ঢাকা ১১:৪৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞপ্তি :
সারাদেশের জেলা উপোজেলা পর্যায়ে দৈনিক স্বতঃকণ্ঠে সংবাদকর্মী নিয়োগ চলছে । আগ্রহী প্রার্থীগন জীবন বৃত্তান্ত ইমেইল করুন shatakantha.info@gmail.com // দৈনিক স্বতঃকণ্ঠ অনলাইন ও প্রিন্ট পত্রিকায় বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন ০১৭১১-৩৩৩৮১১, ০১৭৪৪-১২৪৮১৪

টাঙ্গাইলে প্রেমের ফাঁদে বিয়ে, ১৭ লক্ষাধিক টাকা নিয়ে ডিভোর্স

বার্তাকক্ষ
  • প্রকাশিত সময় ০৭:৫৮:১৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ জুলাই ২০২২
  • / 163

টাঙ্গাইলে প্রেমের ফাঁদে বিয়ে, ১৭ লক্ষাধিক টাকা নিয়ে ডিভোর্স

ভুক্তভোগী যুবক নবী নেওয়াজ (৩৯) ও প্রতারক নারী কামরুন্নাহার

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০৭:৫৮ অপরাহ্ন, ২৯ জুলাই ২০২২


কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার এক যুবকের সাথে এমন অভিনব কায়দায় প্রতারণার ঘটনা ঘটেছে। এই বিষয়ে কুমিল্লায় একটি প্রতারণা মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী যুবক। ভুক্তভোগী যুবক নবী নেওয়াজ (৩৯) উপজেলার পায়ব গ্রামের আব্দুল কাদেরের ছেলে।

জানা গেছে, ২০১৮ সালে অনলাইন ভিক্তিক সোশ্যাল মিডিয়া ফেইসবুকের মাধ্যমে টাঙ্গাইল জেলার গোপালপুর উপজেলার চন্দ্রবাড়ি গ্রামের শাহজাহান আলীর মেয়ে কামরুন্নাহারের সাথে পরিচয় হয়। যা পরবর্তীতে তাদের মধ্যে গভীর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।

যার দরুণ ২০২০ সালের ১৩ আগস্ট (বৃহস্পতিবার) বাড়ির কাউকে না জানিয়ে ঢাকা জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে কোর্ট ম্যারিজের মাধ্যমে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। বিয়ের পর থেকে তারা কুমিল্লা শহরের উত্তর রেইসকোর্স এলাকার স্বপ্ন ভিলা নামের ভাড়া বাসায় বসবাস শুরু করলেও ২০২১ সালে কামরুন্নাহারের ঢাকা বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজের স্টাফ নার্স হিসেবে নিয়োগ পেলে সে মেডিকেল কলেজের হোস্টেলে থাকতে শুধু করে।

এরপর থেকেই তাদের মাঝে দূরত্বের সৃষ্টি হতে থাকে। এভাবে চলতে থাকলে এক পর্যায়ে নবী নেওয়াজ জানতে পারেন কামরুন্নাহার ডালিম নামের এক ছেলের সাথে বিবাহ বহির্ভূত পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে গেছেন।

চলতি বছরের ০১ জানুয়ারি (শনিবার) কামরুন্নাহারের বাবা শাহজাহান আলী ও মা শাহিদা বেগম মেয়ের ভাড়া বাসায় বেড়াতে গিয়ে গোপালপুরে জমি ক্রয়ের কথা বলে নবী নেওয়াজের থেকে ধার হিসেবে ১০ লক্ষ ৬৫ হাজার টাকা নেয়। এদিকে টাকা নেয়ার পর থেকেই স্বামী স্ত্রী দুজনের মাঝে কলহের সৃষ্টি হয়। অপরদিকে তার পাওনা টাকা ফেরত চাইলে তাকে নানান অজুহাতে মিথ্যে আশ্বাস দিতে থাকে।

গত ১৩ এপ্রিল (বুধবার) কামরুন্নাহার কুমিল্লার ভাড়া বাসায় ফিরে এসে ৩দিন অবস্থান করে। ১৬ এপ্রিল (শনিবার) নবী নেওয়াজের অনুপস্থিতিতে গোপনে আলমারি থেকে ৭ লাখ টাকাসহ প্রয়োজনীয় কিছু কাগজ নিয়ে পালিয়ে যান। বিষয়টি জানতে পেরে নবী নেওয়াজ টাকা ফেরত চাইলে কামরুন্নাহার টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানান।

পরবর্তীতে গত ২৫ মে (বুধবার) নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে নবী নেওয়াজকে তালাক নামা প্রেরণ করেন কামরুন্নাহার। বিষয়টি নিয়ে সে সামাজিকভাবে সমাধানের চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে গত ১৯ জুন (রবিবার) কুমিল্লা আদালতে মামলা দায়ের করেন। বিজ্ঞ আদালত এই মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য ডিবি পুলিশকে নির্দেশ দেন।

এদিকে মামলা তুলে নিতে কামরুন্নাহার ও তার পরিবারের লোকজন মুঠোফোনে প্রাণনাশের হুমকি দিতে থাকে। হুমকির অভিযোগে গত ২৬ জুন (রবিবার) কুমিল্লা কোতয়ালী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।

ভুক্তভোগী স্বামী নবী নেওয়াজের দায়ের করা মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে স্ত্রী কামরুন্নাহারের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে ধরে বলেন, আমি কামরুন্নাহারকে অনলাইনে পছন্দ করে বিয়ে করি ও তার চাকুরির ব্যবস্থা করি।

বিয়ের পর থেকেই তার বাড়ির খারাপ আর্থিক অবস্থার কথা বলে নানা অজুহাতে টাকা নিত। সবশেষ তারা বাবা মা আমার থেকে ধার নেয় ও সে আমার আলমারি থেকে টাকা চুরি করে। সব চাইতে গেলে আমায় হুমকি ও তালাক দিয়ে দেয়। আমি একাধিকবার সংসার বাঁচাতে সামাজিক সমাধানের চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে আদালতে মামলা দায়ের করেছি এবং এমন প্রতারকদের সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে বিচার প্রার্থনা করছি।

কুমিল্লার ভাড়া বাসার কেয়ার টেকার সাজ্জাদ জানান, এই বছরের রোজার মাসের মাঝে তাকে তাড়াহুড়ো করে বাসা থেকে বের হতে দেখেছি। এরপর থেকে আর দেখিনি কখনো।

দায়ের করা মামলার কথা অস্বীকার করে কামরুন্নাহারের মা শাহিদা বেগম বলেন, আমরা বিয়ের বেশ পরে এসব ঘটনা শুনেছি। সে বিয়ে করেছে নিজের পছন্দে এবং পরে নিজের পছন্দেই তাকে তালাক দিয়েছে। কিন্তু আমার মেয়ে এমন করে কারো টাকা নিতে পারে না। এসব মিথ্যে কথা।

কামরুন্নাহারের মামা আব্দুল হাই বলেন, চাকুরির জন্য কোন টাকা লাগেনি। আমাদের ভাগ্নি নিজের যোগ্যতায় চাকুরী পেয়েছে। বিয়ে শাদী তালাক হলেও টাকার বিষয় মিথ্যে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কামরুন্নাহারের এক প্রতিবেশী বলেন, ঈদে কামরুন্নাহারকে বেশ দামী মার্কেট করে বাড়ি আসতে দেখেছি। ছোট চাকুরি করে এমন মার্কেট একটু অন্যরকম লাগে।

কামরুন্নাহার সকল কিছু অস্বীকার করে বলেন, এগুলো মিথ্যে বানোয়াট ও মনগড়া কথা দিয়ে মামলা সাজিয়েছে। ডিভোর্সের পর থেকে তার সাথে আমার যোগাযোগ নেই।

বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য কাছে জানতে চাইলে বলেন, আমার কাছে এখন পর্যন্ত দুই পরিবারের বা কেউ নিজে কিছু বলেনি। তবে এমন প্রতারণার অভিযোগের সত্যটা পেলে অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 


 আরও পড়ুনঃ

 আরও পড়ুনঃ


টাঙ্গাইলে প্রেমের ফাঁদে বিয়ে, ১৭ লক্ষাধিক টাকা নিয়ে ডিভোর্স

প্রকাশিত সময় ০৭:৫৮:১৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ জুলাই ২০২২
ভুক্তভোগী যুবক নবী নেওয়াজ (৩৯) ও প্রতারক নারী কামরুন্নাহার

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০৭:৫৮ অপরাহ্ন, ২৯ জুলাই ২০২২


কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার এক যুবকের সাথে এমন অভিনব কায়দায় প্রতারণার ঘটনা ঘটেছে। এই বিষয়ে কুমিল্লায় একটি প্রতারণা মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী যুবক। ভুক্তভোগী যুবক নবী নেওয়াজ (৩৯) উপজেলার পায়ব গ্রামের আব্দুল কাদেরের ছেলে।

জানা গেছে, ২০১৮ সালে অনলাইন ভিক্তিক সোশ্যাল মিডিয়া ফেইসবুকের মাধ্যমে টাঙ্গাইল জেলার গোপালপুর উপজেলার চন্দ্রবাড়ি গ্রামের শাহজাহান আলীর মেয়ে কামরুন্নাহারের সাথে পরিচয় হয়। যা পরবর্তীতে তাদের মধ্যে গভীর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।

যার দরুণ ২০২০ সালের ১৩ আগস্ট (বৃহস্পতিবার) বাড়ির কাউকে না জানিয়ে ঢাকা জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে কোর্ট ম্যারিজের মাধ্যমে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। বিয়ের পর থেকে তারা কুমিল্লা শহরের উত্তর রেইসকোর্স এলাকার স্বপ্ন ভিলা নামের ভাড়া বাসায় বসবাস শুরু করলেও ২০২১ সালে কামরুন্নাহারের ঢাকা বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজের স্টাফ নার্স হিসেবে নিয়োগ পেলে সে মেডিকেল কলেজের হোস্টেলে থাকতে শুধু করে।

এরপর থেকেই তাদের মাঝে দূরত্বের সৃষ্টি হতে থাকে। এভাবে চলতে থাকলে এক পর্যায়ে নবী নেওয়াজ জানতে পারেন কামরুন্নাহার ডালিম নামের এক ছেলের সাথে বিবাহ বহির্ভূত পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে গেছেন।

চলতি বছরের ০১ জানুয়ারি (শনিবার) কামরুন্নাহারের বাবা শাহজাহান আলী ও মা শাহিদা বেগম মেয়ের ভাড়া বাসায় বেড়াতে গিয়ে গোপালপুরে জমি ক্রয়ের কথা বলে নবী নেওয়াজের থেকে ধার হিসেবে ১০ লক্ষ ৬৫ হাজার টাকা নেয়। এদিকে টাকা নেয়ার পর থেকেই স্বামী স্ত্রী দুজনের মাঝে কলহের সৃষ্টি হয়। অপরদিকে তার পাওনা টাকা ফেরত চাইলে তাকে নানান অজুহাতে মিথ্যে আশ্বাস দিতে থাকে।

গত ১৩ এপ্রিল (বুধবার) কামরুন্নাহার কুমিল্লার ভাড়া বাসায় ফিরে এসে ৩দিন অবস্থান করে। ১৬ এপ্রিল (শনিবার) নবী নেওয়াজের অনুপস্থিতিতে গোপনে আলমারি থেকে ৭ লাখ টাকাসহ প্রয়োজনীয় কিছু কাগজ নিয়ে পালিয়ে যান। বিষয়টি জানতে পেরে নবী নেওয়াজ টাকা ফেরত চাইলে কামরুন্নাহার টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানান।

পরবর্তীতে গত ২৫ মে (বুধবার) নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে নবী নেওয়াজকে তালাক নামা প্রেরণ করেন কামরুন্নাহার। বিষয়টি নিয়ে সে সামাজিকভাবে সমাধানের চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে গত ১৯ জুন (রবিবার) কুমিল্লা আদালতে মামলা দায়ের করেন। বিজ্ঞ আদালত এই মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য ডিবি পুলিশকে নির্দেশ দেন।

এদিকে মামলা তুলে নিতে কামরুন্নাহার ও তার পরিবারের লোকজন মুঠোফোনে প্রাণনাশের হুমকি দিতে থাকে। হুমকির অভিযোগে গত ২৬ জুন (রবিবার) কুমিল্লা কোতয়ালী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।

ভুক্তভোগী স্বামী নবী নেওয়াজের দায়ের করা মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে স্ত্রী কামরুন্নাহারের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে ধরে বলেন, আমি কামরুন্নাহারকে অনলাইনে পছন্দ করে বিয়ে করি ও তার চাকুরির ব্যবস্থা করি।

বিয়ের পর থেকেই তার বাড়ির খারাপ আর্থিক অবস্থার কথা বলে নানা অজুহাতে টাকা নিত। সবশেষ তারা বাবা মা আমার থেকে ধার নেয় ও সে আমার আলমারি থেকে টাকা চুরি করে। সব চাইতে গেলে আমায় হুমকি ও তালাক দিয়ে দেয়। আমি একাধিকবার সংসার বাঁচাতে সামাজিক সমাধানের চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে আদালতে মামলা দায়ের করেছি এবং এমন প্রতারকদের সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে বিচার প্রার্থনা করছি।

কুমিল্লার ভাড়া বাসার কেয়ার টেকার সাজ্জাদ জানান, এই বছরের রোজার মাসের মাঝে তাকে তাড়াহুড়ো করে বাসা থেকে বের হতে দেখেছি। এরপর থেকে আর দেখিনি কখনো।

দায়ের করা মামলার কথা অস্বীকার করে কামরুন্নাহারের মা শাহিদা বেগম বলেন, আমরা বিয়ের বেশ পরে এসব ঘটনা শুনেছি। সে বিয়ে করেছে নিজের পছন্দে এবং পরে নিজের পছন্দেই তাকে তালাক দিয়েছে। কিন্তু আমার মেয়ে এমন করে কারো টাকা নিতে পারে না। এসব মিথ্যে কথা।

কামরুন্নাহারের মামা আব্দুল হাই বলেন, চাকুরির জন্য কোন টাকা লাগেনি। আমাদের ভাগ্নি নিজের যোগ্যতায় চাকুরী পেয়েছে। বিয়ে শাদী তালাক হলেও টাকার বিষয় মিথ্যে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কামরুন্নাহারের এক প্রতিবেশী বলেন, ঈদে কামরুন্নাহারকে বেশ দামী মার্কেট করে বাড়ি আসতে দেখেছি। ছোট চাকুরি করে এমন মার্কেট একটু অন্যরকম লাগে।

কামরুন্নাহার সকল কিছু অস্বীকার করে বলেন, এগুলো মিথ্যে বানোয়াট ও মনগড়া কথা দিয়ে মামলা সাজিয়েছে। ডিভোর্সের পর থেকে তার সাথে আমার যোগাযোগ নেই।

বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য কাছে জানতে চাইলে বলেন, আমার কাছে এখন পর্যন্ত দুই পরিবারের বা কেউ নিজে কিছু বলেনি। তবে এমন প্রতারণার অভিযোগের সত্যটা পেলে অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 


 আরও পড়ুনঃ

 আরও পড়ুনঃ