাজগঞ্জে একটি ক্লিনিকে ডাঃ শফিউল ইসলামের কাছে নেয়া হলে তিনি ঘটনা শুনে বিষ্মিত হন। বুধবার সকালে চিকিৎসা শেষে বাড়িতে আনা হয়।

ঘটনা জেনে স্থানীয় সংবাদ কর্মীরা ঐ বাড়িতে গেলে তার বাবা বুলবুল ইসলাম ঘটনার বর্ণনা দিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেন। এসময় তিনি অভিযোগ করে জানান, আমার এই শিশু সন্তানকে গত বছর খানেক আগেও এক শিক্ষক মারধর করেছিল। পরে অভিযোগ দিলে শালিশ বসে মিমাংসা করে দেয়। আবারো আমার সন্তান রিফাতকে মেরে কান ফাটিয়ে দিয়েছে মুহতামিম আমিরুল ইসলাম। আমি তার বিচার চাই।

এছাড়া শিক্ষকদের দ্বারা নির্যাতীত হয়ে রুপনাই পুর্ব পাড়া গ্রামের আসাদুল ইসলামের মেয়ে জুবায়দা (৬), রিপনের ছেলে আলিফ (৫), হারুনের ছেলে অজ্ঞাত (৮) সহ অন্তত ১৫/২০ জন ছাত্র-ছাত্রী নির্যাতীত হয়ে মাদ্রাসা ছেড়েছে।

নির্যাতীত জোবায়দার দাদা নওশাদ আলী অভিযোগ করে জানান, মাদ্রাসাটি এখন শিশুদের জন্য আতংক। কোমলমতি শিশুদের আদর করে পাঠদান করানো যেখানে রাষ্ট্রিয় আইন। সেখানে তার ব্যতিক্রম ঘটনা ঘটাচ্ছে বন্ধন মাদ্রাসা। আমরা সাধারন মানুষ অভিযোগ করলেও তারা আমলে নেননা। তাই প্রশাসনের কাছে দাবী ঐ মাদ্রাসার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হোক।

এদিকে মাদ্রাসার নির্যাতন কারী মুহতামিম মাওঃ আমিরুল ইসলামের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ০১৭১২-০৭৬৮৯১ নম্বরে বার-বার যোগাযোগ করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।

তবে বন্ধন তালিমুল কোরআন নুরানিয়া ও হাফিজিয়া মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সেক্রেটারী বিষয়টি জেনে হাজী বাবুল মোল্লা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তিনি জানান, আমাদের মাদ্রাসায় শিশু নির্যাতনের ঘটনাটি খুবই বেদনা দায়ক। আর আগেও এরকম ঘটনার দায়ে এক শিক্ষককে বরখাস্ত করা হয়েছে। তাই মুহতামিম আমিরুল ইসলামের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ ব্যাপারে বেলকুচি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ রহমত উল্লাহ জানান, ঘটনাটি হৃদয় বিদারক। তদন্ত পুর্বক দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।