পাবনায় ভাড়া বাড়ি থেকে স্ত্রী-কন্যাসহ ব্যাংক কর্মকর্তার অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার
- প্রকাশিত সময় ০৮:০০:২৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৫ জুন ২০২০
- / 161
বার্তা সংস্থা পিপঃ পাবনা শহরে অবসরপ্রাপ্ত এক ব্যাংক কর্মকর্তা, তার স্ত্রী ও মেয়েকে কুপিয়ে এবং শ্বাসরোধ করে হত্যার পর বাড়িতে লুটপাট চালিয়েছে দূর্বত্তরা।
শুক্রবার বিকেল ৩টার দিকে পুলিশ প্রতিবেশীদের নিকট থেকে খবর পেয়ে শহরের দিলালপুরের একটি বাড়ির মূল ফটক ভেঙে এই তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করে।
নিহতরা হলো রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল জব্বার (৬৪), তার স্ত্রী ছুম্মা খাতুন (৫৮) এবং মেয়ে সানজিদা খাতুন জয়া (১৪)।
ডিবি পুলিশ এই ঘটনায় সন্দেহভাজন রাব্বি নামের পালিত ছেলেকে আটক করেছে।
স্বজন ও প্রতিবেশীরা জানান, নিহতরা আমেরিকা প্রবাসী মালিকানাধীন বাড়িতে ভাড়াটিয়া হিসেবে নিহত আব্দুল জব্বার ওই বাড়িতে বসবাস করতেন। মেয়ে সানজিদা খাতুন জয়া পাবনা শহরের কালেক্টরেট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের ৭ম শ্রেণির ছাত্রী ছিল। তবে প্রাথমিক ভাবে পুলিশ নিশ্চিত হতে পরেছেন এটি কোন ডাক্াতির ঘটনা নয়। সহায় সম্পত্তি নিয়েই এই হত্যাকান্ডটি হয়েছে। নিহত আব্দুল জব্বারের পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার কাশীনাথপুর ইউনিয়নের পাইকরহাটি গ্রামের মৃত আব্দুল মতিন শেখের ছেলে।
শহরের দিলালপুরএলাকার ফায়ার সাভিস ষ্টেশনের পশ্চিম পাশের একটি দোতলা বাড়ির নিচ তলায় সপরিবারে ভাড়া থাকতেন আব্দুল জব্বার। বাড়িটিতে অন্য কেউ বসবাস করতেন না। প্রতিবেশীদের কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ বিকেল ৩টার দিকে ওই বাড়ির নিচতলার একটি কক্ষ থেকে আব্দুর জব্বার এবং তার স্ত্রী ও অপর একটি কক্ষ থেকে মেয়ে সানজিদার মরদেহ উদ্ধার করে।
পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কমকতা (ওসি) নাসিম উদ্দিন জানান, ধারণা করা হচ্ছে ৩/৪ দিন আগে দুর্বৃত্তরা তিনজনকে কুপিয়ে ও শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে। মরদেহে কিছুটা পচন ধরেছে এবং গন্ধ বেরিয়েছে। তবে তারা যেখানে বসবাস করতেন সেখানে কক্ষগুলো তছনছ করা এবং আলমিরা ভাঙা পাওয়া গেছে। তবে গোয়েন্দা পুলিশ এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্যে রাব্বি নামের একজনকে আটক করেছেন। রাব্বিকেও নিহত আব্দুল জব্বার এক সময় দত্তক নিয়েছিলেন বলেও জানান ওসি। সম্প্রতি কয়েক বছর রাব্বি বখে যাওয়ায় তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার কথাও জানা গেছেন।
নিহতের ভাই মনিরুজ্জামান বলেন, তারা ব্যাক্তি জীবনে নিঃসন্তান ছিলেন। পরে সানজিদাকে দত্তক নিয়েছিলেন। আমার ভাই খুবই শান্ত প্রকতির লোক ছিলেন, কারোর সাথে ঝামেলায় যেতেন না। তাকে কার এভাবে হত্যা করেছে, তাদের শাস্তিও দাবী করেন তিনি।
নিহতের বোন নাজমা খাতুন বলেন, আমার ভাইয়ের শহরের শালগাড়িয়া মহল্লায় একটি নিজস্ব বাড়ি আছে। তবে তিনি দীর্ঘদিন ধরে দিলালপুরে ভাড়া বাড়িতেই বসবাস করতেন। সম্পত্তির কারনে কেউ তাদের হত্যা করেছে বলেও তার বোনের ধারনা।
পাবনার পুলিশ সুপার শেখ রফিকুল ইসলাম বলেন, কী কারণে এবং কারা এ হত্যাকান্ডটি করেছেন তা তাৎক্ষণিক ভাবে উদঘাটন করা যাচ্ছে না। পুলিশ তদন্ত করছেন। এছাড়া রাজশাহী থেকে পুলিশের একটি বিশেষ টিম এসে ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও সুরহতাল দেখতে রওনা হয়েছে। আলামত যাতে নষ্ট না হয়, সেজন্য রাজশাহী থেকে টিম না আসা পর্যন্ত নিহতদের মরদেহ ওই বাড়িতেই থাকবে। পুলিশ বাড়িটি পাহারা দিচ্ছে এব ক্রাইস সীন ফিতা দিয়ে এলাকাটি ঘিরে রাখা হয়েছে। তবে এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্যে একজনকে আটক করা হয়েছে। আমরা যেটুকু নিশ্চিত হতে পেরেছি তা হলো এটি ডাকাতি না। তদন্তের স্বার্থে বিস্তারিত আর কিছুই বলেন নাই তিনি।