কমনওয়েলথ ফাউন্ডেশন পত্রিকায় স্থান পেলেন কবি প্রবান্ধিক মজিদ মাহমুদ
- প্রকাশিত সময় ০৭:১৫:৪০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ জুন ২০২১
- / 146
স্টাফ রিপরতারঃ কবি প্রাবন্ধিক ও কথা-সাহিত্যিক মজিদ মাহমুদ সম্মানজনক কমনওয়েলথ ফাউন্ডেশন পত্রিকায় স্থান পেয়েছেন।
প্রায় চার দশক যাবৎ তিনি নিরলসভাবে সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় কাজ করে যাচ্ছেন। তিন দশক আগে প্রকাশিত ‘মাহফুজামঙ্গল’ কাব্যগ্রন্থের মাধ্যমে তিনি ব্যাপকভাবে পাঠকপ্রিয়তা লাভ করেন।
কবিতার পাশাপাশি মননশীল প্রবন্ধ-গবেষণা ও কথা-সাহিত্যেও তাঁর খ্যাতি আছে। এ বছর প্রকাশিতা তাঁর ‘মেমোলিয়াল ক্লাব’ উপন্যাস বাংলাদেশ রাইটার্স ক্লাব বর্ষসেরা বই হিসাবে পুরস্কার পেয়েছে।
লন্ডন অবস্থিত কমনওয়েলথ ফাউন্ডেশনের অধীন কমনওয়েলথভুক্ত লেখকদের পত্রিকা আড্ডায় ১৭ জুন চলতি সংখ্যায় তাঁর ‘লিটারারি ক্যাপিটাল অব বাংলা’ (বাংলা-সাহিত্যের রাজধানী) প্রবন্ধটি স্থান করে নিয়েছে।
লেখকের সঙ্গে আলাপকালে জানা যায়, গত ১২ এপ্রিল কমনওয়েল ফাউন্ডেশন রাইটার্স-এর প্রোগ্রাম অফিসার গীতাঞ্জলি পিন্ডিয়া তাঁকে এক ই-মেইলে জানান, ‘আমরা অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি যে. আমাদের আসন্ন সংখ্যায় আপনার লেখা ছাপার জন্য নির্বাচন করা হয়েছে।
এই সংখ্যার দ’ুজন সম্পাদক পাওলিন ফান এবং বিলাল তানভির আপনার লেখা পড়ে খুবই মুগ্ধ হয়েছেন, সেই সঙ্গে আমরাও। আমরা আপনার কাজের জন্য কিছু পারিশ্রমিক দিতে চাই, আপনি যথাশীঘ্র চুক্তিপত্রে স্বাক্ষরসহ প্রয়োজনীয় প্রমাণাদি পাঠাবেন।’
তারপর ২১ এপ্রিল দ্বিতীয় মেইলে পিন্ডিয়া জানান, আপনার জন্য পারিশ্রমিক পরিশোধ ও লেখকসত্বের চুক্তিনামা ফরম স্বাক্ষরসহ পাঠানো হলো, আপনি ফিরতি স্বাক্ষরসহ পাঠান। পরের মেইলে জানান, ২০ মে পরবর্তী তিনটি ইস্যুর যে কোনো একটিতে আমার লেখা যাবে।
তিনি সর্বশেষ মেইলে নিশ্চিত করেন ১৭ জুন সংখ্যায় লেখা প্রকাশ হচ্ছে। কমনওয়েলথ ফাউন্ডেশন এই রচনা প্রকাশের জন্য যুক্তরাজ্যের তিনশ পাউন্ড সমান বাংলাদেশের ছত্রিশ হাজার টাকা প্রদান করেন।
প্রবন্ধটি অনুবাদ করেন ইংরেজি উপন্যাস লেখক রাফি শামস। কমনওয়েলথ ফাউন্ডেশনের এই স্বীকৃতি মজিদ মাহমুদের রচনা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রচারে আরো ভূমিকা রাখবে। এর আগেও মজিদ মাহমুদ আন্তর্জাতিক সাহিত্যাঙ্গনে সমাদৃত হয়েছেন।
তিনি ২০০৭ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত এশিয়ার নোবেল খ্যাত ম্যাগসাইসাই পুরস্কারের জুরি ছিলেন। ইন্টারন্যাশনাল ইংলিশ লিটারারি জার্নাল, সিঙ্গাপুরভিত্তিক আন্তজাতিক জার্নাল কিতাব, ভোপাল সাহিত্য অ্যাকাডেমিসহ অনেক খ্যাতিমান সংস্থা দ্বারা তিনি সম্মানিত হয়েছেন।
ইংরেজি, ফরাসি, চায়না ও হিন্দিসহ বিভিন্ন ভাষায় তাঁর বই অনূদিত হয়েছে। মজিদ মাহমুদের আটটি বই লাইব্রেরি অব কংগ্রেসের মাধ্যমে ২৮টি বিশ^বিদ্যালয়ের লাইব্রেরিতে পাওয়া যায়। আমাজান ডটকমেও তাঁর বেশ কিছু বই প্রকাশিত হয়েছে।
নজরুল ইনসটিটিউট ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের বৃত্তি নিয়ে তিনি ্#৩৯;নজরুল তৃতীয় বিশ্বের মুখপাত্র্#৩৯; এবং্ #৩৯;রবীন্দ্রনাথের ভ্রমণ সাহিত্য’ নিয়ে অভিসন্দর্ভ রচনা করেন। তাঁর মোট গ্রন্থ সংখ্যা ৫০। উল্লেখযোগ্য গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে, মাহফুজামঙ্গল (১৯৮৯), গোষ্ঠের দিকে (১৯৯৬), বল উপখ্যান (২০০০), আপেল কাহিনী (২০০১), ধাত্রী ক্লিনিকের জন্ম (২০০৫),
সিংহ ও গর্দভের কবিতা (২০০৯) গ্রামকুট (২০১৫), লঙ্কাবি যাত্রা (২০১৯) শুঁড়িখানার গান (২০১৯), কাব্যসমুচ্চয় (২০২০)। প্রবন্ধ ও গবেষণা- নজরুল, তৃতীয় বিশ্বের মুখপাত্র (১৯৯৭), কেন কবি কেন কবি নয় (২০০১), ভাষার আধিপত্য ও বিবিধ প্রবন্ধ (২০০৫), নজরুলের মানুষধর্ম (২০০৫), উত্তর-উপনিবেশ সাহিত্য ও অন্যান্য (২০০৯), সাহিত্যচিন্তা ও বিকল্পভাবনা (২০১১), রবীন্দ্রনাথ ও ভারতবর্ষ (২০১৩), নির্বাচিত প্রবন্ধ ২০১৪),
সন্তকবীর শতদোঁহা ও রবীন্দ্রনাথ (২০১৫), ক্ষণচিন্তা (২০১৬)। গল্প-উপন্যাস- মাকড়সা ও রজনীগন্ধা (১৯৮৬), সম্পর্ক (২০২০), মেমেমোরিয়াল ক্লাব (২০২১)। শিশু সাহিত্য- বৌটুবানী ফুলের দেশে (১৯৮৫), বাংলাদেশের মুখ (২০০৭), বর্নমালায় বাংলাভাষা (২০২০)।
অনুবাদ- মরোক্কান ঔপন্যাসিক ইউসুফ আমিনি ইলালামির উপন্যাস নোমাড লাভ, ওয়েস্টল্যান্ড, স্কাইলার্ক, চিনাভাষার কবিতা, পরদেশি কবিতা (২০২১)।
মজিদ মাহমুদ বাংলাদেশ রাইটার্স ক্লাব, জাতীয় প্রেসক্লাব, জীবনানন্দ দাশ, অরণি, পদক্ষেপ ও বিনয় মজুমদারসহ বেশ কিছু পুরস্কারেও ভূষিত হয়েছেন। তিনি দৈনিক বাংলা, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা, অর্থনীতি প্রতিদিনসহ বেশি কিছু পত্রিকায় সাংবাদিক হিসাবে কাজ করেছেন।
এছাড়া মুড়াপাড়া ডিগ্রি কলেজ ও বেসরকারি বিশ^বিদ্যালয় ইউনিভার্সিটি অব অলটার্নেটিভে শিক্ষকতা করেন। তিনি বর্তমানে ওসাকা নামের এক বেসরকারি সংস্থার প্রধান নির্বাহী।
তিনি ঢাকা বিশ^বিদ্যাল থেকে বাংলা ভাষা- সাহিত্যে ¯œাতকোত্তর।মজিদ মাহমুদ ১৬ এপ্রিল ১৯৬৬, পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার চরগড়গড়ি গ্রামের মোহাম্মদ কেরামত আলী ও সানোয়ারা বেগমের ঘরে জন্ম গ্রহণ করেন।