ঢাকা ১২:২৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ১৭ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞপ্তি :
সারাদেশের জেলা উপোজেলা পর্যায়ে দৈনিক স্বতঃকণ্ঠে সংবাদকর্মী নিয়োগ চলছে । আগ্রহী প্রার্থীগন জীবন বৃত্তান্ত ইমেইল করুন shatakantha.info@gmail.com // দৈনিক স্বতঃকণ্ঠ অনলাইন ও প্রিন্ট পত্রিকায় বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন ০১৭১১-৩৩৩৮১১, ০১৭৪৪-১২৪৮১৪

ঈশ্বরদীতে লিচুর ফলন বিপর্যয়ের আশংকা

বার্তাকক্ষ
  • প্রকাশিত সময় ০৫:১৩:২০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৯ এপ্রিল ২০২১
  • / 105

ঈশ্বরদী (পাবনা) সংবাদদাতাঃ জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে এবারে ঈশ্বরদীতে লিচুর ফলন বিপর্যয়ের আশংকা করা হচ্ছে। মুকুল না আসায় বিশেষ করে বোম্বাই জাতের লিচুর ফলন ৩০ ভগ কম হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

তবে মোজাফ্ফর জাতের লিচু আগের মতোই ফলন হবে বলে লিচু চাষী ও কৃষি বিভাগ থেকে জানানো হয়েছে। লিচুর ফলন কম হওয়ায় লিচু চাষের সাথে জড়িত কৃষকরা চরম আর্থিক দু:রবস্থার শিকারে পড়বেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বোম্বাই জাতের লিচুর রাজধানী এবং লিচু আবাদের অন্যতম প্রসিদ্ধ এলাকা বলে দেশে খ্যাত ঈশ্বরদীর লিচুবাগানে এবারে লিচুর মুকুল অনেক কম এসেছে। যেকারণে চাষীরা লিচুতে ফলন বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন।

কৃষকরা জানান, এবারে গাছে ৩০-৪০ ভাগ লিচুর মুকুল এসেছে। তাই ফলন অনেক কম হবে। এই অবস্থায় লিচু বাগানের উপর নির্ভরশীল বাগান মালিক ও লিচুচাষির চরম আর্থিক বিপর্যয়ের আশংকায় শংকিত।

ঈশ্বরদীর মানিকনগর গ্রামের বাগান মালিক জহুরুল ইসলাম বলেন, আমার তিন বিঘা জমিতে লিচু বাগান রয়েছে। গত বছর ফলন ভালো হওয়ায় প্রায় তিন লাখ টাকার লিচু বিক্রি করেছিলাম। কিন্তু এবারে অর্ধেকেরও বেশী মুকুল আসেনি।

গতবারের চেয়ে অর্ধেক টাকার লিচু বিক্রি করতে পারব কি না এ নিয়ে সংশয়ে আছি। লিচু চাষে জাতীয় পদকপ্রাপ্ত কৃষক কিতাব মন্ডল ওরফে লিচু কিতাব, বিগত বছরগুলোর যে বাগান ৭ লাখ টাকার লিচু বিক্রি হয়েছিল, এবারে মুকুল না আসায় মাত্র ১ লাখ টাকার বেশি লিচু বিক্রি করা যাবে কিনা সন্দেহ রয়েছে।

ঈশ্বরদীর গ্রামাঞ্চলের কৃষকরা বেশীরভাগই লিচু চাষের উপর নির্ভরশীল। আর্থিক বিবেচনায় ঈশ্বরদীর গ্রামাঞ্চলের ফসলী জমিতে এখন অনেকেই লিচু বাগান করেছে। আর লিচু বাগানের আয় থেকেই এসব কৃষকদের সারা বছরের ভরণ-পোষণ নির্ভর করে।

ঈশ্বরদী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল লতিফ বলেন, লিচু ঈশ্বরদীর অন্যতম প্রধান অর্থকরী ফসল। ফলন্ত প্রতিটি গাছে ৩ হাজার থেকে ৩০ হাজার পর্যন্ত লিচু ধরে। গত বছর ঈশ্বরদী উপজেলায় ২৬শ’ হেক্টর জমিতে লিচুর আবাদ হয়েছে।

গত বছরের চেয়ে এবারে অতিরিক্ত আরও প্রায় ২০০ হেক্টর জমি লিচু আবাদের আওতায় এসেছে। এখানে প্রতিবছর ২০ থেকে ২৫ হাজার মেট্রিকটন লিচু উৎপাদন হয়। টাকার হিসেবে প্রতি বছর প্রায় ৫০০ কোটি টাকার লিচু ঈশ্বরদীতে বিক্রি হয়।

কিন্তু এবারে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বোম্বাই জাতের লিচুর মুকুল ৩০ ভাগে নেমে এসেছে। কৃষিবিজ্ঞানীরা এবারে লিচুর মুকুল কম আসার কারণ ইতোমধ্যেই উদ্ঘাটন করেছেন।

তিনি জানান, সাধারণত: জানুয়ারী মাসের শেষে এবং ফেব্রুয়ারী মাসের প্রথমে বোম্বাই লিচুর গাছে মুকুল আসে। কিন্তু এবারে মধ্য জানুয়ারী থেকে হঠাৎ করে শীতের প্রকোপ কমে যাওয়ায় মুকুল কম অঙ্কুরিত এবং বেশী পরিমাণ পাতা গজিয়েছে।

তবে মোজাফ্ফর জাতের লিচুর মুকুল জানুয়ারীর প্রথম দিকে আসায় এই জাতে কোন সমস্যা হয়নি।  ঈশ্বরদীতে বোম্বাই লিচুর চাষই সবচেয়ে বেশী হয়। তাই আর কোন প্রাকৃতিক বিপর্যয় না ঘটলে এবারে সবমিলিয়ে এবারে ৭-৮ হাজার লিচু উৎপাদন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

টাকার হিসেবেও এবারে ২০০ কোটি টাকার লিচু বিক্রি হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। লিচুর মুকুলে রোগ ব্যাধি কম, সামনের মাসটিতে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে লিচুর ফলন বিপর্যয় থেকে কিছুটা রা পাওয়া যাবে বলে জানান তিনি।

ঈশ্বরদীতে লিচুর ফলন বিপর্যয়ের আশংকা

প্রকাশিত সময় ০৫:১৩:২০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৯ এপ্রিল ২০২১

ঈশ্বরদী (পাবনা) সংবাদদাতাঃ জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে এবারে ঈশ্বরদীতে লিচুর ফলন বিপর্যয়ের আশংকা করা হচ্ছে। মুকুল না আসায় বিশেষ করে বোম্বাই জাতের লিচুর ফলন ৩০ ভগ কম হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

তবে মোজাফ্ফর জাতের লিচু আগের মতোই ফলন হবে বলে লিচু চাষী ও কৃষি বিভাগ থেকে জানানো হয়েছে। লিচুর ফলন কম হওয়ায় লিচু চাষের সাথে জড়িত কৃষকরা চরম আর্থিক দু:রবস্থার শিকারে পড়বেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বোম্বাই জাতের লিচুর রাজধানী এবং লিচু আবাদের অন্যতম প্রসিদ্ধ এলাকা বলে দেশে খ্যাত ঈশ্বরদীর লিচুবাগানে এবারে লিচুর মুকুল অনেক কম এসেছে। যেকারণে চাষীরা লিচুতে ফলন বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন।

কৃষকরা জানান, এবারে গাছে ৩০-৪০ ভাগ লিচুর মুকুল এসেছে। তাই ফলন অনেক কম হবে। এই অবস্থায় লিচু বাগানের উপর নির্ভরশীল বাগান মালিক ও লিচুচাষির চরম আর্থিক বিপর্যয়ের আশংকায় শংকিত।

ঈশ্বরদীর মানিকনগর গ্রামের বাগান মালিক জহুরুল ইসলাম বলেন, আমার তিন বিঘা জমিতে লিচু বাগান রয়েছে। গত বছর ফলন ভালো হওয়ায় প্রায় তিন লাখ টাকার লিচু বিক্রি করেছিলাম। কিন্তু এবারে অর্ধেকেরও বেশী মুকুল আসেনি।

গতবারের চেয়ে অর্ধেক টাকার লিচু বিক্রি করতে পারব কি না এ নিয়ে সংশয়ে আছি। লিচু চাষে জাতীয় পদকপ্রাপ্ত কৃষক কিতাব মন্ডল ওরফে লিচু কিতাব, বিগত বছরগুলোর যে বাগান ৭ লাখ টাকার লিচু বিক্রি হয়েছিল, এবারে মুকুল না আসায় মাত্র ১ লাখ টাকার বেশি লিচু বিক্রি করা যাবে কিনা সন্দেহ রয়েছে।

ঈশ্বরদীর গ্রামাঞ্চলের কৃষকরা বেশীরভাগই লিচু চাষের উপর নির্ভরশীল। আর্থিক বিবেচনায় ঈশ্বরদীর গ্রামাঞ্চলের ফসলী জমিতে এখন অনেকেই লিচু বাগান করেছে। আর লিচু বাগানের আয় থেকেই এসব কৃষকদের সারা বছরের ভরণ-পোষণ নির্ভর করে।

ঈশ্বরদী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল লতিফ বলেন, লিচু ঈশ্বরদীর অন্যতম প্রধান অর্থকরী ফসল। ফলন্ত প্রতিটি গাছে ৩ হাজার থেকে ৩০ হাজার পর্যন্ত লিচু ধরে। গত বছর ঈশ্বরদী উপজেলায় ২৬শ’ হেক্টর জমিতে লিচুর আবাদ হয়েছে।

গত বছরের চেয়ে এবারে অতিরিক্ত আরও প্রায় ২০০ হেক্টর জমি লিচু আবাদের আওতায় এসেছে। এখানে প্রতিবছর ২০ থেকে ২৫ হাজার মেট্রিকটন লিচু উৎপাদন হয়। টাকার হিসেবে প্রতি বছর প্রায় ৫০০ কোটি টাকার লিচু ঈশ্বরদীতে বিক্রি হয়।

কিন্তু এবারে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বোম্বাই জাতের লিচুর মুকুল ৩০ ভাগে নেমে এসেছে। কৃষিবিজ্ঞানীরা এবারে লিচুর মুকুল কম আসার কারণ ইতোমধ্যেই উদ্ঘাটন করেছেন।

তিনি জানান, সাধারণত: জানুয়ারী মাসের শেষে এবং ফেব্রুয়ারী মাসের প্রথমে বোম্বাই লিচুর গাছে মুকুল আসে। কিন্তু এবারে মধ্য জানুয়ারী থেকে হঠাৎ করে শীতের প্রকোপ কমে যাওয়ায় মুকুল কম অঙ্কুরিত এবং বেশী পরিমাণ পাতা গজিয়েছে।

তবে মোজাফ্ফর জাতের লিচুর মুকুল জানুয়ারীর প্রথম দিকে আসায় এই জাতে কোন সমস্যা হয়নি।  ঈশ্বরদীতে বোম্বাই লিচুর চাষই সবচেয়ে বেশী হয়। তাই আর কোন প্রাকৃতিক বিপর্যয় না ঘটলে এবারে সবমিলিয়ে এবারে ৭-৮ হাজার লিচু উৎপাদন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

টাকার হিসেবেও এবারে ২০০ কোটি টাকার লিচু বিক্রি হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। লিচুর মুকুলে রোগ ব্যাধি কম, সামনের মাসটিতে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে লিচুর ফলন বিপর্যয় থেকে কিছুটা রা পাওয়া যাবে বলে জানান তিনি।