সিলেটে অন্তসত্ত্বা নারীর লাশ উদ্ধার- স্বামী ও শাশুড়ি গ্রেপ্তার
- প্রকাশিত সময় ১১:৫৮:৫৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ৯ মে ২০২১
- / 187
সিলেট প্রতিনিধিঃ সিলেটের ওসমানী নগরে অন্তসত্ত্বা গৃহবধূ শরিফা বেগমের (২০) লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
তিনি উসমানপুর ইউনিয়নের তাহিরপুর গ্রামের আরজু মিয়ার স্ত্রী এবং হবিগঞ্জ জেলার নবিগঞ্জের পিঠুয়া সদরাবাদ গ্রামের সাকিন উল্ল্যার মেয়ে।
শনিবার (৮ মে) সকালে স্বামীর বাড়ি থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।
শরিফার পরিবারের অভিযোগ, স্বামীর বাড়ির লোকজন তাকে হত্যা করেছে।
এ ঘটনায় শরিফার ভাই মিনার মিয়া বাদি হয়ে ওসমানীনগর থানায় মামলা দায়ের করেছেন। এরপর শরিফার স্বামী ও শাশুড়িকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, প্রায় ৯ মাস আগে উপজেলার উসমানপুর ইউনিয়নের তাহিরপুর গ্রামের মৃত ইছন আলীর ছেলে আরশ আলীর সাথে পারিবারিকভাবে বিবাহ হয় নবীগঞ্জ উপজেলার পুটিয়া গ্রামের শাকিম উল্যার ছোট মেয়ে শরীফার।
বিয়ের কিছু দিন পর যৌতুকসহ নানা অজুহাতে স্বামী আরশ আলী ও শাশুড়ি মিনারা বেগম নির্যাতন শুরু করেন গৃহবধূ শরীফার ওপর। নিজে অন্তসত্ত্বা থাকায় তাদের নির্যাতন সহ্য করে গর্ভের সন্তানের আলোর মুখ দেখাতে তাদের সকল নির্যাতন সহ্য করেই স্বামীর বাড়িতে পড়ে থাকেন শরীফা।
চলতি রমজান মাসে তার পিত্রালয় থেকে ইফতারি দিতে দেরি করায় এবং ইফতারির সাথে স্বামীর জন্য আলাদাভাবে সাজানো থাল না দেয়ায় অন্তসত্ত্বা শরীফার ওপর নির্যাতনের মাত্রা আরও বেড়ে যায়।
শুক্রবার সন্ধ্যায় শরিফার পিত্রালয় থেকে স্বামীর বাড়ির লোকজনের জন্য ঈদের নতুন কাপড় না আসাকে কেন্দ্র করে শাশুড়ির সাথে কথা কাটাকাটির জের ধরে আরশ আলী ও মিনারা বেগম মিলে মারপিট করেন শরীফাকে। বিষয়টি মোবাইল ফোনের মাধ্যমে শরিফা তার ভাইকে অবগত করে, পরে কথা বলবেন বলে ফোন রেখে দেন।
এমতাবস্থায় সাহরির সময় শরীফার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি বন্ধ পান তার ভাই-বোনেরা। শনিবার শরীফার বড় বোন শিপন আক্তার শরীফার স্বামী-শাশুড়ির জন্য নতুন কাপড় নিয়ে আরশ আলীর বাড়ির (বোনের বাড়ী) উদ্দেশ্যে রওনা দিলেই পথিমধ্যে শরীফার ভাসুরের মাধ্যমে খবর পান তার বোন খুবই অসুস্থ। এর কিছুক্ষণের মধ্যে আবার খবর আসে শরীফা আত্মহত্যা করে মারা গেছেন।
গৃহবধূর মামাতো ভাই ফয়েজ আহমদ বলেন, বিয়ের পর থেকে অন্তসত্ত্বা বোনের ওপর নির্যাতন করছে ওরা। এবার তারা বোনটিকে মেরেই ফেলেছে।
ওসমানীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শ্যামল বণিক বলেন, গৃহবধূর আত্মহত্যার খবর পেয়ে আমার ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য হাসপাতালে প্রেরণ করেছে।
রাতে ঝগড়াঝাটির এক পর্যায়ে তার মৃত্যু হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তার কান ও নাকে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
তবে ময়না তদন্তের রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
আরও পড়ুনঃ সিলেটের বাঘা হাওরে কৃষকদের সর্বনাশ!