ঢাকা ০৫:৩৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞপ্তি :
সারাদেশের জেলা উপোজেলা পর্যায়ে দৈনিক স্বতঃকণ্ঠে সংবাদকর্মী নিয়োগ চলছে । আগ্রহী প্রার্থীগন জীবন বৃত্তান্ত ইমেইল করুন shatakantha.info@gmail.com // দৈনিক স্বতঃকণ্ঠ অনলাইন ও প্রিন্ট পত্রিকায় বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন ০১৭১১-৩৩৩৮১১, ০১৭৪৪-১২৪৮১৪

সাঁথিয়ায় বিলে সুতিজালের বাঁধ দিয়ে পানি নিস্কাশনে বাঁধা দেওয়ায় পেঁয়াজের বীজতলা ও রোপন বাধাগ্রস্থ

বার্তাকক্ষ
  • প্রকাশিত সময় ০৭:১৮:৩৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২ নভেম্বর ২০২০
  • / 110

সাঁথিয়া (পাবনা) প্রতিনিধিঃ পাবনার সাঁথিয়ার প্রতিটি কৃষকের ঘরে ঘরে স্তুপ পড়ে আছে ঈশ্বরদী থেকে কেনা ছাই। উপজেলার বিলগুলোর পানি নিস্কাশনের দিকে তাকিয়ে রয়েছে তারা। পানি কমলেই বিলম্ব না করে ছাই ছিটিয়ে পেঁয়াজের বীজ তলা তৈরি করা হবে। বীজতলা তৈরির আগেই তাদের গলার কাটা হয়ে দেখা দিয়েছে সূতিজালের বাঁধ।

কৃষকদের দাবি ক্যানালের মুখে সুতিজালের বাঁধ দিয়ে পানি নিস্কাশনে বাঁধা দেওয়ায় জমিতে সময় মত পেঁয়াজের বীজতলা ও পেঁয়াজ রোপন করা সম্ভব হয় না। অন্যান্য রবি শস্যের আবাদ হয় বাধাগ্রস্থ হচ্ছে।

সাঁথিয়া উপজেলার পেঁয়াজ চাষীদের বীজতলা তৈরিতে ছাই বাবদ অতিরিক্ত প্রায় আড়াই কোটি টাকা অতিরিক্ত খরচ করতে হচ্ছে সুতিজালের কারণে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার ঘুঘুদহ, কাটিয়াদহ, আড়িয়া বিল, মুক্তাহার বিল, জামাইদহ, সোনাই বিল, গঙ্গাসাগরসহ বিভিন্ন বিলের প্রবেশ দ্বার ও পানি বের হবার রাস্তা মুক্তাহার বিল হতে কাকেশ্বরী নদী পর্যন্ত কতিপয় ব্যক্তি প্রতিবারের মত এবছরও অবৈধ ভাবে ২০টি পয়েন্টে সুতিজালের বাঁধ স্থাপন করেছে।

সাঁথিয়া-২৪ মাইল সড়কের তালপট্টী ব্রীজে সূতি জালের বাঁধ তৈরি করে ঘুঘুদহের দুটি বিল ও মুক্তাহার বিলের পানি নিস্কাশন বাঁধাগ্রস্থ করে সুতিজাল দিয়ে মাছ শিকার করা হচ্ছে।

সরেজমিন ঘুঘুদহ ও মুক্তাহার বিল ঘুরে দেখা গেছে সাঁথিয়া-গৌড়ীগ্রাম সড়কের সাতআনি ব্রিজের পূর্বপাশে ও তালপট্রী ব্রীজের পশ্চিম পাশে (গুচ্ছগ্রাম সংলগ্ন) কাকেশ্বরী নদীতে জাল ও বাঁশ দিয়ে বাঁধ তৈরি করা হয়েছে। এর পাশাপাশি তালপট্টী থেকে সাতআনির ব্রীজ পর্যন্ত ছোট বাঁধ দিয়ে পানি প্রবাহবন্ধ করে মাছ শিকার করছে প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় কতিপয় মাছ শিকারিরা।

এদিকে সঠিক সময়ে পানি নিস্কাশন না হওয়ায় চিন্তিত হয়ে পড়েছে এলাকার কৃষকরা। তাদের প্রধান ফসল পেঁয়াজের বীজতলা তৈরির সময় পার হয়ে যাচ্ছে। পানি নিস্কাশনের অভাবে কৃষকরা বাড়তি খরচ করে ঈশ্বরদী থেকে ছাই কিনে কাদাঁ মাটিতে পেঁয়াজের বীজতলা তৈরি করছেন।

ঘুঘুদহ বিল পারের সড়ক দিয়ে কৃষকদের ক্রয়করা লক্ষ লক্ষ বস্তা ছাই স্তুপ করে রাখা হয়েছে। পানি কমলেই তারা অপেক্ষা না করে কাঁদা মাটিতেই বীজতলা তৈরি করবে। শুধু ঘুঘুদহ না প্রতিটি বিলের প্রবেশ মুখে বাঁধ দেওয়ায় সব এলাকার কৃষকই এখন ছাইয়ের ব্যবহার শুরু করেছে।

এছাড়াও জলাবদ্ধতার কারণে পেঁয়াজের বীজতলা তৈরিতে বিলম্বিত হচ্ছে উপজেলার কাটিয়াদহ, আড়িয়ার বিল, সুক্তাহার, জামাইদহ, সোনাইবিল সহ বিভিন্ন বিল পারের চাষীদের।

সাঁথিয়া পৌরসভার কাজীপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল রাজ্জাক ও কাশিনাথপুর ইউনিয়নের কল্যানপুর গ্রামের কৃষক তোমসের, আব্দুল বাতেন, হুইখালী গ্রামের কৃষক আসলামসহ অনেকেই জানান, সময় মত বিলের পানি নিস্কাশন না হওয়ায় আমরা বাধ্য হয়ে ছাই ব্যবহার করছি। জমিতে চাষ দিয়ে বীজতলা তৈরি করলে কমপক্ষে ১মাস বিলম্বীত হবে। এতে পেঁয়াজ রোপন নাবি হবে। কাঁদা মাটিতে পেঁয়াজের বীজ তলা তৈরিতে আমাদের বেশি টাকা গুণতে হচ্ছে। ১ কেজি পেঁয়াজের বীজতলা তৈরিতে ১ হাজার টাকার ছাই অতিরিক্ত লাগছে।

এদিকে সোমবার ২ নভেম্বর সকালে তালপট্টী ও সাতানি চরের সূতিজাল নাম মাত্র অপসারণ করেন বেড়া পওর বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী আব্দুল খালেক। তারা বাঁশ থেকে কিছু জাল সরিয়ে চলে যান। কৃষকদের দাবি পূর্ণরায় ও জাল স্থাপন করে পানি নিস্কাশনে বাঁধা সৃষ্টি করবে।

আব্দুল খালেক জানান, কাকেশ্বরী নদীতে ২০টি সূতিজাল অপসারণের জন্য স্বস্ব ব্যক্তিকে নোটিশ দেই। তারা বাঁধ অপসারণ না করায় লোকজন দিয়ে আমরা অপসারণ কাজ আজ থেকে শুরু করছি।

সাঁথিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার এসএম জামাল আহম্মেদ বলেন, ইতো মধ্যে বাঁধ অপসারণ শুরু হয়েছে। অল্প সময়ে সমস্ত সূতিজালের বাঁধ অপসারণ করা হবে।

সাঁথিয়ায় বিলে সুতিজালের বাঁধ দিয়ে পানি নিস্কাশনে বাঁধা দেওয়ায় পেঁয়াজের বীজতলা ও রোপন বাধাগ্রস্থ

প্রকাশিত সময় ০৭:১৮:৩৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২ নভেম্বর ২০২০

সাঁথিয়া (পাবনা) প্রতিনিধিঃ পাবনার সাঁথিয়ার প্রতিটি কৃষকের ঘরে ঘরে স্তুপ পড়ে আছে ঈশ্বরদী থেকে কেনা ছাই। উপজেলার বিলগুলোর পানি নিস্কাশনের দিকে তাকিয়ে রয়েছে তারা। পানি কমলেই বিলম্ব না করে ছাই ছিটিয়ে পেঁয়াজের বীজ তলা তৈরি করা হবে। বীজতলা তৈরির আগেই তাদের গলার কাটা হয়ে দেখা দিয়েছে সূতিজালের বাঁধ।

কৃষকদের দাবি ক্যানালের মুখে সুতিজালের বাঁধ দিয়ে পানি নিস্কাশনে বাঁধা দেওয়ায় জমিতে সময় মত পেঁয়াজের বীজতলা ও পেঁয়াজ রোপন করা সম্ভব হয় না। অন্যান্য রবি শস্যের আবাদ হয় বাধাগ্রস্থ হচ্ছে।

সাঁথিয়া উপজেলার পেঁয়াজ চাষীদের বীজতলা তৈরিতে ছাই বাবদ অতিরিক্ত প্রায় আড়াই কোটি টাকা অতিরিক্ত খরচ করতে হচ্ছে সুতিজালের কারণে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার ঘুঘুদহ, কাটিয়াদহ, আড়িয়া বিল, মুক্তাহার বিল, জামাইদহ, সোনাই বিল, গঙ্গাসাগরসহ বিভিন্ন বিলের প্রবেশ দ্বার ও পানি বের হবার রাস্তা মুক্তাহার বিল হতে কাকেশ্বরী নদী পর্যন্ত কতিপয় ব্যক্তি প্রতিবারের মত এবছরও অবৈধ ভাবে ২০টি পয়েন্টে সুতিজালের বাঁধ স্থাপন করেছে।

সাঁথিয়া-২৪ মাইল সড়কের তালপট্টী ব্রীজে সূতি জালের বাঁধ তৈরি করে ঘুঘুদহের দুটি বিল ও মুক্তাহার বিলের পানি নিস্কাশন বাঁধাগ্রস্থ করে সুতিজাল দিয়ে মাছ শিকার করা হচ্ছে।

সরেজমিন ঘুঘুদহ ও মুক্তাহার বিল ঘুরে দেখা গেছে সাঁথিয়া-গৌড়ীগ্রাম সড়কের সাতআনি ব্রিজের পূর্বপাশে ও তালপট্রী ব্রীজের পশ্চিম পাশে (গুচ্ছগ্রাম সংলগ্ন) কাকেশ্বরী নদীতে জাল ও বাঁশ দিয়ে বাঁধ তৈরি করা হয়েছে। এর পাশাপাশি তালপট্টী থেকে সাতআনির ব্রীজ পর্যন্ত ছোট বাঁধ দিয়ে পানি প্রবাহবন্ধ করে মাছ শিকার করছে প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় কতিপয় মাছ শিকারিরা।

এদিকে সঠিক সময়ে পানি নিস্কাশন না হওয়ায় চিন্তিত হয়ে পড়েছে এলাকার কৃষকরা। তাদের প্রধান ফসল পেঁয়াজের বীজতলা তৈরির সময় পার হয়ে যাচ্ছে। পানি নিস্কাশনের অভাবে কৃষকরা বাড়তি খরচ করে ঈশ্বরদী থেকে ছাই কিনে কাদাঁ মাটিতে পেঁয়াজের বীজতলা তৈরি করছেন।

ঘুঘুদহ বিল পারের সড়ক দিয়ে কৃষকদের ক্রয়করা লক্ষ লক্ষ বস্তা ছাই স্তুপ করে রাখা হয়েছে। পানি কমলেই তারা অপেক্ষা না করে কাঁদা মাটিতেই বীজতলা তৈরি করবে। শুধু ঘুঘুদহ না প্রতিটি বিলের প্রবেশ মুখে বাঁধ দেওয়ায় সব এলাকার কৃষকই এখন ছাইয়ের ব্যবহার শুরু করেছে।

এছাড়াও জলাবদ্ধতার কারণে পেঁয়াজের বীজতলা তৈরিতে বিলম্বিত হচ্ছে উপজেলার কাটিয়াদহ, আড়িয়ার বিল, সুক্তাহার, জামাইদহ, সোনাইবিল সহ বিভিন্ন বিল পারের চাষীদের।

সাঁথিয়া পৌরসভার কাজীপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল রাজ্জাক ও কাশিনাথপুর ইউনিয়নের কল্যানপুর গ্রামের কৃষক তোমসের, আব্দুল বাতেন, হুইখালী গ্রামের কৃষক আসলামসহ অনেকেই জানান, সময় মত বিলের পানি নিস্কাশন না হওয়ায় আমরা বাধ্য হয়ে ছাই ব্যবহার করছি। জমিতে চাষ দিয়ে বীজতলা তৈরি করলে কমপক্ষে ১মাস বিলম্বীত হবে। এতে পেঁয়াজ রোপন নাবি হবে। কাঁদা মাটিতে পেঁয়াজের বীজ তলা তৈরিতে আমাদের বেশি টাকা গুণতে হচ্ছে। ১ কেজি পেঁয়াজের বীজতলা তৈরিতে ১ হাজার টাকার ছাই অতিরিক্ত লাগছে।

এদিকে সোমবার ২ নভেম্বর সকালে তালপট্টী ও সাতানি চরের সূতিজাল নাম মাত্র অপসারণ করেন বেড়া পওর বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী আব্দুল খালেক। তারা বাঁশ থেকে কিছু জাল সরিয়ে চলে যান। কৃষকদের দাবি পূর্ণরায় ও জাল স্থাপন করে পানি নিস্কাশনে বাঁধা সৃষ্টি করবে।

আব্দুল খালেক জানান, কাকেশ্বরী নদীতে ২০টি সূতিজাল অপসারণের জন্য স্বস্ব ব্যক্তিকে নোটিশ দেই। তারা বাঁধ অপসারণ না করায় লোকজন দিয়ে আমরা অপসারণ কাজ আজ থেকে শুরু করছি।

সাঁথিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার এসএম জামাল আহম্মেদ বলেন, ইতো মধ্যে বাঁধ অপসারণ শুরু হয়েছে। অল্প সময়ে সমস্ত সূতিজালের বাঁধ অপসারণ করা হবে।