টাঙ্গাইলে যমুনা নদীর পানি কমলেও দুর্ভোগ কমেনি পানি বন্দি মানুষের
- প্রকাশিত সময় ০১:১০:০০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২১
- / 98
টাঙ্গাইল প্রতিনিধিঃ টাঙ্গাইলে যমুনা ও ঝিনাই নদীর পানি কমলেও দুর্ভোগ কমেনি পানিবন্দি মানুষের। দেখা দিয়েছে শুকনো খাবার, বিশুদ্ধ পানি অভাব সহ নানা রোগ ব্যাধি।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, ২৪ ঘণ্টায় ধলেশ্বরী নদীর পানি বাড়লেও যমুনা ও ঝিনাই নদীর পানি কমেছে। যমুনা নদীর পানি ৮ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ৬১ সেন্টিমিটার, ঝিনাই নদীর পানি ৫ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ৮৭ সেন্টিমিটার এবং ধলেশ্বরী নদীর পানি ১ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ৭৯ উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
জেলার ভূঞাপুর উপজেলার ৪টি ইউনিয়ন, কালিহাতী উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা, টাঙ্গাইল সদর উপজেলার পশ্চিমাঞ্চলের ৭টি, নাগরপুর উপজেলার ৯টি, বাসাইল পৌরসভাসহ সবকটি ইউনিয়নে, মির্জাপুর ৪টি ও দেলদুয়ার উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের প্রায় দুই শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
বন্যার পানিতে জেলার পটলবাজার,কাকুয়া, এলেঙ্গা-মগড়া, ভূঞাপুর উপজেলার গোবিন্দাসী বাজার থেকে ভালকুটিয়া পর্যন্ত পাকা সড়ক, বাসাইল উপজেলার পৌরসভার একটি ব্রিজ ও কাঞ্চনপুরের গ্রোথ সেণ্টার-কাজিরাপাড়া সড়কে কালভার্ট প্রবল স্রোতে ভেঙে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। সে সব এলাকায় এখনও লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে।
আসাদ উকিল বলেন, দুই সপ্তাহ ধরে আমাদের এলাকায় বন্যার পানি এলাকায় প্রবেশ করেছে। কোর্টে যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে লুঙ্গি পরে বের হতে হয় রাস্তায় এসে প্যান্ট পড়ে কোর্টে যাই। বাড়ি ঘর ,রাস্তা-ঘাট সব তলিয়ে যাওয়া যাতায়াতসহ যাবতীয় কাজ করতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ভূঞাপুর, কালিহাতী,সদর ও নাগরপুর এ চারটি উপজেলার বন্যা দুর্গতদের জন্য ৪০ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
বন্যার ক্ষয়ক্ষতি নিরূপনের জন্য প্রতিটি উপজেলায় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তালিকা পেলে যথাস্থানে প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়া হবে। এছাড়া, কালিহাতী উপজেলায় ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত ১১৮টি পরিবারের মাঝে নগদ ৫ হাজার টাকা ও ঢেউটিন, ৯০ পরিবারের মাঝে ১০ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আহসানুল বাশার জানান, চলতি বন্যার পানি এক সপ্তাহের মধ্যে নেমে গেলে ক্ষতিগ্রস্ত ৭৯০ হেক্টর জমির রোপা আমনের ৫০-৬০ ভাগ ধান রক্ষা পেতে পারে।
পানি নেমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত জমিতে আমন রোপনের জন্য তারা কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছেন। এছাড়া, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের প্রণোদনার পাশাপাশি আগাম রবিশস্য চাষে সহায়তা দিয়ে তারা ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করবেন।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সিরাজুল ইসলাম জানান, বন্যায় পানি বেড়ে নদী এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। তুলনামূলকভাবে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন রোধে চেষ্টা চালানো হচ্ছে। পানি কমে গেলে স্থায়ীভাবে নদী তীর সংরক্ষণে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।