সিরাজগঞ্জে ক্লাসরুমে চতুর্থ শ্রেনীর এক স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষন করেছে শিক্ষক
- প্রকাশিত সময় ০৭:৫৩:৪৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩০ মে ২০২০
- / 171
আমিনুল ইসলাম, সিরাজগঞ্জঃ সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুরে চতুর্থ শ্রেনীর এক ছাত্রীকে ধর্ষণ করায় শিক্ষক কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধর্ষিত ওই স্কুল ছাত্রী ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছে।
ঘটনাটি এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে এলাকাবাসী। অভিযুক্ত শিক্ষক নুরুজ্জামানের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তারা। শনিবার ৩০ মে বিকেলে সহকারী শিক্ষক নুরুজ্জামানকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। সে চৌহালী উপজেলার এনায়েতপুরের মাঝগ্রাম সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।
এনায়েতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোল্লা মাসুদ পাভেজ জানান, চৌহালী উপজেলার এনায়েতপুরের মাঝগ্রাম সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নুরুজ্জামান একই বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেনীর এক ছাত্রীকে প্রায় সাড়ে ৫ মাস আগে স্কুল ছুটির পর কথা আছে বলে ক্লাস রুমে ডেকে নিয়ে ক্লাস রুমের ভিতরেই ছাত্রীর মুখ চেপে ধরে জোড়পুর্বক ধর্ষণ করে। এসময় ছাত্রীটি কান্নাকাটি শুরু করলে শিক্ষক নুরুজ্জামান তাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে ১০০ টাকা দিয়ে স্কুল থেকে বের করে দেন। ঘটনাটি কাউকে বললে তাকেসহ পরিবারের সবাইকে খুন করার হুমকি দেয়। ভয়ে ওই ছাত্রী ঘটনাটি কাউকে জানায়নি।
সম্প্রতি ওই ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়লে তার বাবা-মা ডাক্তারের কাছে নিয়ে যায়। গত ২৭ মে বেলকুচি বিসমিল্লাহ্ আধুনিক হাসপাতালে মেয়েটির আল্টাস্নোগ্রাফি করা হয়। আল্টাস্নোগ্রাফি রিপোর্টে মেয়েটি ৫ মাসের গর্ভবতী বলে উল্লেখ্য করা হয়েছে। এ ঘটনা জানাজানি হলে স্কুল এবং এলাকায় ব্যাপক তেলপাড় ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। শিক্ষক নুরুজ্জামানের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবিতে উত্তাল হয়ে ওঠে পুরে এলাকা।
এব্যাপারে স্কুল ছাত্রীর বাবা শনিবার দুপুরে এনায়েতপুর থানায় নুরুজ্জামানকে প্রধান আসামী করে মামলা করলে বিকেলে পুলিশ বিদ্যালয় থেকে ওই শিক্ষক নুরুজ্জামানকে গ্রেফতার করে।
নির্যাতিতা ছাত্রী জানায়, স্কুল ছুটির পর নুরুজ্জামান স্যার আমাকে ভাল ভাবে ডাকে। ক্লাসে নিয়ে মুখ চেপে ধরে নির্যাতন করে। পরে ১০০ টাকা দিয়ে এ ঘটনা কাউকে না বলার জন্য বলে। ঘটনাটি তার পরিবারকে বললে মেরে ফেলা হবে বলে হুমকি দেয়।
স্কুল ছাত্রীর বাবা জানান, দিনমুজুরি করে খাই। আমাদের কোন লোকজন নাই। শিক্ষক বিত্তশালী হওয়ায় অনেকেই বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করেছে। আমি প্রশাসনের কাছে এ ঘটনার ন্যায় বিচার চাই।
এবিষয়ে এনায়েতপুর বিসমিল্লাহ আধুনিক হাসপাতালের চিকিৎসক ডা: রিমা আক্তার জানিয়েছেন, মেয়েটিকে আল্টাস্নোগ্রাফি করার পর ৫ মাস ৪ দিনের অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার রিপোর্ট এসেছে।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন সিরাজগঞ্জ জেলা শাখার যুগ্মসাধারন সম্পাদক রুখছানা ইসলাম জয়া বলেন, এ ঘটনার সুষ্ঠ ও ন্যায় বিচার নিশ্চিতে নির্যাতিতা ওই স্কুল ছাত্রীকে আমাদের পক্ষ থেকে সকল প্রকার আইনি সহায়তা দেয়া হবে।
এবিষয়ে চৌহালী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর ফিরোজ জানান, একজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ উদ্বেগ ও দুখঃজনক। দোষী প্রমানিত হলে বিভাগীয় ও আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।