পাবিপ্রবির শিক্ষার্থীদের শেসনজটে মূল্যবান সময় হারিয়ে যাচ্ছে
- প্রকাশিত সময় ০৬:৩০:১২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৯ নভেম্বর ২০২১
- / 77
পাবিপ্রবি প্রতিনিধি: পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা কার্যক্রম বহুদিন ধরে জটের সম্মুখীনে পরে আছে। শিক্ষাকার্যক্রম বর্ষ পঞ্জিকা অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের অষ্টম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের স্নাতক শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে।
কিন্তু ২০২১ সালের নভেম্বর মাসে এসেও দেখা যাচ্ছে তাদের আট সেমিস্টারের (চার বছর) স্নাতক কোর্স শেষ হয় নাই। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ২১ টি বিভাগ আছে। সব মিলিয়ে এখানে শিক্ষার্থী আছে প্রায় ৪৫০০।
শিক্ষার্থীদের মধ্যে এই দূরস্বপ্নের অন্যতম কারণ হল সেমিস্টার জট। অষ্টম ব্যাচ থেকে শুরু করে ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা তাদের জীবন থেকে হারিয়ে ফেলছে কমপক্ষে ১.৫ থেকে ২ বছর। তাদের এই মূল্যবান সময় নষ্ট হওয়ার জন্য তারা তাদের শিক্ষক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনকে দায়ী করছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অষ্টম ব্যাচের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী, ফাসিহ্ উদ্দীন ফয়সাল বলেন, “বিশ্বাবিদ্যালয়ে সেশন জটের অন্যতম কারণ হলো শিক্ষক ও ক্লাসরুম সংকট। সাপ্তাহিক ছুটি দুইদিনের পরিবর্তে একদিন এবং শীতকালীন ছুটিসহ বিভিন্ন ছুটি কমিয়ে আনার মাধ্যমে সেশন জট সমস্যার সমাধান করা যাবে বলে মনে করি।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, কামরুজ্জামন কবির বিভাগ গোপন রাখার শর্তে তিনি বলেন,”সেশনজট ছাত্রদের জীবনের অভিসাপ। ছাত্রদের ২, ৩ বছরের কোন দাম নেই। কিন্তু চাকরির বাজারে ৩০ বছর পার হলেই আর সুযোগ নেই।
চার বছরের কোর্স শেষ করতে যদি ৫-৭ বছর লাগে তাহলে আগেই বিজ্ঞপ্তিতে বলা উচিত যে এটা ৬ বছরের কের্স। সিস্টেম পরিবর্তন করা দরকার।”
রসায়ন বিভাগের ১৫-১৬ সেশনের শিক্ষার্থী, হাসান রনি বলেন,”জটের কষাঘাতে বের হতে পারছে না শিক্ষার্থীরা,বাড়ছে হতাশা,হতাশা থেকে ভুল সিদ্ধান্ত তারপর দূর্ঘটনা।তাই এ ইস্যুটিকে গুরুত্বের সাথে নেয়া উচিৎ সকলকে।”
সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষার্থী, শহিদুল ইসলাম শিহাব বলেন,”ছাত্র রাজনীতি এবং শিক্ষকদের আন্তরিকতার অভাবে সেশনজট হয়েছে। আমার জীবন থেকে হারিয়ে গেছে ১ বছর ৬ মাস।”
অন্য দিকে শিক্ষকদের বক্তব্য এমন যে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম জটে পরার অন্যতম কারণ হলো করোনা। সরজমিনে দেখা গেছে যে, বিশ্ববিদ্যালয়ে শ্রেণি কক্ষের সংকট আছে, আছে শিক্ষক সংকটও।
অনেক শিক্ষক মনে করেন, নতুন বিল্ডিং গুলো তৈরি হলে শ্রেণি কক্ষে সমস্যা থাকবে না এবং শিক্ষা কার্যক্রমে যে জট পরেছে ধিরে ধিরে তা কাটিয়ে উঠা যাবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর, সহকারী অধ্যাপক ড. হাসিবুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন কমিটি এই বিষয়ে ভালো জানেন। ডিন কমিটির সাথে যোগাযোগ করলে ভালো হয়।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন কমিটির সভাপতি, ড. মোঃ সাইফুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন,” আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শীতকালীন ছুটি কমিয়ে আনছি। প্রত্যেক বিভাগের চেয়ারম্যানকে এই বিষয়ে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গণিত বিভাগের চেয়ারম্যান, ড. মো. ফাজলুল হক বলেন, “আমাদের বিভাগের বিভিন্ন সেশনের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা চলছে। বর্তমান অবস্থা স্থিতিশীল থাকলে খুব দ্রুতই সেমিস্টার জট থেকে শিক্ষার্থীরা মুক্তি পাবে।”
বাংলা বিভাগের চেয়ারম্যান, সহকারী অধ্যাপক মো. হুমায়ুন কবির বলেন, “আমরা আগামী ছয় মাসের মধ্যে এই সমস্যা সমাধান করে ফেলতে পারবো। “ফার্মাসি বিভাগের চেয়ারম্যান, সহকারী অধ্যাপক মনিরুল ইসলাম বলেন, “আমরা প্রাণপণে চেষ্টা করছি, আশা করি খুব শীঘ্রই শিক্ষার্থীরা সেশনজট মুক্ত ক্যাম্পাস পাবে।”