চাটখিলের শ্রেষ্ঠ অফিসার ইনচার্জ আনোয়ারুল ইসলামের বদলী, নতুন ইনচার্জ আবুল খায়ের
- প্রকাশিত সময় ০৫:১১:১৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ জুলাই ২০২১
- / 208
মনির হোসেন (স্টাফ রিপোর্টার): আজ ২৯ শে জুলাই বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় নোয়াখালী জেলার চাটখিল থানায় অফিসার ইনচার্জ হিসেবে আবুল খায়ের যোগদান করেন। গত দুইবছরের বেশি সময় ধরে দায়িত্ব থাকা চাটখিলের শ্রেষ্ঠ অফিসার ইনচার্জ আনোয়ারুল ইসলাম কে বদলী করা হয়েছে নোয়াখালী জেলার হাতিয়া উপজেলায়।
হাতিয়া থেকে চাটখিলে নতুন করে যোগদান করেন অফিসার ইনচার্জ আবুল খায়ের। ২০১৯ সালের ২৮শে মার্চ চাটখিল থানায় যোগদানের পর ২ বছর ৪ মাসে পাল্টে গেছে চাটখিল থানার আইন-শৃঙ্খলার চিত্র। তিনি চাটখিল থানায় যোগদান করার পর মাদক ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষনা করেন।
মাদক বিরোধী এই অভিযানে তিনি শুধু ইয়াবা ব্যবসায়ীদের গ্রেফতার করেই চুপ থাকেন’নি। প্রতি শুক্রবার উপজেলার প্রত্যেকটি মসজিদে জুম্মার নামাযের খোৎবার পর সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে মুসল্লিদের মাঝে সচেনতামূলক বক্তব্য প্রদান করতেন এবং মাদক বিরোধী লিফলেট বিতরণ করেন।
গত মাসে চাটখিল থানা পুলিশ বিপুল মাদক ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করেন। ওসি আনোয়ারুল ইসলাম যোগদানের পর এখন পর্যন্ত চাটখিল থানায় মোট এখন ৪০০ টির অধিক মাদক মামলা দায়ের করা হয়েছে।
পুলিশের সাথে বন্দুক যুদ্ধে চাটখিলের দুই বড় মাদক ব্যবসায়ী পরকোটের মনির ও হাটপুকুরিয়া ইউনিয়নের সায়েম ফিরোজ নিহত হয়। শুধু মাদক বিরোধী অভিযান নয়, গ্রেফতারি পরোয়ানা ভুক্ত আসামী গ্রেফতারের জন্য বিভিন্ন সময় নোয়াখালী জেলা পুলিশ কর্তৃক পুরস্কার প্রাপ্ত হয় চাটখিল থানা।
ওসি অনোয়ারুল ইসলামের সফলতার বহরে সবচেয়ে বড় সফলতা, তিনি চাটখিল থানায় যোগদান করার পরে কয়েকটি হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে। প্রথম হত্যাকান্ডের ঘটনাটি ছিল উপজেলার নোয়াখলা ইউনিয়নের পশ্চিম শ্রীপুরে।
হত্যাকান্ড সংগঠিত হবার ১ ঘন্টার মধ্যে ওসি আনোয়ারুল ইসলাম নিজেই হত্যাকারীকে গ্রেফতার করে এবং হত্যার রহস্য উন্মোচন করতে সক্ষম হয়। দ্বিতীয় হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে চাটখিল থানার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নে।
সেই হত্যা কান্ডের ঘটনায় পুলিশ ৩ ঘন্টার মধ্যে হত্যাকারীকে গ্রেফতার করে। তৃতীয় ঘটনা ঘটে কিছু দিন পূর্বে থানার রামনারায়নপুর ইউনিয়নের উত্তর রামনারায়নপুর গ্রামে “ভাসুর কর্তৃক ছোট ভাইয়ের স্ত্রী খুন।” এই হত্যাকান্ডটি ওসি আনোয়ারুল ইসলামের সময়ে সবচেয়ে আলোচিত হত্যাকান্ড।
এই হত্যাকান্ডের আসামীকে ওসি নিজেই টানা ৭২ ঘন্টা অভিযান পরিচালনা করে এবং হত্যাকারীকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতার করার পর হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ধারালো দা’ও ঘটনার পার্শ্ববর্তী পুকুর থেকে হত্যাকারীকে সাথে নিয়েই উদ্ধার করে। আরেকটি হল রিকশাওয়ালাকে হত্যা করে মারার পর ওড়নার সূত্র ধরে মোহরকে গ্রেপ্তার করে অস্ত্র উদ্ধার।
নোয়াখালীর চাটখিল থানার অফিসার ইনচার্জ আনোয়ারুল ইসলাম মে ২০২১ এ নোয়াখালী জেলার শ্রেষ্ঠ অফিসার ইনচার্জ নির্বাচিত হন।হত্যাকারী ও মাদক কারবারিদের রুঁখে দিয়েও তিনি আরো একটি সফলতা স্থাপন করেছেন।
চাটখিল থানা এলাকায় মোটর সাইকেল চোরা কারবারীদের নেটওয়ার্ক ভেঙ্গে দিয়ে। মাত্র একদিনে বিভিন্ন এলাকায় ওসি নিজেই অভিযান পরিচালনা করে কয়েক ঘন্টার মধ্যে ৩ জন চোরাকারবারীকে গ্রেফতার করে এবং ০৩ টি চোরাই মোটর সাইকেল উদ্ধার করে। বর্তমানে চলমান করোনা পরিস্থিতিে কঠোর ভূমিকা রেখেছেন তিনি।
লকডাউন বাস্তবায়নে ও সামাজিক দুরুত্ব নিশ্চিত করতে যে সকল অভিযান ক্রমান্নয়ে করে যাচ্ছেন তা বর্তমানে অনলাইনে ভাইরাল হয়ে গেছে। জনমনে যা অত্যন্ত প্রশংসা কুঁড়িয়েছে।
জনবান্ধব এই অফিসার ইনচার্জের কথা শুনতে চাইলে সাধারন নাগরিকরা বলেন, চাটখিল থানার ওসিকে যে কোন প্রয়োজনে ফোন করলে তিনি সুন্দরভাবে সম্বোধন করে কথা বলেন এবং যে কোন বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।
এছাড়াও স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও জনপ্রতিনিধিদের সাথে খুব ভালো সম্পর্ক বিদ্যমান বর্তমান চাটখিল থানার অফিসার ইনচার্জের সাথে।
চাটখিল থানার অফিসার ইনচার্জ, আনোয়ারুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ” আমার প্রথম কাজ হলো পুলিশ জনগনের বন্ধু তা প্রমান করা। এ কাজটি আমি করি শিষ্টের লালন, দুষ্টের দমন এই নীতিতে। আমি বিশ্বাস করি অপরাধী কোন দলের নয়।
একজন ওসি হিসেবে জনগনকে যে সেবা দেওয়ার কথা আমি শুধু আমার পেশাদারিত্ব থেকে সেটাই করছি, তবে মাদক, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ সহ যে কোন অপকর্মের বিরুদ্ধে চাটখিল থানার এই কর্মকান্ড চলিয়েছি চাটখিল থানা এলাকায় কোন ইয়াবা ব্যবসায়ী ও সন্ত্রাসীর স্থান হবে না।”
চাকুরী সুবাদে আমাদের নোয়াখালী পুলিশ সুপার মহোদয়ের দিকনির্দেশনায় আমাকে হাতিয়া থানায় বদলী করা হয়েছে।