ভ্যাপসা গরমে অতিষ্ঠ হয়ে ওঠা রাজধানীতে মৌসুমের দ্বিতীয় কালবৈশাখীর দেখা মিলেছে গতকাল। ঘণ্টায় ৮৩ কিলোমিটার গতিতে বয়ে যাওয়া ঝড়ের সঙ্গে ব্যাপক বৃষ্টিপাত হয়েছে। মিরপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় শিলাবৃষ্টি হয়েছে। চলতি মাসে দুটি কালবৈশাখী বয়ে গেছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, আরো একটি থেকে দুটি ঝড় বয়ে যেতে পারে। দক্ষিণাঞ্চল ছাড়া ঢাকাসহ প্রায় সব এলাকায় কালবৈশাখী ঝড়ের আশঙ্কা রয়েছে। দক্ষিণাঞ্চলেও অল্প সময়ে ঝড় শুরু হতে পারে।

অধিদপ্তরের পর্যবেক্ষণ অনুসারে গতকাল বেলা ৩টা থেকে সোয়া ৪টা পর্যন্ত রাজধানীতে ৩৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়। অল্প সময়ের ঝড়-বৃষ্টিতে রাজধানীর কয়েকটি এলাকায় পানি জমে যায়। জলাবদ্ধতায় ভোগান্তি পোহাতে হয় নগরবাসীকে। সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত থেমে থেমে স্বল্প আকারে ও গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হয়েছে। তবে কোথাও কোনো প্রাণহানি বা অন্যান্য ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। এ বছর গ্রীষ্মকালে কালবৈশাখী বেশি হতে পারে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা।

এ সময় দেশের অন্যান্য কয়েকটি জেলায়ও বৃষ্টি ঝরেছে। চট্টগ্রামে বাতাসে গতিবেগ থাকলেও ১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। রাজশাহীতেও ১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়। সিলেটের বরাক উপত্যকায় ৭০ থেকে ৯০ মিলিমিটার বৃষ্টির সম্ভাবনার কথা জানায় স্থানীয় আবহাওয়া অধিদপ্তর। অন্য অঞ্চলগুলোয় হালকা-গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হলেও ঝড়ের তীব্রতা ছিল না। কোথাও কোনো হতাহত বা ক্ষয়ক্ষতির খবরও পাওয়া যায়নি।

ঝোড়ো বাতাসের কারণে দুর্ঘটনা এড়াতে গতকাল বিকাল সাড়ে ৪টা থেকে বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌপথে লঞ্চ ও স্পিডবোট চলাচল বন্ধ রাখা হয়। এছাড়া চলাচলরত অবস্থায় থাকা লঞ্চগুলোকে যাত্রীসহ নদীর নিরাপদ স্থানে নোঙর করতে বলা হয়। আবহাওয়া স্বাভাবিক হলে চলাচল শুরু করবে বলে জানান আক্তার হোসেন।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক বণিক বার্তাকে বলেন, আজ দেশের ২৫ শতাংশ অঞ্চলে কালবৈশাখী ঝড় হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ সময় দেশের আট বিভাগেই বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। আগামীকাল থেকে ঝড়ের আশঙ্কা কমে যাবে। আগামী দুদিন রাতের তাপমাত্রা বাড়তে থাকবে। এ সময় তাপমাত্রা ১ থেকে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়ে যেতে পারে।

আবহাওয়া অফিসের ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ হিমালয়ের পাদদেশীয় পশ্চিমবঙ্গ ও তত্সংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেটের কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা-ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে প্রবল বিজলি চমকানোসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে।

ঈশ্বরদী

সারাদেশের ন্যায় উত্তরাঞ্চলের সবচেয়ে চরমভাবাপন্ন ঈশ্বরদী, লালপুর, রাজশাহী, ভেড়ামারা, কুষ্টিয়া অঞ্চলেও কালবৈশাখী ঝড় ও বৃষ্টিতে সয়লাব হয়ে গেছে মাঠ-ঘাট, ক্ষেত-খামার সবকিছু। সারাদিন সূর্যের দেখা মেলেনি। ঈশ্বরদী আবহাওয়া অফিস জানায়, এলাকার আবহাওয়া আরো দু’একদিন এরকম চলতে পারে। তাপমাত্রা হঠাৎ করেই অন্ততঃ ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমে গেছে যা আগে ছিল ৩৬-৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে ক্ষয়ক্ষতির তেমন কোনও খবর পাওয়া যায়নি।