পাবনার ইছামতি নদী দখলমুক্ত ও খননের দাবিতে পাবনা জেলা শাখার উদ্যোগে বিশাল মানববন্ধন
- প্রকাশিত সময় ০৪:৩০:৩৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩১ অক্টোবর ২০২০
- / 96
স্টাফ রিপোর্টার: পাবনার ঐতিহ্যবাহী ইছামতি নদীর অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ ও খনন করে বহমান নদীতে পরিণত করার দাবিতে শনিবার বেলা ১১টার সময় পাবনা প্রেসক্লাবের সামনে এক বিশাল মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন পাবনা জেলা শাখার আয়োজনে এ বিশাল মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের পাবনা জেলা শাখার সহ-সভাপতি বিশিষ্ট সমাজসেবক, শিক্ষানুরাগী এ্যাড. তোসলিম হাসান সুমন।
স্বাগত বক্তব্য দেন বা’পা পাবনা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক, বিলুপ্তপ্রায় ইছামতি নদী উদ্ধারে দুই দশকের আন্দোলন-সংগ্রামে উচ্চকণ্ঠ বিশিষ্ট সাংবাদিক-কলামিস্ট আব্দুল হামিদ খান।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- পাবনার বিশিষ্ট নারী নেত্রী সেলিম নাজির উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাসিনা আক্তার রোজী, সাঁথিয়া ডিগ্রী কলেজের উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক আব্দুদ দাইয়ান দুলাল, শামসুল হুদা ডিগ্রী কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম বাবু, পাবনা জেলা শিশু একাডেমির সাবেক কর্মকর্তা এনামুল হক খান মজলিশ, টেবুনিয়া শামসুল হুদা ডিগ্রী কলেজের সহকারী অধ্যাপক আসাদুজ্জামান খোকন, টেবুনিয়া হাজেরা খাতুন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বুরহানুল ইসলাম, সহকারী শিক্ষক মোঃ আবু সাইদ, আনসার ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংক রাজশাহী বিভাগের সাবেক পরিচালক আব্দুল খালেক খান, পাবনা পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান এপ্রিল, সমাজসেবক রুবায়েত আলী মুনু, সুজানগর কুড়িপাড়া দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষক, সাংবাদিক সাহানুর রহমান প্রমুখ।
মানববন্ধনের এই আলোচনা সভাটি পরিচালনা করেন পাবনা শাখার সদস্য ইঞ্জিনিয়ার আবুল কালাম আজাদ। সভাপতির বক্তব্যে এ্যাড. তোসলিম হাসান সুমন স্মৃতিচারণ করে বলেন, যে ইছামতি নদীতে আমাদের শৈশব কেটেছে সাঁতার কেটে, ব্রীজের উপর থেকে লাফ দিয়ে ¯্রােতের সাথে দূরে গিয়ে আবার ভেসে ওঠা- এসবই এখন দূর অতীত স্মৃতি।
কোথায় পাব এই অনাবিল আনন্দ! তিনি প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানিয়ে বলেন, দ্রুততার সাথে অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ করে আবার ইছামতি নদীর প্রাণ ফিরিয়ে আনতে হবে।
ইছামতি নদীতে আবার আমরা নৌকায় ভাসতে চাই। ইছামিত নদীই হবে পাবনার যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম।
স্বাগত বক্তব্যে ইছামতি নিয়ে দীর্ঘদিন আন্দোলন-সংগ্রামরত বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন পাবনা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক আব্দুল হামিদ খান বলেন, ইছামতি নিয়ে আমরা দুই দশক ধরে আন্দোলন করে আসছি।
যে ইছামতি নদী একসময় পাবনার পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করতো আজ সেই ইছামতি নদী পরিবেশের বিপর্যয় ঘটাচ্ছে। প্রতি মুহূর্তে ইছামতির ময়লা- আবর্জনার দুর্গন্ধ বাতাসে বিষ ছড়াচ্ছে।
তিনি বলেন, পাবনার কিছু ভূমি দস্যু, অতি লোভী মানুষ ইছামতি নদীর দুই পাড় দখল করে বাড়িঘর নির্মাণ করে নদীটিকে গলা টিপে হত্যা করেছে। দখল-দূষণে এক সময়ের পাবনার ঐতিহ্য ইছামতি নদীটি আজ বিলুপ্তপ্রায়।
এরপরও একটি স্বার্থান্বেষী মহল উপরওয়ালাদের সাথে যোগাসাজশে ইছামতি নদীর ওপর অনেকগুলো ফুট ওভারব্রীজ সরকারি দফতর থেকে তৈরি করেছে।
যারা এই ফুট ওভারব্রীজ তৈরির সাথে জড়িত, তারা পাবনার মানচিত্র থেকে ইছামতি নদীকে মুছে ফেলার ষড়যন্ত্র করছে বলে
তিনি দ্ব্যর্থহীনভাবে উল্লেখ করেন।
বা’পা পাবনা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক আব্দুল হামিদ খান আরও বলেন, যতদিন এই ইছামতি নদী
দখলদার উচ্ছেদ করে একটি প্রবাহমান নদীতে পরিণত না হবে ততদিন বা’পার কর্মীরা আন্দোলন চালিয়ে যাবে।
দীর্ঘ বক্তৃতায় তিনি বলেন, অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করে নদীটি খনন করলে সারাবছর নদীতে পানি টলমল করবে, নদীর দুপাশে ওয়াকওয়ে নির্মাণ করে পার্ক সিস্টেমে সৌন্দর্যমন্ডিত করা হলে একটি দৃষ্টিনন্দন শহরে পরিণত হবে পাবনা।
পাবনার ইছামতি নদী বহমান নদীতে পরিণত হলে নদী পাড়ের বসতিরাই সবচেয়ে বেশি উপকৃত হবে। তারা বিশুদ্ধ বাতাস
পাবে, নির্মল পরিবেশ পাবে, বিনোদনের জায়গা পাবে।
এককথায় বসবাস উপযোগী স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ বিরাজ করবে সারাবছর। অনতিবিলম্বে থেমে থাকা অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ অভিযান শুরু করার জন্য বা’পার পক্ষ থেকে প্রশাসনের প্রতি তিনি জোর দাবি জানান।