সিরাজগঞ্জের কাজিপুরে জীবিত স্বামীদের মৃত দেখিয়ে বিধবা ভাতা উত্তোলন
- প্রকাশিত সময় ০৬:৪০:১২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ অগাস্ট ২০২০
- / 115
সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধিঃ জীবিত স্বামীকে মৃত দেখিয়ে বিধবা ভাতা উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার মনসুরনগর ইউনিয়নের একাধিক নারীর বিরুদ্ধে।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য ও সমাজসেবা অফিসারের সহায়তায় দীর্ঘদিন ধরেই তারা ভাতা উত্তোলন করে আসছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। বইগুলো বর্তমানে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট জব্দ আছে।
অভিযোগে জানাগেছে, কাজলী, রহিতন, খোদেজা, ছবিরন ও শেফালিদের স্বামী এখনও জীবিত। এমনকি তাদের স্বামীদের নিয়ে রীতিমতো ঘর সংসার করছেন। কিন্তু উপজেলা সমাজসেবা অফিসের তালিকায় তাদের স্বামী মৃত। আর একারণে সমাজসেবা অফিসের সহায়তায় সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্যের কারিশমায় তারা সরকার প্রদত্ত বিধবাভাতা তুলে ভোগ করে আসছেন।
গত বৃহস্পতিবার এমন ঘটনাই ঘটেছে সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার মনসুর নগর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডে। আর ওই পাঁচ মহিলার বিধবা ভাতার বইগুলো জব্দ করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট জমা দিয়েছেন ওই ইউনিয়নের গ্রাম পুলিশ নজরুল ইসলাম।
জমাকৃত বইগুলোতে থাকা তথ্যমতে জানাযায়, মনসুর নগর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের শালদহ গ্রামের সহিদ আলীর স্ত্রী রহিতনের নামে সমাজসেবা অফিসের বিধবা ভাতা বই নম্বর ১১, ব্যাংক হিসাব নম্বর ৬২,একই গ্রামেরই আব্দুর রশিদের স্ত্রী খোদেজার বই নম্বর ৬৩২, হিসাব নম্বর ৩০৫, শাহজাহান আলীর স্ত্রী কাজলী খাতুন বই নম্বর ২১০৭, হিসাব নম্বর ৩০৭। ইয়াকুব আলীর স্ত্রী ছবিরণ ওরফে কদভানুর বই নম্বর ১৪, হিসাব নম্বর ৩০৯, আমজাদ হোসেনের স্ত্রী শেফালী খাতুন বই নম্বর ২১১০, হিসাব নম্বর ৩০১ ব্যবহার করে বিধবা ভাতা উত্তোলন করে আসছেন।
অপরদিকে এমন অভিযোগে একই ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের শালগ্রাম এর হাওয়া বেগম, স্বামী মজিবর, ছানোয়ারা খাতুন, স্বামী বেলাল হোসেন ও কোহিনুর, স্বামী দুদু মিয়া নামের কার্ডগুলোও জব্দ করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সুবিধাভোগী এক নারী জানিয়েছেন, সংশ্লিষ্ট সংরক্ষিত মহিলা ইউপি সদস্য নাজমা বেগম অর্থের বিনিময়ে এসব বই তৈরি করে দিয়েছেন। এমন অভিযোগের জবাবে ইউপি সদস্য নাজমা বেগম জানান,আমার সময়ে এরকম কোনো ঘটনা ঘটেনি। অভিযুক্ত বইগুলো আমার দায়িত্বের পূর্বে তৈরি হয়েছে।
কাজিপুর উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মোহাম্মদ আলাউদ্দিন জানান, আমাদের অফিসে যে তথ্যগুলো ইউপি সদস্যগণ জমা দেন আমরা সেটার ভিত্তিতে বই তৈরী করি। তবে এখন থেকে এসব আর হবে না। অনলাইন হচ্ছে। এমনিতেই সব বাতিল হয়ে যাবে।
কাজিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদ হাসান সিদ্দিকী জানান, সাহসিকতার পরিচয় দিয়ে বইগুলো গ্রাম পুলিশ উদ্ধার করে নিয়ে এসেছে। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।