পাবনার ভাঙ্গুড়ায় বিস্কুটের লোভ দেখিয়ে তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষন চেষ্টা
- প্রকাশিত সময় ০৬:০৮:১৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ এপ্রিল ২০২১
- / 114
ভাঙ্গুড়া প্রতিনিধিঃ পাবনার ভাঙ্গুড়ায় বিস্কুটের লোভ দেখিয়ে ফুঁসলিয়ে নির্জন স্থানে নিয়ে তৃতীয় শ্রেণির (৯) বছর বয়সী একটি স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষন চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে।
এমন অভিযোগ উঠেছে হান্নান (৬০) নামের এক ব্যক্তি বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার মন্ডতোষ ইউনিয়নের গজারমারা গ্রামে। অভিযুক্ত হান্নান প্রাং ও ভিক্টিম একই এলাকার বাসিন্দা ও গ্রাম্য সম্পর্কে দাদা-নাতনী। ঘটনার পর থেকেই হান্নানকে বাড়িতে পাওয়া যায় নি।
বিষয়টি ধামাচাপা দিতে স্থানীয় প্রভাবশালী কতিপয় গ্রাম্য প্রধান হান্নানের পক্ষে গোপনে বৈঠক করেছেন। কিন্তু ভিক্টিমের পরিবার মীমাংসায় রাজি না হওয়ার কারণে তা ধামাচাপা দেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে ঘটনা ধামাচাপা দিতে তারপর রয়েছে ওই চক্রটি। বর্তমানে ভিক্টিমের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
ভিক্টিমের পরিবারের একাধিক সদস্য জানান, মন্ডতোষ ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের গজারমারা গ্রামের বাসিন্দা মৃত বয়ান প্রাং এর ছেলে হান্নান প্রাং রাতে স্থানীয় একটি ইটভাটায় নাইট গার্ডের চাকুরী করেন।
তিনি ভিক্টিমের বাড়ির পাশ দিয়ে মাঠে যাবার পথে তার প্রতিবেশী জনৈক তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রীকে মোবাইল ফোনে গেম খেলা দেখানোর কথা বলে তার কাছে ডেকে নিত।
রাস্তার পাশে ওই তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রীর বাড়ির উদ্দেশ্য আসা যাওয়ার সময় হান্নানের সাথে দাদা-নাতনীর সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সেই সূত্র ধরে মাঝে মাঝে হান্নান প্রতিবেশী সেই নাতনীকে কখনো নগদ ৫/১০ টাকা অথবা দোকান থেকে বিস্কুট কিনে দিতো। এমতাবস্থায় বৃদ্ধ হান্নানের মনে এমন জঘন্য লালসা লুকিয়ে ছিল তা ভুক্তভোগী পরিবারের লোকজন কেউ বুঝতে পারেনি।
এরই ধারাবাহিতকায় সম্প্রতি হান্নান ওই শিশুকে বিস্কুট দেওয়ার লোভ দেখিয়ে বাড়ির পাশের এক নির্জন বাগানে নিয়ে যায়। সেখানে শিশুটিকে বৃদ্ধ হান্নান দুহাতে জড়িয়ে ধরে ধর্ষনের চেষ্টা করে। কিন্তু শিশুটির চিৎকারে অবস্থা বেগতিক দেখে কাউকে এই কথা বললে তাকে হত্যা করা হবে বলে হুমকি দিয়ে ছেড়ে দেয়।
শিশুটি বাড়িতে ফিরে এসে প্রথমে কাউকে কিছু না বললেও তার মা ওই শিশুর আচারণের মধ্যে অস্বাভাবিকতা লক্ষ্য করেন। এক পর্যায়ে শিশুটিকে জিজ্ঞাসা করলে মায়ের কাছে ঘটনার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত খুলে বলে।
পরে বিষয়টি স্থানীয় দুই ইউপি সদস্য সাগর হোসেন ও আরিফুল ইসলাম বাবুসহ গ্রামবাসির মধ্যে জানাজানি হলে হান্নানের পক্ষে প্রভাবশালী গ্রাম্য প্রধান আপোষ মীংমাসায় উঠে পড়ে লাগে।
ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবী করে শিশুটির চাচী খালেদা বলেন, বৃদ্ধ(হান্নানের) মানুষের মধ্যে এমন শয়তানী ভাব লুকিয়ে ছিল তা আমরা বুঝতে পারিনি। আমরা এর বিচার চাই।
ভিক্টিমের দাদা বেলাল হোসেন বলেন, আমরা গবির , তারা (হান্নানরা) প্রভাবশালী, ঘটনার কয়েকদিন পার হলেও গ্রামে এর সুষ্ঠু বিচার পেলাম না। এখন সুষ্ঠু বিচারের আশায় আদালতে যাওয়ার চিন্তা ভাবনা করছি।
ঘটনার বিষয়ে ফোন করলে ২ নং ইউপি সদস্য অরিফুল ইসলাম বাবু সাংবাদিক পরিচয় পাওয়ার পর বিষয়টি সম্পর্কে ফোনে না বলে সাক্ষাত বলা হবে বলে জানান।
এব্যাপারে ৭ নং ইউপি সদস্য সাগর হোসেন বলেন , বিষয়টি তিনি শুনেছেন তবে অন্য ওয়ার্ডের অর্ন্তভুক্ত হওয়াতে এর বেশী কিছু বলতে রাজি হন নি।
ঘটনার ব্যাপারে জানতে অভিযুক্ত হান্নান প্রাং এর বাড়িতে গিয়েও সাক্ষাত না পেয়ে তার মোবাইল ফোনে ফোন দিলে অপর পক্ষ থেকে ফোন রিসিভ করে নিজেকে হান্নান প্রাং এর পুত্রবধু দাবী করে। এবং তিনি বলেন, তার শ্বশুর (হান্নান) এর স্মার্ট ফোনটি বাড়িতে রেখে তার (হান্নান এর) অসুস্থ্য মেয়েকে দেখতে ২/৩ দিন যাবৎ মেয়ের বাড়িতে গেছে।
এ ব্যাপারে ভাঙ্গুড়া থানার ওসি মুহম্মাদ আনোয়ার হোসেন বলেন, ঘটনার বিষয়ে কেউ থানায় লিখিত অভিযোগ করে নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।