ঢাকা ১১:৪৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞপ্তি :
সারাদেশের জেলা উপোজেলা পর্যায়ে দৈনিক স্বতঃকণ্ঠে সংবাদকর্মী নিয়োগ চলছে । আগ্রহী প্রার্থীগন জীবন বৃত্তান্ত ইমেইল করুন shatakantha.info@gmail.com // দৈনিক স্বতঃকণ্ঠ অনলাইন ও প্রিন্ট পত্রিকায় বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন ০১৭১১-৩৩৩৮১১, ০১৭৪৪-১২৪৮১৪

দীপার প্রশ্নবিদ্ধ আত্মহত্যার সুষ্ঠ তদন্ত ও বিচারের দাবী পরিবারের

বার্তাকক্ষ
  • প্রকাশিত সময় ১২:৪৩:৩৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০২২
  • / 202

নিজস্ব প্রতিনিধ: পাবনার ঈশ্বরদীতে আলো জেনারেল হাসপাতালের কর্মচারী দীপার আত্মহত্যার খবর নিয়ে নানা সমালোচনা চলছে উপজেলা জুরে। সেই সাথে দিপার মৃত্যুর পেছনের নানা কারনগুলো জনসম্মুখে আসতে থাকায় জনমনে ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে।

এই সংবাদ লেখা পর্যন্ত দাফনের ২৪ ঘন্টা পেরিয়ে গেলেও দীপার পরিবারের দায়েরকৃত মামলাটি নেয়নি ঈশ্বরদী থানা পুলিশ। দীপার আত্মহত্যা এবং দেনার টাকা সংক্রান্তে সুষ্ঠ তদন্ত ও বিচারের দাবী করেছেন পরিবার।

দীপার পরিচিতি
মোছাঃ দীপা খাতুন (২৫) একজন দরিদ্র পরিবারের সাধারণ মেয়ে। পিতা মোঃ দুলাল প্রামাণিক মাতা মোছাঃ নাছিমা খাতুন। পৈত্রিক নিবাস ঈশ্বরদী উপজেলার ইস্তা গ্রামে। পিতা ৬ মাস ইট ভাটায় কাজ করেন বাকি ৬ মাস রিক্সা-ভ্যান চালান, মা গৃহিণী। দরিদ্র পিতার সংসারে অভাব অনটনের কারনে ছোট বেলা থেকেই মামার বাড়ি উমিরপুরে থাকতেন। সেখানেই তার বেড়ে ওঠা। দীপা আবুল হোসেন উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০১২ সালে এসএসসি পাস করেন। পরবর্তীতে সে সুনামধন্য চিকিৎসক ডাঃ শফিকুল ইসলাম শামীম এর সহকারী হিসেবে কাজ করতেন। দীর্ঘ সময় ডাঃ শামীমের সহিত কাজ করার সুবাদে তাদের মধ্যে একপ্রকার হৃদ্যতাপূর্ণ সম্পর্কের তৈরি হয়। দুই পরিবারের মাঝেও হৃদ্যতাপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি হয়। দীর্ঘ ১০-১২ বছর কর্ম জীবনে তার বিরুদ্ধে কোন অনৈতিক কর্মের অভিযোগ পাওয়া যায়নি। তার পরিবার, আত্মীয়-স্বজন, বন্ধুবান্ধব, পাড়া-প্রতিবেশী, পরিচিতজন কেউই তার বিরুদ্ধে কোন খারাপ অভিযোগ করেন না। বরং তাকে একজন সদা হাস্যজ্জ্বল পরোপকারী হিসেবেই চিহ্নিত করছেন।

কেন আত্মহত্যা করলেন দীপা

বেশ কয়েকজন পাওনাদার দীপার নিকট থেকে প্রায় ৪৫ লাখ টাকা পাবেন। পাওনাদারদের চাপের কারনেই দীপা আত্মহত্যা করেছেন বলে পরিবারের অভিযোগ। পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়, পাওনাদার গণ বিভিন্ন সময় দীপাকে ভয় ভীতি প্রদর্শন এবং তাকে তুলে নিয়ে গিয়ে জিম্মি করে স্ট্যাম্পে লিখিয়ে নেন তাদের টাকা পাওয়ার কথা। এবং শারীরিক নির্যাতন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন। এসকল নানা চাপের কারনেই আত্মহত্যা করেন দীপা।

কিভাবে নিয়েছেন টাকা
পাওনাদারদের প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, দিপা অনলাইন ব্যবসার কথা বলে পাওনাদারদের নিকট থেকে টাকা নেন। আবার কোন কোন পাওনাদার বলছেন ডাঃ শামীমের টাকার প্রয়োজন বলে টাকা নিয়েছেন। ডাঃ শামীম একজন সন্মানিত ব্যক্তি লজ্জায় তিনি টাকা চাইতে পারছেন না, তাই দীপার মাধ্যমে টাকা ধার করছেন, এই ভরসায় টাকা দিয়েছে বলে জানান কিছু পাওনাদার ও পরিবার। পরিবার এটাও জানান যে, উচ্চ হারে লভাংশ প্রদান করার জন্য পাওনাদারগণ দীপাকে টাকা দিয়েছেন এবং সীমা উচ্চহারে লভাংশ প্রদানও করেছেন।

কি ব্যবসা করতেন দীপা
দীপা ডিসেম্বর ২০২১ পর্যন্ত আলো জেনারেল হাসপাতালেই চাকরী করতেন। কি ব্যবসা করতেন তা কেউই বলতে পারছেন না।

দীপা এত টাকা কি করেছেন
পরিবারের দাবী এই টাকা তিনি ডাঃ শামীমের জন্য নিয়েছেন এবং এর বিপরীতে দীপা উচ্চ হারে লভাংশ দিতেন। পাওনাদারদের কেউ কেউ বলছেন সে অনলাইনে ব্যবসা করতেন। অনেকে বলছেন ডাঃ শামীমের প্রয়োজনের কথা বলে টাকা নিয়েছেন। অপরদিকে গত ২৪ জানুয়ারী ২০২২ তারিখে ডাঃ শামীম তার ফেসবুক আইডিতে দিপাকে আলো জেনারেল হাসপাতাল থেকে চাকরি চ্যুতির একটি স্ট্যাটাস পোষ্ট করেন। সেখানে দিপার ছবিতে একটি লাল কালির ক্রস চিহ্ন ব্যবহার করেন তিনি। এবং তিনি লেখেন আজ থেকে আলো জেনারেল হাসপাতালের সহিত দিপার সকল সম্পর্ক ছিন্ন বিধায় তার সাথে কোন প্রকার আর্থিক লেনদেনে তিনি বা তার প্রতিষ্ঠান দায়ী থাকবে না মর্মে জনগনকে সতর্ক বার্তা দিয়ে সেটা ঈশ্বরদীর বিভিন্ন ফেইসবুক গ্রুপে শেয়ার করেন ডা. শামীম। তারপর থেকেই দিপাকে নিয়ে নানান আলোচনা সমালোচনার সৃষ্টিহয় বলে দাবি করেছেন পরিবারের সদস্যরা। তারা জানান, চাকরি হারাবার পর থেকে দিপার কাছে টাকা পাবে বলে একাধিক ব্যক্তি বাড়িতে আসতে শুরু করে।

জনমনে নানা ধারনা
চাঞ্চল্যকর এই আত্মহত্যার কারনে জনমনে নানা প্রশ্নের ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। জনসাধারনের ধারনা গুলোর কিছু নমুনা- মানুষ এত টাকা কোন প্রকার জামানত ব্যতীত দীপাকে কেন দিল, দীপা টাকা গুলো নিয়ে কি করেছেন, সামান্য একজন ডাক্তারের সহকারীকে কেউ জামানত ছাড়া এত টাকা ধার দেয়, ডাঃ শামীমের নাম বললো আর লোকজন টাকা দিয়ে দিলো। অনেকে আবার ডাঃ শামীমের দিকেই সন্দেহের দৃষ্টি নিক্ষেপ করছেন। বলছেন, ডাঃ শামীমই মনে হয় ঐ মেয়েকে দিয়ে টাকা গুলো নিয়েছেন। ডাঃ শামীম সরকারি চাকরী করে এত অল্প সময়ে এত টাকা কোথায় পেলেন যে এত বড় হাসপাতাল নির্মান করলেন?

পরিবার ও জনগনের প্রত্যাশা
দীপার মত একজন সাধারন মেয়ে এত টাকার দায়ে আত্মহত্যা করবে বিষয়টি স্বাভাবিক হতে পারে না। এবং এত গুলো মানুষের টাকারই বা কি হবে? তাই আইন শৃঙ্খলা বাহিনী এর সুষ্ঠ তদন্ত করে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করুক।

আরও পড়ুনঃ

৪৫ লাখ টাকা দেনার দায়ে আলো জেনারেল হাসপাতালের সাবেক কর্মী দীপার আত্মহত্যা

দীপার প্রশ্নবিদ্ধ আত্মহত্যার সুষ্ঠ তদন্ত ও বিচারের দাবী পরিবারের

প্রকাশিত সময় ১২:৪৩:৩৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০২২

নিজস্ব প্রতিনিধ: পাবনার ঈশ্বরদীতে আলো জেনারেল হাসপাতালের কর্মচারী দীপার আত্মহত্যার খবর নিয়ে নানা সমালোচনা চলছে উপজেলা জুরে। সেই সাথে দিপার মৃত্যুর পেছনের নানা কারনগুলো জনসম্মুখে আসতে থাকায় জনমনে ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে।

এই সংবাদ লেখা পর্যন্ত দাফনের ২৪ ঘন্টা পেরিয়ে গেলেও দীপার পরিবারের দায়েরকৃত মামলাটি নেয়নি ঈশ্বরদী থানা পুলিশ। দীপার আত্মহত্যা এবং দেনার টাকা সংক্রান্তে সুষ্ঠ তদন্ত ও বিচারের দাবী করেছেন পরিবার।

দীপার পরিচিতি
মোছাঃ দীপা খাতুন (২৫) একজন দরিদ্র পরিবারের সাধারণ মেয়ে। পিতা মোঃ দুলাল প্রামাণিক মাতা মোছাঃ নাছিমা খাতুন। পৈত্রিক নিবাস ঈশ্বরদী উপজেলার ইস্তা গ্রামে। পিতা ৬ মাস ইট ভাটায় কাজ করেন বাকি ৬ মাস রিক্সা-ভ্যান চালান, মা গৃহিণী। দরিদ্র পিতার সংসারে অভাব অনটনের কারনে ছোট বেলা থেকেই মামার বাড়ি উমিরপুরে থাকতেন। সেখানেই তার বেড়ে ওঠা। দীপা আবুল হোসেন উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০১২ সালে এসএসসি পাস করেন। পরবর্তীতে সে সুনামধন্য চিকিৎসক ডাঃ শফিকুল ইসলাম শামীম এর সহকারী হিসেবে কাজ করতেন। দীর্ঘ সময় ডাঃ শামীমের সহিত কাজ করার সুবাদে তাদের মধ্যে একপ্রকার হৃদ্যতাপূর্ণ সম্পর্কের তৈরি হয়। দুই পরিবারের মাঝেও হৃদ্যতাপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি হয়। দীর্ঘ ১০-১২ বছর কর্ম জীবনে তার বিরুদ্ধে কোন অনৈতিক কর্মের অভিযোগ পাওয়া যায়নি। তার পরিবার, আত্মীয়-স্বজন, বন্ধুবান্ধব, পাড়া-প্রতিবেশী, পরিচিতজন কেউই তার বিরুদ্ধে কোন খারাপ অভিযোগ করেন না। বরং তাকে একজন সদা হাস্যজ্জ্বল পরোপকারী হিসেবেই চিহ্নিত করছেন।

কেন আত্মহত্যা করলেন দীপা

বেশ কয়েকজন পাওনাদার দীপার নিকট থেকে প্রায় ৪৫ লাখ টাকা পাবেন। পাওনাদারদের চাপের কারনেই দীপা আত্মহত্যা করেছেন বলে পরিবারের অভিযোগ। পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়, পাওনাদার গণ বিভিন্ন সময় দীপাকে ভয় ভীতি প্রদর্শন এবং তাকে তুলে নিয়ে গিয়ে জিম্মি করে স্ট্যাম্পে লিখিয়ে নেন তাদের টাকা পাওয়ার কথা। এবং শারীরিক নির্যাতন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন। এসকল নানা চাপের কারনেই আত্মহত্যা করেন দীপা।

কিভাবে নিয়েছেন টাকা
পাওনাদারদের প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, দিপা অনলাইন ব্যবসার কথা বলে পাওনাদারদের নিকট থেকে টাকা নেন। আবার কোন কোন পাওনাদার বলছেন ডাঃ শামীমের টাকার প্রয়োজন বলে টাকা নিয়েছেন। ডাঃ শামীম একজন সন্মানিত ব্যক্তি লজ্জায় তিনি টাকা চাইতে পারছেন না, তাই দীপার মাধ্যমে টাকা ধার করছেন, এই ভরসায় টাকা দিয়েছে বলে জানান কিছু পাওনাদার ও পরিবার। পরিবার এটাও জানান যে, উচ্চ হারে লভাংশ প্রদান করার জন্য পাওনাদারগণ দীপাকে টাকা দিয়েছেন এবং সীমা উচ্চহারে লভাংশ প্রদানও করেছেন।

কি ব্যবসা করতেন দীপা
দীপা ডিসেম্বর ২০২১ পর্যন্ত আলো জেনারেল হাসপাতালেই চাকরী করতেন। কি ব্যবসা করতেন তা কেউই বলতে পারছেন না।

দীপা এত টাকা কি করেছেন
পরিবারের দাবী এই টাকা তিনি ডাঃ শামীমের জন্য নিয়েছেন এবং এর বিপরীতে দীপা উচ্চ হারে লভাংশ দিতেন। পাওনাদারদের কেউ কেউ বলছেন সে অনলাইনে ব্যবসা করতেন। অনেকে বলছেন ডাঃ শামীমের প্রয়োজনের কথা বলে টাকা নিয়েছেন। অপরদিকে গত ২৪ জানুয়ারী ২০২২ তারিখে ডাঃ শামীম তার ফেসবুক আইডিতে দিপাকে আলো জেনারেল হাসপাতাল থেকে চাকরি চ্যুতির একটি স্ট্যাটাস পোষ্ট করেন। সেখানে দিপার ছবিতে একটি লাল কালির ক্রস চিহ্ন ব্যবহার করেন তিনি। এবং তিনি লেখেন আজ থেকে আলো জেনারেল হাসপাতালের সহিত দিপার সকল সম্পর্ক ছিন্ন বিধায় তার সাথে কোন প্রকার আর্থিক লেনদেনে তিনি বা তার প্রতিষ্ঠান দায়ী থাকবে না মর্মে জনগনকে সতর্ক বার্তা দিয়ে সেটা ঈশ্বরদীর বিভিন্ন ফেইসবুক গ্রুপে শেয়ার করেন ডা. শামীম। তারপর থেকেই দিপাকে নিয়ে নানান আলোচনা সমালোচনার সৃষ্টিহয় বলে দাবি করেছেন পরিবারের সদস্যরা। তারা জানান, চাকরি হারাবার পর থেকে দিপার কাছে টাকা পাবে বলে একাধিক ব্যক্তি বাড়িতে আসতে শুরু করে।

জনমনে নানা ধারনা
চাঞ্চল্যকর এই আত্মহত্যার কারনে জনমনে নানা প্রশ্নের ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। জনসাধারনের ধারনা গুলোর কিছু নমুনা- মানুষ এত টাকা কোন প্রকার জামানত ব্যতীত দীপাকে কেন দিল, দীপা টাকা গুলো নিয়ে কি করেছেন, সামান্য একজন ডাক্তারের সহকারীকে কেউ জামানত ছাড়া এত টাকা ধার দেয়, ডাঃ শামীমের নাম বললো আর লোকজন টাকা দিয়ে দিলো। অনেকে আবার ডাঃ শামীমের দিকেই সন্দেহের দৃষ্টি নিক্ষেপ করছেন। বলছেন, ডাঃ শামীমই মনে হয় ঐ মেয়েকে দিয়ে টাকা গুলো নিয়েছেন। ডাঃ শামীম সরকারি চাকরী করে এত অল্প সময়ে এত টাকা কোথায় পেলেন যে এত বড় হাসপাতাল নির্মান করলেন?

পরিবার ও জনগনের প্রত্যাশা
দীপার মত একজন সাধারন মেয়ে এত টাকার দায়ে আত্মহত্যা করবে বিষয়টি স্বাভাবিক হতে পারে না। এবং এত গুলো মানুষের টাকারই বা কি হবে? তাই আইন শৃঙ্খলা বাহিনী এর সুষ্ঠ তদন্ত করে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করুক।

আরও পড়ুনঃ

৪৫ লাখ টাকা দেনার দায়ে আলো জেনারেল হাসপাতালের সাবেক কর্মী দীপার আত্মহত্যা