টাঙ্গাইলে মিথ্যে তথ্যে হয়রানী ও ১ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে সাংবাদিক
- প্রকাশিত সময় ০১:১৬:২২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ এপ্রিল ২০২০
- / 121
বিশেষ প্রতিনিধিঃ টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার যদুরপাড়া গ্রামে বিদেশ থেকে আগত এক প্রবাসী হোম কোয়ারেন্টাইন মানছে না বলে মিথ্যে অভিযোগ করে এক সাংবাদিক।
সোমবার ৩০ মার্চ কালিহাতীর তোফাজ্জল হোসেন তুহিন (৪২) নামের এক সাংবাদিক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে এই মিথ্যে অভিযোগ করেন। সে ইংরেজী দৈনিক নেক্সট নিউজ এর সম্পাদক ও স্থানীয় তালেমন হযরত আলী মৎস প্রযুক্তি ইনস্টিটিউট কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ও অধ্যক্ষ।
যদুরপাড়া গ্রামে বিদেশ থেকে আগত এক প্রবাসী হোম কোয়ারেন্টাইন নির্দেশনা না মেনে এলাকায় প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ায়। তাকে সে নিজে একাধিকবার সচেতন করার চেষ্টা করলেও সে সেটি না মেনে বাইরে ঘুরতে থাকে। তারপর সে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামীমা আরা নীপাকে (ইউএনও) মুঠোফোনে অভিযোগ দেন। কাজের চাপে আসতে দেরী হতে দেখে ২ ঘন্টার মধ্যে সে ৩ বার কল দিয়ে তাড়া দিতে থাকে। অবশেষে ইউএনও এক করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে কর্মসূচি বাদ রেখে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শাহরিয়ার, থানা অফিসার ইনচার্জ শামিম আলমামুন সহ প্রোটোকল নিয়ে অভিযুক্তের তথ্যের ভিত্তিতে বিদেশ হতে আগত ব্যক্তির বাড়িতে উপস্থিত হন।
কিন্তু সেখানে বিদেশ ফেরত কাউকে পাওয়া যায়নি। এমনকি ওই ওই পরিবারের কেউ বিদেশ থেকে আসেনি। পরে ইউএনও একাধিকবার সাংবাদিক তুহিনকে ফোন দিলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। কিছু সময় পর তার ফোন চালু হলে সাংবাদিক তুহিনকে অভিযোগের ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে সে ইউএনও কে ধমকের সুরে তার কাজের ব্যাপারে সন্দেহ প্রকাশ করে।
তিনি আরো বলেন, আপনারা ভালোভাবে তদন্ত না করেই আমার অভিযোগ মিথ্যে প্রমাণ করার চেষ্টা করছেন। এক পর্যায়ে মুঠোফোনে কথা কাটাকাটি শুরু হয়ে যায়। শেষে ইউএনও তাকে অভিযুক্ত বিদেশ থেকে আগত ব্যক্তিকে ধরিয়ে দেওয়ার জন্য ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিয়ে যান।
এ ব্যাপারে সাংবাদিক তুহিনকে ফোন করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামীমা আরা নীপা সাংবাদিকদের বলেন, আমি করোনা ভাইরাস প্রতিরোধের একটি জরুরী প্রোগ্রামে ছিলাম। আমাকে মুঠোফোনে সে অভিযোগ করলে আমি ব্যস্ততার কারণে আমার যেতে দেরি হয়। আমি তাকে প্রোগ্রাম শেষ করে যাওয়ার কথা বললে সে সাংবাদিক পরিচয়ে আমাকে যেতে বাধ্য করে। কিন্তু ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযোগ মিথ্যে প্রমাণ হলে সে আমার সাথে মুঠোফোনে অশোভন আচরণ ও কথা কাটাকাটি করে। পরে তার অভিযোগের সত্যতা প্রমাণ করতে তাকে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়ে আসি।
এ ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শাহরিয়ার বলেন, সে সাংবাদিক ও শিক্ষক। তার কাছ থেকে আমরা এমন মিথ্যে অভিযোগ আশা করিনি। যেখানে আমরা করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সারাদিন কাজ করে যাচ্ছি সেখানে এরকম মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগ দিয়ে আমাদেরকে হয়রানি করা মোটেও ঠিক হয়নি। এটি একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবারের ছেলে রুহুল আমিন রাসেল বলেন, তুহিন আমাদের বাড়িতে এসে আমার আব্বা এসেছে বলে মিথ্যে অভিযোগ দায়ের করে। সেই সঙ্গে আমাদের কাছে ১ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে। না দিলে সে পুলিশের ভয় দেখায়। আমরা ঘর থেকে বের হতে পারছি না। বাজারে মানুষ আমাদেরকে করোনা আক্রান্ত বলে তাড়িয়ে দিচ্ছে। সবাই আমাদেরকে থেকে দূরে দূরে থাকছে ও বাড়ি থেকে বের হতে দিচ্ছে না।