পাবনার ঈশ্বরদীতে মৃত্যুর ৩ মাস পর ময়নাতদন্তের জন্য কবর থেকে লাশ উত্তোলন
- প্রকাশিত সময় ১০:০২:৪০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ এপ্রিল ২০২১
- / 108
ঈশ্বরদী (পাবনা) সংবাদদাতাঃ পাবনার ঈশ্বরদীতে বিষাক্ত মদপানে শরিফুল ইসলাম নাঈম (২৭) নামে এক যুবকের মৃত্যুর ৩ মাস পর ময়নাতদন্তের জন্য কবর থেকে লাশ উত্তোলন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার ২২ এপ্রিল পাবনা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিট্রেটের উপস্থিতিতে ঈশ্বরদীর কেন্দ্রীয় গোরস্থান থেকে পুলিশ লাশ তুলে ময়নাতদন্তের জন্য পাবনা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
নিহত শরিফুল ইসলাম নাঈম (২৭) ঈশ্বরদী উপজেলার মশুরিয়া পাড়া এলাকার আব্দুস সাত্তারের ছেলে।
এই লাশ উত্তোলনের ঘটনায় এলাকায় স্থানীয়ভাবে নানা গুঞ্জন শুরু হয়েছে। কেউ কেউ বলছে স্পিরিট খেয়ে মৃত্যুবরণ করেছে এই জন্য তিন মাস পরেও লাশ পচে নাই।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরে ঢাকায় কয়েকজন যুবক-যুবতি মদপানে অসুস্থ হয়ে পড়ে, চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৯ জানুয়ারি নাঈম মারা যায়। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে রাজধানীর ভাটারা থানায় মামলা করে। ময়নাতদন্ত ছাড়াই নাঈম এর লাশ দাফন করা হয়েছিল। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা লাশের ময়নাতদন্ত করার জন্য আদালতে আবেদন করেন। ফলে ঢাকার মহানগর মুখ্য হাকিম আদালত কবর থেকে লাশ তুলে ময়নাতদন্ত করার নির্দেশ দেন।
নিহত নাঈম লাশ উত্তোলনের সময় উপস্থিত ছিলেন, পাবনা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুল ইসলাম, ঈশ্বরদী আমবাগান ফাঁড়ির ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক আনোয়ার ইসলাম ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রফিকুল হক।
রাজধানীর ভাটারা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রফিকুল হক জানান, ঐ সময় ময়নাতদন্ত না হওয়ায় এখন করা হচ্ছে। আদালতের অনুমতি নিয়ে লাশ উত্তোলন করা হয়েছে।
রফিকুল হক আরও জানান, রাজধানীর ভাটারা এলাকা থেকে ভেজাল মদ তৈরি চক্রের ৬ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার সদস্যরা। সে সময় মাদক তৈরির কারখানা থেকে প্লাস্টিক বোতল, কয়েক ড্রাম স্পিরিট, মিনারেল ওয়াটারের বোতল এবং সুগার সিরাপ জব্দ করে।
আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তথ্য মতে, মাদক কারবারিরা রাজধানীর মিটফোর্ড এলাকা থেকে ১০ হাজার টাকা মূল্যে এক গ্যালন স্পিরিট কিনতেন। তারপর মিনারেল ওয়াটারের সঙ্গে স্পিরিট, চিনি, রঙ মিশিয়ে বিদেশি মদের পুরনো বোতলে ভরে ভেজাল মদ বিক্রয় করা হতো।
গুলশান বিভাগের ডিবির উপকমিশনার মশিউর রহমান জানান, ‘জানুয়ারিতে বিষাক্ত মদপানে ৩ জনের মৃত্যু হ। যারা এই মদ সরবরাহ করেছিল প্রথমে আমরা তাদের শনাক্ত করি। এরপর ভেজাল মদ তৈরি-চক্রের সন্ধান মেলে। শেষে আমরা কারখানার সন্ধান বের করি।’
মশিউর রহমান আরও বলেন, ‘ভাটারা এলাকা থেকে ভেজাল মদ তৈরির চক্রের ৬ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। কারখানাটির মালিক মো. নাসির। গ্রেপ্তার মো. জাহাঙ্গীর মূলত বিদেশি মদের পুরনো বোতল সরবরাহ করতেন। পরবর্তীতে তিনি ঐ কারখানায় চিফ কেমিস্ট হিসেবে কাজ শুরু করেন। তাকেও আমরা গ্রেপ্তার করেছি। মূলহোতা ২ জনসহ মোট ৬ জনের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। সজ্ঞানে ভেজাল ক্ষতিকর পণ্য বিক্রির অপরাধে তাদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়।