ঢাকা ০৭:১৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞপ্তি :
সারাদেশের জেলা উপোজেলা পর্যায়ে দৈনিক স্বতঃকণ্ঠে সংবাদকর্মী নিয়োগ চলছে । আগ্রহী প্রার্থীগন জীবন বৃত্তান্ত ইমেইল করুন shatakantha.info@gmail.com // দৈনিক স্বতঃকণ্ঠ অনলাইন ও প্রিন্ট পত্রিকায় বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন ০১৭১১-৩৩৩৮১১, ০১৭৪৪-১২৪৮১৪

আ’লীগের ৭২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে পাবনা-৪ বাসীকে অগ্রিম শুভেচ্ছা- এমপি নূরুজ্জামান বিশ্বাস

বার্তাকক্ষ
  • প্রকাশিত সময় ০৩:৫৯:২৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ জুন ২০২১
  • / 109

ঈশ্বরদী (পাবনা) সংবাদদাতাঃ ঐতিহাসিক ২৩ জুন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৭২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর প্রাক্কালে পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের সহ- সভাপতি, বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব নূরুজ্জামান বিশ্বাস এমপি বলেছেন গৌরব, সফলতা ও স্বার্থকতায় ৭২ পেরিয়ে আজকের আওয়ামী লীগ।

এমপি বিশ্বাস প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আওয়ামী লীগ ও সহযোগি অংগসংঠনের সকল নেতা-কর্মী এবং পাবনা-৪ আসন ঈশ্বরদীআটঘারিয়ার সর্বস্তরের জনগনকে অফুরন্ত অগ্রিম শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

তিনি দলের গৌরবোজ্জল ইতিহাসের বর্ণনা দিয়ে বলেন, ২৩ জুন ১৯৪৯ সাল, ঢাকার কে এম দাস লেনের রোজ গার্ডনে গঠিত হয় পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ। প্রায় তিনশ জন নেতাকর্মীর উপস্থিতিতে সভাটি অনুষ্ঠিত হয়। সভাপতি মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী ও সাধারণ সম্পাদক শামসুল হক নির্বাচিত হন। কারাগারে আটক থাকলেও শেখ মুজিবুর রহমানকে যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক করা হয়। প্রথম কমিটির সাংগঠনিক আকার ছিল ৪০ সদস্যবিশিষ্ট।পুরো পাকিস্তানের ক্ষেত্রে সংগঠনের নাম রাখা হয় নিখিল পাকিস্তান আওয়ামী লীগ। যার সভাপতি নির্বাচিত হন হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী।

১৯৫৪ সালের সাধারণ নির্বাচনের সময় একটা সমঝোতা হয়েছিল এই দলটি হবে একটি অসাম্প্রদায়িক দল। নির্বাচনে ২৩৭টি আসনের মধ্যে যুক্তফ্রন্ট ২২৩টি আসন পায়। যুক্তফ্রন্টের বিজয়ের পর ১৯৫৫ সালে যে কাউন্সিল অধিবেশন হয় সেখানে দলের নাম থেকে ‘মুসলিম’ শব্দটি বাদ দিয়ে পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগ নামকরণ করা হয়। প্রথমবারের মতো অমুসলিমরা দলে যোগদানের সুযোগ পায়। অসাম্প্রদায়িক আওয়ামী লীগে পরিনত হয়। এই সম্মেলনেই প্রথমবারের মতো পাঁচ জন নারী অংশ নেন।

৫২’র ভাষা আন্দোলন, ৫৪’র নির্বাচনে যুক্তফ্রন্টের বিজয়, ৬২’র সামরিক শাসন বিরোধী আন্দোলন, ৬৬-তে স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে বঙ্গবন্ধুর ৬ দফা পেশ, ৬৯ গণঅভ্যুত্থান, ৭০ সালের প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ বিজয়ের ফলে পূর্ববাংলায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অবিসাংবাদিত নেতায় পরিনত হন।

৩ মার্চ যখন পাকিস্তানি শাসকরা জাতীয় পরিষদের অধিবেশন স্থগিত করে। প্রতিবাদে ৭ মার্চ ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা সংগ্রামের ডাক দেন। “এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম”।

২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু গ্রেফতারের পূর্বে স্বাধীনতার চূড়ান্ত ঘোষণা দেন। বঙ্গবন্ধুর নামেই নয় মাস যুদ্ধ করে ১৬ ডিসেম্বর চূড়ান্ত বিজয় লাভ করে একটি স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের জন্ম হয়।

১০ জানুয়ারি ১৯৭২, জাতির পিতার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পর ১২ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করে বাংলাদেশক নিয়ে গিয়েছিলেন অনন্য উচ্চতায়।

মাত্র তিন মাসে ভারতীয় সৈন্য প্রত্যাহার, মাত্র সাত মাসে বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সংবিধান প্রণয়ন, জাতিসংঘ, ওআইসি, কমনওয়েলথসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোতে সদস্যপদ লাভ, ৭৪ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে বাংলায় বক্তব্য প্রদান করে বিশ্ব সভায় বাংলা ভাষার মর্যদাকে প্রতিষ্ঠা করা, এত অল্প সময়ে বাংলাদেশের পক্ষে ১১৬টি দেশের স্বীকৃতি আদায় করেন। জিডিপির প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ৭ শতাংশের উপর। ৭৫ সালে যখন বঙ্গবন্ধু মুক্তিযুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশকে সোনার বাংলায় রূপান্তরিত করতে দ্বিতীয় বিপ্লবের কর্মসূচি বাকশালের মাধ্যমে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে রাষ্ট্র পরিচালনা শুরু করেন তখনই একাত্তরের পরাজিত শক্তির দেশি-বিদেশি দোসররা বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাকে বন্ধ করতে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে।

দীর্ঘ ৬ বছর আওয়ামী লীগ ছিল দিকভ্রান্ত নাবিকের মতো। ১৯৮১ সালের ১৭ মে বঙ্গবন্ধুর রক্তের সুযোগ্য উত্তরাধিকারী জননেত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পতাকা হাতে নিয়ে স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের দায়িত্ব নেন। স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনেন। প্রায় দুইযুগ রাজপথে লড়াই সংগ্রাম করে এরশাদ-খালেদা জিয়ার দুঃশাসনকে পরাজিত করে ১৯৯৬ সালের ১২ জুনের নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে ২৩ জুন আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর দিনে দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার গঠন করেন।

৯৭ সালের ১০ ডিসেম্বর পার্বত্য চট্টগ্রাম ঐতিহাসিক পার্বত্য শান্তিচুক্তি, ৩০ বছর মেয়াদি ভারতের সাথে গঙ্গার পানি চুক্তি, দেশে প্রথমবারের মতো খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন, ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ বাতিল করে জাতির পিতা হত্যাকারীদের বিচার প্রক্রিয়া শুরু, একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের মর্যাদা আদায়, ১৯৯৮ সালে ৯৬২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয়ে যমুনা নদীতে বিশ্বের এগারতম দীর্ঘ বঙ্গবন্ধু সেতু নির্মাণসহ অসংখ্যা কাজ করেন।

২০০৯ সাল থেকে দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে একটানা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীল। জাতির পিতা হত্যাকারীদের বিচারের রায় কার্যকর, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও রায় কার্যকরের মাধ্যমে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের মাধ্যামে ৫৭তম স্যাটেলাইট ক্লাবের সদস্য, পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ, ১৬শ মেগাওয়াট থেকে ২২ হাজার মেগাওয়াটে বিদ্যুৎ উন্নীতকরণ, পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, এলিভেটেট এক্সপ্রেস, অসংখ্য ফ্লাইওভার বৈদেশিক মুদ্রার রির্জাভ প্রায় ৩৫ বিলিয়ন ডলার, মাথাপিছু আয় ৯শ ডলার থেকে বেড়ে ১৯০৯ ডলার, অর্থনৈতিক অগ্রগতির সূচকে শীর্ষ পাঁচ দেশের একটি বাংলাদেশ, আন্তর্জাতিক প্রতিবেদন অনুযায়ী বাংলাদেশে ২০৩০ সাল নাগাদ বিশ্বের ২৯তম, ২০৫০ সালে ২৩তম অর্থনীতির দেশ হবে। রূপকল্প ২০২১ বাস্তবায়ন করে, ভিশন ২০৪১ ও ডেল্টাপ্লান ২১০০ ঘোষণা করা হয়েছে। একটি উন্নত সমুদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণের স্বপ্ন নিয়ে এগিয়ে চলছে। ইতোমধ্যে আমরা উন্নয়নশীল দেশে প্রবেশ করেছি।

জাতির পিতা দুটো স্বপ্নকে সামনে রেখে রাজনীতি করেছেন। একটি হলো বাংলাদেশের স্বাধীনতা অন্যটি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক মুক্তি। তিনি আমাদের স্বাধীনতা দিয়েছেন কিন্তু অর্থনীতি মুক্তির জন্য কাজ শুরু করলেও স্বল্প সময়ের মধ্যে শেষ করে যেতে পারেননি। জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনার সততা, নিষ্ঠা, কর্মদক্ষতার মাধ্যমে বাংলাদেশ অভিষ্ট্য লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে চলছে।

বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের রোল মডেল, বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা আজ স্বপ্ন পূরণের পথে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ও দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে রোজ গার্ডেনের আওয়ামী লীগ ৭১ বছরে আজ মহীরুহে পরিণত হয়েছে। মাঝে মাঝে দু-একটা পাতা ঝরে পড়লেও পাতাগুলোই মাটির সাথে বিলীন হয়ে গেছে। আওয়ামী লীগ আরও উজ্জ্বল থেকে উজ্জ্বলতর হয়েছে। আজ কোটি কোটি মানুষের আস্থা, বিশ্বাস ও ভালোবাসার ঠিকানা। শুধু বাংলাদেশই নয় বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ রাজনৈতিক সংগঠনে পরিণত হয়েছে।

মহান মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়ে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করার মতো গৌরব পৃথিবীতে আর কোনো রাজনৈনিক দলের ইতিহাস নেই। আওয়ামী লীগই একমাত্র দল যাদের নির্বাচনের মাধ্যমে টানা তিন মেয়াদে ক্ষমতায় যাওয়ার রেকর্ড রয়েছে। এই ভুখণ্ডে বাঙালির যত অর্জন তার মূলে রয়েছে আওয়ামী লীগের অবদান। যখনই আওয়ামী লীগ দেশ পরিচালনার সুযোগ পেয়েছে তখনই দেশের মানুষ কিছু না কিছু পেয়েছে। বাঙালি জাতির অর্জন, সমৃদ্ধি, অগ্রগতি ও গৌরবের ৭২ বছরে পদার্পণ করল আওয়ামী লীগ।

আমাদের আস্থার, উন্নয়নের, গর্বের ও ভালবাসার দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। অতীতের সকল আন্দোলন সংগ্রামে এদল সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছে এবং গণমানুষকে ঐক্যবদ্ধ রেখেছে। আজকের দিনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু, মানবতার জননী রাষ্ট্রনায়ক দেশরত্ন শেখ হাসিনাসহ কোটি কোটি আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা। শুভ জন্মদিন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।

আরও পড়ুনঃ আ’লীগের ৭২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সফলতা কামনা করেছেন সাকিবুর রহমান শরীফ কনক

আ’লীগের ৭২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে পাবনা-৪ বাসীকে অগ্রিম শুভেচ্ছা- এমপি নূরুজ্জামান বিশ্বাস

প্রকাশিত সময় ০৩:৫৯:২৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ জুন ২০২১

ঈশ্বরদী (পাবনা) সংবাদদাতাঃ ঐতিহাসিক ২৩ জুন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৭২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর প্রাক্কালে পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের সহ- সভাপতি, বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব নূরুজ্জামান বিশ্বাস এমপি বলেছেন গৌরব, সফলতা ও স্বার্থকতায় ৭২ পেরিয়ে আজকের আওয়ামী লীগ।

এমপি বিশ্বাস প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আওয়ামী লীগ ও সহযোগি অংগসংঠনের সকল নেতা-কর্মী এবং পাবনা-৪ আসন ঈশ্বরদীআটঘারিয়ার সর্বস্তরের জনগনকে অফুরন্ত অগ্রিম শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

তিনি দলের গৌরবোজ্জল ইতিহাসের বর্ণনা দিয়ে বলেন, ২৩ জুন ১৯৪৯ সাল, ঢাকার কে এম দাস লেনের রোজ গার্ডনে গঠিত হয় পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ। প্রায় তিনশ জন নেতাকর্মীর উপস্থিতিতে সভাটি অনুষ্ঠিত হয়। সভাপতি মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী ও সাধারণ সম্পাদক শামসুল হক নির্বাচিত হন। কারাগারে আটক থাকলেও শেখ মুজিবুর রহমানকে যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক করা হয়। প্রথম কমিটির সাংগঠনিক আকার ছিল ৪০ সদস্যবিশিষ্ট।পুরো পাকিস্তানের ক্ষেত্রে সংগঠনের নাম রাখা হয় নিখিল পাকিস্তান আওয়ামী লীগ। যার সভাপতি নির্বাচিত হন হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী।

১৯৫৪ সালের সাধারণ নির্বাচনের সময় একটা সমঝোতা হয়েছিল এই দলটি হবে একটি অসাম্প্রদায়িক দল। নির্বাচনে ২৩৭টি আসনের মধ্যে যুক্তফ্রন্ট ২২৩টি আসন পায়। যুক্তফ্রন্টের বিজয়ের পর ১৯৫৫ সালে যে কাউন্সিল অধিবেশন হয় সেখানে দলের নাম থেকে ‘মুসলিম’ শব্দটি বাদ দিয়ে পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগ নামকরণ করা হয়। প্রথমবারের মতো অমুসলিমরা দলে যোগদানের সুযোগ পায়। অসাম্প্রদায়িক আওয়ামী লীগে পরিনত হয়। এই সম্মেলনেই প্রথমবারের মতো পাঁচ জন নারী অংশ নেন।

৫২’র ভাষা আন্দোলন, ৫৪’র নির্বাচনে যুক্তফ্রন্টের বিজয়, ৬২’র সামরিক শাসন বিরোধী আন্দোলন, ৬৬-তে স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে বঙ্গবন্ধুর ৬ দফা পেশ, ৬৯ গণঅভ্যুত্থান, ৭০ সালের প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ বিজয়ের ফলে পূর্ববাংলায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অবিসাংবাদিত নেতায় পরিনত হন।

৩ মার্চ যখন পাকিস্তানি শাসকরা জাতীয় পরিষদের অধিবেশন স্থগিত করে। প্রতিবাদে ৭ মার্চ ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা সংগ্রামের ডাক দেন। “এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম”।

২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু গ্রেফতারের পূর্বে স্বাধীনতার চূড়ান্ত ঘোষণা দেন। বঙ্গবন্ধুর নামেই নয় মাস যুদ্ধ করে ১৬ ডিসেম্বর চূড়ান্ত বিজয় লাভ করে একটি স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের জন্ম হয়।

১০ জানুয়ারি ১৯৭২, জাতির পিতার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পর ১২ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করে বাংলাদেশক নিয়ে গিয়েছিলেন অনন্য উচ্চতায়।

মাত্র তিন মাসে ভারতীয় সৈন্য প্রত্যাহার, মাত্র সাত মাসে বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সংবিধান প্রণয়ন, জাতিসংঘ, ওআইসি, কমনওয়েলথসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোতে সদস্যপদ লাভ, ৭৪ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে বাংলায় বক্তব্য প্রদান করে বিশ্ব সভায় বাংলা ভাষার মর্যদাকে প্রতিষ্ঠা করা, এত অল্প সময়ে বাংলাদেশের পক্ষে ১১৬টি দেশের স্বীকৃতি আদায় করেন। জিডিপির প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ৭ শতাংশের উপর। ৭৫ সালে যখন বঙ্গবন্ধু মুক্তিযুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশকে সোনার বাংলায় রূপান্তরিত করতে দ্বিতীয় বিপ্লবের কর্মসূচি বাকশালের মাধ্যমে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে রাষ্ট্র পরিচালনা শুরু করেন তখনই একাত্তরের পরাজিত শক্তির দেশি-বিদেশি দোসররা বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাকে বন্ধ করতে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে।

দীর্ঘ ৬ বছর আওয়ামী লীগ ছিল দিকভ্রান্ত নাবিকের মতো। ১৯৮১ সালের ১৭ মে বঙ্গবন্ধুর রক্তের সুযোগ্য উত্তরাধিকারী জননেত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পতাকা হাতে নিয়ে স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের দায়িত্ব নেন। স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনেন। প্রায় দুইযুগ রাজপথে লড়াই সংগ্রাম করে এরশাদ-খালেদা জিয়ার দুঃশাসনকে পরাজিত করে ১৯৯৬ সালের ১২ জুনের নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে ২৩ জুন আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর দিনে দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার গঠন করেন।

৯৭ সালের ১০ ডিসেম্বর পার্বত্য চট্টগ্রাম ঐতিহাসিক পার্বত্য শান্তিচুক্তি, ৩০ বছর মেয়াদি ভারতের সাথে গঙ্গার পানি চুক্তি, দেশে প্রথমবারের মতো খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন, ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ বাতিল করে জাতির পিতা হত্যাকারীদের বিচার প্রক্রিয়া শুরু, একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের মর্যাদা আদায়, ১৯৯৮ সালে ৯৬২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয়ে যমুনা নদীতে বিশ্বের এগারতম দীর্ঘ বঙ্গবন্ধু সেতু নির্মাণসহ অসংখ্যা কাজ করেন।

২০০৯ সাল থেকে দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে একটানা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীল। জাতির পিতা হত্যাকারীদের বিচারের রায় কার্যকর, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও রায় কার্যকরের মাধ্যমে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের মাধ্যামে ৫৭তম স্যাটেলাইট ক্লাবের সদস্য, পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ, ১৬শ মেগাওয়াট থেকে ২২ হাজার মেগাওয়াটে বিদ্যুৎ উন্নীতকরণ, পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, এলিভেটেট এক্সপ্রেস, অসংখ্য ফ্লাইওভার বৈদেশিক মুদ্রার রির্জাভ প্রায় ৩৫ বিলিয়ন ডলার, মাথাপিছু আয় ৯শ ডলার থেকে বেড়ে ১৯০৯ ডলার, অর্থনৈতিক অগ্রগতির সূচকে শীর্ষ পাঁচ দেশের একটি বাংলাদেশ, আন্তর্জাতিক প্রতিবেদন অনুযায়ী বাংলাদেশে ২০৩০ সাল নাগাদ বিশ্বের ২৯তম, ২০৫০ সালে ২৩তম অর্থনীতির দেশ হবে। রূপকল্প ২০২১ বাস্তবায়ন করে, ভিশন ২০৪১ ও ডেল্টাপ্লান ২১০০ ঘোষণা করা হয়েছে। একটি উন্নত সমুদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণের স্বপ্ন নিয়ে এগিয়ে চলছে। ইতোমধ্যে আমরা উন্নয়নশীল দেশে প্রবেশ করেছি।

জাতির পিতা দুটো স্বপ্নকে সামনে রেখে রাজনীতি করেছেন। একটি হলো বাংলাদেশের স্বাধীনতা অন্যটি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক মুক্তি। তিনি আমাদের স্বাধীনতা দিয়েছেন কিন্তু অর্থনীতি মুক্তির জন্য কাজ শুরু করলেও স্বল্প সময়ের মধ্যে শেষ করে যেতে পারেননি। জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনার সততা, নিষ্ঠা, কর্মদক্ষতার মাধ্যমে বাংলাদেশ অভিষ্ট্য লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে চলছে।

বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের রোল মডেল, বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা আজ স্বপ্ন পূরণের পথে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ও দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে রোজ গার্ডেনের আওয়ামী লীগ ৭১ বছরে আজ মহীরুহে পরিণত হয়েছে। মাঝে মাঝে দু-একটা পাতা ঝরে পড়লেও পাতাগুলোই মাটির সাথে বিলীন হয়ে গেছে। আওয়ামী লীগ আরও উজ্জ্বল থেকে উজ্জ্বলতর হয়েছে। আজ কোটি কোটি মানুষের আস্থা, বিশ্বাস ও ভালোবাসার ঠিকানা। শুধু বাংলাদেশই নয় বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ রাজনৈতিক সংগঠনে পরিণত হয়েছে।

মহান মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়ে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করার মতো গৌরব পৃথিবীতে আর কোনো রাজনৈনিক দলের ইতিহাস নেই। আওয়ামী লীগই একমাত্র দল যাদের নির্বাচনের মাধ্যমে টানা তিন মেয়াদে ক্ষমতায় যাওয়ার রেকর্ড রয়েছে। এই ভুখণ্ডে বাঙালির যত অর্জন তার মূলে রয়েছে আওয়ামী লীগের অবদান। যখনই আওয়ামী লীগ দেশ পরিচালনার সুযোগ পেয়েছে তখনই দেশের মানুষ কিছু না কিছু পেয়েছে। বাঙালি জাতির অর্জন, সমৃদ্ধি, অগ্রগতি ও গৌরবের ৭২ বছরে পদার্পণ করল আওয়ামী লীগ।

আমাদের আস্থার, উন্নয়নের, গর্বের ও ভালবাসার দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। অতীতের সকল আন্দোলন সংগ্রামে এদল সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছে এবং গণমানুষকে ঐক্যবদ্ধ রেখেছে। আজকের দিনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু, মানবতার জননী রাষ্ট্রনায়ক দেশরত্ন শেখ হাসিনাসহ কোটি কোটি আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা। শুভ জন্মদিন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।

আরও পড়ুনঃ আ’লীগের ৭২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সফলতা কামনা করেছেন সাকিবুর রহমান শরীফ কনক