সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধিঃ সিরাজগঞ্জের যমুনা নদীতে রবিবার নির্মান করা হচ্ছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেল সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর। এরই মাধ্যমে সহজেই পারাপার করতে পারবে উত্তর, দক্ষিন ও পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন পথের ট্রেনগুলো।

এতে রেলযাত্রীদের ভোগান্তী কমে আসার পাশাপাশি সিরাজগঞ্জ তথা উত্তরবঙ্গের ব্যাবসা বানিজ্যের প্রসার ঘটবে বলে ধারনা করছেন স্থানীয়রা।

আর রেলমন্ত্রী বলছেন এই সেতু চালু হলে রেল যোগাযোগের ক্ষেত্রে একটি মাইল ফলক হবে।

আগামীকাল ২৯ নভেম্বর রবিবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্স এর মাধ্যমে এই রেল সেতুর ভিক্তিপ্রস্থর স্থাপন করবেন।

রেল বিভাগ ও জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, উত্তরবঙ্গের প্রবেশ দ্বার সিরাজগঞ্জ। এই মহাসড়ক দিয়ে বঙ্গবন্ধু সেতু হয়ে প্রতিদিন বগুড়া, রংপুর, দিনাজপুর, রাজশাহী, নাটোর, খুলনা, কুষ্টিয়া সহ উত্তর, দক্ষিন ও পশ্চিমাঞ্চলের ২২ জেলার পরিবহন চলাচল করে।

ফলে এই গোলচত্তর জুড়ে প্রায়ই লেগে থাকে যানজট। যার কারনে ভোগান্তী পোহাতে হয় যাত্রী ও চালকদের। এই পথের দূর্ভোগ কমাতে সড়ক ও জনপথ বিভাগ হাটিকুমরুল গোলচত্ত্বর এলাকায় নির্মান করতে যাচ্ছে আন্তজার্তিক মানের ইন্টারচেইঞ্জ।

অপরদিকে রেল বিভাগ নির্মাণ করবে আলাদা বঙ্গবন্ধু রেল সেতু। উত্তরবঙ্গের সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ করতে সিরাজগঞ্জ শহর হয়ে বগুড়া পর্যন্ত রেললাইন স্থাপন করার দাবী সিরাজগঞ্জ স্বার্থরক্ষা সংগ্রাম কমিটি দীর্ঘদিন ধরে করে আসালেও অতীতে তেমন কোন সারা মেলেনি।

কিন্তু বর্তমান রেলমন্ত্রীর ইচ্ছা ও প্রধানমন্ত্রীর এমন উদ্যেগে স্বাগত জানাচ্ছে পুরো সিরাজগঞ্জবাসী। বাংলাদেশ রেল বিভাগের মহা-পরিচালক মো.শামছুজ্জামান জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারসাম্যপূর্ণ রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন।

এ কারণে বঙ্গবন্ধু সেতুর ৩০০ মিটার উজানে ডেডিকেটেড ডাবল লেনের রেলসেতু নির্মাণ করা হচ্ছে। এটি নির্মাণ হলে দুটো ট্রেন একসঙ্গে যেতে পারবে এবং ১শ কিলোমিটার বেগে সেতুটি অতিক্রম করতে পারবে।

সিরাজগঞ্জ স্বার্থরক্ষা সংগ্রাম কমিটির নেতা নব কুমার কর্মকতার জানান, এই রেল সেতু নির্মানের ফলে একদিকে সময় সাশ্রয়ী হবে এবং ব্যবসা বাজিন্যে চাঞ্চল্য ফিরে আসবে। যা দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা রাখবে।

সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসক ড.ফারুক আহাম্মদ জানান, ডাবল লাইন ডুয়েল গেজ এই রেল সেতু হওয়ার পর ক্রসিং ছাড়াই সেতু উপর দিয়ে একশত কিলোমিটার বেগে একই সাথে দুটি ট্রেন চলাচল করতে পারবে। পাশাপাশি সব ধরনের মালামাল পরিবহন করতে পারবে ।

এদিকে সম্প্রতি রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন সিরাজগঞ্জে রেল সেতু নির্মান উপলক্ষে প্রস্তুতি সভায় জানান, আমাদের পরীক্ষিত বন্ধু জাপানের অর্থায়নে এ প্রকল্পটি জাইকা বাস্তবায়ন করছে।

টেন্ডারসহ সমস্ত প্রক্রিয়া আমরা সম্পন্ন করেছি। সেতুটি নির্মানে ব্যায় ধরা হয়েছে ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি টাকা। যার মধ্যে বাংলাদেশ সরকার দিচ্ছে ৪ হাজার ৬৩১ কোটি টাকা আর জাইকা দিচ্ছে ১২ হাজার ১৪৯ কোটি টাকা।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের পর আনুষ্ঠানিকভাবে এর কাজ শুরু করা হবে এবং ২০২৪ সালের আগস্ট মাসে প্রকল্পের কাজ শেষ হবে।

আরও পড়ুনঃ সিরাজগঞ্জে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত