হিজাব বিতর্ক: নওগাঁর ঘটনাটিও ছিল বানোয়াট, মেলেনি প্রমাণ
- প্রকাশিত সময় ১২:৪৯:০১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ এপ্রিল ২০২২
- / 89
দুলাল আবদুল্লাহ, রাজশাহী
প্রকাশিত: ১২:৩৬ রাত, এপ্রিল ১২, ২০২২
নওগাঁর মহাদেবপুরে দাউল বারবাকপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে হামলার ঘটনা তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে সংশ্লিষ্ট কমিটি। “স্কুলের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের জেরে বিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষক ও ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য গুজব ছড়িয়ে” শিক্ষিকা আমোদিনী পালের বিরুদ্ধে স্থানীয় মানুষকে উসকে দেয় বলে উঠে এসেছে কমিটির তদন্তে। এর আগে, ওই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে ‘‘হিজাব পরায়’’ শিক্ষার্থীদের মারধরের অভিযোগ এনে বিদ্যালয়ে ভাঙচুর চালায় একদল স্থানীয়।
সোমবার (১১ এপ্রিল) রাত ৮টার দিকে মহাদেবপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আব্দুল মালেকের নেতৃত্বাধীন কমিটি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (ইউএনও) কাছে চার পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদনটি জমা দেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ইউএনও মিজানুর রহমান ঢাকা ট্রিবিউনকে বলেন, “কমিটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। তদন্তে হিজাব পরায় শিক্ষার্থীদের পেটানোর অভিযোগের প্রমাণ মেলেনি। তদন্তে কমিটির কাছে মনে হয়েছে, স্কুল পোশাকের কারণেই গত ৬ এপ্রিল বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক আমোদিনী পাল ও শরীরচর্চার শিক্ষক বদিউল আলম শিক্ষার্থীদের প্রহার করেন। স্কুলের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের জেরে শিক্ষিকা আমোদিনী পালকে ফাঁসানোর জন্য ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করা হয়েছে। যারা এই গুজব ছড়িয়েছে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছে তদন্ত কমিটি।”
এছাড়া, গত ৭ এপ্রিল বিদ্যালয়ে ১৫০ থেকে ২০০ জন ব্যক্তি হামলা চালিয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধেও আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।
ইউএনও আরও বলেন, “স্কুলের পোশাক না পরে আসুয় শিক্ষিকা আমোদিনী পাল ও আরেক শিক্ষক বদিউল আলম শিক্ষার্থীদের প্রহার করেন। অথচ প্রধান শিক্ষক ধরণী কান্ত বর্মণ শুধু শিক্ষিকা আমোদিনী পালকে শোকজ করেন। এই ঘটনা তদন্ত কমিটির কাছে উদ্দেশ্যমূলক মনে হয়েছে। কেবলমাত্র শিক্ষিকা আমোদিনী পালকে শোকজ করায় প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছে তদন্ত কমিটি। এছাড়া প্রতিবেদনে সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে শিক্ষার্থীদের প্রহার করায় শিক্ষিকা আমোদিনী পাল ও শিক্ষক বদিউল আলমের বিরুদ্ধেও বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়েছে।”
গুজবে জড়িতদের শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে কি-না জানতে চাইলে ইউএনও বলেন, “কিছু ব্যক্তিকে চিহ্নিত করা গেছে। তবে এই মুহূর্তে নাম বলা যাচ্ছে না। আইনি ব্যবস্থা নিলে সবাই জানতে পারবে।”
তিনি আরও বলেন, “তদন্ত কমিটি যেসব পর্যবেক্ষণ ও সুপারিশ দিয়েছে সেগুলো আমলে নিয়েই এই ঘটনায় যেভাবে ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন তা নেওয়া হবে।”
প্রভাবমুক্ত হয়ে কাজ করতে পেরেছেন উল্লেখ করে তদন্ত কমিটির প্রধান উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আব্দুল মালেক বলেন, “বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, অভিভাবক, ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য ও এলাকাবাসী সবাইকে আমরা ডেকেছি। সবার সব কিছু শোনা এবং তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে আমরা প্রতিবেদন তৈরি করেছি। ইউএনও প্রতিবেদন গ্রহণ করেছেন।”
এর আগে, গত মাসে ২৯ মার্চ চট্টগ্রামের মীরসরাই উপজেলার জোরারগঞ্জ বৌদ্ধ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তুষার কান্তি বড়ুয়ার বিরুদ্ধে এক ছাত্রীকে হেনস্তা ও মারধরের কথিত অভিযোগ ওঠে। লামিয়া নামে এক ছাত্রীর বক্তব্য ছিল, হিজাব খুলতে রাজি না হওয়ায় প্রধান শিক্ষক তাকে মারধর করেন। কিন্তু এ ঘটনায় গঠিত দুটি তদন্ত কমিটি এবং ঢাকা ট্রিবিউনের অনুসন্ধানে এমন অভিযোগের সত্যতা মেলেনি।
আরও পড়ুনঃ
স্বাস্থ্যখাতের সক্ষমতা বৃদ্ধি: বর্তমান অবস্থা, চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায় শীর্ষক সেমিনার
বাংলাদেশ রেলওয়ের নতুন আইনের খসড়ায় কি আছে প্রকাশ করতে হবে : রেলওয়ে পোষ্য সোসাইটি
পাবনা জেলা ও পাবিপ্রবি ছাত্রলীগের উভয় কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা
সিরাজগঞ্জের সলঙ্গার পাড়া-মহল্লায় জমজমাট ইফতার বাজার
সাঁথিয়ায় গ্রামীণ সড়ক নির্মাণ কাজে অনিয়মের অভিযোগ
রাণীনগরের পারইল ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড়!