ঢাকা ০৯:৩৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞপ্তি :
সারাদেশের জেলা উপোজেলা পর্যায়ে দৈনিক স্বতঃকণ্ঠে সংবাদকর্মী নিয়োগ চলছে । আগ্রহী প্রার্থীগন জীবন বৃত্তান্ত ইমেইল করুন shatakantha.info@gmail.com // দৈনিক স্বতঃকণ্ঠ অনলাইন ও প্রিন্ট পত্রিকায় বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন ০১৭১১-৩৩৩৮১১, ০১৭৪৪-১২৪৮১৪

পাবনার চাটমোহরে খেজুরের পাটালী গুড় তৈরীতে ব্যস্ত সময় পর করছেন গাছীরা

বার্তাকক্ষ
  • প্রকাশিত সময় ০৪:১১:৪৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ৫ ডিসেম্বর ২০২১
  • / 122

চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি : পাবনার চাটমোহরে খেজুরের পাটালী গুড় তৈরীতে ব্যস্ত সময় পর করছেন গাছীরা। খেজুরের রস থেকে তারা প্রতিদিন তৈরী করছেন পাটালী গুড়।

গাছ থেকে রসের হাড়ি নামানো, জ্বাল করে গুর তৈরী করা, গাছে রসের হাড়িবাধা, জ্বালানী সংগ্রহ করা এসকল কাজে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে তাদের। চাটমোহরে গাছীদের পাশাপাশি নাটোর, রাজশাহীর বিভিন্ন এলাকার গাছীরা শীত মৌসুমে চাটমোহরে এসে গৃহস্থের গাছ ইজারা নিয়ে গুড় তৈরীর কাজ করে থাকেন।

পাবনার চাটমোহরের বিলচলন ইউনিয়নের কুমারগাড়া গ্রামে অবস্থান করে রাজশাহীর বাঘার বলিহার শহীদপুর গ্রামের ময়নুল,মনিরুল ও মকবুল যৌথ ভাবে খেজুর গাছের পরিচর্যা, রস সংগ্রহ ও পাটালী গুড় তৈরীর কাজ করছেন। ময়নুল জানান, তারা প্রত্যেকেই প্রায় পনেরো বছর যাবত পাটালী গুড় তৈরীর কাজ করেন।
চাটমোহরে আট বছর যাবত পাটালী গুড় তৈরী করে আসছেন।

কুমারগাড়া গ্রামে আবুল হোসেন মাস্টারের বাড়িতে থেকে তারা এ কাজ করছেন। ৩০ জন গৃহস্থের ২৫০ টি খেজুরের গাছ থেকে রস সংগ্রহ করেন তারা। পালাক্রমে প্রতিদিন ১শ ২০ টি গাছ থেকে রস সংগ্রহ করেন।

এক একজন ৪০ টি করে গাছ প্রস্তত করে রসের হাড়ি বাঁধতে পারেন। দুপুর থেকে প্রায় ৪ টা পর্যন্ত গাছে রসের হাড়ি বাঁধেন। এর পর রাত প্রায় সাতটা পর্যন্ত জ্বালানী সংগ্রহের কাজ করেন। ভোড় ৩ টায় ঘুম থেকে উঠেই ব্যস্ত হয়ে পরেন রস সংগ্রহে।

তিন ঘন্টা জ্বাল দেওয়ার পর রস গুড়ের লাল রঙ ধারণ করে। এসময় রসের ঘনত্ব বেড়ে যায়। চারের এক পাশ অপেক্ষাকৃত নিচু করলে লাল ঘন রস চারের এক পাশে চলে যায়। উঁচু পাশটায় জমে থাকা যৎসামান্য ঘন গুড় বাঁশের কাঠি দিয়ে কয়েক মিনিট ঘষে তৈরী করেন গুড়ের বীজ। এর পর তা মিশিয়ে দেন সমস্ত লাল রসে।

আবার কয়েক মিনিট নেড়ে গুড়ের ঘনত্ব বাড়ান। এসময় গুড় বেশ ঘন হয়ে আসে। এ ঘন তরল গুড় বিভিন্ন সাইজের সাচে ঢেলে তৈরী করেন পাটালী গুড়। প্রতিদিন প্রায় ৩০০ লিটার রস পাচ্ছেন। প্রতিদিন ৫০ কেজি গুড় পাচ্ছেন তারা। পূর্ণ মৌসুমে প্রতিদিন ৪শ থেকে ৪শ ৫০ লিটার রস পান তারা। সেসময় গুড়ের পরিমান ও বাড়ে। প্রতি কেজি পাটালী গুড় পাইকারী ১১০ টাকায় ও খুচরা ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

গাছের মালিকদের প্রতিটি গাছের জন্য বছরে ২ থেকে ৩ কেজি করে গুড় দিতে হয়। জ্বালানীর দাম বেড়েছে। আনুষাঙ্গিক অন্যান্য জিনিষের দামও বেড়েছে। সব মিলিয়ে আমাদের শ্রমিকের মজুরী হিসেবে প্রতি দিন ৪ থেকে ৫শ টাকা থেকে যায়।

খেজুরের পাটালী গুড় প্রসঙ্গে ডাঃ শাহিনুর রহমান শাহিন বলেন, গুড় হজমে সহায়তা করা ও এনজাইমের শক্তি বাড়ায়, আয়রনের ঘাটতি কমাতে পারে, শরীরে হরমোনের সমতা বজায় রাখে, শরীর গরম রাখতে সহায়তা করে।

তবে অতিরিক্ত গুড় খেলে ওজন বৃদ্ধি পেতে পারে, রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়ে, স্বাস্থ্যকর পরিবেশে গুড় তৈরী না করলে তাতে জীবাণু সংক্রমনের সম্ভাবনা থাকে এবং সদ্য তৈরী গুড় খেলে ডায়রিয়া হতে পারে।

আরও পড়ুনঃ পাবনার চাটমোহরে বিনামূল্যে নকশীকাঁথা সেলাই প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত

পাবনার চাটমোহরে খেজুরের পাটালী গুড় তৈরীতে ব্যস্ত সময় পর করছেন গাছীরা

প্রকাশিত সময় ০৪:১১:৪৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ৫ ডিসেম্বর ২০২১

চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি : পাবনার চাটমোহরে খেজুরের পাটালী গুড় তৈরীতে ব্যস্ত সময় পর করছেন গাছীরা। খেজুরের রস থেকে তারা প্রতিদিন তৈরী করছেন পাটালী গুড়।

গাছ থেকে রসের হাড়ি নামানো, জ্বাল করে গুর তৈরী করা, গাছে রসের হাড়িবাধা, জ্বালানী সংগ্রহ করা এসকল কাজে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে তাদের। চাটমোহরে গাছীদের পাশাপাশি নাটোর, রাজশাহীর বিভিন্ন এলাকার গাছীরা শীত মৌসুমে চাটমোহরে এসে গৃহস্থের গাছ ইজারা নিয়ে গুড় তৈরীর কাজ করে থাকেন।

পাবনার চাটমোহরের বিলচলন ইউনিয়নের কুমারগাড়া গ্রামে অবস্থান করে রাজশাহীর বাঘার বলিহার শহীদপুর গ্রামের ময়নুল,মনিরুল ও মকবুল যৌথ ভাবে খেজুর গাছের পরিচর্যা, রস সংগ্রহ ও পাটালী গুড় তৈরীর কাজ করছেন। ময়নুল জানান, তারা প্রত্যেকেই প্রায় পনেরো বছর যাবত পাটালী গুড় তৈরীর কাজ করেন।
চাটমোহরে আট বছর যাবত পাটালী গুড় তৈরী করে আসছেন।

কুমারগাড়া গ্রামে আবুল হোসেন মাস্টারের বাড়িতে থেকে তারা এ কাজ করছেন। ৩০ জন গৃহস্থের ২৫০ টি খেজুরের গাছ থেকে রস সংগ্রহ করেন তারা। পালাক্রমে প্রতিদিন ১শ ২০ টি গাছ থেকে রস সংগ্রহ করেন।

এক একজন ৪০ টি করে গাছ প্রস্তত করে রসের হাড়ি বাঁধতে পারেন। দুপুর থেকে প্রায় ৪ টা পর্যন্ত গাছে রসের হাড়ি বাঁধেন। এর পর রাত প্রায় সাতটা পর্যন্ত জ্বালানী সংগ্রহের কাজ করেন। ভোড় ৩ টায় ঘুম থেকে উঠেই ব্যস্ত হয়ে পরেন রস সংগ্রহে।

তিন ঘন্টা জ্বাল দেওয়ার পর রস গুড়ের লাল রঙ ধারণ করে। এসময় রসের ঘনত্ব বেড়ে যায়। চারের এক পাশ অপেক্ষাকৃত নিচু করলে লাল ঘন রস চারের এক পাশে চলে যায়। উঁচু পাশটায় জমে থাকা যৎসামান্য ঘন গুড় বাঁশের কাঠি দিয়ে কয়েক মিনিট ঘষে তৈরী করেন গুড়ের বীজ। এর পর তা মিশিয়ে দেন সমস্ত লাল রসে।

আবার কয়েক মিনিট নেড়ে গুড়ের ঘনত্ব বাড়ান। এসময় গুড় বেশ ঘন হয়ে আসে। এ ঘন তরল গুড় বিভিন্ন সাইজের সাচে ঢেলে তৈরী করেন পাটালী গুড়। প্রতিদিন প্রায় ৩০০ লিটার রস পাচ্ছেন। প্রতিদিন ৫০ কেজি গুড় পাচ্ছেন তারা। পূর্ণ মৌসুমে প্রতিদিন ৪শ থেকে ৪শ ৫০ লিটার রস পান তারা। সেসময় গুড়ের পরিমান ও বাড়ে। প্রতি কেজি পাটালী গুড় পাইকারী ১১০ টাকায় ও খুচরা ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

গাছের মালিকদের প্রতিটি গাছের জন্য বছরে ২ থেকে ৩ কেজি করে গুড় দিতে হয়। জ্বালানীর দাম বেড়েছে। আনুষাঙ্গিক অন্যান্য জিনিষের দামও বেড়েছে। সব মিলিয়ে আমাদের শ্রমিকের মজুরী হিসেবে প্রতি দিন ৪ থেকে ৫শ টাকা থেকে যায়।

খেজুরের পাটালী গুড় প্রসঙ্গে ডাঃ শাহিনুর রহমান শাহিন বলেন, গুড় হজমে সহায়তা করা ও এনজাইমের শক্তি বাড়ায়, আয়রনের ঘাটতি কমাতে পারে, শরীরে হরমোনের সমতা বজায় রাখে, শরীর গরম রাখতে সহায়তা করে।

তবে অতিরিক্ত গুড় খেলে ওজন বৃদ্ধি পেতে পারে, রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়ে, স্বাস্থ্যকর পরিবেশে গুড় তৈরী না করলে তাতে জীবাণু সংক্রমনের সম্ভাবনা থাকে এবং সদ্য তৈরী গুড় খেলে ডায়রিয়া হতে পারে।

আরও পড়ুনঃ পাবনার চাটমোহরে বিনামূল্যে নকশীকাঁথা সেলাই প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত