জি-৭ ও ন্যাটো সম্মেলনের অন্তরালে
- প্রকাশিত সময় ১২:৫০:৪৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৯ জুন ২০২১
- / 265
আসাদুজ্জামান নোহাশআন্তর্জাতিক রাজনৈতিক বিশ্লেষক
ইউরোপ এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। জি-৭ ও ন্যাটো সম্মেলন এবং এর অন্তরালে দুনিয়াকে বোকা বানানোর (আমেরিকার পরাজয় ঢাকতে) জন্য আরও একটি বিষয় উহ্য রাখা হলো। শেষের দিকে তা আলোচনা করা হবে। প্রথমে উল্লেখিত বিষয় দুটি নিয়ে আলোচনা করা যাক।
বিশ্বের অতি ধনী রাষ্ট্রের জোট জি-৭ এর ২০২১ সালের সম্মেলন হয়ে গেল ১১-১৩ জুন । ১৯৭৭ সালে গঠিত এই জোটের সন্মেলনে যা সিদ্ধান্ত গৃহিত হয় তা বাস্তবে কার্যকর হয় এমন নজির কোথাও নেই। সমালচোকেরা এটাকে কর্পোরেট স্বার্থের মিটিং বলে অভিহিত করেন। এটির গুরুত্ব সেইসব পত্রপত্রিকাতে শোভা পায় যাদেরকে স্পন্সর দেওয়া হয়।
দ্বিতীয় ও তৃতীয় বিশ্বের কোন দেশের উপকারে এই জোট সেভাবে কখনই আসেনি। জি-৭ ছাড়াও বিশ্বের নজর এখন ন্যাটো সম্মেলনের দিকে। এবারের আকর্ষন বাইডেনের প্রথম সন্মেলনে যোগদান এবং এরদোগান ও পুতিনের সাথে বৈঠক। স্বাভাভিক ভাবে পুতিন–বাইডেন এর একটি দফারফা হবে এটাই স্বভাবিক।
জি-৭
নানা নাটকীয়তা শেষে এবারের জি-৭ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হল। করোনা কালীন সময়ে যেটি হওয়ার কথা ছিলনা তারপরেও এটি অনুষ্ঠিত হলো। এর কারন মূলত বিশ্বের সার্বিক পরিস্থিতি।
বাইডেন নির্বাচিত হওয়ার পর হতে কোন দেশ সফর করেননি। মার্কেলের এটিই শেষ সম্মেলন। ইংলান্ডের কর্নওয়ালে বসে জি-৭ নেতৃত্ব যে ফন্দি এটেছেন তা মূলত ব্যবসায়িক। চীনের বিরুদ্ধে হুশিয়ারি দিয়ে সম্মেলনের সমাপ্তি ঘোষনা করা হলেও তা কতটা কাজে আসবে দেখার বিষয়।
চীনকে চাপে রাখতে উইঘুর সমস্যা নিয়ে সমালোচনা, আর চীন গৃহিত ট্রিলিয়ন ডলারের প্রকল্প বেল্ট এন্ড রোড ইনিশিয়েটিভ কে দুর্বল করতে আমেরিকার নেতৃত্বে বিথ্রিডব্লিউ (বিল্ড ব্যাক বেটার ওয়াল্ড-B3W) প্রকল্প নামে কারবিস চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন জি-৭ ভুক্ত নেতারা।
এটি স্পষ্ট যে এই চুক্তি মূলত চীন বিরোধী। এই চুক্তিতে রাস্তাঘাট, পরিবহন, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, আর গরীব দেশে অনুদানের কথা ফলাও করে বলা হয়েছে। কিন্ত নতুন কিছু সংযোজিত হয়নি বরং চীনের আইডিয়া এখানে ধার করা হয়েছে।
বিবিসি’র রাজনৈকিত সংবাদদাতা রব ওয়াটসন জানান যে, এই সম্মেলনে চীনকে অংশিদার, প্রতিদ্বন্দী, নাকি নিরাপত্তা হুমকি? ঠিক কিভাবে মূল্যায় করা হবে তারা এখনো একমত হতে পারেননি।
চীনের মোকাবেলায় বাইডেন যে বড় তহবিল ছাড়ের কথা বলেছেন তার ব্যাপারে মার্কেলের সায় নেই। তাই তিনি স্পষ্ট বলে দিয়েছেন যে, জি-৭ এখনো এ পর্যায়ে আসেনি।
এই চুক্তিকে চীন ভালো চোখে নেয়নি। বরং আয়োজক দেশের দূতাবাস হতে তাৎক্ষনিক প্রতিক্রিয়ায় বলেছে, একটা সময় ছিলো যখন আন্তর্জাতিক যে কোন বিষয়ে সিদ্ধান্ত গুটি কয়েক দেশের ছোট একটি গ্রুপ নিয়ে নিয়ে ফেলত। সে সময় শেষ হয়ে গেছে।
এই প্রতিক্রিয়ার কারনও আছে, বরিস জনসন নিয়ম ভেঙ্গে মোদিকে ভার্চুয়াল মিটিংয়ে যুক্ত করেছেন। যতটা না জি-৭ এর লক্ষ্যকে সামনে রেখে বৈঠক হয়েছে, তার চেয়ে ঢের বেশি চীন বিরোধীতার লক্ষ্য নিয়ে বাইডেন এগিয়েছেন।
কি কারনে সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি বা জার্মানির এমন কথা বলার কারন কি? তা সবারই জানা। কারন জার্মানি চাইনা চীনের সাথে ট্রাম্প স্টাইলে বিরোধে জড়াতে।
সমালোচকেরা এবারকার বৈঠককে অন্তঃসারশূণ্য বলে ঘোষনা করতেই পারেন। কারন রাশিয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত বাইডেন নিতে পারেননি জার্মানির আপত্তির কারনে।
তাছাড়া এই সম্মেলনের খরচ একটি বড় বিষয়। সম্মেলনে প্রাক্কলিত খরচ ধরা হয়েছে ৭০ মিলিয়ন ডলার। যা দিয়ে ইয়েমেনকে ২ বার পুনর্গঠন করা যাবে। ১৯৭৫ সালে জন্মের পর থেকে জি-৭ সন্মেলনে যে পরিমান খরচ, তার হিসাব কষলে দেখা যায় যে, তা দিয়ে আফ্রিকার দেশ সমূহের মানুষকে স্বাভাবিক জীবনে(স্বাস্থ্য, পুষ্টি, শিক্ষা) ফিরিয়ে আনতে বেগ পেতে হবে না।
অনেক সমালোচক এটিকে জি-৭ নেতাদের পিকনিক হিসেবে অভিহিত করেন। তার যথেষ্ঠ কারনও আছে।
২০২০ সালের সম্মেলনের কথায় ধরা যাক, আয় ও লিঙ্গ বৈষম্যের বিরুদ্ধে বলা হলেও বাস্তবে কতটুকু এই বৈষম্য কমেছে তা পাঠকের নিকটে রেখে গেলাম।
২০১৯ সালের সম্মেলনে ম্যাক্রন সবচেয়ে গুরুত্ব দিয়েছিলেন আমাজান বনের দাবানলকে। কিন্তু আমাজানের ব্যাপারেও তেমন কোন সাড়া আর পাওয়া যায়নি।
২০১৮ কানাডা সম্মেলনে ট্রাম্প বানিজ্য ও শুল্ক যুদ্ধ শুরু করেন যার সুরাহা জি-৭ নেতারা করেননি।
২০১৭ সালে ইতালিতে ট্রাম্প জলবায়ু চুক্তি হতে বেরিয়ে যান। যদিওবা বাইডেন জলবায়ু চুক্তিতে ফিরে আসেন। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য জি-৭ ভুক্ত দেশ সমূহের কলকারখানাই দায়ী, সেবিষয়ে তারা সিদ্ধান্ত নিতে চাননা।
২০১৬ সালে জাপানের সম্মেলনে নেতাদের ফোকাস ছিল মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি এবং স্বরনার্থী সমস্যার সমাধান। কিন্ত ফলাফল শুন্য। মাঝে মাঝে তুরস্ক এটি নিয়ে ঝামেলা করে এই যা। এসমস্ত কারনে জি-৭ এর বৈঠককে সমালোচকেরা পিকনিক পার্টি বলে অভিহিত করে থাকেন।
ন্যাটো সম্মেলন
এবারের ন্যাটো সম্মেলনের মূল ফোকাস রাশিয়া, চীন এবং তুরস্ক এ কথার সাথে দ্বিমত করার মত বোদ্ধা পাওয়া যাবে বলে মনে হয়না। ৭২ বছরের ন্যাটো জোটকে নিয়ে বর্তমান সময়ে তার ইউরোপীয় অংশীদাররা সন্তুষ্ট নয়। নিজেদের মাঝে কন্দোলনই তার মূল কারন।
ট্রাম্প জামানায় আমেরিকা অন্যান্য দেশ সমূহের নিকট হতে বেশি চাঁদা চাইলে এ জোটের বিপথগামীতার শুরু হয়। তলে তলে জার্মানি ও ফ্রান্স ইউরোপীয় সামরিক বাহীনি গঠনের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে।
আবার ফ্রান্সের সাথে তুরস্কের সমস্যা। এবং অনান্য দেশসমুহের মাঝে দ্বিধা-দ্বন্ধের ব্যাপারটি ভালোভাবে নিচ্ছে না। রাশিয়ার থেকে তুরস্কের এস-৪০০ এন্টি মিসাইল সিস্টেম নেওয়ায় ন্যাটো জোটের ধর্ম বিরোধী ব্যাপার হয়ে দাড়িয়েছে।
তাছাড়া রাশিয়ার কার্যক্রম ন্যাটোর জন্য সুবিধাজনক নয়। ন্যাটো জোট ভাঙ্গনে পুতিন বেশ আগে থেকেই তৎপর। এই তৎপরতার অংশ হিসেবে তুরস্ককে দলে ভেড়ানো তার প্রথম অর্জন। তাছাড়া পুতিন ইউক্রেন আর ইউরোপী সীমান্তে সৈন্য জড়ো করা, চীন, ইরান এবং তুরস্কের সাথে যেভাবে সামরিক মহড়া চালিয়েছে তাতে ইউরোপীয় ন্যাটো মিত্ররা ভীতই হয়ে আছে এ ব্যাপারে সন্দেহ নেই।
ইউরোপ এখন চাইবে যে ইন্টারমিডিয়েট-রেঞ্জ নিউক্লিয়ার ফোর্সেস (আইএনএফ চুক্তিটি সম্পাদান করেন তা হতে ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার নেন ২ আগষ্ট ২০১৯ সালে) চুক্তিতে বাইডেন ফিরে আসুক। কিন্ত বিষয়টি এতটা সহজ হবে বলে মনে হয় না। কেননা বাইডন পুতিনকে সন্ত্রাসী ও হত্যাকারী হিসেবে অভিহিত করেছেন গত মার্চ মাসে। যার স্মৃতি পুতিনের নিকট এখনও দগদগে আগুনের মতো। তবে পুতিন প্রতিক্রিয়া না দেখিয়ে ঠান্ডা মাথায় বলেছেন, “বাইডেন পেশাদার রাজনীতিবিদ আর এসব বিষয় নিয়ে আমি ভাবি না”।
১৫ জুন ২০২১ পার্ক লা গ্রেজের দিকে তাকিয়ে ছিল সারা বিশ্ব। কেননা এদিনই বোঝা যাবে যে কে আনুগত্যশীল দেশসমুহকে বেশি নিরাপত্তা দিতে প্রস্তুত।
তুরস্কের সাথে ফ্রান্সের মুখোমুখি অবস্থান এবং তুরস্ক কর্তৃক পোল্যান্ডে বারকায়েত টিবি-২ ড্রোন বিক্রয় জার্মানি, ফ্রান্স ও বৃটেনকে ভীতসন্ত্রস্ত করেছে। কিন্তু আপাত দৃষ্টিতে ম্যাক্রন আর এরদোগানের কোলাকুলি বাইডেন করাতে পারলেও সামিটের পরে সম্পর্ক যা ছিল তাই হয়ে যাবে। কেননা ভূ-মধ্যসাগরে খনিজ সম্পদ নিয়ে রেষারেষি, আর্মেনিয়া-আজারবাইজান সমস্যা এবং লিবিয়াতে তুরস্কের বিপরীতে দাঁড়িয়ে বিদ্রহী নেতা হাফতারকে সমর্থন দেওয়া এরদোগান স্বাভাবিকভাবে নেবেন না। তার চেয়েও বড় কথা হলো এরদোগান যে আদর্শ নিয়ে রাজনীতি করেন সে আদর্শের বিপক্ষে ম্যাক্রন এর মন্তব্য।
১৪ তারিখে বাইডেন-এরদোগান এর বৈঠকে বাইডেনকে এরদোগান দাওয়াত দিয়ে রেখেছেন বলে তিনি ব্রাসেলস ব্রিফিংয়ে জানান। তিনি আরো জানান যে, আলোচনা ভালো হয়েছে আর সবকিছু এমনিতেই ঠিক হয়ে যাবে ব্যাপারটা এমন না। তার দেশের পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী আমেরিকার সমকক্ষদের সাথে আলোচনা করবেন।
পাঠক মহল আনন্দিত হওয়ার কারন নেই, কারন এখানে এরদোগান কুটনৈতিক ভাষা ব্যবহার করেছেন। মানে ঘোর সমস্যা কাটেনি।
আগেই ভাবা হয়েছিলো যে চীনের ব্যাপারে কড়া প্রতিক্রিয়া আসতে পারে। কেননা ন্যাটো মহাসচিব ১৩ জুন ২০২১ বলেন যে, আমার নতুন করে শীতল যুদ্ধে জড়াচ্ছি না। কিন্ত চীনের ক্রমবর্ধমান হুমকি মোকাবেলার কৌশল নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে।
কিন্ত ন্যাটো নেতারা বলেন যে, চীন রাশিয়ার সাথে মিলে পরমানু শক্তির দ্রুত সম্প্রসারন ঘটাচ্ছে। আর রাশিয়ার সেনাবাহিনী এখানে প্রত্যক্ষ মদদ দিচ্ছে।
ন্যাটো মহাসচিব স্টলটেনবার্গ সম্মেলনে সদস্য দেশগুলোকে চীনভীতি দেখিয়ে বলেন যে, চীন সামরিক ও প্রযুক্তিগত দিক দিয়ে ন্যাটো জোটের কাছাকাছি পৌছে গেছে। মানে চীনকে সতর্ক করার মাধ্যমেই শেষ হলো ন্যাটোর সম্মেলন।
বাইডেনের উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান বলেন, ইশতেহারে চীনকে নিয়ে বিস্তারিত কিছু জানানো হবে না। ভাষাগুলোও বেশি উত্তেজনাপূর্ণ হবে না। পরিস্থিতি সে দিকে গেলে চীনও বসে থাকতো না। জি-৭ ও ন্যাটোকে ঘিরে মিডিয়া যেভাবে কাভারেজ করেছে তাতে মনে হয়েছিল এই দুটি সম্মেলন থেকে আমেরিকা ধারনার চেয়ে বেশি সাফল্য পাবে।
ইউরোপে ক্লাইমেক্স এখন ইরান
পাঠক উপরে আলোচনার সময় হয়তো বুঝে গেছেন যে, ইরানের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা গোপন ছিল। থাকাটাই স্বাবাবিক। কিন্তু এতসব তোড়জোর আর গালগল্পের মাঝে কোন বিশ্ব নেতা এমন কি ইরানের জাত শত্রু ইসরাইলও এখবর প্রকাশ করেনি যে, জি-৭ এবং ন্যাটো সম্মেলনে বাইডেনের যাওয়ার মূল কারন ইরান ডিল। যদি তাই না হয় তাহলে কেন জি-৭ নেতারা ইরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপনাস্ত্রের ব্যাপারে কথা বলেবেন?
প্রায় তিন মাস ধরে আলোচানার পর, ইরান ডিল আলোচানার প্রধান ইউলিয়ানভ মিখাইল আর একটু সময় চেয়েছেন চূড়ান্ত চুক্তির জন্য। কারন আমেরিকা এই চুক্তির সাথে এখনও জড়িত নয় এবং ইরান-আমেরিকা একসাথে বসছে না।
কিস্ত একটা ব্যাপার দিবালোকের ন্যায় সত্য যে, আমেরিকা এখানে একটি প্রতিপক্ষ। তাই বাইডেন এই ডিলের ব্যাপারে কথা বলার জন্য এই দুটো সম্মেলনকে মোক্ষম সময় হিসেবে বেছে নিয়েছেন। আর বোদ্ধা মহলের ধারনা আগে থেকে তেমনই ছিল।
গত ১১ জুন রয়টার্স জানায় যে, আমেরিকার অর্থ মন্ত্রনালয়ের অফিস অব ফরেন অ্যাসেটস কন্ট্রোল(এফএসি) ও পররাষ্ট্র মন্ত্রানালয় ইরানের সাবেক ৩ জন সরকারী কর্মচারী ও দুটি কোম্পানীকে নিষেধাজ্ঞা হতে মুক্তি দিয়েছে। যদিওবা আমেরিকার তরফ হতে বলা হচ্ছে ইরানের ব্যাপারে কোন ছাড় নয়।
কিন্ত জি-৭ নেতারা ইরানের ব্যাপারে আমেরিকার সাথে একমত হতে পারেনি। যার ফলে বাইডেন ইরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের অন্তর্ভুক্তির কথা বলেছে। এটি মূলত ইরান ডিলের হতাশা হতেই বলেছেন। কিন্ত এর মাঝে আমেরিকার পররাষ্ট্রনীতির পরাজয় দেখা যাচ্ছে।
ইরানী মুখপাত্র সায়েদ খাতিবজাদে ১৪ জুন ঘোষনা করেন যে, ২২৩১ নং প্রস্তাবে ইরান পরমানু ওয়ারহেড বহনে সক্ষম ক্ষেপণাস্ত্রের নকশা নিয়ে কাজ করতে পারবে না বলা আছে। কিন্তু ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচিতে পরমানু অস্ত্র অন্তর্ভুক্ত নেই।
মার্কিন নিউজ চ্যানেল সিবিএস’কে দেওয়া স্বাক্ষাতকারে আমেরিকান পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন যে, প্রথমত ওয়াশিংটন পরমানু আলোচনায় কোন ছাড় দিবে না, দ্বিতীয়ত তিনি বাইডেনকে পাশ কাটিয়ে আগ বাড়িয়ে কিছু বলবেন না। রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের সাথে বৈঠকে বাইডেন বিষয়টি নিয়ে কথা বলবেন। ব্লিংকেন এখানে ইঙ্গিত রেখে গেছেন যে জি-৭ আর ন্যাটোর সম্মেলনের মাঝে ইরান ডিল মূখ্য বিষয়।
পাঠক আসলে কি ঘটছে বর্তমান বিশ্বে? জি-৭ কি চীনের বিকল্প হিসেবে দাড়াতে পারবে? নাকি ন্যাটো জোট দিয়ে চীন-রাশিয়া-ইরান-তুরস্ক বলয়কে ঘায়েল করা যাবে? নাকি ইতিহাসে ইরান ডিলে লজ্জাজনক প্রত্যাবর্তন করবে আমেরিকা?
আবার কোভিড, সিরিয়া আর ইজরায়েল-ফিলিস্তিন বিষয়ে কোন সুরাহা হয়নি। সব ঠিকঠাক থাকলে সব প্রশ্নের উত্তর পেতে এ মাসের ২৫ তারিখ পর্যন্ত সময় লেগে যেতে পারে। তখন পর্যন্ত অপেক্ষায় থাকতে হবে।
আপাতত মার্কেলের আমেরিকা সফর পর্যন্ত সীমাবদ্ধ থাকা যাক, কেননা মার্কেলকে রাশিয়া, চীন আর ইরান বিষয়ে রাজি করাতে না পেরে বাইডেন তাকে হোয়াইট হাউস-এ ডেকে নিয়ে যাচ্ছেন। তাতে প্রতীয়মান হচ্ছে বাইডেন বিশ্ব রাজনীতিতে ধরা খেয়ে গেছেন।
পুতিন-বাইডেন আলোচনা বিষয়ক লেখা আগামীতে নিয়ে আসার চেষ্টা করবো ইনশাল্লাহ…