ঢাকা ০৭:১৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞপ্তি :
সারাদেশের জেলা উপোজেলা পর্যায়ে দৈনিক স্বতঃকণ্ঠে সংবাদকর্মী নিয়োগ চলছে । আগ্রহী প্রার্থীগন জীবন বৃত্তান্ত ইমেইল করুন shatakantha.info@gmail.com // দৈনিক স্বতঃকণ্ঠ অনলাইন ও প্রিন্ট পত্রিকায় বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন ০১৭১১-৩৩৩৮১১, ০১৭৪৪-১২৪৮১৪

রাজশাহী মাদকের রমরমা ব্যবসা সরগরম দালালরা, পুলিশের গোপন আঁতাত

বার্তাকক্ষ
  • প্রকাশিত সময় ০৬:৩৭:৩৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩ জুলাই ২০২২
  • / 88

গোদাগাড়ী থানা


গোদাগাড়ী প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০৬:৩৭ অপরাহ্ন, ৩ জুলাই ২০২২

বাংলাদেশ সরকার মাদক এবং জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অব্যাহত রাখলেও থেমে নেই মাদক ব্যবসা।মাদকের রাজধানী গোদাগাড়ীতে হরহামেশাই মিলছে মাদক। বর্ডার এলাকায় নামমাত্র প্রশাসনের টহল থাকলেও সহজেই মেলে গাঁজা, হেরোইন, ফেনসিডিল এবং ইন্ডিয়ান মদ।

বিভিন্ন কৌশল এবং রুট চেঞ্জ করে পাচার হচ্ছে মাদক। এসব রুটের মধ্যে গোদাগাড়ীর ফরিদপুর, সুলতানগঞ্জ, সারাংপুর, গোদাগাড়ী হাটপাড়া, রেলবাজার, মাদারপুর, ডিমভাঙ্গা, উজানপাড়া, ফুলতলা, বিদিরপুর, প্রেমতুলি উল্লেখযোগ্য।

এদিকে বেশভূষা পাল্টে সাধারণ মানুষের সাথে মিশে গিয়ে গোপনে ব্যবসা করছেন অনেকেই। প্রশাসন এবং স্থানীয় নেতাদের ছত্রছায়ায় থেকেও মাদক ব্যবসা করছেন রাঘববোয়ালরা। খোদ চুনোপুঁটিদের চাপে রাখেলেও ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকছেন তারা। নামমাত্র অভিযানে চুনোপুঁটিরা ঘর ছাড়া হলেও বীরদর্পে ঘুরে বেড়াচ্ছেন গডফাদাররা। থানা ম্যানেজ করে তারা ব্যবসা করছেন বলে জানা যায়। এসব মাদক ব্যবসায়ীদের মধ্যে মহিশালবাড়ীর তোফায়েল, আব্দুল মালেক, সনি, রায়হান, মোফা, সোহেল, ল্যাংড়া শামীম, টিপু, মনির, নবীন, শহিদুল ইসলাম ভোদল, ডিমভাঙ্গার রিনা, রেলবাজারের কারিমা, মাদারপুরের ইসাহাক, তারেক, মেডিকেল মোড়ের দুরুল হোদা, কালু, লালবাগের মিজান, বৃটিশ,রেলগেটের বাবু মেম্বার, ফুলতলা এলাকার তিতাস, বাইপাস এলাকার শালেমা খাতুন,উজান পাড়ার দুরুল, মিঠু, বাবু, শরিফ (ঘাইটাল), সাদ্দাম, রহিম, হিটলার,মিন্টু, মাটিকাটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহেল উল্লেখযোগ্য।

গোদাগাড়ী এলাকা মাদকের আখড়া বলে পরিচিত সারাদেশে। এই এলাকায় বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অভিযান পরিচালনা করে থাকেন। কিন্তু কালো টাকায় ভেস্তে যায় অভিযান। লোক দেখানো চুনোপুঁটিদের মাঝে আতঙ্ক তৈরী করে হারিয়ে যায় অভিযান। এভাবেই গডফাদাররা মাদক ব্যবসা করে কোটি টাকার মালিক হচ্ছেন রাতারাতি।

মাদক কারবারকে ঘিরে গোদাগাড়ীতে সরগরম দালালরা। পুলিশ মাদক ব্যবসায়ীদের আটক করা মাত্রই ফোন যায় দালালদের কাছে। দালাল ব্যবসায়ীর পরিবারের সাথে কথা বলে বড় অংকের টাকার চুক্তি করেন।

চুক্তিতে আসলেই ছাড়া পায় মাদক কারবারী। এসব দালাদের উঠাবসা প্রশাসনের লোকদের সাথেই। পুরো থানা জুড়েই তাদের আনাগোনা। টাকা বিনিময়ে মাদকের মামলায় চলে হেরফের।

এসব দালালদের মধ্যে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা হামিদ রানা, গোদাগাড়ী ১ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুল জাব্বার, ২ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোফাজ্জল হোসেন মোফা, ৭ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শহিদুল ইসলাম মাটিকাটা ইউনিয়নের ফুলতলা এলাকার বাণী ইসরায়েল (হিটলার) সহ আরও অনেকেই।

জানা যায় বানী ইসরায়েল (হিটলার) মাদক ব্যবসার পাশাপাশি প্রেমতুলি পুলিশ ফাঁড়ির দালালী করে থাকেন। হিটলার এলাকায় দোকান পেশায় যুক্ত থেকে জেলা পুলিশের (ডিবি), প্রেমতুলি পুলিশ ফাঁড়ির সাথে সখ্যতা রেখে মাদক ব্যবসা করে থাকেন এবং এলাকার মাদক ব্যবসায়ীদের পুলিশের সাথে আঁতাত করে দেন টাকার বিনিময়ে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যাক্তি বলেন,সম্প্রতি হিটলার প্রেমতুলি পুলিশের কথা বলে এক ভুক্তভোগীর কাছ থেকে দশ হাজার টাকা নিয়ে তাকে বাড়িতে থাকতে আশ্বস্ত করেন। (অডিও কল রেকর্ড সংরক্ষিত)
এছাড়াও গোদাগাড়ী থানার অন্তর্গত প্রেমতুলি পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে মাদক দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগও রয়েছে। পরিকল্পনা মাফিক কথিত মাদক ব্যবসায়ীদের বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করার সময় সাথেই মাদক রাখেন রফিকুল ইসলাম। এই রফিকুলের বিরুদ্ধে হাটগাঙ্গপাড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে থাকা কালিন বিস্তর অভিযোগ উঠেছিলো। গভীর রাতের অভিযানে গিয়ে বাড়িতে মাদক রেখে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগও পাওয়া যায় তার বিরুদ্ধে।

প্রেমতুলি এলাকার বাণী ইসরায়েল (হিটলার) নামে দালালের মাধ্যমে ফাঁড়ির লেনদেন হয় বলে জানা যায়। (অডিও রেকর্ড সংরক্ষিত)

এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রেমতুলি পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ রফিকুল ইসলাম বলেন, এসব কথার ভিত্তি নেই। এই এলাকায় ২০০০ মাদক কারবারি আছে। কার কাছে থেকে কে পুলিশের নামে টাকা নিলো তা আমার জানা নেই। কেউ অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নিবো।

জানতে চাইলে গোদাগাড়ী থানার ওসি কামরুল ইসলাম বলেন, সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব নয়। পুলিশ কোন মাদকের সঙ্গে আপস করে না, আর করবেও না। মাদক অভিযান অব্যাহত আছে। প্রতিনিয়ত মাদক কারবারিসহ মাদক আটক করা হচ্ছে।

জেলা পুলিশের মিডিয়া মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইফতেখায়ের আলম বলেন, বিষয়গুলো আমার জানা নেই। এরকম হলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উল্লেখ, গত তিন মাসে গোদাগাড়ী থানায় মাদক মামলা হয়েছে ৮০টি। ৮০ মামলায় গ্রেফতার হয়েছে ১১৩ জন। মাদক উদ্ধার হয়েছে হেরোইন ২৭৩১.৬ গ্রাম, ফেন্সিডিল ১৫৬ বোতল,,গাঁজা-৯৭৪৫ গ্রাম, ইয়াবা ২৬৬ পিচ, চোলাইমদ ৫১৭ লিটার।

 


 আরও পড়ুনঃ

 আরও পড়ুনঃ


রাজশাহী মাদকের রমরমা ব্যবসা সরগরম দালালরা, পুলিশের গোপন আঁতাত

প্রকাশিত সময় ০৬:৩৭:৩৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩ জুলাই ২০২২

গোদাগাড়ী থানা


গোদাগাড়ী প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০৬:৩৭ অপরাহ্ন, ৩ জুলাই ২০২২

বাংলাদেশ সরকার মাদক এবং জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অব্যাহত রাখলেও থেমে নেই মাদক ব্যবসা।মাদকের রাজধানী গোদাগাড়ীতে হরহামেশাই মিলছে মাদক। বর্ডার এলাকায় নামমাত্র প্রশাসনের টহল থাকলেও সহজেই মেলে গাঁজা, হেরোইন, ফেনসিডিল এবং ইন্ডিয়ান মদ।

বিভিন্ন কৌশল এবং রুট চেঞ্জ করে পাচার হচ্ছে মাদক। এসব রুটের মধ্যে গোদাগাড়ীর ফরিদপুর, সুলতানগঞ্জ, সারাংপুর, গোদাগাড়ী হাটপাড়া, রেলবাজার, মাদারপুর, ডিমভাঙ্গা, উজানপাড়া, ফুলতলা, বিদিরপুর, প্রেমতুলি উল্লেখযোগ্য।

এদিকে বেশভূষা পাল্টে সাধারণ মানুষের সাথে মিশে গিয়ে গোপনে ব্যবসা করছেন অনেকেই। প্রশাসন এবং স্থানীয় নেতাদের ছত্রছায়ায় থেকেও মাদক ব্যবসা করছেন রাঘববোয়ালরা। খোদ চুনোপুঁটিদের চাপে রাখেলেও ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকছেন তারা। নামমাত্র অভিযানে চুনোপুঁটিরা ঘর ছাড়া হলেও বীরদর্পে ঘুরে বেড়াচ্ছেন গডফাদাররা। থানা ম্যানেজ করে তারা ব্যবসা করছেন বলে জানা যায়। এসব মাদক ব্যবসায়ীদের মধ্যে মহিশালবাড়ীর তোফায়েল, আব্দুল মালেক, সনি, রায়হান, মোফা, সোহেল, ল্যাংড়া শামীম, টিপু, মনির, নবীন, শহিদুল ইসলাম ভোদল, ডিমভাঙ্গার রিনা, রেলবাজারের কারিমা, মাদারপুরের ইসাহাক, তারেক, মেডিকেল মোড়ের দুরুল হোদা, কালু, লালবাগের মিজান, বৃটিশ,রেলগেটের বাবু মেম্বার, ফুলতলা এলাকার তিতাস, বাইপাস এলাকার শালেমা খাতুন,উজান পাড়ার দুরুল, মিঠু, বাবু, শরিফ (ঘাইটাল), সাদ্দাম, রহিম, হিটলার,মিন্টু, মাটিকাটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহেল উল্লেখযোগ্য।

গোদাগাড়ী এলাকা মাদকের আখড়া বলে পরিচিত সারাদেশে। এই এলাকায় বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অভিযান পরিচালনা করে থাকেন। কিন্তু কালো টাকায় ভেস্তে যায় অভিযান। লোক দেখানো চুনোপুঁটিদের মাঝে আতঙ্ক তৈরী করে হারিয়ে যায় অভিযান। এভাবেই গডফাদাররা মাদক ব্যবসা করে কোটি টাকার মালিক হচ্ছেন রাতারাতি।

মাদক কারবারকে ঘিরে গোদাগাড়ীতে সরগরম দালালরা। পুলিশ মাদক ব্যবসায়ীদের আটক করা মাত্রই ফোন যায় দালালদের কাছে। দালাল ব্যবসায়ীর পরিবারের সাথে কথা বলে বড় অংকের টাকার চুক্তি করেন।

চুক্তিতে আসলেই ছাড়া পায় মাদক কারবারী। এসব দালাদের উঠাবসা প্রশাসনের লোকদের সাথেই। পুরো থানা জুড়েই তাদের আনাগোনা। টাকা বিনিময়ে মাদকের মামলায় চলে হেরফের।

এসব দালালদের মধ্যে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা হামিদ রানা, গোদাগাড়ী ১ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুল জাব্বার, ২ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোফাজ্জল হোসেন মোফা, ৭ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শহিদুল ইসলাম মাটিকাটা ইউনিয়নের ফুলতলা এলাকার বাণী ইসরায়েল (হিটলার) সহ আরও অনেকেই।

জানা যায় বানী ইসরায়েল (হিটলার) মাদক ব্যবসার পাশাপাশি প্রেমতুলি পুলিশ ফাঁড়ির দালালী করে থাকেন। হিটলার এলাকায় দোকান পেশায় যুক্ত থেকে জেলা পুলিশের (ডিবি), প্রেমতুলি পুলিশ ফাঁড়ির সাথে সখ্যতা রেখে মাদক ব্যবসা করে থাকেন এবং এলাকার মাদক ব্যবসায়ীদের পুলিশের সাথে আঁতাত করে দেন টাকার বিনিময়ে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যাক্তি বলেন,সম্প্রতি হিটলার প্রেমতুলি পুলিশের কথা বলে এক ভুক্তভোগীর কাছ থেকে দশ হাজার টাকা নিয়ে তাকে বাড়িতে থাকতে আশ্বস্ত করেন। (অডিও কল রেকর্ড সংরক্ষিত)
এছাড়াও গোদাগাড়ী থানার অন্তর্গত প্রেমতুলি পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে মাদক দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগও রয়েছে। পরিকল্পনা মাফিক কথিত মাদক ব্যবসায়ীদের বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করার সময় সাথেই মাদক রাখেন রফিকুল ইসলাম। এই রফিকুলের বিরুদ্ধে হাটগাঙ্গপাড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে থাকা কালিন বিস্তর অভিযোগ উঠেছিলো। গভীর রাতের অভিযানে গিয়ে বাড়িতে মাদক রেখে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগও পাওয়া যায় তার বিরুদ্ধে।

প্রেমতুলি এলাকার বাণী ইসরায়েল (হিটলার) নামে দালালের মাধ্যমে ফাঁড়ির লেনদেন হয় বলে জানা যায়। (অডিও রেকর্ড সংরক্ষিত)

এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রেমতুলি পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ রফিকুল ইসলাম বলেন, এসব কথার ভিত্তি নেই। এই এলাকায় ২০০০ মাদক কারবারি আছে। কার কাছে থেকে কে পুলিশের নামে টাকা নিলো তা আমার জানা নেই। কেউ অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নিবো।

জানতে চাইলে গোদাগাড়ী থানার ওসি কামরুল ইসলাম বলেন, সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব নয়। পুলিশ কোন মাদকের সঙ্গে আপস করে না, আর করবেও না। মাদক অভিযান অব্যাহত আছে। প্রতিনিয়ত মাদক কারবারিসহ মাদক আটক করা হচ্ছে।

জেলা পুলিশের মিডিয়া মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইফতেখায়ের আলম বলেন, বিষয়গুলো আমার জানা নেই। এরকম হলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উল্লেখ, গত তিন মাসে গোদাগাড়ী থানায় মাদক মামলা হয়েছে ৮০টি। ৮০ মামলায় গ্রেফতার হয়েছে ১১৩ জন। মাদক উদ্ধার হয়েছে হেরোইন ২৭৩১.৬ গ্রাম, ফেন্সিডিল ১৫৬ বোতল,,গাঁজা-৯৭৪৫ গ্রাম, ইয়াবা ২৬৬ পিচ, চোলাইমদ ৫১৭ লিটার।

 


 আরও পড়ুনঃ

 আরও পড়ুনঃ