বিলুপ্তির পথে টাংগাইলের ঘাটাইল উপজেলার গ্রাম-বাংলার মাটির ঘর
- প্রকাশিত সময় ০৯:৫৪:২০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২ জুন ২০২১
- / 346
ঘাটাইল (টাংগাইল) সংবাদদাতাঃ এক সময় ঘাটাইল উপজেলার প্রতিটি এলাকাতেই ছিল মাটির ঘর। গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যের নিদর্শন ছিল সবুজ ছায়া ঘেরা শান্তির নীড়। যা এক সময় ছিল গ্রামের মানুষের কাছে প্রিয় মাটির ঘর।
এই মাটির ঘর গরিবের এসি নামেও পরিচিত। কিন্তু কালের বিবর্তনে বিলুপ্তির পথে ঐতিহ্যবাহী এই মাটির ঘর গুলো।
আগে ঘাটাইল উপজেলার প্রতিটি পাহাড়ি গ্রামেই চোখে পড়তো মাটির ঘর। ঝর বৃষ্টি থেকে রক্ষার পাশাপাশি প্রচন্ড গরম ও শীতে বসবাসের উপযোগী এসব মাটির ঘর এখন দেখা মেলা ভার।
বর্তমানে আধুনিকতার ছোয়ায় ইট, বালু, সিমেন্ট এর বাড়ির আড়ালে হাড়িয়ে যাচ্ছে গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী মাটির ঘর। হয়তোবা আগামী প্রজন্ম ইতিহাসের পাতা অথবা যাদুঘর থেকে জানতে পারবে যে কোন এককালে এদেশে মাটির ঘর ছিল।
প্রাচীন কাল থেকেই মাটির ঘরের প্রচলন ছিল, গ্রামের মানুষের কাছে এই মাটির ঘর ছিল শান্তির নিবাস ও ঐতিহ্যের প্রতীক। মাটির সহজলভ্যতা ও টেকসই হওয়ার কারনেই মাটি দিয়ে বাড়ি তৈরি করতেন এ অঞ্চলের মানুষজন।
এটেল বা আঠালো মাটিকে কাঁদায় পরিনত করে ২-৩ ফুট চওড়া করে দেওয়ালে পরিনত করা হত। প্রতিটি দেওয়াল ১০- ১৫ ফুট উঁচু করে তার উপর ছোন বা টিনের ছাউনি দিয়ে বানানো হতো মাটির ঘর ।
এসব ঘরের সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য মাটির প্রলেপ দিয়ে লেপা হতো। আবার কেউ কেউ চুন বা আলকাতরা দিত। আর ঘরের ভিতরের সৌন্দর্য ফুটিয়ে তোলার জন্য বাঁশ ও মুলি দিয়ে উপরে ছানি দিত। যাকে গ্রাম্য ভাষায় কার বলা হয়।
বর্তমানে মাটির ঘরে বসবাসকারি এক ব্যক্তি জানান, এই ঘরটি আমার দাদা তৈরি করেছিলেন, বর্ষা মৌসুমে অতিরিক্ত বৃষ্টি হলে বাহিরের দিকটা সামান্য পরিমাণ গলে যায়। আবার শুষ্ক মৌসুমে মাটির প্রলেপ দিয়ে দিলে তা আগের মত নতুন হয়ে যায়। অন্য মৌসুমে আর কোন সমস্যা হয় না।
তিনি আরও বলেন, আমার দোতালা একটি বাড়ি আছে, কিন্তু আমি এই মাটির ঘরে থেকে যে শান্তি পাই, তা ঐ দোতালা বাড়িতে গেলে পাই না। পরিবারের অন্যান্যরা ঐ বাড়িতেই থাকে, কিন্তু আমি এই মাটির ঘরে বাস করতেই সাচ্ছন্দ্য বোধ করি।