চাটমোহরে ইউএনও সৈকত ইসলামের ক্যামেরায় ধরা পড়া ৭৮ প্রজাতির পাখি
- প্রকাশিত সময় ১২:৪৭:৪২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৮ জুলাই ২০২২
- / 199
তোফাজ্জল হোসেন বাবু, চাটমোহর
প্রকাশিত: ১২:৪৭ পূর্বাহ্ন, ১৮ জুলাই ২০২২
বাবুই, দেশী চাঁদিঠোঁট পাখি এখন তেমন একটা দেখতে পাওয়া যায় না। শেষ কবে এই পাখিগুলো দেখেছেন তা কেউ সহজে বলতেও পারবেন না। দেশী পাখিই যেখানে দেখা মেলে না, সেখানে টাইগা চুটকি, নীল গলা ফিদ্দা নামের ইউরোপীয় পরিযায়ী পাখির দেখা পাওয়া আরও কষ্টকর। অথচ পাবনার চাটমোহর উপজেলায় সন্ধান মিলেছে এমন ৭৮ প্রজাতির পাখির।
গত ২০ মাসে চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সৈকত ইসলামের ক্যামেরায় ধরা পড়েছে এসব বিভিন্ন প্রজাতির পাখি। চাটমোহরের মতো একটি উপজেলায় এতো প্রজাতির পাখির বৈচিত্র দেখা পাওয়া সত্যি আশ্চর্যের। আগামীতে এমন আরো কিছু প্রজাতির পাখির দেখা মিলবে বলে মনে করেন তিনি।
২০২০ সালের ১০ সেপ্টেম্বর চাটমোহরে ইউএনও হিসেবে যোগ দেন সৈকত ইসলাম। এর আগে তিনি রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে কর্মরত ছিলেন। চটমোহরে ইউএনও হিসেবে যোগ দেওয়ার পর অফিসের কাজ, সভা, সেমিনারসহ বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত থাকেন তিনি। এর বাইরে কিছু কাজে তাকে ছুটতে হয় এক ইউনিয়ন থেকে আরেক ইউনিয়নে। ফটোগ্রাফি তার খুব পছন্দের ও শখের। তাই গ্রামাঞ্চলে বের হলে কাজ ও দায়িত্ব পালনের ফাঁকে ছবি তুলতে ভালবাসেন। বিশেষ করে পাখির ছবি তোলা তার খুব পছন্দের।
২০২০ সালের ২৭ নভেম্বর চাটমোহর উপজেলা পরিষদ চত্বরে প্রথম পাখির ছবি তোলেন। সে পাখির নাম ছিল ভাত শালিক। আর সর্বশেষ গত ২ জুলাই উপজেলার পাশরডাঙ্গা গ্রাম থেকে তোলেন ৭৮ তম পাখির ছবি। এ পাখিটির নাম কালিম। তার তোলা পাখির ছবিগুলোর মধ্যে খুব বেশি দেখা যায়না এমন পাখি হলো নীল কন্ঠ, জল ময়ূর, শাহ বুলবুলি।
ইউএনও সৈকত ইসলামের ক্যামেরায় সন্ধান পাওয়া পাখির মধ্যে বাংলা বাবুই, দেশী চাঁদিঠোঁট বর্তমানে খুব কম দেখা মেলে। এছাড়া লাল মুনিয়া ও হলদে পা হরিয়ান পাখি চাটমোহরে দেখা গেলেও তার ছবি তোলা যায়নি এখনও। টাইগা চুটকি, নীল গলা ফিদ্দা নামে দুটি ইউরোপীয় পরিযায়ী পাখির সন্ধান মিলেছে এই উপজেলায়। গত ফেব্রুয়ারি মাসে ধুলাউড়ি গ্রামের ডাকাতির ভিটা এলাকায় দেখা গেছে পাখি দুটিকে।
চাটমোহরে দেখা পাওয়া উল্লেখযোগ্য পাখির মধ্যে রয়েছে, নীল কণ্ঠ, চোখ গেলো, জল ময়ূর, নীল রাজন, অম্বর চুটকি, কাটুয়া চিল, কমলা বউ, দেশি বাবুই, হটিটি, সাদা খঞ্জন, শাহ বুলবুলি, মোহনচূড়া, বন চড়–ই, ফটিকজল, ভরত, তিলা মুনিয়া, এশীয় বসন্ত বাউরী, কমলা বউ, চোখ গেল, কাবাসি, কসাই পাখি, ভোমরা ছোটন, মেঠো পেট পাপিয়া, সাহেলী, ডাহুক ইত্যাদি।
ইউএনও সৈকত ইসলাম বলেন, ‘চাটমোহরে যোগ দেবার পর প্রচুর পাখি দেখতে পাই। তখন মনে হয় পাখির ছবি তোলা যায়। সর্বশেষ ৭৮ প্রজাতির পাখির সন্ধান পেয়েছি। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রজাতির পাখির সন্ধান মিলেছে মথুরাপুর ইউনিয়নের চিরইল, হান্ডিয়াল, নিমাাইচড়া ও হরিপুর ইউনিয়নের ডাকাতির ভিটা এলাকায়।‘
তিনি আরো বলেন, ‘চাটমোহর চলনবিল বেষ্টিত অঞ্চল। এখানে ছোট ছোট অনেক পুকুর খাল, বিল, ডোবা, জলাশয় রয়েছে। সেই সঙ্গে অনেক ঝোপঝাড়, জঙ্গল, ঘাস, লতাপাতা, বট, পাকুর, পিচ ফলসহ অনেক ফলজ গাছ আছে। যেগুলো পাখিদের বসবাস ও খাবারের জন্য খুবই উপযুক্ত। যেকারণে চাটমোহর উপজেলায় অনেক প্রজাতির পাখির সন্ধান পাওয়া গেছে।’ সম্ভবত সামনের দিনগুলোতে এখানে আরো অনেক প্রজাতির পাখির সন্ধান পাওয়া যাবে।
পাখিদের রক্ষায় করণীয় সম্পর্কে এই ইউএনও বলেন, ‘এখানে পুকুরে, খালে ও ঘাস নিধনে বিষ প্রয়োগ করা হয়। পাখিরা এখান থেকে খাবার সংগ্রহ করে। তাই বিষ প্রয়োগ বন্ধ করতে হবে। না হলে পাখি মারা যাবে। আগের চেয়ে পাখি শিকার অনেকটাই কমে গেছে। সবার মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। আবার যেসব ফলজ গাছ রয়েছে সেগুলো ধরে রাখতে হবে। কেটে ফেললে পাখির সমারোহ কমে যাবে। চাটমোহরে অনেক রকম পাখি আছে, এটা জানলে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষ দেখতে আসবে বলেও আমি মনে করি।’
পাবনার বন্য প্রাণী সংরক্ষণ বিষয়ক সংগঠন ‘নেচার এন্ড ওয়াইল্ডলাইফ কনজারভেশন কমিউনিটি’র সভাপতি এহসান আলী বিশ্বাস বলেন, প্রশাসনের কর্মকর্তা হলেও সৈকত ইসলাম পাখি ও পরিবেশ প্রেমী; যা আসলেই আমাদের জন্য খুশির বিষয়। যাঁরা পাখি ও প্রকৃতির ছবি তোলেন তারা সব সময় চেষ্টা করেন এসব প্রাণ-প্রকৃতি সংরক্ষণের।
লেখক:তোফাজ্জল হোসেন বাবু, সাংবাদিক
আটঘরিয়া ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড আ. লীগের বর্ধিতসভা মাদক কারবারিকে সামাজিকভাবে বয়কটের আহবান খাদ্যমন্ত্রীর বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম মাষ্টার স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল অনুষ্ঠিত সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে কৈজুরী ইউপি চেয়ারম্যান খোকন মাস্টারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন উল্লাপাড়া বড়মনোহরা গ্রামে নিজস্ব অর্থায়নে মাটির রাস্তার কাজ উদ্বোধন শার্শায় মাদ্রাসা এমপিও ভুক্ত হওয়ায় দোয়া ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত রাজশাহী-১ আসনের সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরীর বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন : অভিযোগের পাহাড় বন্যায় গৃহহীনদের ৫০১টি ঘর নির্মাণ শুরু করলেন ফারাজ করিম চৌধুরী খাতুনগঞ্জে লিটারে ৩৫ টাকা কমল ভোজ্যতেলের দাম