ঢাকা ০৯:৩৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞপ্তি :
সারাদেশের জেলা উপোজেলা পর্যায়ে দৈনিক স্বতঃকণ্ঠে সংবাদকর্মী নিয়োগ চলছে । আগ্রহী প্রার্থীগন জীবন বৃত্তান্ত ইমেইল করুন shatakantha.info@gmail.com // দৈনিক স্বতঃকণ্ঠ অনলাইন ও প্রিন্ট পত্রিকায় বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন ০১৭১১-৩৩৩৮১১, ০১৭৪৪-১২৪৮১৪

আরেকটি মাইলফলকের দ্বারপ্রান্তে বাংলাদেশ

বার্তাকক্ষ
  • প্রকাশিত সময় ১২:০৫:৪৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৪ জুলাই ২০১৮
  • / 136

নিজস্ব প্রতিনিধি: আজ শনিবার শুরু হচ্ছে, বহুল কাঙ্ক্ষিত রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের দ্বিতীয় ইউনিটের ফার্স্ট কংক্রিট ঢালাইয়ের (এফসিপি) কাজ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজে পাবনার ঈশ্বরদী গিয়ে এই প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন।

এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন রাশিয়ান ফেডারেশনের উপ-প্রধানমন্ত্রী ইউরি ইভানোভিচ বোরিসভ।

বাংলাদেশ বিশ্বের পারমাণবিক এলিট ক্লাবে আগেই প্রবেশ করেছে।এই উদ্বোধনের মধ্যদিয়ে আরেকটি মাইলফলকের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছাল বাংলাদেশ।

এর আগে গত বছরের ২৯ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী প্রকল্পের প্রথম ইউনিটের রিঅ্যাক্টর বিল্ডিং স্থাপনের কংক্রিট ঢালাইয়ের কাজ উদ্বোধন করেছিলেন। মাত্র ৮ মাসের মধ্যে সেটি সফলভাবে শেষ হয়।

এরপর আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা দ্বিতীয় ইউনিট স্থাপনের লাইসেন্স দিয়েছে। মূল স্থাপনার নির্মাণকাজ শেষে পরবর্তী ৬৮ মাসের মধ্যেই বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, দেশের সবচেয়ে বড় রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎ প্রকল্পের নির্মাণকাজ করছে রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান অ্যাটমস্ট্রয় এক্সপোর্ট। নির্মাণে খরচ হবে ১ লাখ ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান জানান, প্রধানমন্ত্রী অগ্রাধিকার ভিত্তিতে রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ এগিয়ে নিচ্ছেন। এরই অংশ হিসেবে মাত্র ৮ মাসে প্রথম ইউনিটের চুল্লির কংক্রিট ঢালাইকাজ শেষ করা সম্ভব হয়েছে। সন্তুষ্ট হয়ে দ্বিতীয় ইউনিটের লাইসেন্স দিয়েছে আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা।

প্রকল্পের প্রধান প্রকৌশলী ইউরিক লিমারেনকো জানান, রাশিয়ার বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশি কর্মী মিলে এই প্রকল্পে এক হাজারের বেশি মানুষ কাজ করছেন। এই প্রকল্পে থ্রি প্লাস রিঅ্যাক্টর বসবে, যা বিশ্বের সবচেয়ে নিরাপদ ও আধুনিক প্রযুক্তি। রাশিয়ার পর দ্বিতীয় দেশ হিসেবে বাংলাদেশের রূপপুরেই এটির ব্যবহার হচ্ছে।

তিনি আরও জানান, পাঁচ স্তরের নিরাপত্তাবেষ্টনী থাকায় রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎ প্রকল্পে দুর্ঘটনার কোনো আশঙ্কা নেই। শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়, ভূমিকম্প, বন্যা ইত্যাদি মোকাবেলায় সক্ষম এই রিঅ্যাক্টর প্রযুক্তি।

বিদ্যুৎকেন্দ্রের মূল স্থাপনার ভারী মালামাল পরিবহনে প্রকল্প এলাকায় সংযুক্ত হচ্ছে রেলপথ। এই বিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে ২০২২ ও ২০২৩ সাল নাগাদ বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। প্রকল্পের ‘লাইফ’ বা আয়ুষ্কাল হবে ৫০ বছর। আর সংস্কারের পর আয়ুষ্কাল দাঁড়াবে ৮০ বছর।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের পরিচালক ড. শৌকত আকবর জানান, গতবছরের ২৯ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রথম ইউনিটের ফার্স্ট কংক্রিট পোরিং (এফসিপি) ঢালাইকাজ উদ্বোধন করেছিলেন। ইতোমধ্যে প্রথম ইউনিটের কংক্রিট ঢালাইকাজ শেষ হয়েছে।

সম্প্রতি দ্বিতীয় ইউনিটের নির্মাণ কাজের লাইসেন্স মিলেছে। প্রকল্পের ভৌত অবকাঠামো, সাইট ডেভেলপমেন্ট, মাটি পরীক্ষা, কনস্ট্রাকশন ল্যাবরেটরিসহ প্রথম পর্যায়ের কাজ শেষ হয়েছে। ২০২০ সালের মধ্যে রাশিয়া থেকে আসবে রিঅ্যাক্টর ভেসেলসহ অন্যান্য যন্ত্রাংশ। পরে তা সংযোজন করা হবে।তিনি আরোও জানান, পদ্মা নদী ড্রেজিং করে নাব্যতা ফিরিয়ে জাহাজ এবং কার্গো চলাচলের উপযোগী করা হবে।

মূলত নৌপথেই মালামাল এনে এই প্রকল্পের বেশিরভাগ কাজ শেষ করা হবে।পদ্মা নদীতে পানিপ্রবাহ কমে গেলেও আণবিক চুল্লি পরিচালনায় কোনো সমস্যা হবে না। এখানে দৈনিক মাত্র ১৭৫০ ঘনমিটার পানির প্রয়োজন হবে। কিন্তু রি-সাইক্লিং করে এর অর্ধেক পানি ব্যবহার করা যাবে।

প্রধানমন্ত্রী দ্বিতীয় ইউনিটের ফার্স্ট কংক্রিট পোরিংয়ের কাজ উদ্বোধন করবেন। পরবর্তী ধাপে রিএকট্যার স্থাপনে ভারী যন্ত্রাংশ, উপকরণ, কাঁচামাল সহজে পরিবহনের জন্য ঈশ্বরদী বাইপাস স্টেশনের টেক পয়েন্ট থেকে রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্প পর্যন্ত নির্মিতব্য রেলপথ ব্যবহার করা হবে।

তিনি আরও জানান, রূপপুর প্রকল্পের এই রেললাইনের নির্মাণকাজ শেষ হলে চট্টগ্রাম ও খুলনা বন্দর থেকে খুব সহজেই রাশিয়া থেকে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য আনা মালামাল পরিবহন করা সম্ভব হবে।

এই বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ধোঁয়া নির্গত হবে না, শব্দও থাকবে না। চওড়া দেয়ালের মধ্যে ৮০ টনের রিঅ্যাক্টর বসবে। একবার রিঅ্যাক্টরে জ্বালানি ভরলে চলবে অনেক বছর। তাছাড়া ব্যবহৃত তেজষ্ক্রিয় বর্জ্যও ফেরত নেবে রাশিয়া। ফলে পরিবেশের ক্ষতির আশঙ্কা নেই বলেও জানান তিনি।

আরেকটি মাইলফলকের দ্বারপ্রান্তে বাংলাদেশ

প্রকাশিত সময় ১২:০৫:৪৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৪ জুলাই ২০১৮

নিজস্ব প্রতিনিধি: আজ শনিবার শুরু হচ্ছে, বহুল কাঙ্ক্ষিত রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের দ্বিতীয় ইউনিটের ফার্স্ট কংক্রিট ঢালাইয়ের (এফসিপি) কাজ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজে পাবনার ঈশ্বরদী গিয়ে এই প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন।

এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন রাশিয়ান ফেডারেশনের উপ-প্রধানমন্ত্রী ইউরি ইভানোভিচ বোরিসভ।

বাংলাদেশ বিশ্বের পারমাণবিক এলিট ক্লাবে আগেই প্রবেশ করেছে।এই উদ্বোধনের মধ্যদিয়ে আরেকটি মাইলফলকের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছাল বাংলাদেশ।

এর আগে গত বছরের ২৯ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী প্রকল্পের প্রথম ইউনিটের রিঅ্যাক্টর বিল্ডিং স্থাপনের কংক্রিট ঢালাইয়ের কাজ উদ্বোধন করেছিলেন। মাত্র ৮ মাসের মধ্যে সেটি সফলভাবে শেষ হয়।

এরপর আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা দ্বিতীয় ইউনিট স্থাপনের লাইসেন্স দিয়েছে। মূল স্থাপনার নির্মাণকাজ শেষে পরবর্তী ৬৮ মাসের মধ্যেই বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, দেশের সবচেয়ে বড় রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎ প্রকল্পের নির্মাণকাজ করছে রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান অ্যাটমস্ট্রয় এক্সপোর্ট। নির্মাণে খরচ হবে ১ লাখ ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান জানান, প্রধানমন্ত্রী অগ্রাধিকার ভিত্তিতে রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ এগিয়ে নিচ্ছেন। এরই অংশ হিসেবে মাত্র ৮ মাসে প্রথম ইউনিটের চুল্লির কংক্রিট ঢালাইকাজ শেষ করা সম্ভব হয়েছে। সন্তুষ্ট হয়ে দ্বিতীয় ইউনিটের লাইসেন্স দিয়েছে আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা।

প্রকল্পের প্রধান প্রকৌশলী ইউরিক লিমারেনকো জানান, রাশিয়ার বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশি কর্মী মিলে এই প্রকল্পে এক হাজারের বেশি মানুষ কাজ করছেন। এই প্রকল্পে থ্রি প্লাস রিঅ্যাক্টর বসবে, যা বিশ্বের সবচেয়ে নিরাপদ ও আধুনিক প্রযুক্তি। রাশিয়ার পর দ্বিতীয় দেশ হিসেবে বাংলাদেশের রূপপুরেই এটির ব্যবহার হচ্ছে।

তিনি আরও জানান, পাঁচ স্তরের নিরাপত্তাবেষ্টনী থাকায় রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎ প্রকল্পে দুর্ঘটনার কোনো আশঙ্কা নেই। শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়, ভূমিকম্প, বন্যা ইত্যাদি মোকাবেলায় সক্ষম এই রিঅ্যাক্টর প্রযুক্তি।

বিদ্যুৎকেন্দ্রের মূল স্থাপনার ভারী মালামাল পরিবহনে প্রকল্প এলাকায় সংযুক্ত হচ্ছে রেলপথ। এই বিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে ২০২২ ও ২০২৩ সাল নাগাদ বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। প্রকল্পের ‘লাইফ’ বা আয়ুষ্কাল হবে ৫০ বছর। আর সংস্কারের পর আয়ুষ্কাল দাঁড়াবে ৮০ বছর।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের পরিচালক ড. শৌকত আকবর জানান, গতবছরের ২৯ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রথম ইউনিটের ফার্স্ট কংক্রিট পোরিং (এফসিপি) ঢালাইকাজ উদ্বোধন করেছিলেন। ইতোমধ্যে প্রথম ইউনিটের কংক্রিট ঢালাইকাজ শেষ হয়েছে।

সম্প্রতি দ্বিতীয় ইউনিটের নির্মাণ কাজের লাইসেন্স মিলেছে। প্রকল্পের ভৌত অবকাঠামো, সাইট ডেভেলপমেন্ট, মাটি পরীক্ষা, কনস্ট্রাকশন ল্যাবরেটরিসহ প্রথম পর্যায়ের কাজ শেষ হয়েছে। ২০২০ সালের মধ্যে রাশিয়া থেকে আসবে রিঅ্যাক্টর ভেসেলসহ অন্যান্য যন্ত্রাংশ। পরে তা সংযোজন করা হবে।তিনি আরোও জানান, পদ্মা নদী ড্রেজিং করে নাব্যতা ফিরিয়ে জাহাজ এবং কার্গো চলাচলের উপযোগী করা হবে।

মূলত নৌপথেই মালামাল এনে এই প্রকল্পের বেশিরভাগ কাজ শেষ করা হবে।পদ্মা নদীতে পানিপ্রবাহ কমে গেলেও আণবিক চুল্লি পরিচালনায় কোনো সমস্যা হবে না। এখানে দৈনিক মাত্র ১৭৫০ ঘনমিটার পানির প্রয়োজন হবে। কিন্তু রি-সাইক্লিং করে এর অর্ধেক পানি ব্যবহার করা যাবে।

প্রধানমন্ত্রী দ্বিতীয় ইউনিটের ফার্স্ট কংক্রিট পোরিংয়ের কাজ উদ্বোধন করবেন। পরবর্তী ধাপে রিএকট্যার স্থাপনে ভারী যন্ত্রাংশ, উপকরণ, কাঁচামাল সহজে পরিবহনের জন্য ঈশ্বরদী বাইপাস স্টেশনের টেক পয়েন্ট থেকে রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্প পর্যন্ত নির্মিতব্য রেলপথ ব্যবহার করা হবে।

তিনি আরও জানান, রূপপুর প্রকল্পের এই রেললাইনের নির্মাণকাজ শেষ হলে চট্টগ্রাম ও খুলনা বন্দর থেকে খুব সহজেই রাশিয়া থেকে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য আনা মালামাল পরিবহন করা সম্ভব হবে।

এই বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ধোঁয়া নির্গত হবে না, শব্দও থাকবে না। চওড়া দেয়ালের মধ্যে ৮০ টনের রিঅ্যাক্টর বসবে। একবার রিঅ্যাক্টরে জ্বালানি ভরলে চলবে অনেক বছর। তাছাড়া ব্যবহৃত তেজষ্ক্রিয় বর্জ্যও ফেরত নেবে রাশিয়া। ফলে পরিবেশের ক্ষতির আশঙ্কা নেই বলেও জানান তিনি।