ঢাকা ০৫:৩০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞপ্তি :
সারাদেশের জেলা উপোজেলা পর্যায়ে দৈনিক স্বতঃকণ্ঠে সংবাদকর্মী নিয়োগ চলছে । আগ্রহী প্রার্থীগন জীবন বৃত্তান্ত ইমেইল করুন shatakantha.info@gmail.com // দৈনিক স্বতঃকণ্ঠ অনলাইন ও প্রিন্ট পত্রিকায় বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন ০১৭১১-৩৩৩৮১১, ০১৭৪৪-১২৪৮১৪

পৌর পার্ক প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা আমিনুল ইসলাম বাদশাকে সম্মানিত করলো পাবনা পৌরসভা

বার্তাকক্ষ
  • প্রকাশিত সময় ০৫:২৪:৪২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ মে ২০২২
  • / 93

বাদশা

বীর মুক্তিযোদ্ধা আমিনুল ইসলাম বাদশা

বীর মুক্তিযোদ্ধা আ.স.ম আব্দুর রহিম পাকন
প্রকাশিত: ০৫:১৪ রাত, ২৩ মে ২০২২

৯ই এপ্রিল পাবনা পৌরসভার অভ্যন্তরে “বীর মুক্তিযোদ্ধা আমিনুল ইসলাম বাদশা পৌর পার্ক” উদ্বোধনের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে অম্লান রাখা এবং আগামী প্রজন্মের কাছে তাঁর স্মৃতি তুলে ধরতে পাবনা পৌরসভার সম্মানিত মেয়র শরিফ উদ্দিন প্রধানকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন ও আমরা মুক্তিযোদ্ধাবৃন্দ আন্তরিকভাবে কৃতজ্ঞ।

পৌর পার্কের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পাবনা-৫ আসনের সংসদ সদস্য গোলাম ফারুক প্রিন্স। বিশেষ অতিথি হিসাবে ছিলেন পাবনা-সিরাজগঞ্জ সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য নাদিরা ইয়াসমিন জলি, পাবনা জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও বর্তমান প্রশাসক মো. রেজাউল রহিম লাল, মরহুম বীর মুক্তিযোদ্ধা আমিনুল ইসলাম বাদশার কৃতি সন্তান মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের যুগ্ন সচিব মোহাম্মদ সাবিরুল ইসলাম বিপ্লব, পাবনার জেলা প্রশাসক বিশ্বাস রাসেল হোসেন, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোশারফ হোসেন সহ পাবনা জেলার বীর মুক্তিযোদ্ধাবৃন্দ। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পাবনা পৌর মেয়র শরীফ উদ্দিন প্রধান। বীর মুক্তিযোদ্ধা আমিনুল ইসলাম বাদশা’র নামে পৌর পার্কটি নামকরণ করায় উদ্বোধণী অনুষ্ঠানে স্বর্তফূর্তার সাথে পাবনার সর্বস্তরের মানুষ, রাজনীতিবিদ, শিক্ষাবিদ সহ সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সৌহার্দপূর্ণ মিলন মেলায় পরিনত হয়।

একুশে পদকপ্রাপ্ত, ভাষা সৈনিক পাবনার বীর মুক্তিযোদ্ধা আমিনুল ইসলাম বাদশা ছিলেন একজন নীতি আদর্শবান, ত্যাগী, সৎ ও বিচক্ষণ রাজনীতিবিদ। তিনি ১৯২৯ সালের ১৪ এপ্রিল পাবনা শহরের কৃষ্ণপুর মহল্লায় একটি সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম নুরুজ্জামান শেখ ও মাতা খবিরন নেছা। আমিনুল ইসলাম বাদশা ছিলেন ৫ ভাই ও ১ বোন। ১৯৫৮ সালের ১০ই অক্টোবর তিনি নিলুফা ইসলামের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। ঐ সময় তিনি কারাগারে ছিলেন এবং প্যারোলে মুক্তি নিয়ে তাঁর বিবাহ কার্য সম্পন্ন করেন। তিনি ১ ছেলে ও ২ মেয়ের বাবা।

আমার স্মৃতিতে প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা আমিনুল ইসলাম বাদশা চাচার মুক্তিযুদ্ধসহ বিভিন্ন আন্দোলন সাংগ্রামের ভূমিকাঃ-

আমি বীর মুক্তিযোদ্ধা আ.স.ম আব্দুর রহিম পাকন সেই সময়ে আমার বাবা (পিতা মরহুম আলহাজ্ব আব্দুর রহমান) এর চাকরির সুবাদে ১৯৫৮ সালে পাবনায় আসি এবং পাবনা শহরের একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করতাম। সৌভাগ্যক্রমে আমাদের ভাড়া বাসাটা ছিল প্রয়াত শ্রদ্ধেয় চাচার বাসস্থান কৃষ্ণপুর মহল্লা সংলগ্ন আটুয়াতে। সেই সুবাদে তখন থেকেই আমি তাঁকে একজন উদার মনের গুণী মানুষ হিসেবে চিনি ও জানি। তাঁর সাথে আমাদের পরিবারিক হৃদরতাও ছিল অত্যান্ত গভীর। সেই থেকে প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা আমিনুল ইসলাম বাদশা চাচা আমাকে সন্তান তুল্য স্নেহ করতেন। আমার অত্যন্ত শ্রদ্ধেয় চাচাকে অনেক কাছে থেকে চেনা বা জানার সুযোগ আমার হয়েছে এজন্য আমি সৌভাগ্যবান।

পরবর্তীতে আমার বাবার সঙ্গে তার অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ও আন্তরিক হৃদরতার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ১৯৬৭ সালে ছাত্রলীগের রাজনীতির মাধ্যমে আমার রাজনৈতিক জীবন শুরু হলে চাচাকে আরও কাছ থেকে চিনবার সুযোগ হয়।

প্রয়াত চাচা ছিলেন একজন সাদা মনের মানুষ। একজন নীতি আদর্শবান, ত্যাগী, সৎ ও বিচক্ষণ রাজনীতিবিদ। যদিও তিনি অন্য রাজনীতির মতাদর্শে বিশ্বাসী ছিলেন তবুও তিনি ছিলেন পাবনার আপামর মানুষের কাছে একজন প্রিয় ব্যক্তিত্ব। তিনি সব সময়েই সাদা খদ্দরের পাঞ্জাবি ও পায়জামা পরে সর্বত্র বিচরণ করতে দেখা যেত। তিনি ছোট বড় যেই হোক না কেন সবার সঙ্গে বিনয়ের সাথে কথা বলতে পছন্দ করতেন। তাঁর আলোচনার বিষয়বস্তু ছিল কিভাবে বাংলার মানুষকে পাকিস্তানি স্বৈরশাসনের কবল থেকে মুক্ত ও গরীব দুঃখী মানুষের জন্য অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থানের দাবি প্রতিষ্ঠা করা যায়।

বীর মুক্তিযোদ্ধা আমিনুল ইসলাম বাদশা চাচা আমাকে অত্যন্ত স্নেহ করতেন ও ভালোবাসতেন। তিনি দোয়া করতেন আমি যেন একজন সৎ, আদর্শবান রাজনীতিবিদ হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারি। আমার সঙ্গে দেখা হলে তিনি আমাকে এ ব্যাপারে পরামর্শ ও দিক-নির্দেশনা দিয়ে থাকতেন। মাঝে মধ্যে আমার বাবা আমাকে বলতেন বাদশা ভাইয়ের সঙ্গে দেখা হয়েছিল এবং তিনি তোমার সকল সাংগঠনিক কর্মকান্ডের প্রতি অত্যন্ত আশাবাদী। যদিও তিনি অন্য রাজনৈতিক দলের মতাদর্শে বিশ্বাসী ছিলেন তবুও তিনি ছিলেন বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বের প্রতি আস্থাশীল। তিনি মনে করতেন একমাত্র বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বেই পাকিস্তানী শাকগোষ্ঠীর কবল থেকে বাংলার মানুষের সামাজিক রাজনৈতিক ও অর্থনৈতক মুক্তি পেতে পারে।

বীর মুক্তিযোদ্ধা আমিনুল ইসলাম বাদশা চাচা ১৯৪৩ সালে পাবনার গোপালচন্দ্র ইনস্টিটিউশন (জি সি আই) এর ছাত্র থাকাবস্থায় ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির সংস্পর্শে আসেন এবং ছাত্র ফেডারেশনে যোগদানের মাধ্যমে ছাত্র রাজনীতিতে সক্রিয় হন। এটাই ছিল তাঁর রাজনৈতিক জীবনের যাত্রা শুরু।

১৯৪৮ সালের ২৬শে ফেব্রæয়ারি মাতৃভাষা আন্দোলনের যে সংগ্রাম কমিটি গঠন করা হয় তিনি এই কমিটির যুগ্ন-সাধারণ সম্পাদক দায়িত্বপ্রাপ্ত হন। ২৭ শে ফেব্রুয়ারি সংগ্রাম পরিষদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ১৯৪৮ সালের ২৯ শে ফেব্রæয়ারি মাতৃভাষা আন্দোলনকে বেগবান করার লক্ষে পাবনা শহরে হরতাল আহব্বান করা হয়। এই হরতালকে বাধাগ্রস্থ করার জন্য তৎকালীন পাকিস্তান সরকার আপনার শহরে ১৪৪ ধারা জারি করে। কিন্তু পাবনার ছাত্র-জনতা ১৪৪ ধারাকে অমান্য করে রাজপথে নেমে আসে। এই মিছিলে নেতৃত্ব দিতে গেলে মিছিলের মধ্য থেকেই তাঁকে গ্রেফতার হতে হয়। ওই দিনই তিনি সহ সকল বন্দি মহামান্য আদালতের রায়ের মাধ্যমে মুক্তি লাভ করেন।

১৯৪৮ সালের ২রা মার্চ তিনি আবার রাজনৈতিক কারণে গ্রেফতার হন এবং কয়েক দিন পরে মুক্তি লাভ করেন।

১৯৫০ সালে তিনি সহ আরও অনেকে গ্রেপ্তার হন। এই গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে সিংহভাগ নেতৃবৃন্দকে পাবনা জেলা কারাগার থেকে রাজশাহী বিভাগীয় কারাগারে প্রেরণ করা হয়। তাদের মধ্যে তিনিও ছিলেন। রাজশাহী কারাগারে সবাইকে খাপড়া নামক একটি ওয়ার্ডে রাখা হয়। তৎকালীন সরকারের নির্দেশে জেল কর্তৃপক্ষ প্রায় ৮ জনকে খাপড়া থেকে কনডেম সেলে (যেখানে ফাঁসির আসামিদের রাখা হয়) প্রেরণের সিদ্ধান্ত নেয়। এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ঐ ওয়ার্ডে অবস্থানরত সকল রাজবন্দীগণ প্রতিবাদ জানায় এবং আন্দোলনের অংশ হিসেবে অনশন শুরু করেন। এই আন্দোলনে জেল কর্তৃপক্ষ ক্ষিপ্ত হয় কারাগারের মধ্যে গুলি ও অমানুষিক নির্যাতন চালায়। এতে ৭জন নিহত এবং বেশ কয়েকজন গুলিবিদ্ধ ও আহত হন।
এই গুলিবিদ্ধদের তালিকায় তিনিও ছিলেন। সেদিন তিনি পায়ে গুলিবিদ্ধ হন এবং সেদিনের সেই গুলি তাঁর পায়ে মৃত্যু পর্যন্ত বিদ্যমান ছিল।

১৯৫৪ সালে পাকিস্তান সরকার সকল আন্দোলনের মুখে বাধ্য হয়ে সাধারণ নির্বাচন ঘোষণা করে। এই নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট প্রার্থীকে জয়লাভ করানোর লক্ষে নির্বাচনী প্রচারণায় যারা নেতৃত্ব দেন তাঁদের মধ্যে তিনি ছিলেন অন্যতম। ১৯৫৪ সালের ২২শে ফেব্রæয়ারি নির্বাচনী প্রচারণাকালে তিনি গ্রেফতার হন এবং যুক্তফ্রন্ট জয়লাভ করার কয়েক মাস পরে মুক্তিলাভ করেন।

১৯৫৮ সালের ৭ই অক্টোবর রাষ্ট্রপতি ইস্কান্দার মির্জা পাকিস্তানে সামরিক আইন জারি করে। পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতি ইস্কান্দার মির্জাকে রাষ্ট্রপতির পদ থেকে ইস্তফা দিতে বাধ্য করে। তৎকালীন সামরিক প্রধান আইয়ুব খান ক্ষমতা দখল করে এবং আইয়ুব খানের সরকার দ্বারা রাজনৈতিক মামলার আসামি হয়ে তিনি আবার গ্রেফতার হন।

এরপরও তিনি ক্ষান্ত হন নাই। আইয়ুব খানের সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে সকল সংগ্রাম ও আন্দোলনে তাঁর ভূমিকা ছিল অতুলনীয়। যদিও তিনি ন্যপ এর রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন, তবুও তিনি বঙ্গবন্ধু ও জেলা আওয়ামী লীগের সঙ্গে সব সময়ই যোগাযোগ রক্ষা করে চলতেন। কেননা তিনি মনে করতেন একমাত্র বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বেই এদেশের খেটে খাওয়া মানুষ মুক্তি পেতে পারে। সেই কারনে তিনি ছিলেন বঙ্গবন্ধু ও পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের আহবানে ডাকা সকল আন্দোলনের একজন প্রথম সারির নেতা।

১৯৬৬ সালে বঙ্গবন্ধু প্রণীত ৬ দফার আন্দোলন। ১৯৬৭ সালে ১৬ মার্চ পাকিস্তানের উপনিবেশিক সরকার কর্তৃক পূর্ব পাকিস্তান তথা বাংলাদেশের জনগণকে হত্যা করার নিমিত্তে দেশের বিভিন্ন স্থানে সাধারণ মানুষের মধ্যে বিনামূল্যে ভুট্টা বিতরণ করে এবং এই ভুট্টা ছিল বিষাক্ত। সেই ভুট্টা খেয়ে পাবনার রামচন্দ্রপুরের দিন মজুর আব্দুল গফুর হারু ও তার সহধর্মিনী মৃত্যু বরণ করেন এবং আরও অনেকেই অসুস্থ হয়ে শত শত মানুষ পাবনা সদর হাসপাতালে ভর্তি হন। এরই প্রতিবাদে পাবনা জেলা আওয়ামীলীগের আহবানে যে আন্দোলন গড়ে উঠেছিল সেই আন্দোলনের তিনি ছিলেন প্রথম সারির একজন।

১৯৬৮-১৯৬৯ সালে গণআন্দোলন এবং আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা থেকে বঙ্গবন্ধুকে মুক্ত করার আন্দোলন, ১৯৭১ সালের অসহযোগ আন্দোলন সহ সকল সংগ্রাম ও আন্দোলনের তিনি ছিলেন একজন প্রথম সারির নেতা।

১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ, বঙ্গবন্ধুর আহবানে পাবনা জেলায় যে সংগ্রাম পরিষদ গঠন করা হয় তিনি সেই সংগ্রাম পরিষদের যুগ্ন আহবায়কের পদে দায়িত্বপ্রাপ্ত হন। সেখানেও তিনি নিষ্ঠার সঙ্গে তাঁর দায়িত্ব এবং মুক্তিযুদ্ধে ও রণক্ষেত্রে জন্য প্রস্তুতির নীতি নির্ধারক হিসাবে বিশেষ ভূমিকা রাখেন। ২৯ শে মার্চ থেকে ১০ই এপ্রিল ১৯৭১, পাবনা ছিল পাক হানাদার বাহিনী থেকে মুক্ত। পরবর্তীতে পাবনা পাক হানাদার বাহিনীর দখলে চলে গেলে তিনি ভারতের কেচুয়াডাঙ্গা আশ্রয় নেন। কেচুয়াডাঙ্গা ছিল পাবনার মুক্তিযোদ্ধাদের ট্রানজিট ক্যাম্প। এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, অন্যান্য নেতৃবৃন্দ মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময় ভারতের বিভিন্ন স্থানে অবস্থান করলেও তিনি এই ট্রানজিট ক্যাম্পে অবস্থান করেন। এটা থেকেই বোঝা যায় তিনি পাবনার মানুষকে কত ভালোবাসতেন।

ভাষা আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে ২০২০ সালে মরণোত্তর একুশে পদক প্রদান করেন। হে শ্রদ্ধেয় প্রয়াত চাচা, আপনি আমাদের মাঝে নেই। কিন্তু আপনার স্মৃতি ও অবদানের ঋণ পাবনাবাসী কোনদিন শোধ করতে পারবে না। আপনি আপনার বর্ণাঢ্য কৃর্তিময় কর্মকান্ড এবং বিচক্ষণ রাজনীতিবিদ হিসেবে পাবনাসহ দেশ বাসীর হৃদয়ে অম্লান হয়ে থাকবেন।

জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।
জয় হউক বাংলার মেহনতী মানুষের।

………………………………..
লেখক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আ.স.ম আব্দুর রহিম পাকন

 

 আরও পড়ুনঃ

 আরও পড়ুনঃ

পৌর পার্ক প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা আমিনুল ইসলাম বাদশাকে সম্মানিত করলো পাবনা পৌরসভা

প্রকাশিত সময় ০৫:২৪:৪২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ মে ২০২২
বীর মুক্তিযোদ্ধা আমিনুল ইসলাম বাদশা

বীর মুক্তিযোদ্ধা আ.স.ম আব্দুর রহিম পাকন
প্রকাশিত: ০৫:১৪ রাত, ২৩ মে ২০২২

৯ই এপ্রিল পাবনা পৌরসভার অভ্যন্তরে “বীর মুক্তিযোদ্ধা আমিনুল ইসলাম বাদশা পৌর পার্ক” উদ্বোধনের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে অম্লান রাখা এবং আগামী প্রজন্মের কাছে তাঁর স্মৃতি তুলে ধরতে পাবনা পৌরসভার সম্মানিত মেয়র শরিফ উদ্দিন প্রধানকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন ও আমরা মুক্তিযোদ্ধাবৃন্দ আন্তরিকভাবে কৃতজ্ঞ।

পৌর পার্কের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পাবনা-৫ আসনের সংসদ সদস্য গোলাম ফারুক প্রিন্স। বিশেষ অতিথি হিসাবে ছিলেন পাবনা-সিরাজগঞ্জ সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য নাদিরা ইয়াসমিন জলি, পাবনা জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও বর্তমান প্রশাসক মো. রেজাউল রহিম লাল, মরহুম বীর মুক্তিযোদ্ধা আমিনুল ইসলাম বাদশার কৃতি সন্তান মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের যুগ্ন সচিব মোহাম্মদ সাবিরুল ইসলাম বিপ্লব, পাবনার জেলা প্রশাসক বিশ্বাস রাসেল হোসেন, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোশারফ হোসেন সহ পাবনা জেলার বীর মুক্তিযোদ্ধাবৃন্দ। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পাবনা পৌর মেয়র শরীফ উদ্দিন প্রধান। বীর মুক্তিযোদ্ধা আমিনুল ইসলাম বাদশা’র নামে পৌর পার্কটি নামকরণ করায় উদ্বোধণী অনুষ্ঠানে স্বর্তফূর্তার সাথে পাবনার সর্বস্তরের মানুষ, রাজনীতিবিদ, শিক্ষাবিদ সহ সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সৌহার্দপূর্ণ মিলন মেলায় পরিনত হয়।

একুশে পদকপ্রাপ্ত, ভাষা সৈনিক পাবনার বীর মুক্তিযোদ্ধা আমিনুল ইসলাম বাদশা ছিলেন একজন নীতি আদর্শবান, ত্যাগী, সৎ ও বিচক্ষণ রাজনীতিবিদ। তিনি ১৯২৯ সালের ১৪ এপ্রিল পাবনা শহরের কৃষ্ণপুর মহল্লায় একটি সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম নুরুজ্জামান শেখ ও মাতা খবিরন নেছা। আমিনুল ইসলাম বাদশা ছিলেন ৫ ভাই ও ১ বোন। ১৯৫৮ সালের ১০ই অক্টোবর তিনি নিলুফা ইসলামের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। ঐ সময় তিনি কারাগারে ছিলেন এবং প্যারোলে মুক্তি নিয়ে তাঁর বিবাহ কার্য সম্পন্ন করেন। তিনি ১ ছেলে ও ২ মেয়ের বাবা।

আমার স্মৃতিতে প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা আমিনুল ইসলাম বাদশা চাচার মুক্তিযুদ্ধসহ বিভিন্ন আন্দোলন সাংগ্রামের ভূমিকাঃ-

আমি বীর মুক্তিযোদ্ধা আ.স.ম আব্দুর রহিম পাকন সেই সময়ে আমার বাবা (পিতা মরহুম আলহাজ্ব আব্দুর রহমান) এর চাকরির সুবাদে ১৯৫৮ সালে পাবনায় আসি এবং পাবনা শহরের একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করতাম। সৌভাগ্যক্রমে আমাদের ভাড়া বাসাটা ছিল প্রয়াত শ্রদ্ধেয় চাচার বাসস্থান কৃষ্ণপুর মহল্লা সংলগ্ন আটুয়াতে। সেই সুবাদে তখন থেকেই আমি তাঁকে একজন উদার মনের গুণী মানুষ হিসেবে চিনি ও জানি। তাঁর সাথে আমাদের পরিবারিক হৃদরতাও ছিল অত্যান্ত গভীর। সেই থেকে প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা আমিনুল ইসলাম বাদশা চাচা আমাকে সন্তান তুল্য স্নেহ করতেন। আমার অত্যন্ত শ্রদ্ধেয় চাচাকে অনেক কাছে থেকে চেনা বা জানার সুযোগ আমার হয়েছে এজন্য আমি সৌভাগ্যবান।

পরবর্তীতে আমার বাবার সঙ্গে তার অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ও আন্তরিক হৃদরতার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ১৯৬৭ সালে ছাত্রলীগের রাজনীতির মাধ্যমে আমার রাজনৈতিক জীবন শুরু হলে চাচাকে আরও কাছ থেকে চিনবার সুযোগ হয়।

প্রয়াত চাচা ছিলেন একজন সাদা মনের মানুষ। একজন নীতি আদর্শবান, ত্যাগী, সৎ ও বিচক্ষণ রাজনীতিবিদ। যদিও তিনি অন্য রাজনীতির মতাদর্শে বিশ্বাসী ছিলেন তবুও তিনি ছিলেন পাবনার আপামর মানুষের কাছে একজন প্রিয় ব্যক্তিত্ব। তিনি সব সময়েই সাদা খদ্দরের পাঞ্জাবি ও পায়জামা পরে সর্বত্র বিচরণ করতে দেখা যেত। তিনি ছোট বড় যেই হোক না কেন সবার সঙ্গে বিনয়ের সাথে কথা বলতে পছন্দ করতেন। তাঁর আলোচনার বিষয়বস্তু ছিল কিভাবে বাংলার মানুষকে পাকিস্তানি স্বৈরশাসনের কবল থেকে মুক্ত ও গরীব দুঃখী মানুষের জন্য অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থানের দাবি প্রতিষ্ঠা করা যায়।

বীর মুক্তিযোদ্ধা আমিনুল ইসলাম বাদশা চাচা আমাকে অত্যন্ত স্নেহ করতেন ও ভালোবাসতেন। তিনি দোয়া করতেন আমি যেন একজন সৎ, আদর্শবান রাজনীতিবিদ হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারি। আমার সঙ্গে দেখা হলে তিনি আমাকে এ ব্যাপারে পরামর্শ ও দিক-নির্দেশনা দিয়ে থাকতেন। মাঝে মধ্যে আমার বাবা আমাকে বলতেন বাদশা ভাইয়ের সঙ্গে দেখা হয়েছিল এবং তিনি তোমার সকল সাংগঠনিক কর্মকান্ডের প্রতি অত্যন্ত আশাবাদী। যদিও তিনি অন্য রাজনৈতিক দলের মতাদর্শে বিশ্বাসী ছিলেন তবুও তিনি ছিলেন বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বের প্রতি আস্থাশীল। তিনি মনে করতেন একমাত্র বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বেই পাকিস্তানী শাকগোষ্ঠীর কবল থেকে বাংলার মানুষের সামাজিক রাজনৈতিক ও অর্থনৈতক মুক্তি পেতে পারে।

বীর মুক্তিযোদ্ধা আমিনুল ইসলাম বাদশা চাচা ১৯৪৩ সালে পাবনার গোপালচন্দ্র ইনস্টিটিউশন (জি সি আই) এর ছাত্র থাকাবস্থায় ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির সংস্পর্শে আসেন এবং ছাত্র ফেডারেশনে যোগদানের মাধ্যমে ছাত্র রাজনীতিতে সক্রিয় হন। এটাই ছিল তাঁর রাজনৈতিক জীবনের যাত্রা শুরু।

১৯৪৮ সালের ২৬শে ফেব্রæয়ারি মাতৃভাষা আন্দোলনের যে সংগ্রাম কমিটি গঠন করা হয় তিনি এই কমিটির যুগ্ন-সাধারণ সম্পাদক দায়িত্বপ্রাপ্ত হন। ২৭ শে ফেব্রুয়ারি সংগ্রাম পরিষদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ১৯৪৮ সালের ২৯ শে ফেব্রæয়ারি মাতৃভাষা আন্দোলনকে বেগবান করার লক্ষে পাবনা শহরে হরতাল আহব্বান করা হয়। এই হরতালকে বাধাগ্রস্থ করার জন্য তৎকালীন পাকিস্তান সরকার আপনার শহরে ১৪৪ ধারা জারি করে। কিন্তু পাবনার ছাত্র-জনতা ১৪৪ ধারাকে অমান্য করে রাজপথে নেমে আসে। এই মিছিলে নেতৃত্ব দিতে গেলে মিছিলের মধ্য থেকেই তাঁকে গ্রেফতার হতে হয়। ওই দিনই তিনি সহ সকল বন্দি মহামান্য আদালতের রায়ের মাধ্যমে মুক্তি লাভ করেন।

১৯৪৮ সালের ২রা মার্চ তিনি আবার রাজনৈতিক কারণে গ্রেফতার হন এবং কয়েক দিন পরে মুক্তি লাভ করেন।

১৯৫০ সালে তিনি সহ আরও অনেকে গ্রেপ্তার হন। এই গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে সিংহভাগ নেতৃবৃন্দকে পাবনা জেলা কারাগার থেকে রাজশাহী বিভাগীয় কারাগারে প্রেরণ করা হয়। তাদের মধ্যে তিনিও ছিলেন। রাজশাহী কারাগারে সবাইকে খাপড়া নামক একটি ওয়ার্ডে রাখা হয়। তৎকালীন সরকারের নির্দেশে জেল কর্তৃপক্ষ প্রায় ৮ জনকে খাপড়া থেকে কনডেম সেলে (যেখানে ফাঁসির আসামিদের রাখা হয়) প্রেরণের সিদ্ধান্ত নেয়। এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ঐ ওয়ার্ডে অবস্থানরত সকল রাজবন্দীগণ প্রতিবাদ জানায় এবং আন্দোলনের অংশ হিসেবে অনশন শুরু করেন। এই আন্দোলনে জেল কর্তৃপক্ষ ক্ষিপ্ত হয় কারাগারের মধ্যে গুলি ও অমানুষিক নির্যাতন চালায়। এতে ৭জন নিহত এবং বেশ কয়েকজন গুলিবিদ্ধ ও আহত হন।
এই গুলিবিদ্ধদের তালিকায় তিনিও ছিলেন। সেদিন তিনি পায়ে গুলিবিদ্ধ হন এবং সেদিনের সেই গুলি তাঁর পায়ে মৃত্যু পর্যন্ত বিদ্যমান ছিল।

১৯৫৪ সালে পাকিস্তান সরকার সকল আন্দোলনের মুখে বাধ্য হয়ে সাধারণ নির্বাচন ঘোষণা করে। এই নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট প্রার্থীকে জয়লাভ করানোর লক্ষে নির্বাচনী প্রচারণায় যারা নেতৃত্ব দেন তাঁদের মধ্যে তিনি ছিলেন অন্যতম। ১৯৫৪ সালের ২২শে ফেব্রæয়ারি নির্বাচনী প্রচারণাকালে তিনি গ্রেফতার হন এবং যুক্তফ্রন্ট জয়লাভ করার কয়েক মাস পরে মুক্তিলাভ করেন।

১৯৫৮ সালের ৭ই অক্টোবর রাষ্ট্রপতি ইস্কান্দার মির্জা পাকিস্তানে সামরিক আইন জারি করে। পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতি ইস্কান্দার মির্জাকে রাষ্ট্রপতির পদ থেকে ইস্তফা দিতে বাধ্য করে। তৎকালীন সামরিক প্রধান আইয়ুব খান ক্ষমতা দখল করে এবং আইয়ুব খানের সরকার দ্বারা রাজনৈতিক মামলার আসামি হয়ে তিনি আবার গ্রেফতার হন।

এরপরও তিনি ক্ষান্ত হন নাই। আইয়ুব খানের সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে সকল সংগ্রাম ও আন্দোলনে তাঁর ভূমিকা ছিল অতুলনীয়। যদিও তিনি ন্যপ এর রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন, তবুও তিনি বঙ্গবন্ধু ও জেলা আওয়ামী লীগের সঙ্গে সব সময়ই যোগাযোগ রক্ষা করে চলতেন। কেননা তিনি মনে করতেন একমাত্র বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বেই এদেশের খেটে খাওয়া মানুষ মুক্তি পেতে পারে। সেই কারনে তিনি ছিলেন বঙ্গবন্ধু ও পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের আহবানে ডাকা সকল আন্দোলনের একজন প্রথম সারির নেতা।

১৯৬৬ সালে বঙ্গবন্ধু প্রণীত ৬ দফার আন্দোলন। ১৯৬৭ সালে ১৬ মার্চ পাকিস্তানের উপনিবেশিক সরকার কর্তৃক পূর্ব পাকিস্তান তথা বাংলাদেশের জনগণকে হত্যা করার নিমিত্তে দেশের বিভিন্ন স্থানে সাধারণ মানুষের মধ্যে বিনামূল্যে ভুট্টা বিতরণ করে এবং এই ভুট্টা ছিল বিষাক্ত। সেই ভুট্টা খেয়ে পাবনার রামচন্দ্রপুরের দিন মজুর আব্দুল গফুর হারু ও তার সহধর্মিনী মৃত্যু বরণ করেন এবং আরও অনেকেই অসুস্থ হয়ে শত শত মানুষ পাবনা সদর হাসপাতালে ভর্তি হন। এরই প্রতিবাদে পাবনা জেলা আওয়ামীলীগের আহবানে যে আন্দোলন গড়ে উঠেছিল সেই আন্দোলনের তিনি ছিলেন প্রথম সারির একজন।

১৯৬৮-১৯৬৯ সালে গণআন্দোলন এবং আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা থেকে বঙ্গবন্ধুকে মুক্ত করার আন্দোলন, ১৯৭১ সালের অসহযোগ আন্দোলন সহ সকল সংগ্রাম ও আন্দোলনের তিনি ছিলেন একজন প্রথম সারির নেতা।

১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ, বঙ্গবন্ধুর আহবানে পাবনা জেলায় যে সংগ্রাম পরিষদ গঠন করা হয় তিনি সেই সংগ্রাম পরিষদের যুগ্ন আহবায়কের পদে দায়িত্বপ্রাপ্ত হন। সেখানেও তিনি নিষ্ঠার সঙ্গে তাঁর দায়িত্ব এবং মুক্তিযুদ্ধে ও রণক্ষেত্রে জন্য প্রস্তুতির নীতি নির্ধারক হিসাবে বিশেষ ভূমিকা রাখেন। ২৯ শে মার্চ থেকে ১০ই এপ্রিল ১৯৭১, পাবনা ছিল পাক হানাদার বাহিনী থেকে মুক্ত। পরবর্তীতে পাবনা পাক হানাদার বাহিনীর দখলে চলে গেলে তিনি ভারতের কেচুয়াডাঙ্গা আশ্রয় নেন। কেচুয়াডাঙ্গা ছিল পাবনার মুক্তিযোদ্ধাদের ট্রানজিট ক্যাম্প। এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, অন্যান্য নেতৃবৃন্দ মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময় ভারতের বিভিন্ন স্থানে অবস্থান করলেও তিনি এই ট্রানজিট ক্যাম্পে অবস্থান করেন। এটা থেকেই বোঝা যায় তিনি পাবনার মানুষকে কত ভালোবাসতেন।

ভাষা আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে ২০২০ সালে মরণোত্তর একুশে পদক প্রদান করেন। হে শ্রদ্ধেয় প্রয়াত চাচা, আপনি আমাদের মাঝে নেই। কিন্তু আপনার স্মৃতি ও অবদানের ঋণ পাবনাবাসী কোনদিন শোধ করতে পারবে না। আপনি আপনার বর্ণাঢ্য কৃর্তিময় কর্মকান্ড এবং বিচক্ষণ রাজনীতিবিদ হিসেবে পাবনাসহ দেশ বাসীর হৃদয়ে অম্লান হয়ে থাকবেন।

জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।
জয় হউক বাংলার মেহনতী মানুষের।

………………………………..
লেখক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আ.স.ম আব্দুর রহিম পাকন

 

 আরও পড়ুনঃ

 আরও পড়ুনঃ