ঢাকা ০২:১৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৪, ১৫ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞপ্তি :
সারাদেশের জেলা উপোজেলা পর্যায়ে দৈনিক স্বতঃকণ্ঠে সংবাদকর্মী নিয়োগ চলছে । আগ্রহী প্রার্থীগন জীবন বৃত্তান্ত ইমেইল করুন shatakantha.info@gmail.com // দৈনিক স্বতঃকণ্ঠ অনলাইন ও প্রিন্ট পত্রিকায় বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন ০১৭১১-৩৩৩৮১১, ০১৭৪৪-১২৪৮১৪

সাঁথিয়ায় ১৫ দিনেও হত্যা মামলার আসামি গ্রেপ্তার না হওয়ায় নিরাপত্তাহীনতায় বাদীর পরিবার

বার্তাকক্ষ
  • প্রকাশিত সময় ০৭:১৩:২৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ জুন ২০২২
  • / 55

পুত্রশোকে মুহ্যমান পিতা-মাতা।


সাঁথিয়া (পাবনা) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ১১:৫৯ অপরাহ্ন, ১৩ জুন ২০২২

পাবনার চরমপন্থী অধ্যাসিত জনপদ সাঁথিয়া উপজেলাধীন আতাইকুলা থানার স্বরগ্রামে এলাকায় প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে রুহুল আমিন(২৯) নামের এক যুবক খুন হন। এ ঘটনায় আহত হয়েছে রুহুল আমিনের চাচা আবু সাঈদ। আতাইকুলা থানায় মামলা হলে নামিক আসামীরা প্রকাশ্যে ঘূরে বেড়ানো সত্ত্বেও পুলিশ গ্রেপ্তার না করায় বাদীসহ তার পরিবারের সদস্যরা শঙ্কিত হয়ে পড়েছে। এদিকে হত্যার পর ১৫ দিন গত হয়েছে।

উপজেলার ভুলবাড়িয়া ইউনিয়নের স্বরগ্রামের মৃত রুহুল আমিনের বাড়ীতে সাংবাদিকরা সরেজমিনে গেলে সাথে সাথে রুহুল আমিনের মা রোকেয়া খাতুন (৫০) কান্নায় মুর্ছা যান আর বিলাপ করে বলেন আমার সোনার রুহুল এসেছে। তাকে এনে দাও। এ সময় রুহুলের স্ত্রী দেলোয়ারা খাতুন ও তার ৭ বছরের একমাত্র শিশু পুত্র শকিবুল হাসান কান্নায় ভেঙ্গে পরে। প্রতিবেশী নর-নারীরাও চোখে পানি ধরে রাখতে পারেননি। কিছু সময়ের জন্য সেখানকার বাতাস ভারী হয়ে যায। রুহুল আমিন ওই গ্রামের আকমলের ছেলে। পেশায় দিন মজুর।

গত ২৯ মে বিকালে রুহুল তার স্ত্রী দেলোয়ারাকে দাওয়াত খেতে যাবে বলে বের হন। এটাই ছিল ন্ত্রীর সাথে শেষ কথা। ওই দিন রাত নয়টার দিকে রুহুল ও তার চাচা আবু সাঈদ বাড়ীর পাশে চায়ের দোকানে চা খেয়ে আসার সময় এলাকার চিহৃত সন্ত্রাসীরা রুহুলকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে কুপিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে। এসময় চাচা আবু সাইদ এগিয়ে গেলে তাকেও কুপিয়ে জখম করে। আবু সাঈদের চিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে আসলে সন্ত্রাসীরা বীরদপর্ণে চলে যায়।

এ ঘটনায় রুহুলের পিতা আকমল হোসেন বাদী হয়ে শাজাহানসহ ১১ জনের নাম উল্লেখসহ আতাইকুলা থানায় মামলা দায়ের করে। যার নং ১৯ তাং ৩১/০৫/২০২২।

আবু সাঈদের স্ত্রী রুবি খাতুন বলেন, স্বরভবানীপুর গ্রামের মৃত তোয়াজ আলীর ছেলে শাহজাহানের সাথে আমার স্বামী ও ভাসুরের ছেলে রুহুল আমিন সামাজিক কর্মকান্ড এক সাথেই চলাফেরা করত। গত বছর স্বরগ্রাম দাখিল মাদরাসার ম্যানেজিং কমিটি গঠন করার সময় আমার স্বামী ও শাহজাহান সভাপতি পদে প্রার্থীতা ঘোষণা করে। এ নিয়ে শাহাজাহানের ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। সে থেকে শাহজাহান আলী তার সস্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে ভয়ভীতি দেখান।

রুহুল আমিনের পিতা আকমল সাংবাদিকদের দেখে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। তিনি বলেন, আমি কি পাব না ছেলে হত্যার বিচার? আজ ১৫ দিন পার হলো, আসামীরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও তাদের গ্রেপ্তার করছে না আইন শৃংখলা বাহিনী।

তিনি ক্ষোভে বলেন, দেশে কোন শক্তি নাই যে শাহজাহানের বিচার করে। সে আধিপত্য দেখাতে এলাকায় নানা অপকর্ম করছে। আসামীরা গ্রেফতার না হওয়ায় আমার পরিবার আতংকে রয়েছে।

আহত আবু সাইদ বলেন, এলাকার চিহিৃত সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে ঘুেেড় বেড়াচ্ছে। পুলিশ তাদের গ্র্রেপ্তার না করায় প্রাণ ভয়ে আমি পালিয়ে বেড়াচ্ছি। তিনি আরো বলেন, প্রভাবশালী শাহাজাহান এলাকায় সন্ত্রাসীদের লালন পালন করে। সে এলাকায় একচ্ছত্র আধিপাত্য বিস্তার করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। তার বিরুদ্ধে কেউ কথা বলতে সাহস পায় না।

হত্যাকান্ডের মাত্র ৯ দিনে মামলা সিআইডিতে যাওয়া ও আসামী গ্রেপ্তার না হওয়ায় ভুক্তভোগী পরিবার আতংকে রয়েছে। সন্ত্রাসীদের ভয়ে সাঈদসহ পরিবারের অনেকেই পালিয়ে বেড়াচ্ছে।

শাহজাহানের মোবাইল নম্বরে বার বার যোগাযোগের চেষ্টা করে পাওয়া যায়নি।

এ ব্যাপারে আতাইকুলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা( ওসি) জালাল উদ্দিন বলেন, হত্যার পর লাশ উদ্ধার করে মর্গে প্রেরণ করি। থানায় মামলা গ্রহণ করা হয়। পরবর্তিতে মামলাটি সিআইডি তদন্ত করছে।

 


 আরও পড়ুনঃ

 আরও পড়ুনঃ

সাঁথিয়ায় ১৫ দিনেও হত্যা মামলার আসামি গ্রেপ্তার না হওয়ায় নিরাপত্তাহীনতায় বাদীর পরিবার

প্রকাশিত সময় ০৭:১৩:২৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ জুন ২০২২

পুত্রশোকে মুহ্যমান পিতা-মাতা।


সাঁথিয়া (পাবনা) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ১১:৫৯ অপরাহ্ন, ১৩ জুন ২০২২

পাবনার চরমপন্থী অধ্যাসিত জনপদ সাঁথিয়া উপজেলাধীন আতাইকুলা থানার স্বরগ্রামে এলাকায় প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে রুহুল আমিন(২৯) নামের এক যুবক খুন হন। এ ঘটনায় আহত হয়েছে রুহুল আমিনের চাচা আবু সাঈদ। আতাইকুলা থানায় মামলা হলে নামিক আসামীরা প্রকাশ্যে ঘূরে বেড়ানো সত্ত্বেও পুলিশ গ্রেপ্তার না করায় বাদীসহ তার পরিবারের সদস্যরা শঙ্কিত হয়ে পড়েছে। এদিকে হত্যার পর ১৫ দিন গত হয়েছে।

উপজেলার ভুলবাড়িয়া ইউনিয়নের স্বরগ্রামের মৃত রুহুল আমিনের বাড়ীতে সাংবাদিকরা সরেজমিনে গেলে সাথে সাথে রুহুল আমিনের মা রোকেয়া খাতুন (৫০) কান্নায় মুর্ছা যান আর বিলাপ করে বলেন আমার সোনার রুহুল এসেছে। তাকে এনে দাও। এ সময় রুহুলের স্ত্রী দেলোয়ারা খাতুন ও তার ৭ বছরের একমাত্র শিশু পুত্র শকিবুল হাসান কান্নায় ভেঙ্গে পরে। প্রতিবেশী নর-নারীরাও চোখে পানি ধরে রাখতে পারেননি। কিছু সময়ের জন্য সেখানকার বাতাস ভারী হয়ে যায। রুহুল আমিন ওই গ্রামের আকমলের ছেলে। পেশায় দিন মজুর।

গত ২৯ মে বিকালে রুহুল তার স্ত্রী দেলোয়ারাকে দাওয়াত খেতে যাবে বলে বের হন। এটাই ছিল ন্ত্রীর সাথে শেষ কথা। ওই দিন রাত নয়টার দিকে রুহুল ও তার চাচা আবু সাঈদ বাড়ীর পাশে চায়ের দোকানে চা খেয়ে আসার সময় এলাকার চিহৃত সন্ত্রাসীরা রুহুলকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে কুপিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে। এসময় চাচা আবু সাইদ এগিয়ে গেলে তাকেও কুপিয়ে জখম করে। আবু সাঈদের চিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে আসলে সন্ত্রাসীরা বীরদপর্ণে চলে যায়।

এ ঘটনায় রুহুলের পিতা আকমল হোসেন বাদী হয়ে শাজাহানসহ ১১ জনের নাম উল্লেখসহ আতাইকুলা থানায় মামলা দায়ের করে। যার নং ১৯ তাং ৩১/০৫/২০২২।

আবু সাঈদের স্ত্রী রুবি খাতুন বলেন, স্বরভবানীপুর গ্রামের মৃত তোয়াজ আলীর ছেলে শাহজাহানের সাথে আমার স্বামী ও ভাসুরের ছেলে রুহুল আমিন সামাজিক কর্মকান্ড এক সাথেই চলাফেরা করত। গত বছর স্বরগ্রাম দাখিল মাদরাসার ম্যানেজিং কমিটি গঠন করার সময় আমার স্বামী ও শাহজাহান সভাপতি পদে প্রার্থীতা ঘোষণা করে। এ নিয়ে শাহাজাহানের ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। সে থেকে শাহজাহান আলী তার সস্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে ভয়ভীতি দেখান।

রুহুল আমিনের পিতা আকমল সাংবাদিকদের দেখে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। তিনি বলেন, আমি কি পাব না ছেলে হত্যার বিচার? আজ ১৫ দিন পার হলো, আসামীরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও তাদের গ্রেপ্তার করছে না আইন শৃংখলা বাহিনী।

তিনি ক্ষোভে বলেন, দেশে কোন শক্তি নাই যে শাহজাহানের বিচার করে। সে আধিপত্য দেখাতে এলাকায় নানা অপকর্ম করছে। আসামীরা গ্রেফতার না হওয়ায় আমার পরিবার আতংকে রয়েছে।

আহত আবু সাইদ বলেন, এলাকার চিহিৃত সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে ঘুেেড় বেড়াচ্ছে। পুলিশ তাদের গ্র্রেপ্তার না করায় প্রাণ ভয়ে আমি পালিয়ে বেড়াচ্ছি। তিনি আরো বলেন, প্রভাবশালী শাহাজাহান এলাকায় সন্ত্রাসীদের লালন পালন করে। সে এলাকায় একচ্ছত্র আধিপাত্য বিস্তার করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। তার বিরুদ্ধে কেউ কথা বলতে সাহস পায় না।

হত্যাকান্ডের মাত্র ৯ দিনে মামলা সিআইডিতে যাওয়া ও আসামী গ্রেপ্তার না হওয়ায় ভুক্তভোগী পরিবার আতংকে রয়েছে। সন্ত্রাসীদের ভয়ে সাঈদসহ পরিবারের অনেকেই পালিয়ে বেড়াচ্ছে।

শাহজাহানের মোবাইল নম্বরে বার বার যোগাযোগের চেষ্টা করে পাওয়া যায়নি।

এ ব্যাপারে আতাইকুলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা( ওসি) জালাল উদ্দিন বলেন, হত্যার পর লাশ উদ্ধার করে মর্গে প্রেরণ করি। থানায় মামলা গ্রহণ করা হয়। পরবর্তিতে মামলাটি সিআইডি তদন্ত করছে।

 


 আরও পড়ুনঃ

 আরও পড়ুনঃ