নতুন ইজরায়েলি সরকার বাইডেনের জন্য একটি ‘সুযোগ’
- প্রকাশিত সময় ০২:৩৬:৫৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ জুন ২০২১
- / 204
স্বতঃকণ্ঠ আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ বিশ্লেষকরা বলছেন, ইরানের সাথে মার্কিন পারমাণবিক কূটনীতির অবকাশ, আরব রাষ্ট্রগুলোর সাথে অর্থনৈতিক চুক্তি এবং বেনেটের জন্য হোয়াইট হাউসের সফরের সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে।
বিশ্লেষকরা বলেন, প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেটের নেতৃত্বে ইজরায়েলের নতুন সরকার ইজরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে রাজনৈতিক উত্তেজনা প্রশমনের দ্বার উন্মোচন করেছে।
ওয়াশিংটন ডিসির কার্নেগি এনডাওমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিস এর একজন সিনিয়র ফেলো অ্যারন ডেভিড মিলার বলেন, “বাইডেন ভাগ্যবান, তিনি একটু বিরতি পেয়েছেন। বাইডেন নিজের জন্য কিছুটা সময় এবং দম ফেলার জায়গা জায়গা। এবং বেনেট লড়াই খুঁজে বেড়ান না।
বিশ্লেষকরা বলেন, ইজরায়েলি-ফিলিস্তিনি সংঘাতে বড় ধরনের অগ্রগতির সম্ভাবনা নেই। সরকারের এই পরিবর্তন হামাস এবং ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের সাথে সীমিত চুক্তির মঞ্চ তৈরি করতে সাহায্য করতে পারে। এবং আরব রাষ্ট্রগুলোর সাথে অর্থনৈতিক চুক্তি সম্প্রসারণের অনুমতি দেওয়া হতে পারে।
ইয়ামিনা দলের বেনেট এবং ইয়েশ আতিদ দলের ইয়ায়ার লাপিদের নেতৃত্বে নতুন সরকারের পক্ষে ১২০ জন নেসেট সদস্যের মধ্যে ৬০ জন সদস্য নিয়ে ১৩ জুন নেসেট-এ নতুন জোট সরকার গঠন করে।
এই জোটে ইজরায়েলি রাজনীতির বাম ও ডান সহ আরও ছয়টি দল রয়েছে, যার মধ্যে প্রথমবারের মতো একটি ফিলিস্তিনি আরব দল রয়েছে।
এই জোট প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর ১২ বছরের ক্ষমতার অবসান ঘটায়।
যদিও নতুন ইজরায়েলি সরকারের অবস্থান দুর্বল এবং নেতানিয়াহু এটিকে উল্টে দেওয়ার শপথ নিয়েছেন।
ওয়াশিংটনে এই পরিবর্তনকে স্বাগত জানিয়েছে। এবং যদি এটি স্থায়ী হয়, হোয়াইট হাউসের কর্মীরা বাইডেনের সাথে দেখা করার জন্য শীঘ্রই বেনেটের রাষ্ট্রীয় সফরের তারিখ নির্ধারন করবেন।
নেতানিয়াহু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইরান সংক্রান্ত পররাষ্ট্রনীতির বিরোধিতা করতেন যা বেনেট করবেন না।
১৩ জুন হোয়াইট হাউস থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়, বাইডেন নতুন ইজরায়েলি প্রধানমন্ত্রীকে টেলিফোন করে “উষ্ণ অভিনন্দন” জানিয়েছেন।
হোয়াইট হাউসের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “নেতারা একমত যে তারা এবং তাদের দল ইরানসহ আঞ্চলিক নিরাপত্তা সম্পর্কিত সকল বিষয়ে ঘনিষ্ঠভাবে পরামর্শ করবে।”
“প্রেসিডেন্ট আরও জানিয়েছেন যে, তার প্রশাসন ইজরায়েলি এবং ফিলিস্তিনিদের জন্য শান্তি, নিরাপত্তা এবং সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রচেষ্টায় ইজরায়েল সরকারের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে চায়।”
সেক্রেটারি অফ স্টেট অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেছেন যে, তিনি ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনেট এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়ার লাপিডের সাথে কথা বলেছেন।
নেতানিয়াহু প্রকাশ্যে ইরানে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি বারাক ওবামার কূটনৈতিক প্রচারকে চ্যালেঞ্জ করেছিলেন এবং ২০১৫ সালে ইরানের সাথে মার্কিন নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক পারমাণবিক চুক্তির তীব্র বিরোধিতা করেছিলেন।
মার্কিন রিপাবলিকানদের আমন্ত্রণে নেতানিয়াহু কংগ্রেসে এই চুক্তির বিরোধিতা করে একটি বক্তৃতা দিয়েছিলেন এবং মার্কিন বিধায়কদের যে কোনো চুক্তি প্রত্যাখ্যান করার আহ্বান জানিয়েছিলেন। সে সময় অনেক ডেমোক্র্যাট নেতারা নেতানিয়াহুর মার্কিন পররাষ্ট্র নীতির উপর প্রেসিডেন্ট ওবামার কর্তৃত্ব ক্ষুণ্ণ করার প্রচেষ্টা হিসাবে দেখেছিল।
সম্প্রতি, নেতানিয়াহু প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে মিত্রতা করেছিলেন, যিনি একতরফাভাবে পারমাণবিক চুক্তি থেকে আমেরিকাকে প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন যা বাইডেন এখন পুনরুজ্জীবিত করার চেষ্টা করছেন।
ইরান এবং বিশ্ব শক্তির মধ্যে ষষ্ঠ দফার বহুপাক্ষিক আলোচনা সপ্তাহান্তে শুরু হওয়ার কথা ছিল।
অপরদিকে ইরানের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে তেহরানে নতুন নেতৃত্ব নিয়ে আসবে।
সূত্রঃ আল জাজিরা।