ঢাকা ০৪:২৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞপ্তি :
সারাদেশের জেলা উপোজেলা পর্যায়ে দৈনিক স্বতঃকণ্ঠে সংবাদকর্মী নিয়োগ চলছে । আগ্রহী প্রার্থীগন জীবন বৃত্তান্ত ইমেইল করুন shatakantha.info@gmail.com // দৈনিক স্বতঃকণ্ঠ অনলাইন ও প্রিন্ট পত্রিকায় বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন ০১৭১১-৩৩৩৮১১, ০১৭৪৪-১২৪৮১৪

করোনা প্রকোপের মধ্যে তাড়াশে ঝুকি নিয়ে সেবা দিচ্ছে স্বাস্থ্যকর্মীরা

বার্তাকক্ষ
  • প্রকাশিত সময় ০৮:৪৪:০১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ জুন ২০২০
  • / 148

মহসীন আলী, তাড়াশঃ সারা বিশ্বের ন্যায় বাংলাদেশেও চলতি বছরের মার্চ মাসে করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) বিস্তার লাভ করার পর থেকেই ক্রমশঃ এর প্রভাব বৃদ্ধি পাওয়ায় জনগন দিশেহারা হয়ে পরেছে। তার পরেও সিরাজগঞ্জের তাড়াশে করোনা ভাইরাসের মহামারিতে প্রত্যন্ত গ্রাম অঞ্চলে ঝুকি নিয়েই রোগীদের স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে যাচ্ছেন কমিউনিটি ক্লিনিকের স্বাস্থ্যকর্মী সিএইচসিপিরা। এদের মধ্যে কেউ কেউ চিকিৎসা দিতে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছে করোনা ভাইরাসে।

করোনার এই মহামারীতে সরকারী বেসরকারী হাসপাতালে গিয়ে রোগীরা ঠিক ঠাক চিকিৎসা সেবা না পেলেও কমিউিনিটি ক্লিনিকের স্বাস্থ্যকর্মী সিএইচসিপিরা তাদের সেবা দিতে সদা প্রস্তুত রয়েছেন। সিএইচসিপিদের এমন সেবা পেয়ে সন্তুষ্ট গ্রামের হতদ্ররিদ্র মানুষ গুলোসহ জনসাধারণ।

এই উপজেলায় ২৫টি কমিউনিটি ক্লিনিকের সেবা কেন্দ্র রয়েছে। প্রত্যন্ত গ্রাম-অ লে বেশির ভাগই ক্লিনিক গুলো হওয়ায় এখানে নিম্ন আয়ের মানুষ গুলো সেবা নিতে আসে। বঙ্গবুন্ধর স্বপ্নে গোড়া এই কমিউনিটি ক্লিনিকে গ্রামের হতদরিদ্র মানুষ গুলো বিনা মুল্য সপ্তাহে ৬ দিন সেবা ও ঔষধ পেয়ে অনেকটা উপকৃত হচ্ছে।

মঙ্গলবার বেশ কয়টি কমিউনিটি ক্লিনিক ঘুরে দেখা যায় সামাজিক দুরত্ব রেখে রোগীরা ঔষধ ও চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন। অন্যান্য সময়ের চেয়ে কমিউনিটি ক্লিনিক গুলোতে রোগী বেড়েছে দ্বিগুন হারে। করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি নিয়ে উপজেলা ও জেলা হাসপাতালে না গিয়ে স্থানীয় কমিউনিটি ক্লিনিকে স্বাস্থ্য সেবা পাওয়ায় খুশি স্থানীয় রোগীরা। কিন্তু যারা এই ঝুকির মধ্যে সেবা দিচ্ছে (সিএইচসিপিরা) তাদের নেই কোন সুযোগ সুবিধা।

উপজেলার কুসুম্বী কমিউনিটি ক্লিনিকের কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) মিত্তন কুমার সাহা বলেন, আমি বেশির ভাগই মৌসুমি জ্বর, সর্দি, কাশি, গলাব্যাথা, পেট ব্যাথা, মাথা ব্যাথা, বমি ও পাতলা পায়খানা এ ধরণের সমস্যা নিয়ে আসা রোগীদের সেবা দিয়ে থাকি। আমি সর্বোচ্চ চেষ্টা করি তাদের সেবা প্রদান নিশ্চিত করতে।

উপজেলার কানেশ্বর কমিউনিটি ক্লিনিকের কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার আয়শা সিদ্দিকা বিউটি সহ আর বেশ কয়জন সিএইচসিপিরা আক্ষেপ করে বলেন, করোনা পরিস্থিতি শুরু হওয়ার পর থেকে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা শিশু ও গর্ভবতী মাসহ নানা ধরনের রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছি। সরকারী নির্দেশনা মোতাবেক সকল দায়িত্ব পালন করে আমি চাকরি করি। শুরু থেকে আমরা সবাই একই বেতনে প্রায় ৯ বছর চাকুরী করে আসছি। যা এই পর্যন্ত বাড়েও নাই কমেও নাই। যে বেতনে পরিবার পরিজন নিয়ে জীবন পরিচালনা করা কষ্ট সাধ্য হয়ে পরেছে। আমরা সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করছি।

চিকিৎসা সেবা দিতে গিয়ে করোনায় আক্রান্ত কাউরাইল কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি মোঃ শাহীনুর আলম মোবাইল ফোনে জানান দেশের এই দুর্যোগময় মুর্হুতে রোগীদের সেবা দিতে গিয়ে নিজেও করোনায় আক্রান্ত হয়েছি সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন যেন সুস্থ্য হয়ে আবার রোগীদের সেবা করতে পারি।

অপর দিকে শোলাপাড়া কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি মোঃ ফিরোজ্জামান মোবাইলে জানান যে, আমার মাঝে করোনা উপর্সগ দেখা দেওয়ায় পরীক্ষার জন্য নমুনা দিয়ে বর্তমান হোম কোরেন্টেইনে আছি, সুস্থ্য হয়ে আবারও রোগীদের সেবা দিতে সর্বদা প্রস্তুত আছি।

তাড়াশ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ জামাল মিয়া শোভন বলেন, কমিউনিটি ক্লিনিগুলোতে ঝুকি নিয়েই সেবা দিচ্ছে সিএইচসিপিরা। কেন না গ্রামের মানুষ গুলো ততটা সচেতন না হওয়ায় তারা কমিউনিটি ক্লিনিগুলোতে বেশী ভীর করছে । সিএইচসিপিরা গ্রামা লে সেবা দিতে গিয়ে ইতি মধ্যে মধ্যে একজন করোনায় আক্রান্ত হয়েছে।

সেই সাথে আরও কয়জনের করোনার সন্দেহ করে নুমনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে এবং তাদের কে হোম কোরেন্টেইনে থাকতে বলা হয়েছে। নিরবিচ্ছিন্নভাবে তৃনমূল মানুষদের স্বাস্থ্যসেবা অগ্রনীয় সাহসী ভূমিকার সাথে প্রদান করায় সিএইচসিপিদের প্রতি তিনি কৃতজ্ঞতা স্বীকার করেন।

করোনা প্রকোপের মধ্যে তাড়াশে ঝুকি নিয়ে সেবা দিচ্ছে স্বাস্থ্যকর্মীরা

প্রকাশিত সময় ০৮:৪৪:০১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ জুন ২০২০

মহসীন আলী, তাড়াশঃ সারা বিশ্বের ন্যায় বাংলাদেশেও চলতি বছরের মার্চ মাসে করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) বিস্তার লাভ করার পর থেকেই ক্রমশঃ এর প্রভাব বৃদ্ধি পাওয়ায় জনগন দিশেহারা হয়ে পরেছে। তার পরেও সিরাজগঞ্জের তাড়াশে করোনা ভাইরাসের মহামারিতে প্রত্যন্ত গ্রাম অঞ্চলে ঝুকি নিয়েই রোগীদের স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে যাচ্ছেন কমিউনিটি ক্লিনিকের স্বাস্থ্যকর্মী সিএইচসিপিরা। এদের মধ্যে কেউ কেউ চিকিৎসা দিতে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছে করোনা ভাইরাসে।

করোনার এই মহামারীতে সরকারী বেসরকারী হাসপাতালে গিয়ে রোগীরা ঠিক ঠাক চিকিৎসা সেবা না পেলেও কমিউিনিটি ক্লিনিকের স্বাস্থ্যকর্মী সিএইচসিপিরা তাদের সেবা দিতে সদা প্রস্তুত রয়েছেন। সিএইচসিপিদের এমন সেবা পেয়ে সন্তুষ্ট গ্রামের হতদ্ররিদ্র মানুষ গুলোসহ জনসাধারণ।

এই উপজেলায় ২৫টি কমিউনিটি ক্লিনিকের সেবা কেন্দ্র রয়েছে। প্রত্যন্ত গ্রাম-অ লে বেশির ভাগই ক্লিনিক গুলো হওয়ায় এখানে নিম্ন আয়ের মানুষ গুলো সেবা নিতে আসে। বঙ্গবুন্ধর স্বপ্নে গোড়া এই কমিউনিটি ক্লিনিকে গ্রামের হতদরিদ্র মানুষ গুলো বিনা মুল্য সপ্তাহে ৬ দিন সেবা ও ঔষধ পেয়ে অনেকটা উপকৃত হচ্ছে।

মঙ্গলবার বেশ কয়টি কমিউনিটি ক্লিনিক ঘুরে দেখা যায় সামাজিক দুরত্ব রেখে রোগীরা ঔষধ ও চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন। অন্যান্য সময়ের চেয়ে কমিউনিটি ক্লিনিক গুলোতে রোগী বেড়েছে দ্বিগুন হারে। করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি নিয়ে উপজেলা ও জেলা হাসপাতালে না গিয়ে স্থানীয় কমিউনিটি ক্লিনিকে স্বাস্থ্য সেবা পাওয়ায় খুশি স্থানীয় রোগীরা। কিন্তু যারা এই ঝুকির মধ্যে সেবা দিচ্ছে (সিএইচসিপিরা) তাদের নেই কোন সুযোগ সুবিধা।

উপজেলার কুসুম্বী কমিউনিটি ক্লিনিকের কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) মিত্তন কুমার সাহা বলেন, আমি বেশির ভাগই মৌসুমি জ্বর, সর্দি, কাশি, গলাব্যাথা, পেট ব্যাথা, মাথা ব্যাথা, বমি ও পাতলা পায়খানা এ ধরণের সমস্যা নিয়ে আসা রোগীদের সেবা দিয়ে থাকি। আমি সর্বোচ্চ চেষ্টা করি তাদের সেবা প্রদান নিশ্চিত করতে।

উপজেলার কানেশ্বর কমিউনিটি ক্লিনিকের কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার আয়শা সিদ্দিকা বিউটি সহ আর বেশ কয়জন সিএইচসিপিরা আক্ষেপ করে বলেন, করোনা পরিস্থিতি শুরু হওয়ার পর থেকে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা শিশু ও গর্ভবতী মাসহ নানা ধরনের রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছি। সরকারী নির্দেশনা মোতাবেক সকল দায়িত্ব পালন করে আমি চাকরি করি। শুরু থেকে আমরা সবাই একই বেতনে প্রায় ৯ বছর চাকুরী করে আসছি। যা এই পর্যন্ত বাড়েও নাই কমেও নাই। যে বেতনে পরিবার পরিজন নিয়ে জীবন পরিচালনা করা কষ্ট সাধ্য হয়ে পরেছে। আমরা সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করছি।

চিকিৎসা সেবা দিতে গিয়ে করোনায় আক্রান্ত কাউরাইল কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি মোঃ শাহীনুর আলম মোবাইল ফোনে জানান দেশের এই দুর্যোগময় মুর্হুতে রোগীদের সেবা দিতে গিয়ে নিজেও করোনায় আক্রান্ত হয়েছি সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন যেন সুস্থ্য হয়ে আবার রোগীদের সেবা করতে পারি।

অপর দিকে শোলাপাড়া কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি মোঃ ফিরোজ্জামান মোবাইলে জানান যে, আমার মাঝে করোনা উপর্সগ দেখা দেওয়ায় পরীক্ষার জন্য নমুনা দিয়ে বর্তমান হোম কোরেন্টেইনে আছি, সুস্থ্য হয়ে আবারও রোগীদের সেবা দিতে সর্বদা প্রস্তুত আছি।

তাড়াশ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ জামাল মিয়া শোভন বলেন, কমিউনিটি ক্লিনিগুলোতে ঝুকি নিয়েই সেবা দিচ্ছে সিএইচসিপিরা। কেন না গ্রামের মানুষ গুলো ততটা সচেতন না হওয়ায় তারা কমিউনিটি ক্লিনিগুলোতে বেশী ভীর করছে । সিএইচসিপিরা গ্রামা লে সেবা দিতে গিয়ে ইতি মধ্যে মধ্যে একজন করোনায় আক্রান্ত হয়েছে।

সেই সাথে আরও কয়জনের করোনার সন্দেহ করে নুমনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে এবং তাদের কে হোম কোরেন্টেইনে থাকতে বলা হয়েছে। নিরবিচ্ছিন্নভাবে তৃনমূল মানুষদের স্বাস্থ্যসেবা অগ্রনীয় সাহসী ভূমিকার সাথে প্রদান করায় সিএইচসিপিদের প্রতি তিনি কৃতজ্ঞতা স্বীকার করেন।