চলনবিলের ২৫ নদী ভূগছে দখল দূষণ ও নাব্যতা সংকটে
- প্রকাশিত সময় ০৭:৩৫:০০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ মার্চ ২০২১
- / 103
চাটমোহর (পাবনা)প্রতিনিধিঃ ১৪ মার্চ আন্তর্জাতিক নদীকৃত্য দিবস। নদীর প্রতি দায়বদ্ধতা মনে করিয়ে দিতে ১৯৯৭ সালে ব্রাজিলের কুরিতিবা শহরে এক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
তাইওয়ান, ব্রাজিল, চিলি, আর্জেন্টিনা, থাইল্যান্ড, রাশিয়া, ফ্রান্স, সুইজারল্যান্ড ও যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশে বাঁধের বিরূপ প্রতিক্রিয়ার শিকার জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিদের অংশ গ্রহনে অনুষ্ঠিত উক্ত সম্মেলনে নদী বাঁচাতে প্রতি বছর ১৪ মার্চ নদীকৃত্য দিবস পালনের সিদ্ধান্ত হয়।
বর্তমান সময়ে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা), জাতীয় নদী রক্ষা আন্দোলনসহ পঁচিশের অধিক সংগঠন যৌথভাবে নাগরিক সমাবেশের আয়োজন করে।
প্রসঙ্গত : অপরিকল্পিত বাঁধ, স্লুইজগেট, ব্রীজ, কালভার্ট নির্মাণের ফলে এবং দখল দূষণে চলনবিল এলাকার ২৫ নদ-নদী ভূগছে নাব্যতা সংকটে।
মাঘ ফাল্গুনেই শুকিয়ে যাচ্ছে চলনবিল এলাকার নদ-নদী গুলো।
বছরের পর বছর খনন না করায় এ এলাকার নদ নদী গুলো ভূগছে নব্যতা সংকটে।
ফলে সেচ কার্য ব্যহত হবার পাশাপাশি দেশী মৎস সম্পদ ও আজ বিলুপ্তির পথে।
এর প্রভাব পরছে ব্যবসা বানিজ্যে ও।
চলনবিল এলাকার নদী নালা হারিয়েছে পূর্ব জৌলুশ ও স্বকীয়তা।
মাঘের শুরুতে এসেই অধিকাংশ নদী শুকিয়ে যাওয়ায় বন্ধ হয়ে গেছে সে সকল নৌরুটের নৌ যোগাযোগ ব্যবস্থা।
জল পথে পণ্য পরিবহনে খরচ কম হলেও বর্তমান সময়ে এ এলাকার সব জলপথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অধিক খরচে ব্যবসায়ীদের স্থল পথে পণ্য পরিবহন করতে হচ্ছে।
অধ্যক্ষ মোঃ আব্দুল হামিদ রচিত চলনবিলের ইতিকথা গ্রন্থ সূত্রে এবং চলনবিল রক্ষা আন্দোলন কমিটির সদস্য সচিব এস এম মিজানুর রহমানের সাথে কথা বলে জানা যায়,
জলপাইগুড়ির পাহাড় থেকে উৎপন্ন হওয়া আত্রাই নদী রাজশাহীতে এসে কয়েকটি শাখায় বিভক্ত হয়ে পরে।
এর একটি শাখা কয়রাবাড়ি, নন্দনালী ও নওগা জেলার আত্রাই উপজেলা হয়ে আত্রাই ঘাটের এক মাইল নিচ হতে “আত্রাই” ও “গুড়” নামে দুই ভাগ হয়ে যায়।
গুড় নদী নাটোরের সিংড়া পর্যন্ত চলে আসে।
অপরদিকে আত্রাই নদী একান্ন বিঘা,যোগেন্দ্রনগর ও কালাকান্দরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে নাটোর জেলার গুরুদাসপুর উপজেলার চাঁচকৈড় বাঁশের বাজার এলাকায় এসে বড়াল নদের শাখা নন্দ কুজার সাথে মিশেছে।
এদের মিলিত স্রোত গুমানী নামে পূর্বদিকে প্রবাহিত হয়ে বওশা এলাকার ভাটিতে গিয়ে দুইভাগে বিভক্ত হয়ে পরে।
একটি ভাগ অষ্টমনিষা হয়ে ফরিদপুর উপজেলার সোনাহারা নামক স্থানে বড়ালে মিশেছে।
গুমানী নদীর অপর ভাগ নূরনগরে বড়াল নদীর সাথে মিশেছে।
১৭৮৭ সালে তিস্তার সাথে আত্রাই নদীর সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পরে।
জলপাইগুড়ির উত্তর পশ্চিম সীমান্ত থেকে দিনাজপুর, রংপুর, বগুড়া সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ নিমগাছী তাড়াশ, চাটমোহরের হান্ডিয়াল হয়ে অষ্টমনিষার কাছে গুমানী নদীতে মিশেছে।
১৩০৪ সালে ভূমিকম্পে নদীটির কয়েক যায়গা মরে যায়।
বগুড়া শহরের পাশ দিয়ে প্রবাহিত করতোয়া সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার ভিতর দিয়ে বাঘাবাড়ি ব্রীজের এক কিলোমিটার পূর্ব দিকে এসে করতোয়া বড়াল পয়েন্টে হুরাসাগরের সাথে মিশেছে।
রায়গঞ্জের নিম্নাংশ থেকে এটি ফুলজোড় বা বাঙালী নদী নামেও পরিচিত।
রাজশাহীর চারঘাট থেকে পদ্মার অন্যতম প্রধান শাখা নদ বড়াল রাজশাহীর বাঘা, নাটোরের বাগাতিপাড়া, বড়াইগ্রাম হয়ে চাটমোহরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে নূরনগরে গুমানীর সাথে মিশে বড়াল নামেই ভাঙ্গুড়া ফরিদপুর বাঘাবাড়ি হয়ে হুরাসাগরের সাথে মিশে নাকালিয়া এলাকায় গিয়ে যমুনার সাথে মিশেছে।