ঢাকা ০৬:৫৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞপ্তি :
সারাদেশের জেলা উপোজেলা পর্যায়ে দৈনিক স্বতঃকণ্ঠে সংবাদকর্মী নিয়োগ চলছে । আগ্রহী প্রার্থীগন জীবন বৃত্তান্ত ইমেইল করুন shatakantha.info@gmail.com // দৈনিক স্বতঃকণ্ঠ অনলাইন ও প্রিন্ট পত্রিকায় বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন ০১৭১১-৩৩৩৮১১, ০১৭৪৪-১২৪৮১৪

সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জের সোনাখাড়া ইউনিয়ন পরিষদ ভবণ ১৬ বছর ধরে পরিত্যক্ত

বার্তাকক্ষ
  • প্রকাশিত সময় ০৬:০৫:২৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ মে ২০২২
  • / 59

সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জের সোনাখাড়া ইউনিয়ন পরিষদ ভবণ ১৬ বছর ধরে পরিত্যক্ত

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি : তৎকালীন সময়ে বিএনপি এবং আওয়ামীলীগের রশি টানাটানির কারনে ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার সোনাখাড়া ইউনিয়ন পরিষদ ভবনটি এখন গো-চারণ ভুমিতে পরিনত হয়েছে।

নিমগাছি কলেজের পশ্চিমে অবস্থিত সোনাখাড়া ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্সটি নির্মানের পর থেকে আজ অবধি ব্যবহার না করায় অযত্ন, অবহেলায় নির্বিকার পড়ে আছে।

স্থানীয় সচেতন মহল ও রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বিএনপি সরকার ক্ষমতা থাকাকালী সময়ে বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল মান্নান তালুকদারের নামে ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করে ভবণটির নির্মান কাজ শুরু করা হয়।

তবে পরিষদ ভবনটির স্থান নির্ধারন করা নিয়ে বিএনপির চেয়ারম্যান আতাউর রহমান তালুকদার ও আওয়ামীলীগের চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন ছানার সমর্থকদের মধ্যে চরম মত বিরোধ সৃষ্টি হয়। পরে আওয়ামীলীগের চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন ছানার সমর্থকরা আগের স্থানে ভবন নির্মানের দাবী জানায়।

ফলে তখনকার আওয়ামীলীগ ও বিএনপির দুই চেয়ারম্যানের সমর্থকদের মধ্যে শুরু হয় রশি টানাটানি। চলতে থাকে শক্তি,ক্ষমতা,মর্যাদা আর আধিপত্য বিস্তারের লড়াই। সকল বিতর্ক উপেক্ষা করে নিমগাছী কলেজের পাশেই নতুন স্থানে নির্মিত হয় নতুন ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স।

তখন আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন ছানা বিএনপির নবনির্মিত ভবণে পরিষদের কার্যক্রম পরিচালনা করতে নারাজ। তিনি তখন পরিষদের কাজকর্ম চালাতে থাকেন নিমগাছি বাজারস্থ পুরাতন ইউনিয়ন পরিষদ ভবনে।

তাই ২০০৬ সাল হতে আজ অবধি প্রায় ১৬ বছর ধরে ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্সটি পরিত্যক্ত অবস্থায় আড্ডা খানায় পরিনত হয়েছে। এ সুযোগে চলতে থাকে সেখানে অবৈধ কার্যক্রম।

এলাকার মানুষের গরু-ছাগল বিচরণ করছে সেখানে। রোদ বৃষ্টিতে স্থানীয়রা গরু, ছাগল বেঁধে গোয়াল ঘর হিসেবে ব্যবহার করছে। কেউবা পরিষদের মাঠে ধান,খড় শুকাচ্ছে। জেলেরা মাছ ধরার জাল টানিয়ে রোদে শুকাচ্ছে। আবার কেউ কেউ জবর দখল করে সামনের মাঠটি নানা কাজে ব্যবহার করছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকেই জানান, ভবনটি ব্যবহার না করায় দীর্ঘদিন পরিত্যক্ত থাকায় নেশাখোরদের অভয়ারণ্যে পরিনত হয়েছে। রাত হলেই এখানে মাদকসেবীদের উপদ্রব বাড়ে। চলে নানা রকম অসামাজিক কার্যকলাপ।

সরেজমিনে গিয়ে আরও দেখা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে ভবণটি পরিত্যক্ত থাকায় সেখানে গরু-ছাগল বেঁধে নোংরা করা হয়েছে। ভবনটির দরজা, জানালা নষ্ট হতে চলেছে। রং কালার উঠে গিয়ে প্যালেস্তরা খসে পড়ছে। এক কথায় ভবনটি এখন অভিভাবকশুন্য হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।

এ বিষয়ে কথা হয় তৎকালিন ইউপি চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন ছানার সাথে।তিনি জানান, ভবনটি আমি চেয়ারম্যান থাকাকালীন সময়ে নির্মান হয়েছে। নিয়ম অনুসারে পুরাতন স্থানে ভবন নির্মানের কথা থাকলেও তখন বিএনপির শাষনামল থাকায় বিএনপি নেতারা ক্ষমতার অপব্যবহার করে অন্যত্র ইউনিয়ন পরিষদ ভবন নির্মান করেন।

সেই ক্ষোভে আমি চেয়ারম্যান থাকাকালীন সময়ে ওখানে না বসে পুরাতন অফিসেই কাজকর্ম চালিয়েছিলাম। তবে ওখানে কার্যক্রম না চালালেও আমার সময়ে রক্ষণাবেক্ষণসহ মাঝে মধ্যেই পরিষ্কার করা হতো।

এ বিষয়ে দুই দুইবার নির্বাচিত বর্তমান চেয়ারম্যান রিপন নির্মিত ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্সটি পরিত্যক্ত থাকার কথা স্বীকার করে এ প্রতিনিধিকে জানান, বিগত সময়ের চেয়ারম্যানরা কেন পরিঘদ ভবণটি ব্যবহার করেন নাই, তা আমি জানি না। তবে ভবণটি পরিত্যক্ত থাকায় এখন ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে আছে ৷

ভবনটি রিপিয়ারিং করে ব্যবহারের প্রস্তুতি চলছে। সকল দ্বিধাদ্বন্দ্ব ভুলে গিয়ে ভবণটি সংস্কার করে ব্যবহার উপযোগী হিসেবে গড়ে তোলার জন্য বর্তমান সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা: আব্দুল আজিজ সহ সংশ্লিষ্টদের সুদৃষ্টি কামনা করেন ইউনিয়নের সচেতন নাগরিক মহল।

আরও পড়ুনঃ সিরাজগঞ্জের তাড়াশে মুরগী খামারে অবৈধ বৈদ্যুতিক তারে জরিয়ে শিশুর মৃত্যু

সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জের সোনাখাড়া ইউনিয়ন পরিষদ ভবণ ১৬ বছর ধরে পরিত্যক্ত

প্রকাশিত সময় ০৬:০৫:২৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ মে ২০২২

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি : তৎকালীন সময়ে বিএনপি এবং আওয়ামীলীগের রশি টানাটানির কারনে ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার সোনাখাড়া ইউনিয়ন পরিষদ ভবনটি এখন গো-চারণ ভুমিতে পরিনত হয়েছে।

নিমগাছি কলেজের পশ্চিমে অবস্থিত সোনাখাড়া ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্সটি নির্মানের পর থেকে আজ অবধি ব্যবহার না করায় অযত্ন, অবহেলায় নির্বিকার পড়ে আছে।

স্থানীয় সচেতন মহল ও রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বিএনপি সরকার ক্ষমতা থাকাকালী সময়ে বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল মান্নান তালুকদারের নামে ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করে ভবণটির নির্মান কাজ শুরু করা হয়।

তবে পরিষদ ভবনটির স্থান নির্ধারন করা নিয়ে বিএনপির চেয়ারম্যান আতাউর রহমান তালুকদার ও আওয়ামীলীগের চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন ছানার সমর্থকদের মধ্যে চরম মত বিরোধ সৃষ্টি হয়। পরে আওয়ামীলীগের চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন ছানার সমর্থকরা আগের স্থানে ভবন নির্মানের দাবী জানায়।

ফলে তখনকার আওয়ামীলীগ ও বিএনপির দুই চেয়ারম্যানের সমর্থকদের মধ্যে শুরু হয় রশি টানাটানি। চলতে থাকে শক্তি,ক্ষমতা,মর্যাদা আর আধিপত্য বিস্তারের লড়াই। সকল বিতর্ক উপেক্ষা করে নিমগাছী কলেজের পাশেই নতুন স্থানে নির্মিত হয় নতুন ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স।

তখন আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন ছানা বিএনপির নবনির্মিত ভবণে পরিষদের কার্যক্রম পরিচালনা করতে নারাজ। তিনি তখন পরিষদের কাজকর্ম চালাতে থাকেন নিমগাছি বাজারস্থ পুরাতন ইউনিয়ন পরিষদ ভবনে।

তাই ২০০৬ সাল হতে আজ অবধি প্রায় ১৬ বছর ধরে ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্সটি পরিত্যক্ত অবস্থায় আড্ডা খানায় পরিনত হয়েছে। এ সুযোগে চলতে থাকে সেখানে অবৈধ কার্যক্রম।

এলাকার মানুষের গরু-ছাগল বিচরণ করছে সেখানে। রোদ বৃষ্টিতে স্থানীয়রা গরু, ছাগল বেঁধে গোয়াল ঘর হিসেবে ব্যবহার করছে। কেউবা পরিষদের মাঠে ধান,খড় শুকাচ্ছে। জেলেরা মাছ ধরার জাল টানিয়ে রোদে শুকাচ্ছে। আবার কেউ কেউ জবর দখল করে সামনের মাঠটি নানা কাজে ব্যবহার করছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকেই জানান, ভবনটি ব্যবহার না করায় দীর্ঘদিন পরিত্যক্ত থাকায় নেশাখোরদের অভয়ারণ্যে পরিনত হয়েছে। রাত হলেই এখানে মাদকসেবীদের উপদ্রব বাড়ে। চলে নানা রকম অসামাজিক কার্যকলাপ।

সরেজমিনে গিয়ে আরও দেখা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে ভবণটি পরিত্যক্ত থাকায় সেখানে গরু-ছাগল বেঁধে নোংরা করা হয়েছে। ভবনটির দরজা, জানালা নষ্ট হতে চলেছে। রং কালার উঠে গিয়ে প্যালেস্তরা খসে পড়ছে। এক কথায় ভবনটি এখন অভিভাবকশুন্য হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।

এ বিষয়ে কথা হয় তৎকালিন ইউপি চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন ছানার সাথে।তিনি জানান, ভবনটি আমি চেয়ারম্যান থাকাকালীন সময়ে নির্মান হয়েছে। নিয়ম অনুসারে পুরাতন স্থানে ভবন নির্মানের কথা থাকলেও তখন বিএনপির শাষনামল থাকায় বিএনপি নেতারা ক্ষমতার অপব্যবহার করে অন্যত্র ইউনিয়ন পরিষদ ভবন নির্মান করেন।

সেই ক্ষোভে আমি চেয়ারম্যান থাকাকালীন সময়ে ওখানে না বসে পুরাতন অফিসেই কাজকর্ম চালিয়েছিলাম। তবে ওখানে কার্যক্রম না চালালেও আমার সময়ে রক্ষণাবেক্ষণসহ মাঝে মধ্যেই পরিষ্কার করা হতো।

এ বিষয়ে দুই দুইবার নির্বাচিত বর্তমান চেয়ারম্যান রিপন নির্মিত ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্সটি পরিত্যক্ত থাকার কথা স্বীকার করে এ প্রতিনিধিকে জানান, বিগত সময়ের চেয়ারম্যানরা কেন পরিঘদ ভবণটি ব্যবহার করেন নাই, তা আমি জানি না। তবে ভবণটি পরিত্যক্ত থাকায় এখন ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে আছে ৷

ভবনটি রিপিয়ারিং করে ব্যবহারের প্রস্তুতি চলছে। সকল দ্বিধাদ্বন্দ্ব ভুলে গিয়ে ভবণটি সংস্কার করে ব্যবহার উপযোগী হিসেবে গড়ে তোলার জন্য বর্তমান সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা: আব্দুল আজিজ সহ সংশ্লিষ্টদের সুদৃষ্টি কামনা করেন ইউনিয়নের সচেতন নাগরিক মহল।

আরও পড়ুনঃ সিরাজগঞ্জের তাড়াশে মুরগী খামারে অবৈধ বৈদ্যুতিক তারে জরিয়ে শিশুর মৃত্যু