আটঘরিয়ার রতিপুর সপ্রাবি-এ প্রায় তিন সপ্তাহ শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ
- প্রকাশিত সময় ০৫:১২:৪০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৪ মার্চ ২০২০
- / 100
আটঘরিয়া (পাবনা) প্রতিনিধিঃ প্রতিদিনের মতোই বিদ্যালয় খোলা রয়েছে। উড়ছে জাতীয় পতাকা। রয়েছেন শিক্ষকরাও। আর কোনো শিক্ষার্থী নেই। আশপাশের বিভিন্ন বাড়ী থেকে কয়েকজন শিক্ষার্থী স্কুলে এসে ঘুরছেন। কিন্ত আবার ক্লাসে বসছেন না।
এমন ঘটনা পাবনার আটঘরিয়া উপজেলা চাঁদভা রতিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। ফলে স্কুল খোলা থাকলেও শিক্ষা কার্যক্রম মুখ থুবড়ে পড়েছে। পরিচালনা কমিটির সভাপতি সহ ৫জনের মামলা প্রত্যাহার ও প্রধান শিক্ষক সেলিনা খাতুনের সাথে চরম দন্ডের জেরে সন্তানদের স্কুলে পাঠাচ্ছেন না অভিভাবককেরা।
গত ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে বিদ্যালয়ের আব্দুল বারী নামক একজন বীরমুক্তিযোদ্ধাকে অপমান করা হয়। কিন্ত তিনি বিদ্যালয়ে পৌছার আগেই প্রধান শিক্ষক সেলিনা খাতুন মাতৃভাষার অনুষ্ঠান আগেই শেষ করে দেন। এই নিয়ে মুক্তিযোদ্ধা ও পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও একজন শিক্ষকের সঙ্গে প্রধান শিক্ষক সেলিনা খাতুনের বাগবিতান্ডা হয়।
এঘটনায় প্রধান শিক্ষক ক্ষিপ্ত হয়ে পরিচালনা কমিটির সভাপতি মঞ্জুর রহমান বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক শরিফুল ইসলাম সহ ৫জনকে আসামী করে মামলা করেন। এর পর থেকেই প্রধান শিক্ষকের উপর স্থানীয় লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে সন্তানদের বিদ্যালয় যাওয়া বন্ধ করে দেই। একই সঙ্গে প্রধান শিক্ষক সেলিনা খাতুনের অপসারন ও মামলা তুলে নেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন তারা। ঘটনার পর থেকে প্রধান শিক্ষক সেলিনা খাতুন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর ডাকযোগে একটি ছুটির আবেদন দিয়ে আর বিদ্যালয়ে যাননি। ফলে সমস্যার কোনো সমাধান হচ্ছে না বলে দাবি স্থানীদের ।
গতকাল শনিবার সকালে সরজমিনে বিদ্যালয়ে গিয়ে গ্রামের লোকজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, প্রধান শিক্ষক মামলা করে পুরো গ্রাম বাসিকে আতংকে মধ্যে ফেলে দিয়েছে। মামলায় বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি মঞ্জুর রহমানকে ওই দিন গ্রেপ্তার করেন পুলিশ। তবে অন্যান্যরা গ্রেপ্তার আতংকের মধ্যে রয়েছেন। মামলা প্রত্যাহার ও প্রধান শিক্ষকের অপসারন দাবিতে গ্রামের লোকজন এক হয়ে গেছেন। মামলা প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত তারা সন্তানদের স্কুলে পাঠাবে না।
বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি মঞ্জর রহমান বলেন, প্রধান শিক্ষক সেলিনা খাতুন শুধু মুক্তিযোদ্ধাকে অপমান করেননি। তিনি পুরো এলাকার মানুষকে অপমান করেছেন। অবিলম্বে মুক্তিযোদ্ধার কাছে ক্ষমা প্রার্থনাকরে প্রধান শিক্ষককে অপসারন ও মামলা প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত কেউ আমাদের সন্তানদের স্কুলে পাঠাবেন না।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার সিরাজুম মনিরা বলেন, গ্রামবাসির অভিযোগের প্রেক্ষিতে ইতোমধ্যে প্রধান শিক্ষক সেলিনা খাতুনকে অন্য বিদ্যালয়ে বদলির জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। কিন্তু প্রধান শিক্ষক ডাকযোগে একমাসের ছুটির আবেদন করে আর যোগাযোগ করেননি। তবে বিদ্যালয়ের পরিবেশ স্বাভাবিক করতে অভিভাবকদের সাথে বৈঠক করা হচ্ছে। কিন্তু শিক্ষার্তীরা স্কুলে আসতে শুরু করেছে। খুব শিগগির স্কুলের পরিবেশ স্বভাবিক হয়ে যাবে।
তবে প্রধান শিক্ষক সেলিনা খাতুন এসব অভিযোগ স্বীকার করে দাবি করেন, আমি কোনো অন্যায় করিনি। কিন্তু লোক কোনো অনৈতিক সুবিধা না পেয়ে আমার বিরুদ্ধে ষড়ষন্ত্র করছে। আমি বর্তমানে ছুটিতে আছি।