কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন কিনতে ভারতকে অগ্রিম টাকা প্রদান
- প্রকাশিত সময় ০৯:২২:৫০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২ জানুয়ারী ২০২১
- / 151
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ভারতের সেরাম ইন্সটিটিউট থেকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা কেনার জন্য ছয়শ কোটি টাকার বেশি ব্যাংকে টাকা জমা দেবে রবিবার। বিনিময়ে সেরাম ইন্সটিটিউট একটা ব্যাংক গ্যারান্টি দিবেন।
সবকিছু ঠিক থাকলে ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে বাংলাদেশ টিকা আনতে পারবে বলে আশা করছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ভারতের টিকা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সেরাম ইন্সটিটিউট অগ্রিম টাকা হিসেবে এটা নেবে। বাকি টাকা টিকা সরবরাহ শুরু করার পর দেওয়া হবে। ব্যবসায়ী চুক্তির ধারা অনুযায়ী তারা যদি আগামী জুনের মধ্যে টিকা দিতে না পারে তাহলে অগ্রিম এই টাকা ফেরত নেবে।
২ জানুয়ারি শনিবার অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার অনুমোদন দিয়েছে ভারতের সরকার। সুতরাং ভারতের ঐ টিকা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান থেকে টিকা আনার ব্যাপারে সরকার আরো এক ধাপ এগিয়ে গেল। চুক্তি অনুযায়ী সেরাম ইন্সটিটিউট ছয়মাসের মধ্যে তিন কোটি টিকা দেবে। বিভিন্ন ধাপে প্রতিমাসে ৫০ লাখ টিকা আসবে। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কারা টিকা পাবেন সেটা একটা প্রাথমিক তালিকা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে করা হয়েছে।
এর আগে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, ভারতের টিকা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সেরাম ইন্সটিটিউট ও বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের সঙ্গে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা কেনার জন্য একটি চুক্তি করেছে। তারই ধারাবাহিকতায় এই কাজ চলছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেন, যেকোন টিকার দুটি দিক রয়েছে। একটা টিকা দেশে আনা এবং দ্বিতীয় হল ভোক্তা পর্যায়ে পৌঁছ দেওয়া। এটার ব্যাপারে আইনি অনেক বাধ্যবাধকতা আছে। তবে এটা যাতে সরাসরি ক্রয় করা যায় সেজন্য ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ মোদী আমাদের অনুমোদন দিয়েছেন।
তিনি আরো জানান, টিকা আনার পর সংরক্ষণের জন্য কোল্ড চেইন মেইনটেন করতে হবে। ইতোমধ্যে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের সঙ্গে চুক্তি করেছে অধিদপ্তর। তারা (বেক্সিমকো) জেলা পর্যায়ে যেসব ডিপো রয়েছে কোল্ড চেইন মেইনটেন করার সক্ষমতা আছে সেই জায়গাগুলোতে পৌছে দেবে। টিকা দেয়ার জন্য সারা দেশে ২৬ হাজার স্বাস্থ্য সহকারী এবং সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক কাজ করবেন।
সেই ধারাবাহিকতায় অল্প কিছুদিনের মধ্যে তাদের প্রশিক্ষণ দেয়া শুরু হবে। অফিসিয়াল প্রসিডিউর আছে সেগুলো মেইনটেন করে আইনে যা আছে সেই অনুযায়ী আমরা কাজ করবো। ওষুধ প্রশাসনের অনুমতি এবং অনুমোদন অবশ্যই লাগবে সেটার ব্যবস্থা করা হবে।
বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের চিফ অপারেটিং অফিসার (সিইও) রাব্বুর রেজা বলছিলেন, কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন ভারত থেকে আনার পর কোল্ড চেইন টঙ্গিতে তাদের দুটি ওয়্যারহাউসে নেয়া হবে। এরপর সরকার অনুমোদিত ওয়্যারহাউসগুলোতে পর্যায়ক্রমে পৌঁছে দেয়া হবে। এই ডেলিভারির মধ্যে দিয়ে বেক্সিমকোর দায়িত্ব শেষ হবে। এরপর শুরু হবে বিতরণ প্রক্রিয়া, যেটি হবে সরকারি ব্যবস্থাপনায়।
বর্তমান প্রেক্ষাপটে যারা ভ্যাকসিন আনবে, তারা আবেদন করলে বিশেষজ্ঞরা বসে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন বলে মনে করেন আইইডিসিআরের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. মুশতাক হোসেন। তিনি বলছিলেন, ভারতে অনুমোদন পাওয়ার কথা শুনেছি। কিন্তু, আমাদের নীতিমালা হলো, ডব্লিউএইচওর অনুমোদনে যে সাতটি উন্নত দেশ আছে, তাদের যেকোনো দুটি দেশ অনুমোদন দিলে আমরা সেটার কাগজপত্র নিয়ে এক সপ্তাহের মধ্যে আমরা অনুমোদন দিতে পারবো। এর জন্য কোনো ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের প্রয়োজন হবে না। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশে যারা ভ্যাকসিন আনবে, তাদেরকে আবেদন করতে হবে।