রাজশাহী অঞ্চলে একদিনে মৃত্যু ও শনাক্তের হারে নতুন রেকর্ড
- প্রকাশিত সময় ০১:১৫:০৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩০ জুন ২০২১
- / 203
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ রাজশাহী বিভাগে একদিনে আগের সব রেকর্ডকে ছাড়িয়ে সর্বোচ্চসংখ্যক করোনা রোগী শনাক্ত ও মৃত্যু হয়েছে। বিভাগে গত ২৪ ঘণ্টায় ১ হাজার ৫৯ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।
এর আগে ২০ জুন সর্বোচ্চ ১ হাজার ২৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছিল। এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বিভাগে সর্বোচ্চ ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর আগে গত ২০ জুন এক দিনে সর্বোচ্চ ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছিল।
মঙ্গলবার ২৯ জুন বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক নাজমা আক্তার স্বাক্ষরিত প্রতিবেদন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রতিবেদন সূত্রে জানা গেছে, বিভাগে গত ২৪ ঘণ্টায় আগের দিনের তুলনায় একটু বেশি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় ৪ হাজার ৮৬৫ জনের নমুনা পরীক্ষায় করোনা শনাক্ত হয়েছে ১ হাজার ৫৯ জনের। শনাক্তের হার ২১ দশমিক ৭৬ শতাংশ। আগের দিন ৪ হাজার ২৮৬ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৮৮৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছিল।
শনাক্তের হার ছিল ২০ দশমিক ৬০ শতাংশ। অর্থাৎ গত ২৪ ঘণ্টায় রাজশাহী বিভাগে নমুনা পরীক্ষা বেড়েছে এবং শনাক্ত বাড়ার পাশাপাশি শনাক্তের হারও বেড়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত ১ হাজার ৫৯ জন নিয়ে বিভাগে মোট করোনার রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৪ হাজার ৮২১।
তাদের মধ্যে ২৪ ঘণ্টায় রাজশাহীতে শনাক্ত হয়েছে সর্বোচ্চ ৩৬৩ জন। এ ছাড়া চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৬৬, নওগাঁয় ১১৩, নাটোরে ১৬১, জয়পুরহাটে ৬২, বগুড়ায় ১৫২, সিরাজগঞ্জে ৪৩ ও পাবনায় ৯৯ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।
রাজশাহী বিভাগে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত হয়ে ১৯ জন মারা গেছেন। বিভাগে এক দিনে এটি এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ মৃত্যু। এ নিয়ে বিভাগে করোনায় ৮৫১ জন মারা গেছেন।
গত ২৪ ঘণ্টায় বগুড়ায় ৭ জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৪ জন, রাজশাহীতে ৩ জন, নওগাঁয় ২ জন এবং নাটোর, জয়পুরহাট ও সিরাজগঞ্জে ১ জন করে মারা গেছেন। বিভাগের এখন পর্যন্ত মারা যাওয়া ৮৫১ জনের মধ্যে সর্বোচ্চ ৩৮৪ জনের মৃত্যু হয়েছে বগুড়া জেলায়।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মৃত্যু হয়েছে রাজশাহীতে ১৫২ জন। এ ছাড়া করোনায় চাঁপাইনবাবগঞ্জে ১০৮ জন, নওগাঁয় ৭৬ জন, নাটোরে ৫০ জন, জয়পুরহাটে ২৮ জন, সিরাজগঞ্জে ৩০ জন এবং পাবনায় ২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। রাজশাহী বিভাগে গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ২৭৭ জন।
এ নিয়ে বিভাগে মোট সুস্থ হয়েছেন ৩৮ হাজার ৫৯৪ জন। বর্তমানে বিভাগের আট জেলায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৫ হাজার ৯৫৭ জন। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হয়েছেন ১৮৩ জন। বিভাগে বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছেন ১০ হাজার ২৭০ জন করোনা রোগী।
বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক নাজমা আক্তার বলেন, রাজশাহী বিভাগে করোনার সংক্রমণ বাড়ছে। এ কারণে মৃত্যুও বাড়ছে। গ্রামের মানুষ বেশি মারা যাচ্ছেন। তাঁরা কম সচেতন। তাঁদের জোর করেও টিকা দেওয়া যায়নি।
করোনায় আক্রান্ত হলেও তাঁরা পরীক্ষা করান না। উল্টো তাঁরা করোনা হলে বিষয়টি গোপন করার সব রকম চেষ্টা করছেন। নাজমা আক্তার আরও বলেন, করোনার ধরন (ডেলটা) দেখে বোঝা যাচ্ছে, অক্সিজেনই রোগীকে বাঁচিয়ে রাখতে পারে।
কিন্তু গ্রামের মানুষ শেষ মুহূর্তে হাসপাতালে আসছেন। এ কারণে তাঁদের মধ্যে মৃত্যুর হার বেড়েই চলেছে। এ বিষয়ে সচেতন না হলে সামনে কঠিন বিপদ অপেক্ষা করছে।
তাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। করোনার উপসর্গ দেখা দিলে পরীক্ষা করাতে হবে। এ বিষয়ে কোনো অবহেলা করা যাবে না।