ঢাকা ১১:০৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৩০ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞপ্তি :
সারাদেশের জেলা উপোজেলা পর্যায়ে দৈনিক স্বতঃকণ্ঠে সংবাদকর্মী নিয়োগ চলছে । আগ্রহী প্রার্থীগন জীবন বৃত্তান্ত ইমেইল করুন shatakantha.info@gmail.com // দৈনিক স্বতঃকণ্ঠ অনলাইন ও প্রিন্ট পত্রিকায় বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন ০১৭১১-৩৩৩৮১১, ০১৭৪৪-১২৪৮১৪

দায়িত্বশীল মানবিক পুলিশ ও টিয়া পাখির বাচ্চা উদ্ধার

বার্তাকক্ষ
  • প্রকাশিত সময় ০৬:৩৮:৩৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ৯ মে ২০২১
  • / 131

পাবনা প্রতিনিধিঃ পাবনায় গাছের মাথা থেকে চুরি যাওয়া দুটি টিয়া পাখির বাচ্চা উদ্ধারের তৎপরতায় জেলা পুলিশের দায়িত্বশীলতা এবং মানবিকতার বিষয়টি ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়েছে।

একজন সাধারণ মানুষের মেসেজ কে গুরুত্ব দেয়ার বিষয়টিকে জনগনের আস্থার জায়গা করে নিয়েছে পুলিশ। পাবনা পুলিশ সুপার মহিবুল ইসলাম জানান, শুক্রবার রাতে পুলিশ সুপার পাবনার সরকারী ফোনে আসা একটি মেসেজের মাধ্যমে জানতে পারি আমিনপুর থানাধীন নয়াবাড়ী গ্রামের কাজী সারওয়ার আলম পিয়ার (৫৮) আলীর বসত বাড়ির বাহির আঙিনায় বেশ বড় বড় নারিকেল গাছ আছে প্রত্যেকটি নারিকেল গাছের দৈর্ঘ্য প্রায় ৫০ ফিট করে। তারমধ্যে একটি নারকেল গাছ পিয়ার আলীর শয়ন ঘরের জানালার পাশে অবস্থিত।

অনুমান পাঁচ বছর পূর্বে গাছটির মাথায় বজ্রপাত হলে গাছটি মারা যায়। মাটি হতে প্রায় ৪০ ফিট উপরে উক্ত নারকেল গাছের মধ্যে একটি গর্ত সৃষ্টি হয় এবং সেই গর্তে গত দুই থেকে আড়াই মাস পূর্বে এক জোড়া টিয়া পাখি বাসা বাঁধে, ডিম দেয়, ডিম থেকে বাচ্চা ফোটে, মা পাখিটা প্রতিদিন বাচ্চা টিয়া পাখি জোড়া কে খাওয়াতো সেই দৃশ্য পিয়ার আলী তার বাডড়ির আঙিনায় বসে দেখত এখান থেকে ভালোবাসা এবং মানবতার শিক্ষা হত।

শুক্রবার হঠাৎ করে বাচ্চাগুলো না পাওয়ায় সেগুলো চুরি হয়েছে সন্দেহ করে পিয়ার আলী পুলিশ সুপার পাবনাকে মেসেজ করে জানান। পুলিশ সুপার আমিনপুর থানাকে বিষয়টি অবগত করেন এবং বাচ্চাসহ পাখি দুটিকে উদ্ধারের নির্দেশ দেন। এরপর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রওশন কবিরের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল শনিবার টিয়া উদ্ধার অভিযানে নামে।

অভিযানের একপর্যায়ে খবর পান, উপজেলার নয়াবাড়ি শীলপাড়া গ্রামের এক ব্যক্তি বাচ্চা দুটিকে চুরি করেছেন। পরে তাঁকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন। জিজ্ঞাসাবাদে ওই ব্যক্তি জানান, বৃহস্পতিবার ৭ মে মাগরিবের আযানের ১০ মিনিট পরেই জনৈক ব্যক্তি পিয়ার আলীর বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগ বুঝে ছানা জোড়া নিয়ে গিয়ে নয়া বাড়ি শীল পাড়া গ্রামের আরেক ব্যক্তি নিকট ১ হাজার ৫০০ টাকার বিনিময়ে টিয়া পাখির ছানা জোড়া বিক্রি করে।

এবং টাকা পেয়ে সে বাড়িতে না গিয়ে সেই টাকার মধ্য হইতে ৪০০ টাকা দিয়ে একটি শার্ট এবং ২০০ টাকা দিয়ে তাহার পায়ের স্যান্ডল কিনে। ৫০০ টাকা এলোমেলো খরচ করে আর বর্তমানে ৪০০ টাকা অবশিষ্ট আছে।

পরে ওই ব্যক্তির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী পুলিশ টিয়ার ক্রেতার খোঁজ শুরু করেন। একপর্যায়ে খোঁজ মেলে টিয়ার ক্রেতার। কিন্তু কিছুতেই তিনি টিয়া কেনার কথা স্বীকার করেন না। পরে পুলিশের বহু চেষ্টায় শনিবার দুপুরে তিনি টিয়া পাখির বাচ্চা দুটি থানায় পৌঁছে দেন।

এরপর সরওয়ার আলমের বাড়িতে নিয়ে বাচ্চা দুটিকে আবার প্রকৃতির কাছে ছেড়ে দেওয়া হয়। ওসি রওশন আলম বলেন, টিয়া পাখির বাচ্চা দুটি উদ্ধার করে বাড়ির মালিকের সামনে হাজির করায় তিনি চরম খুশি হয়েছেন। পরে তিনি নিজেই বাচ্চা দুটিকে আবার উন্মুক্ত আকাশে ছেড়ে দিয়েছেন। এতে তাঁরাও মানসিক শান্তি পেয়েছেন। পরে টিয়ার বাচ্চা চুরি করা ব্যক্তি ও ক্রেতাকে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

বাড়িওয়ালা সরওয়ার আলম বলেন, ‘একটি খুদে বার্তায় পুলিশ এভাবে বাচ্চা দুটি উদ্ধারে অভিযান চালাবে ভাবতেও পারিনি। আমি ভীষণ খুশি। পুলিশ সুপার ও আমিনপুর থানা–পুলিশকে ধন্যবাদ।

পুলিশ সুপার মহিবুল ইসলাম বলেন, আমরা সব সময় জনগনের আবেদনকে গুরুত্ব দিয়ে থাকি। জনগনের সমস্যা সমাধানে সবসময় দায়িত্বশীলতার সাথে কাজ করি। টিয়া পাখির বাচ্চা উদ্ধারের বিষয়টি জনগনের সাথে পুলিশ তারই বর্হি প্রকাশ।

দায়িত্বশীল মানবিক পুলিশ ও টিয়া পাখির বাচ্চা উদ্ধার

প্রকাশিত সময় ০৬:৩৮:৩৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ৯ মে ২০২১

পাবনা প্রতিনিধিঃ পাবনায় গাছের মাথা থেকে চুরি যাওয়া দুটি টিয়া পাখির বাচ্চা উদ্ধারের তৎপরতায় জেলা পুলিশের দায়িত্বশীলতা এবং মানবিকতার বিষয়টি ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়েছে।

একজন সাধারণ মানুষের মেসেজ কে গুরুত্ব দেয়ার বিষয়টিকে জনগনের আস্থার জায়গা করে নিয়েছে পুলিশ। পাবনা পুলিশ সুপার মহিবুল ইসলাম জানান, শুক্রবার রাতে পুলিশ সুপার পাবনার সরকারী ফোনে আসা একটি মেসেজের মাধ্যমে জানতে পারি আমিনপুর থানাধীন নয়াবাড়ী গ্রামের কাজী সারওয়ার আলম পিয়ার (৫৮) আলীর বসত বাড়ির বাহির আঙিনায় বেশ বড় বড় নারিকেল গাছ আছে প্রত্যেকটি নারিকেল গাছের দৈর্ঘ্য প্রায় ৫০ ফিট করে। তারমধ্যে একটি নারকেল গাছ পিয়ার আলীর শয়ন ঘরের জানালার পাশে অবস্থিত।

অনুমান পাঁচ বছর পূর্বে গাছটির মাথায় বজ্রপাত হলে গাছটি মারা যায়। মাটি হতে প্রায় ৪০ ফিট উপরে উক্ত নারকেল গাছের মধ্যে একটি গর্ত সৃষ্টি হয় এবং সেই গর্তে গত দুই থেকে আড়াই মাস পূর্বে এক জোড়া টিয়া পাখি বাসা বাঁধে, ডিম দেয়, ডিম থেকে বাচ্চা ফোটে, মা পাখিটা প্রতিদিন বাচ্চা টিয়া পাখি জোড়া কে খাওয়াতো সেই দৃশ্য পিয়ার আলী তার বাডড়ির আঙিনায় বসে দেখত এখান থেকে ভালোবাসা এবং মানবতার শিক্ষা হত।

শুক্রবার হঠাৎ করে বাচ্চাগুলো না পাওয়ায় সেগুলো চুরি হয়েছে সন্দেহ করে পিয়ার আলী পুলিশ সুপার পাবনাকে মেসেজ করে জানান। পুলিশ সুপার আমিনপুর থানাকে বিষয়টি অবগত করেন এবং বাচ্চাসহ পাখি দুটিকে উদ্ধারের নির্দেশ দেন। এরপর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রওশন কবিরের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল শনিবার টিয়া উদ্ধার অভিযানে নামে।

অভিযানের একপর্যায়ে খবর পান, উপজেলার নয়াবাড়ি শীলপাড়া গ্রামের এক ব্যক্তি বাচ্চা দুটিকে চুরি করেছেন। পরে তাঁকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন। জিজ্ঞাসাবাদে ওই ব্যক্তি জানান, বৃহস্পতিবার ৭ মে মাগরিবের আযানের ১০ মিনিট পরেই জনৈক ব্যক্তি পিয়ার আলীর বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগ বুঝে ছানা জোড়া নিয়ে গিয়ে নয়া বাড়ি শীল পাড়া গ্রামের আরেক ব্যক্তি নিকট ১ হাজার ৫০০ টাকার বিনিময়ে টিয়া পাখির ছানা জোড়া বিক্রি করে।

এবং টাকা পেয়ে সে বাড়িতে না গিয়ে সেই টাকার মধ্য হইতে ৪০০ টাকা দিয়ে একটি শার্ট এবং ২০০ টাকা দিয়ে তাহার পায়ের স্যান্ডল কিনে। ৫০০ টাকা এলোমেলো খরচ করে আর বর্তমানে ৪০০ টাকা অবশিষ্ট আছে।

পরে ওই ব্যক্তির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী পুলিশ টিয়ার ক্রেতার খোঁজ শুরু করেন। একপর্যায়ে খোঁজ মেলে টিয়ার ক্রেতার। কিন্তু কিছুতেই তিনি টিয়া কেনার কথা স্বীকার করেন না। পরে পুলিশের বহু চেষ্টায় শনিবার দুপুরে তিনি টিয়া পাখির বাচ্চা দুটি থানায় পৌঁছে দেন।

এরপর সরওয়ার আলমের বাড়িতে নিয়ে বাচ্চা দুটিকে আবার প্রকৃতির কাছে ছেড়ে দেওয়া হয়। ওসি রওশন আলম বলেন, টিয়া পাখির বাচ্চা দুটি উদ্ধার করে বাড়ির মালিকের সামনে হাজির করায় তিনি চরম খুশি হয়েছেন। পরে তিনি নিজেই বাচ্চা দুটিকে আবার উন্মুক্ত আকাশে ছেড়ে দিয়েছেন। এতে তাঁরাও মানসিক শান্তি পেয়েছেন। পরে টিয়ার বাচ্চা চুরি করা ব্যক্তি ও ক্রেতাকে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

বাড়িওয়ালা সরওয়ার আলম বলেন, ‘একটি খুদে বার্তায় পুলিশ এভাবে বাচ্চা দুটি উদ্ধারে অভিযান চালাবে ভাবতেও পারিনি। আমি ভীষণ খুশি। পুলিশ সুপার ও আমিনপুর থানা–পুলিশকে ধন্যবাদ।

পুলিশ সুপার মহিবুল ইসলাম বলেন, আমরা সব সময় জনগনের আবেদনকে গুরুত্ব দিয়ে থাকি। জনগনের সমস্যা সমাধানে সবসময় দায়িত্বশীলতার সাথে কাজ করি। টিয়া পাখির বাচ্চা উদ্ধারের বিষয়টি জনগনের সাথে পুলিশ তারই বর্হি প্রকাশ।