পাবনার ভাঙ্গুড়ায় গরুর ন্যায্য দাম না পাওয়ার আশঙ্কায় গোখামারিরা
- প্রকাশিত সময় ০২:৩৩:২৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ জুলাই ২০২০
- / 117
ভাঙ্গুড়া (পাবনা) প্রতিনিধিঃ পাবনার ভাঙ্গুড়া অঞ্চলে ক্রেতার অভাবে কোরবানির পশুর ন্যায্য দাম না পাওয়ার আশষ্কায় রয়েছে গোখামারিরা।
করোনাভাইরাস প্রদূর্ভাবের কারণে ঈদ-উল আযহা আসন্ন হলেও পশুর হাট গুলিতে ক্রেতার তেমন আনাগোনা চোখে পড়ে নি। তাই খামারীরা তাদের শখের ও বাণিজ্যিকভাবে লালন পালন কৃত এসব পশুর ন্যায্য দাম না পেয়ে লোকসানের আশঙ্কায় রয়েছে। কোন কোন খামারী ভাঙ্গুড়ার হাট গুলিতে কোরাবানীর পশুর ক্রেতা না পেয়ে সুদূর ঢাকা- চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন হাটে নিয়ে বিক্রির চিন্তা করেছে বলে জানিয়েছেন।
সোমবার সরেজমিন উপজেলার অষ্টমনিষা ইউনিয়নের হরিহরপুর, ঝবঝবিয়া, ভাঙ্গুড়া পৌর সদরের সারুটিয়া বাঁধপাড়া, ১নং ভাঙ্গুড়া ইউনিয়নের ঝিকলকতি, ভাবানী পুর, ভবানীপুর দিয়ারপাড়া, চরভাঙ্গুড়া, পারভাঙ্গুড়া ইউনিয়নের পাথরঘাটা, রাঙ্গালিয়া, ভেড়ামারা ও পাটুলিপাড়াসহ অর্ধশতাধিক খামার গ্রাম ঘুরে ও খামারিদের সাথে কথা বলে পশুপালনের একাল-সেকালের ইতিবৃতি জানা গেছে।
উপজেলার প্রাণিসম্পদ ও বিশিষ্ঠ খামারিরা জানান, প্রকৃতিভাবে চলনবিল অধ্যুষিত ভাঙ্গুড়া উপজেলায় গোবাদি পশু পালনের অনুকুল পরিবেশ থাকার ফলে অনেকে ব্যক্তি উদ্যোগে ও বাণিজ্যিকভাবে গোবাদি পশুর খামার গড়ে তুলেছেন। বিশেষ করে প্রতি বছরই কোরবানির ঈদকে সামনে রেখেই ব্যক্তিগত পর্যায়ে ও বাণিজ্যিক পর্যায়ে পশু মোটাতাজাকরণ ওপালনের ধুম পড়ে যায়।
খোঁজখবর নিয়ে জানা গেছে, এ উপজেলায় দেড়শতাধিক খামারে ১০ মণ থেকে ৩০মণ ওজনের দুই হাজারেরও বেশি গরু কোরবানির জন্য খামারে প্রস্তুত রয়েছে। বিশেষ করে ১ নং ভাঙ্গুড়া ইউনিয়নের ঝি-কলকতি গ্রামের আরএসআর এগ্রো ফার্মে গিয়ে দেখা যায় ২০ থেকে প্রায় ৩০ মণ ওজনের ২০ টি নেপালি ও ইন্ডিয়ান ভোল্ডার গরু রয়েছে। যার প্রতিটির অনুমানিক মূল্য পাঁচ থেকে প্রায় দশ লাখ টাকা করে।
তিনি জানান, গোখাদ্য হিসেবে ধানের কুড়া, গম-ঝব-ভুট্টো ও কলাইয়ের মিশ্রণ, খৈল, ভুষি, মিশ্রখাবার ও পাশাপাশি শুকনা খড় কখনো কখনো নেপালি ঘাস ব্যবহার করা হয়ে থাকে। বর্তমান গোখাদ্যের দাম চড়া বলেও জানান তিনি। তাছাড়াও খামারে একটি গরুর জন্য একটি ফ্যান সার্বক্ষণিক চালু রাখতে হয়। আবার মোশার উপদ্রব থেকে পশুকে রক্ষা করার জন্য সারা বছরই মোশারি ব্যবহার করতে হয়। সব মিলে বাণিজ্যিকভাবে গরু পালন করতে গেলে একটু বেশি খরচ পড়ে যায়। কিন্তু যদি ন্যায্য মূল্য না পাই তাহলে তাদের লোকসান গুনতে হবে বলেও জানান ।
অপরদিকে স্থানীয়ভাবে এতো মূল্যের গরু বিক্রি করতে গেলেও ক্রেতার অভাব বলেও জানান তিনি। এদিকে করোনাভাইরাসের কারণে বাহিরের ক্রেতা ও ব্যাপারি না আসায় খামারিরা তাদের পশুর উচিত বা ন্যায্য মূল্য না পাওয়ার আশষ্কা করছেন। তাই করোনাভাইরাসের প্রদূর্ভাবের মধ্যেও ভাঙ্গুড়ার বাহিরে সুদূর ঢাকা-চট্টগ্রামে নিয়ে কোরবানির উপযোগি পশু বিক্রির পরিকল্পনা করছেন বলে একাধিক খামারি জানিছেন।
এব্যাপারে উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ তোফাজ্জাল হোসেন জানান, এ উপজেলায় ছোট বড় ব্যক্তি ও বাণিজ্যিক মিলে ১৮৫ টি খামার রয়েছে। খামার গুলিতে কোরবানির জন্য প্রায় দুই হাজারের অধিক স্বাস্থ্যসম্মত ষাড় ও বলদ গরু কোরবানির উপযোগি রয়েছে। যে গুলি কোরবানির আগে বাজার নেওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে।