ঢাকা ১১:৩৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞপ্তি :
সারাদেশের জেলা উপোজেলা পর্যায়ে দৈনিক স্বতঃকণ্ঠে সংবাদকর্মী নিয়োগ চলছে । আগ্রহী প্রার্থীগন জীবন বৃত্তান্ত ইমেইল করুন shatakantha.info@gmail.com // দৈনিক স্বতঃকণ্ঠ অনলাইন ও প্রিন্ট পত্রিকায় বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন ০১৭১১-৩৩৩৮১১, ০১৭৪৪-১২৪৮১৪

সিরাজগঞ্জের তাড়াশে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে ঐতিহ্যবাহী মন্দিরগুলো

বার্তাকক্ষ
  • প্রকাশিত সময় ০৬:৫০:১০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ অগাস্ট ২০২০
  • / 85

আমিনুল ইসলাম, সিরাজগঞ্জঃ সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলা সদরে দাঁড়িয়ে থাকা মন্দিরগুলো সংস্কারের অভাবে সংশ্লিষ্ট বিভাগের চোখের সামনেই ধ্বংসের উপক্রম হচ্ছে। মন্দিরগুলোর মূল্যবান জায়গাও বেদখল হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

তাড়াশে জমিদার আমলে তৎকালীন জমিদার বনওয়ারী লাল রায় বাহাদুরের সময়ে গোবিন্দ মন্দির, শিবমন্দির, ত্রিদল মঞ্চ, গোপাল মন্দিরসহ ৬-৭টি মন্দির নির্মিত হয়। মন্দিরগুলো সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পূজা অর্চনার পাশাপাশি তীর্থস্থানের মর্যাদা নিয়ে এখনও অধিষ্ঠিত। কথিত আছে, মন্দিরগুলোর কারণে সারা বিশ্বের সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কাছে তাড়াশ গুপ্ত বৃন্দাবন খ্যাত। কিন্তু সময়ের পরিক্রমায় মূল্যবান এসব প্রতœসম্পদ অরক্ষিত হওয়ার পাশাপাশি ধ্বংস হতে বসেছে।

তথ্য সুত্রে জানা যায়, তাড়াশে ১১০৫ বঙ্গাব্দে গোবিন্দ মন্দিও নির্মাণ করা হয়। তৎকালীন জমিদার রাজা রায় বাহাদুর মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেন। ২ একর ৬ শতক জায়গার ওপর প্রতিষ্ঠিত গোবিন্দ মন্দিরটি বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম গোবিন্দ মন্দির। মন্দিরটি বর্ণিল কারুকার্যে গড়া প্রতœসম্পদ। এখানে চলনবিল অঞ্চলের সনাতন ধর্মের লোকেরা পূজা করে থাকেন। এ ছাড়া বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে বিভিন্ন শ্রেনীর মানুষের মিলনমেলায় পরিণত হয়। কিন্তু মন্দিরটির বর্তমানে অবস্থা নাজুক।

স্থানীয় লোকজন নিজেদের উদ্যোগে স¤প্রতি কিছু সংস্কার করে মন্দিরটি রক্ষার চেষ্টা করছেন। শিবমন্দির ১১০০ বঙ্গাব্দে নির্মাণ করা হয়। টেরাকোটায় সমৃদ্ধ ১৭ শতাংশ জায়গার ওপর নির্মিত মন্দিরটি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণত যাদের সন্তান হয় না তারা ওই মন্দিরে পূজা দিয়ে সন্তান প্রার্থনা করেন। অনাবৃষ্টি, সন্তান লাভের জন্য প্রতিনিয়ত এখানে পূজা অর্চনা হয়ে থাকে। কিন্তু বর্তমানে পাশাপাশি ২টি শিবমন্দির শ্রীহীন হয়ে পড়ছে। টেরাকোটাগুলো ওঠে যাচ্ছে। সংস্কারের অভাবে ৪০০ বছরের পুরনো শিবমন্দির ধ্বংস হতে বসেছে। ১৩৩৯ বঙ্গাব্দে নির্মিত ত্রিদল মঞ্চ মন্দিরটির অবস্থা সবচেয়ে নাজুক।

এখানে রশিক লাল বিগ্রহ স্থাপন করে নিত্য পূজা দেওয়া হতো। ঝুলন উৎসবে এপার ও ওপার বাংলার মনীষীরা ভিড় জমাতেন। ৮ শতক জায়গার ওপর প্রতিষ্ঠিত মন্দিরটি ধ্বংসের দ্বার প্রাান্তে রয়েছে। পলেস্তারা ও ইট-সুরকি খুলে পড়ে যাচ্ছে। মন্দিরটি সংস্কারের অভাবে ঐতিহ্য হারিয়ে বিলীন হওয়ার উপক্রম।

এছাড়া তাড়াশে রয়েছে বিনোদবিহারী মন্দির, গোপাল মন্দির। এসব মন্দির ১৩০০ সালের গোড়ার দিকে নির্মাণ করা হয়। মন্দিরের শহর তাড়াশে মাসব্যাপী ঝুলন উৎসব, দুগ্ধ স্নান উৎসবসহ নানা ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানে হাজারো মানুষের তীর্থস্থানে পরিণত হয়।

তাড়াশ উপজেলা সনাতন সংস্থার সভাপতি সনজিত কর্মকার জানান, বিভিন্ন সময়ে সরকারে নিকট ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছে মন্দিরগুলো পুন:সংস্কার করার জন্য লিখিত ও মৌখিকভাবে আবেদন জানানো হয়েছে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হচ্ছেনা। তাই সরকারী সংশ্লিষ্টদের নিকট দাবী জানাচ্ছি তারা যেন মন্দিরগুলো সংস্কার করে দিয়ে হাজারো ধর্মালম্বীদের পুজা অর্চনা করার সুযোগ করে দেন।

সিরাজগঞ্জের তাড়াশে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে ঐতিহ্যবাহী মন্দিরগুলো

প্রকাশিত সময় ০৬:৫০:১০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ অগাস্ট ২০২০

আমিনুল ইসলাম, সিরাজগঞ্জঃ সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলা সদরে দাঁড়িয়ে থাকা মন্দিরগুলো সংস্কারের অভাবে সংশ্লিষ্ট বিভাগের চোখের সামনেই ধ্বংসের উপক্রম হচ্ছে। মন্দিরগুলোর মূল্যবান জায়গাও বেদখল হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

তাড়াশে জমিদার আমলে তৎকালীন জমিদার বনওয়ারী লাল রায় বাহাদুরের সময়ে গোবিন্দ মন্দির, শিবমন্দির, ত্রিদল মঞ্চ, গোপাল মন্দিরসহ ৬-৭টি মন্দির নির্মিত হয়। মন্দিরগুলো সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পূজা অর্চনার পাশাপাশি তীর্থস্থানের মর্যাদা নিয়ে এখনও অধিষ্ঠিত। কথিত আছে, মন্দিরগুলোর কারণে সারা বিশ্বের সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কাছে তাড়াশ গুপ্ত বৃন্দাবন খ্যাত। কিন্তু সময়ের পরিক্রমায় মূল্যবান এসব প্রতœসম্পদ অরক্ষিত হওয়ার পাশাপাশি ধ্বংস হতে বসেছে।

তথ্য সুত্রে জানা যায়, তাড়াশে ১১০৫ বঙ্গাব্দে গোবিন্দ মন্দিও নির্মাণ করা হয়। তৎকালীন জমিদার রাজা রায় বাহাদুর মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেন। ২ একর ৬ শতক জায়গার ওপর প্রতিষ্ঠিত গোবিন্দ মন্দিরটি বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম গোবিন্দ মন্দির। মন্দিরটি বর্ণিল কারুকার্যে গড়া প্রতœসম্পদ। এখানে চলনবিল অঞ্চলের সনাতন ধর্মের লোকেরা পূজা করে থাকেন। এ ছাড়া বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে বিভিন্ন শ্রেনীর মানুষের মিলনমেলায় পরিণত হয়। কিন্তু মন্দিরটির বর্তমানে অবস্থা নাজুক।

স্থানীয় লোকজন নিজেদের উদ্যোগে স¤প্রতি কিছু সংস্কার করে মন্দিরটি রক্ষার চেষ্টা করছেন। শিবমন্দির ১১০০ বঙ্গাব্দে নির্মাণ করা হয়। টেরাকোটায় সমৃদ্ধ ১৭ শতাংশ জায়গার ওপর নির্মিত মন্দিরটি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণত যাদের সন্তান হয় না তারা ওই মন্দিরে পূজা দিয়ে সন্তান প্রার্থনা করেন। অনাবৃষ্টি, সন্তান লাভের জন্য প্রতিনিয়ত এখানে পূজা অর্চনা হয়ে থাকে। কিন্তু বর্তমানে পাশাপাশি ২টি শিবমন্দির শ্রীহীন হয়ে পড়ছে। টেরাকোটাগুলো ওঠে যাচ্ছে। সংস্কারের অভাবে ৪০০ বছরের পুরনো শিবমন্দির ধ্বংস হতে বসেছে। ১৩৩৯ বঙ্গাব্দে নির্মিত ত্রিদল মঞ্চ মন্দিরটির অবস্থা সবচেয়ে নাজুক।

এখানে রশিক লাল বিগ্রহ স্থাপন করে নিত্য পূজা দেওয়া হতো। ঝুলন উৎসবে এপার ও ওপার বাংলার মনীষীরা ভিড় জমাতেন। ৮ শতক জায়গার ওপর প্রতিষ্ঠিত মন্দিরটি ধ্বংসের দ্বার প্রাান্তে রয়েছে। পলেস্তারা ও ইট-সুরকি খুলে পড়ে যাচ্ছে। মন্দিরটি সংস্কারের অভাবে ঐতিহ্য হারিয়ে বিলীন হওয়ার উপক্রম।

এছাড়া তাড়াশে রয়েছে বিনোদবিহারী মন্দির, গোপাল মন্দির। এসব মন্দির ১৩০০ সালের গোড়ার দিকে নির্মাণ করা হয়। মন্দিরের শহর তাড়াশে মাসব্যাপী ঝুলন উৎসব, দুগ্ধ স্নান উৎসবসহ নানা ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানে হাজারো মানুষের তীর্থস্থানে পরিণত হয়।

তাড়াশ উপজেলা সনাতন সংস্থার সভাপতি সনজিত কর্মকার জানান, বিভিন্ন সময়ে সরকারে নিকট ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছে মন্দিরগুলো পুন:সংস্কার করার জন্য লিখিত ও মৌখিকভাবে আবেদন জানানো হয়েছে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হচ্ছেনা। তাই সরকারী সংশ্লিষ্টদের নিকট দাবী জানাচ্ছি তারা যেন মন্দিরগুলো সংস্কার করে দিয়ে হাজারো ধর্মালম্বীদের পুজা অর্চনা করার সুযোগ করে দেন।