ঢাকা ০৬:৩২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ১৭ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞপ্তি :
সারাদেশের জেলা উপোজেলা পর্যায়ে দৈনিক স্বতঃকণ্ঠে সংবাদকর্মী নিয়োগ চলছে । আগ্রহী প্রার্থীগন জীবন বৃত্তান্ত ইমেইল করুন shatakantha.info@gmail.com // দৈনিক স্বতঃকণ্ঠ অনলাইন ও প্রিন্ট পত্রিকায় বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন ০১৭১১-৩৩৩৮১১, ০১৭৪৪-১২৪৮১৪

তালেবান বন্দীদের মুক্তির অনুমোদন দিয়েছেন আফগান প্রেসিডেন্ট

বার্তাকক্ষ
  • প্রকাশিত সময় ০১:০১:৩৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ মার্চ ২০২০
  • / 103

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ তালেবানদের সাথে শান্তিচুক্তিতে বসতে চাওয়ার অংশ হিসেবে প্রায় দেড় হাজার তালেবান বন্দীকে মুক্তি দেয়ার অনুমোদন দিয়েছেন আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি।

যদিও প্রেসিডেন্টের এই অনুমোদনে শর্ত হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে যে, বন্দীদেরকে অবশ্যই যুদ্ধের ময়দানে ফিরে না যাওয়ার লিখিত প্রতিশ্রুতি দিতে হবে এবং বিনিময়ে তালেবানরা একহাজার সরকারি সেনাকে হস্তান্তর করতে রাজি হয়েছে।

এর আগে তালেবানদের সাথে স্বাক্ষরিত চুক্তি অনুযায়ী দেশটি থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার শুরু করার পর এই পদক্ষেপ গ্রহন করা হলো।

প্রেসিডেন্ট ঘানির স্বাক্ষরিত ওই ডিক্রি অনুযায়ী, ১৫০০ বন্দীকে ১৫ দিনের মধ্যে মুক্তি দেয়া হবে।

পাশাপাশি সরকারের সাথে তালেবানদের আলোচনাও চলতে থাকবে বলে জানা গেছে। আলোচনা অগ্রসর হলে আফগান সরকার প্রতি দুই সপ্তাহে ৫০০ জন করে তালেবান বন্দীকে মুক্তি দেবে। সর্বমোট ৫০০০ তালেবান বন্দী মুক্তি না পাওয়া পর্যন্ত এই প্রক্রিয়া চলতে থাকবে।

চুক্তি অনুযায়ী, তালেবানদেরকে সহিংসতা কমিয়ে আনতে হবে এবং তাদের নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলোতে আল-কায়েদা বা অন্য কোন চরমপন্থী সংগঠন যাতে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করতে না পারে তার নিশ্চয়তা দিতে হবে।

উভয় পক্ষের মধ্যে বিশ্বাস বাড়ানোর অংশ হিসেবে বন্দী বিনিময় চুক্তি হয়েছে যাতে আফগানিস্তানের দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে চলমান যুদ্ধ বন্ধ করতে দুই পক্ষই সরাসরি আলোচনায় বসতে পারে। মঙ্গলবার আলোচনা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও বন্দী মুক্তির দাবির মুখে তা পিছিয়ে যায়।

এএফপির কাছে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তালেবান নেতাদের কাউন্সিলের এক সদস্য বলেছেন, তারা যেসব বন্দীদের মুক্তি চায় তাদের একটি তালিকা তৈরি করা হয়েছে। একইসাথে তিনি অভিযোগ করেন যে, সরকার সেই বিশ্বাস ভঙ্গ করে এমন বন্দীদের মুক্তি দেয়ার পরিকল্পনা করেছে যারা বয়স্ক, অনেক অসুস্থ বা যাদের কারাদণ্ডের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে।

তালেবানদের রাজনৈতিক মুখপাত্র সুহাইল শাহীন মঙ্গলবার এক টুইটে জানিয়েছেন যে, তারা শুধু সেসকল বন্দীদেরই গ্রহণ করবে যাদের নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত আছে।
অন্যদিকে প্রেসিডেন্টের স্বাক্ষরিত ডিক্রি অনুযায়ী, সরকার তালেবান বন্দীদের বয়স, স্বাস্থ্যের অবস্থা এবং বাকি থাকা সাজার মেয়াদ দেখে মুক্তি দেবে।

এর আগে প্রেসিডেন্ট ঘানি অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রের সই করা চুক্তি অনুযায়ী ৫০০০ বন্দীকে মুক্তি দিতে রাজি হননি। কিন্তু বুধবারের ডিক্রি তার সিদ্ধান্তে নমনীয় হওয়ার আভাস দিচ্ছে।

জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ কর্তৃক অনুমোদিত ঐতিহাসিক এই চুক্তি অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্র ১৩৫ দিনের মধ্যে আফগানিস্তানে অবস্থানরত তাদের ১২০০০ সেনা কমিয়ে ৮৬০০তে নামিয়ে আনতে সম্মত হয়েছে। তালেবানরা চুক্তিটি মেনে নিয়েছে এবং যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোভূক্ত দেশগুলো ১৪ মাসের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে তাদের সব সেনা সরিয়ে নেয়ার কথা দিয়েছে।

সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের সেনা প্রত্যাহার শুরু হয়। কিন্তু গত সপ্তাহে হেলমান্দ প্রদেশে আফগান বাহিনীর উপর তালেবানদের হামলার পরে যুক্তরাষ্ট্র পাল্টা বিমান হামলা চালালে চুক্তিটি টিকে থাকার সম্ভাবনা কমে যায়।

এছাড়াও বর্তমানে দেশটিতে চলমান রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা শান্তি আলোচনাকে হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে।

গত বছরের বিতর্কিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর দুই জন রাজনীতিবিদের শপথ অনুষ্ঠানও আলাদাভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। অবশ্য আফগানিস্তানের নির্বাচন কমিশন ঘোষণা করেছে যে আশরাফ ঘানি কম ব্যবধানে সেপ্টেম্বরের ভোটে জয়ী হয়েছেন। কিন্তু আবদুল্লা আবদুল্লা অভিযোগ তুলেছেন যে ফলাফলে কারচুপি হয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা হুশিয়ার করে বলেছেন যে, বর্তমান রাজনৈতিক বিরোধিতা শান্তি আলোচনার সময় সরকারের অবস্থানকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করবে।

সূত্রঃ বিবিসি

তালেবান বন্দীদের মুক্তির অনুমোদন দিয়েছেন আফগান প্রেসিডেন্ট

প্রকাশিত সময় ০১:০১:৩৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ মার্চ ২০২০

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ তালেবানদের সাথে শান্তিচুক্তিতে বসতে চাওয়ার অংশ হিসেবে প্রায় দেড় হাজার তালেবান বন্দীকে মুক্তি দেয়ার অনুমোদন দিয়েছেন আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি।

যদিও প্রেসিডেন্টের এই অনুমোদনে শর্ত হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে যে, বন্দীদেরকে অবশ্যই যুদ্ধের ময়দানে ফিরে না যাওয়ার লিখিত প্রতিশ্রুতি দিতে হবে এবং বিনিময়ে তালেবানরা একহাজার সরকারি সেনাকে হস্তান্তর করতে রাজি হয়েছে।

এর আগে তালেবানদের সাথে স্বাক্ষরিত চুক্তি অনুযায়ী দেশটি থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার শুরু করার পর এই পদক্ষেপ গ্রহন করা হলো।

প্রেসিডেন্ট ঘানির স্বাক্ষরিত ওই ডিক্রি অনুযায়ী, ১৫০০ বন্দীকে ১৫ দিনের মধ্যে মুক্তি দেয়া হবে।

পাশাপাশি সরকারের সাথে তালেবানদের আলোচনাও চলতে থাকবে বলে জানা গেছে। আলোচনা অগ্রসর হলে আফগান সরকার প্রতি দুই সপ্তাহে ৫০০ জন করে তালেবান বন্দীকে মুক্তি দেবে। সর্বমোট ৫০০০ তালেবান বন্দী মুক্তি না পাওয়া পর্যন্ত এই প্রক্রিয়া চলতে থাকবে।

চুক্তি অনুযায়ী, তালেবানদেরকে সহিংসতা কমিয়ে আনতে হবে এবং তাদের নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলোতে আল-কায়েদা বা অন্য কোন চরমপন্থী সংগঠন যাতে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করতে না পারে তার নিশ্চয়তা দিতে হবে।

উভয় পক্ষের মধ্যে বিশ্বাস বাড়ানোর অংশ হিসেবে বন্দী বিনিময় চুক্তি হয়েছে যাতে আফগানিস্তানের দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে চলমান যুদ্ধ বন্ধ করতে দুই পক্ষই সরাসরি আলোচনায় বসতে পারে। মঙ্গলবার আলোচনা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও বন্দী মুক্তির দাবির মুখে তা পিছিয়ে যায়।

এএফপির কাছে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তালেবান নেতাদের কাউন্সিলের এক সদস্য বলেছেন, তারা যেসব বন্দীদের মুক্তি চায় তাদের একটি তালিকা তৈরি করা হয়েছে। একইসাথে তিনি অভিযোগ করেন যে, সরকার সেই বিশ্বাস ভঙ্গ করে এমন বন্দীদের মুক্তি দেয়ার পরিকল্পনা করেছে যারা বয়স্ক, অনেক অসুস্থ বা যাদের কারাদণ্ডের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে।

তালেবানদের রাজনৈতিক মুখপাত্র সুহাইল শাহীন মঙ্গলবার এক টুইটে জানিয়েছেন যে, তারা শুধু সেসকল বন্দীদেরই গ্রহণ করবে যাদের নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত আছে।
অন্যদিকে প্রেসিডেন্টের স্বাক্ষরিত ডিক্রি অনুযায়ী, সরকার তালেবান বন্দীদের বয়স, স্বাস্থ্যের অবস্থা এবং বাকি থাকা সাজার মেয়াদ দেখে মুক্তি দেবে।

এর আগে প্রেসিডেন্ট ঘানি অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রের সই করা চুক্তি অনুযায়ী ৫০০০ বন্দীকে মুক্তি দিতে রাজি হননি। কিন্তু বুধবারের ডিক্রি তার সিদ্ধান্তে নমনীয় হওয়ার আভাস দিচ্ছে।

জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ কর্তৃক অনুমোদিত ঐতিহাসিক এই চুক্তি অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্র ১৩৫ দিনের মধ্যে আফগানিস্তানে অবস্থানরত তাদের ১২০০০ সেনা কমিয়ে ৮৬০০তে নামিয়ে আনতে সম্মত হয়েছে। তালেবানরা চুক্তিটি মেনে নিয়েছে এবং যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোভূক্ত দেশগুলো ১৪ মাসের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে তাদের সব সেনা সরিয়ে নেয়ার কথা দিয়েছে।

সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের সেনা প্রত্যাহার শুরু হয়। কিন্তু গত সপ্তাহে হেলমান্দ প্রদেশে আফগান বাহিনীর উপর তালেবানদের হামলার পরে যুক্তরাষ্ট্র পাল্টা বিমান হামলা চালালে চুক্তিটি টিকে থাকার সম্ভাবনা কমে যায়।

এছাড়াও বর্তমানে দেশটিতে চলমান রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা শান্তি আলোচনাকে হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে।

গত বছরের বিতর্কিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর দুই জন রাজনীতিবিদের শপথ অনুষ্ঠানও আলাদাভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। অবশ্য আফগানিস্তানের নির্বাচন কমিশন ঘোষণা করেছে যে আশরাফ ঘানি কম ব্যবধানে সেপ্টেম্বরের ভোটে জয়ী হয়েছেন। কিন্তু আবদুল্লা আবদুল্লা অভিযোগ তুলেছেন যে ফলাফলে কারচুপি হয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা হুশিয়ার করে বলেছেন যে, বর্তমান রাজনৈতিক বিরোধিতা শান্তি আলোচনার সময় সরকারের অবস্থানকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করবে।

সূত্রঃ বিবিসি