ঢাকা ০৪:২৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞপ্তি :
সারাদেশের জেলা উপোজেলা পর্যায়ে দৈনিক স্বতঃকণ্ঠে সংবাদকর্মী নিয়োগ চলছে । আগ্রহী প্রার্থীগন জীবন বৃত্তান্ত ইমেইল করুন shatakantha.info@gmail.com // দৈনিক স্বতঃকণ্ঠ অনলাইন ও প্রিন্ট পত্রিকায় বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন ০১৭১১-৩৩৩৮১১, ০১৭৪৪-১২৪৮১৪

পাবনার ঈশ্বরদীর লক্ষীকুন্ডায় আবারো চালু হয়েছে ৫২টি অবৈধ ইটভাটা

বার্তাকক্ষ
  • প্রকাশিত সময় ০৬:০১:২৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২০
  • / 169

ঈশ্বরদী (পাবনা) সংবাদদাতাঃ ঈশ্বরদীর লক্ষীকুন্ডা ইউনিয়নেই পূর্ণোদমে আবারো চালু হয়েছে ৫২টি অবৈধ ইটভাটা।

কৃষি জমি বিনষ্ট, ভাটায় কাঠ পোড়ানো, নিয়মনীতি লংঘন ও পরিবেশের ভারসাম্যহীনতার বিষয় উল্লেখ করে গত নভেম্বরে বিভিন্ন পত্রিকায় চলতি মৌসুমে ইট পোড়ানোর প্রস্তুতি চলছে বলে খবর প্রকাশিত হয়। নেয়া হয়নি বন্ধের উদ্যোগ এসব ইটভাটা। ইতোমধ্যেই এসব ইটভাটায় জ্বলেছে। নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে কাঠ দিয়ে ইট পোড়ানো ও বিক্রি হচ্ছে।

স্থানীয় প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে অবৈধ ভাটা উচ্ছেদে কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। কৃষিজমি বিনষ্ট করে গড়ে ওঠা এসব অবৈধ ইটভাটা দীর্ঘদিন ধরে কিভাবে চালু রয়েছে, এবিষয়ে বিশিষ্ঠজনরা বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। ইটভাটার ইট পরিবহনের কারণে ওই ইউনিয়ন ও পার্শ্ববর্তী সাহাপুর ইউনিয়নের রাস্তাঘাটের বেহাল অবস্থা। বিদ্ধস্ত রাস্তার কারণে চরম ভেগান্তি পোহাতে হচ্ছে বলে এলাকাবাসীরা অভিযোগ করেছেন।

ঈশ্বরদী শহর হতে প্রায় ১২ কিলোমিটার দূরবর্তী প্রত্যন্ত পদ্মা নদী তীরবর্তী লীকুন্ডায় গড়ে উঠেছে এসব ইটভাটা। লীকুন্ডার তিনটি গ্রাম কামালপুর, দাদাপুর ও বিলকেদার গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কৃষি জমির উপর এসব ইট ভাটায় ইট পোড়ানো হচ্ছে।

ভাটা নির্মাণের জন্য চিমনীর উচ্চতা ও আনুসঙ্গিক যে নির্দেশনা রয়েছে তা অধিকাংশ ভাটা মালিকারা মানেননি। ভাটাগুলোতে জ্বালানী হিসেবে কয়লার পরিবর্তে কাঠের খড়ি ব্যবহার হচ্ছে। এখানে রয়েছে ৫০টি অটোফিস এবং ২টি জিকজ্যাক (হাওয়া) ভাটা। অটোফিস ভাটায় কাঠ দিয়ে ইট পোড়ানো হয়।

এসব ভাটা দিয়ে কালো ধোঁয়া নির্গত হয়ে এলাকার পরিবশে সবসময় দুষণযুক্ত করে রাখে। ইটভাটার কারণে অত্র এলাকায় অবাধে নিধন হচ্ছে গাছপালা। বেশির ভাগ ভাটার মালিকরা ইট তৈরির জন্য অবৈধ উপায়ে পদ্মার চর হতে মাটি সংগ্রহ করে থাকে।

ভাটার মালিকদের সরকারকে ভ্যাট-ট্যাক্স কিছুই দিতে হয়না বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে। ফ্রিতেই চলছে এসব ইটভাট। সরেজমিনে এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে এসব অভিযোগের সত্যতা মিলেছে।

ঈশ্বরদী উপজেলা কৃষি অফিসার আব্দুল লতিফ জানান, বিপুল সংখ্যক ইটভাটা গড়ে উঠায় লক্ষীকুন্ডায় কৃষি জমির পরিমাণ কমে গেছে। ইটভাটার নিঃসরিত কালো ধোঁয়ায় ও ছাইয়ে আম-লিচু-কাঁঠালের বাগান এবং ফসলী জমির উপর প্রভাব পড়বে। পলিউশনের প্রভাবে স্বাভাবিক জনজীবন ক্রমশ: হুমকীর সম্মুখিন হবে।

এলাকার জাতীয় সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা নূরুজ্জামান বিশ্বাসকে অবৈধ ইটভাটা প্রসংগে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, পরিবেশ ও কৃষিজমি বিনষ্ট করে দীর্ঘদিন ধরে কিভাবে এক ইউনিয়নে এতোগুলো অবৈধ ইটভাটা চালু রয়েছে তা আমার নলেজের বাইরে।

ঈশ্বরদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার পি এম ইমরুল কায়েস জানান, এসব অবৈধ ইটভাটায় কাঠ দিয়ে ইট পোড়ানোর ফলে পরিবেশ দুষণ এবং কৃষি ফসলের উপর প্রভাব পড়ছে। উচ্ছেদের জন্য ইতোমধ্যেই জেলা প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করা হয়েছে। অচিরেই উচ্ছেদ অভিযান শুরু হবে।

উপজেলা প্রকৌশলী এনামুল কবীর বলেন, ইটভাটার ইট ও ড্রামট্রাকে বালু পরিবহনের জন্য ওই এলাকার রাস্তাঘাটের অবস্থা শোচনীয়। নতুন করে রাস্তা নির্মাণ করা ছাড়া কোন উপায় নেই। ভারী এসব পরিবহন চলাচল বন্ধ না হলে নতুন রাস্তা নির্মাণ করেও কোন লাভ হবে না।

এব্যাপারে পরিবেশ অধিদপ্তরের বগুড়া আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপ-পরিচালকের সাথে কথা বলার জন্য মোবাইলে ০১৭১৬-৭১৮১৭৭ নম্বরে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি এখন বগুড়ার দায়িত্বে নেই। বগুড়া অফিসের নম্বর চাওয়া হলে তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে আমার কাছে নম্বর নেই বলে কেটে দেন।

ইটভাটা মালিকদের সমিতির সাথে যোগাযোগ করা হলে এবিষয়ে তারা কোন কথা বলতে রাজী হননি।

আরও পড়ুনঃ পাবনার ঈশ্বরদীর লক্ষীকুন্ডায় আবারো চালু হয়েছে ৫২টি অবৈধ ইটভাটা

পাবনার ঈশ্বরদীর লক্ষীকুন্ডায় আবারো চালু হয়েছে ৫২টি অবৈধ ইটভাটা

প্রকাশিত সময় ০৬:০১:২৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২০

ঈশ্বরদী (পাবনা) সংবাদদাতাঃ ঈশ্বরদীর লক্ষীকুন্ডা ইউনিয়নেই পূর্ণোদমে আবারো চালু হয়েছে ৫২টি অবৈধ ইটভাটা।

কৃষি জমি বিনষ্ট, ভাটায় কাঠ পোড়ানো, নিয়মনীতি লংঘন ও পরিবেশের ভারসাম্যহীনতার বিষয় উল্লেখ করে গত নভেম্বরে বিভিন্ন পত্রিকায় চলতি মৌসুমে ইট পোড়ানোর প্রস্তুতি চলছে বলে খবর প্রকাশিত হয়। নেয়া হয়নি বন্ধের উদ্যোগ এসব ইটভাটা। ইতোমধ্যেই এসব ইটভাটায় জ্বলেছে। নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে কাঠ দিয়ে ইট পোড়ানো ও বিক্রি হচ্ছে।

স্থানীয় প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে অবৈধ ভাটা উচ্ছেদে কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। কৃষিজমি বিনষ্ট করে গড়ে ওঠা এসব অবৈধ ইটভাটা দীর্ঘদিন ধরে কিভাবে চালু রয়েছে, এবিষয়ে বিশিষ্ঠজনরা বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। ইটভাটার ইট পরিবহনের কারণে ওই ইউনিয়ন ও পার্শ্ববর্তী সাহাপুর ইউনিয়নের রাস্তাঘাটের বেহাল অবস্থা। বিদ্ধস্ত রাস্তার কারণে চরম ভেগান্তি পোহাতে হচ্ছে বলে এলাকাবাসীরা অভিযোগ করেছেন।

ঈশ্বরদী শহর হতে প্রায় ১২ কিলোমিটার দূরবর্তী প্রত্যন্ত পদ্মা নদী তীরবর্তী লীকুন্ডায় গড়ে উঠেছে এসব ইটভাটা। লীকুন্ডার তিনটি গ্রাম কামালপুর, দাদাপুর ও বিলকেদার গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কৃষি জমির উপর এসব ইট ভাটায় ইট পোড়ানো হচ্ছে।

ভাটা নির্মাণের জন্য চিমনীর উচ্চতা ও আনুসঙ্গিক যে নির্দেশনা রয়েছে তা অধিকাংশ ভাটা মালিকারা মানেননি। ভাটাগুলোতে জ্বালানী হিসেবে কয়লার পরিবর্তে কাঠের খড়ি ব্যবহার হচ্ছে। এখানে রয়েছে ৫০টি অটোফিস এবং ২টি জিকজ্যাক (হাওয়া) ভাটা। অটোফিস ভাটায় কাঠ দিয়ে ইট পোড়ানো হয়।

এসব ভাটা দিয়ে কালো ধোঁয়া নির্গত হয়ে এলাকার পরিবশে সবসময় দুষণযুক্ত করে রাখে। ইটভাটার কারণে অত্র এলাকায় অবাধে নিধন হচ্ছে গাছপালা। বেশির ভাগ ভাটার মালিকরা ইট তৈরির জন্য অবৈধ উপায়ে পদ্মার চর হতে মাটি সংগ্রহ করে থাকে।

ভাটার মালিকদের সরকারকে ভ্যাট-ট্যাক্স কিছুই দিতে হয়না বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে। ফ্রিতেই চলছে এসব ইটভাট। সরেজমিনে এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে এসব অভিযোগের সত্যতা মিলেছে।

ঈশ্বরদী উপজেলা কৃষি অফিসার আব্দুল লতিফ জানান, বিপুল সংখ্যক ইটভাটা গড়ে উঠায় লক্ষীকুন্ডায় কৃষি জমির পরিমাণ কমে গেছে। ইটভাটার নিঃসরিত কালো ধোঁয়ায় ও ছাইয়ে আম-লিচু-কাঁঠালের বাগান এবং ফসলী জমির উপর প্রভাব পড়বে। পলিউশনের প্রভাবে স্বাভাবিক জনজীবন ক্রমশ: হুমকীর সম্মুখিন হবে।

এলাকার জাতীয় সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা নূরুজ্জামান বিশ্বাসকে অবৈধ ইটভাটা প্রসংগে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, পরিবেশ ও কৃষিজমি বিনষ্ট করে দীর্ঘদিন ধরে কিভাবে এক ইউনিয়নে এতোগুলো অবৈধ ইটভাটা চালু রয়েছে তা আমার নলেজের বাইরে।

ঈশ্বরদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার পি এম ইমরুল কায়েস জানান, এসব অবৈধ ইটভাটায় কাঠ দিয়ে ইট পোড়ানোর ফলে পরিবেশ দুষণ এবং কৃষি ফসলের উপর প্রভাব পড়ছে। উচ্ছেদের জন্য ইতোমধ্যেই জেলা প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করা হয়েছে। অচিরেই উচ্ছেদ অভিযান শুরু হবে।

উপজেলা প্রকৌশলী এনামুল কবীর বলেন, ইটভাটার ইট ও ড্রামট্রাকে বালু পরিবহনের জন্য ওই এলাকার রাস্তাঘাটের অবস্থা শোচনীয়। নতুন করে রাস্তা নির্মাণ করা ছাড়া কোন উপায় নেই। ভারী এসব পরিবহন চলাচল বন্ধ না হলে নতুন রাস্তা নির্মাণ করেও কোন লাভ হবে না।

এব্যাপারে পরিবেশ অধিদপ্তরের বগুড়া আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপ-পরিচালকের সাথে কথা বলার জন্য মোবাইলে ০১৭১৬-৭১৮১৭৭ নম্বরে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি এখন বগুড়ার দায়িত্বে নেই। বগুড়া অফিসের নম্বর চাওয়া হলে তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে আমার কাছে নম্বর নেই বলে কেটে দেন।

ইটভাটা মালিকদের সমিতির সাথে যোগাযোগ করা হলে এবিষয়ে তারা কোন কথা বলতে রাজী হননি।

আরও পড়ুনঃ পাবনার ঈশ্বরদীর লক্ষীকুন্ডায় আবারো চালু হয়েছে ৫২টি অবৈধ ইটভাটা