শতবর্ষ উদযাপন ফেনী সরকারি কলেজের
- প্রকাশিত সময় ০৭:৫৬:৪৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ অগাস্ট ২০২২
- / 166
ফেনী সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০৭:৫৬ অপরাহ্ন, ৮ আগষ্ট ২০২২
দক্ষিণ পূর্ব বাংলার অন্যতম প্রাচীন বিদ্যাপিঠ শতবর্ষ পূরণ করলো ফেনী সরকারি কলেজ। এ উপলক্ষে কলেজের উদ্যোগে সকালে আনন্দ শোভাযাত্রা ও র্যালী বের করা হয়। র্যালীতে অংশ নেন,শিক্ষক, বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (৮ আগষ্ঠ) এ উপলক্ষে কলেজের উদ্যােগে সকালে আনন্দ শোভাযাত্রা ও র্যালী বের করা হয়।এছাড়া ও নানান কর্মসূচীর মাধ্যমে শুরু হয় শতবর্ষ উদযাপন কর্মসূচী।
১৯২২ সালের ৮ আগষ্ট ফেনী কলেজের একাডেমিক কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়। ভৌগলিক ও অবস্থানগত কারণে ফেনী সরকারী কলেজের গুরুত্ব বাংলাদেশের দক্ষিণ পুর্বাঞ্চলের জনগণের নিকট অপরিসীম। দক্ষিণ পূর্ব বাংলায় ৪ টি কলেজের মধ্যে ছিল এটি একটি। অপর তিনটি হল চট্টগ্রাম কলেজ, ভিক্টোরিয়া কলেজ ও এম.সি কলেজ।
কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ১৯২২ সালের ৮ আগষ্ট এই কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হলেও কলেজ প্রতিষ্ঠার কার্যক্রম শুরু হয় ১৯১৯ সালের ১লা সেপ্টেম্বর।
বাবু রমনী মোহন গোস্বামী এর নিকট থেকে ১৯১৯ সালের ১লা সেপ্টেম্বরে রেজুলেশনের মাধ্যমে অনুমোদন প্রাপ্ত হয়ে ফেনী ও বিরিঞ্চি মৌজায় কলেজ বোর্ড অব ট্রাষ্টিগণের পক্ষে খাঁন বাহাদুর মৌলবী বজলুল হক ও শ্রীযুক্ত বাবু গুরু দাস কর ১০০ টাকা ৪ কিস্তিতে পরিষদের শর্তে ৫ বিঘা ১৮ কাঠা ভূমি গ্রহণ করেন। খান বাহাদুর মৌলবী বজলুল হক তখন ফেনী সদর ইউনিয়ন পরিষদের ও ফেনী লোকাল বোর্ডের চেয়ারম্যান ছিলেন।
সূত্রে আরো জানা যায়, ১৯২২ সালের ০৮ আগষ্ট একাডেমিক কর্মকাণ্ড শুরুর মাধ্যমে যা পূর্ণতা পায়। ফেনী সরকারী কলেজ প্রতিষ্ঠায় তৎকালীন নোয়াখালী জেলার ফেনী মহাকুমার কতিপয় শিক্ষিত ও বিদ্যোৎসাহী ব্যক্তির অক্লান্ত প্রয়াসে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। এই উদ্যোক্তাদের প্রধান হলেন এ্যাডভোকেট মহেন্দ্র কুমার ঘোষ। তদানীন্তন নোয়াখালী জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট রমনী মোহন গোস্বামী, তদানীন্তন।
উক্ত কলেজের প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে অধ্যক্ষ ছিলেন, বীরেন্দ লাল ভট্টাচার্য। পরবর্তীতে ১৯৬০-৬১ সালের দিকে কলেজের ডিগ্রী শাখা স্থানান্তরের জন্য ৯০নং ফলেশ্বর মৌজায় প্রায় ৭ একর ভূমি অধিগ্রহণ করা হয়।
কলেজ প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে আরো যারা
উদ্যোক্তা হিসাবে ভূমিকা রাখেন তাঁদের মধ্যে অন্যতম হলেন রায় বাহাদুর ব্যারিষ্টার যশোদা কুমার ঘোষ, এ্যাডভোকেট বারোদা প্রসন্ন দাস, এ্যাডভোকেট গুরুদাস কর, এ্যাডভোকেট চন্দ্রকান্ত দত্ত, আবদুল গোফরান, এ্যাডভোকেট মোহাম্মদ ছাদেক, এ্যাডভোকেট আবদুল খালেক, এ্যাডভোকেট ফনীন্দ্র মুখার্জী, মোক্তার হাসান আলী প্রমুখ। ফেনী অঞ্চলের জনগণের টাকায় ফেনী কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। সেইসময় প্রথম ধাপে স্থানীয়ভাবে ২০ হাজার টাকা চাঁদা উঠেছিল। পরে নোয়াখালী জেলা বোর্ড দেয় ৫০ হাজার টাকা, কলিকাতা নিবাসী ফেনীর আমিরগাঁও’র জমিদার চন্দ্রীচরণ লাহা দেন ৪ হাজার টাকা, নোয়াখালীর জমিদার কুমার অরুণ চন্দ্র সিংহ বাহাদুর দেন ২ হাজার টাকা, সত্যেন্দ্র চন্দ্র ঘোষ ১ হাজার টাকা, লক্ষীপুরের সাহেস্তা নগরের জমিদার প্যারীলাল রায় চৌধুরী দেন পাঁচশত টাকা, ফেনী বাঁশপাড়ার জমিদার পরিবারের চন্দ্র কুমার চৌধুরী দেন ১ হাজার টাকা। কলেজের জন্য অধিগ্রহণকৃত জায়গার কিছু অংশ পুণ অধিগ্রহনের মাধ্যমে ফেনী সদর হাসপাতাল, জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসসহ কিছু নতুন স্থাপনা নির্মাণ করা হয় এবং অনেকাংশই সঠিক রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে বর্তমানে বেদখল হয়ে গেছে। এছাড়াও বর্তমান ক্যাম্পাসটি সম্প্রসারণ করার জন্য জমিদার কালীচরণ নাথ, চণ্ডীচরণ লাহা এবং এনায়েত হাজারী প্রমূখ বেশ কিছু ভূমি দান করেন।
১৯৪৫ সালে কলেজে দুইটি বিষয়ে অনার্স ছিল এবং দুর্লভ বই সমৃদ্ধ একটি গ্রন্থাগার ছিল। কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে অনার্স বিষয় দুটি ব্রাহ্মণবাড়ীয়া সরকারি কলেজে স্থানান্তরিত হয়। বিশ্বযুদ্ধের শেষে বিভিন্ন কারণে সে অনার্স বিষয় দুইটি আর ফেরত আনা যায়নি। ১৯৬৩ সালে কলেজে বাণিজ্য বিভাগের যাত্রা শুরু হয়। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় বর্বর পাক হানাদার বাহিনী কলেজে তাদের ঘাঁটি স্থাপন করে লাইব্রেরির বই রান্নার কাজে ব্যবহার করে অনেক দুর্লভ বই নষ্ট করে দেয়।
পাকবাহিনী মুক্তিকামী বাংগালীদের ধরে এনে কলেজ ক্যাম্পাসে নির্মমভাবে হত্যা করত। যার স্বাক্ষ্যবহন করছে কলেজে সংরক্ষিত অডিটোরিয়ামের পূর্ব পাশের বধ্যভূমি।১৯৭৯ সালের ৭ মে কলেজটি জাতীয়করণ অর্থাৎ সরকারী কলেজ হিসাবে অধিভুক্ত করা হয়। তখন কলেজের অধ্যক্ষ হিসাবে কর্মরত ছিলেন মজিবুর রহমান।
১৯৯৭-৯৮ শিক্ষাবর্ষে কলেজে বাংলা, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, ব্যবস্থাপনা ও হিসাববিজ্ঞান বিষয়ে অনার্স চালু হয়। পরবর্তীতে তারই ধারাবাহিকতায় ক্রমান্বয়ে আরো ১১টি বিষয়ে অনার্স চালু করা হয়।
২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষে বাংলা, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, ব্যবস্থাপনা ও হিসাববিজ্ঞান বিষয়ে মাষ্টার্স শেষ পর্ব চালু করা হয়। বর্তমানে প্রাচীণতম বিদ্যাপিঠে ১৫ বিষয়ে অনার্স ও মাষ্টার্স শেষ পর্ব এবং ১০ বিষয়ে মাষ্টার্স ১ম পর্ব চালু আছে।
কলেজে ক্রীড়া শিক্ষক ও প্রদর্শকসহ বিভিন্ন বিষয়ে ৭৫ জন শিক্ষক এবং সরকারী ও বেসরকারী মিলে ১৩ জন তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী ও ৪৯ জন ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারী কর্মরত রয়েছে। বর্তমানে এই কলেজে প্রায় ২২ হাজার শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত আছে।
এদিকে ফেনী কলেজের শতবর্ষপূর্তি উদযাপন উপলক্ষে গত ৩ আগস্ট এক সভায় শতবর্ষপূর্তি উদযাপন পরিষদ গঠন করা হয়েছে। সভায় মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আবদুল মোতালেবকে আহ্বায়ক ও ফেনী সরকারি কলেজের প্রাক্তন ছাত্র এবং ব্যবস্থাপনা বিভাগের বর্তমান সহকারী অধ্যাপক হাবিবুর রহমানকে সদস্য সচিব করে একটি কমিটি গঠন করা হয়।
রক্সি পেইন্ট-এর এরিয়া ম্যানেজার লোকমান হোসেন হত্যায় জড়িত দুই আসামী গ্রেফতার, লোমহর্ষক বর্ণনা পাবনায় বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের জন্মবার্ষিকীতে শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদের শ্রদ্ধাঞ্জলি ঢাকা ‘ভোরের আলো সংঘে’র প্রিমিয়ার লীগ-২০২২ এর ট্রফি উন্মোচন ও ৬টি দল ঘোষণা অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্যে এশিয়া একসাথে কাজ করতে পারে : প্রধানমন্ত্রী ভেড়ামারায় মাধ্যমিক অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকদের সংবর্ধনা প্রদান বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে ফারইস্ট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি উপাচার্যের শ্রদ্ধা নিবেদন পাবনার সেই আলোচিত শিক্ষক এবার স্ত্রীর দায়েরকৃত নারী নির্যাতন মামলায় কারাগারে বড় দিকশাইলে বাড়িঘর ভাংচুর, গৃহবধুর শ্লীলতাহানীর অভিযোগ পুলিশ কর্মকর্তা পরিচয়দানকারী প্রতারক গ্রেফতার করেছে পাবনা র্যাব ১২ চার শ পিচ ইয়াবাসহ র্যাবের হাতে ধৃত ঈশ্বরদীর মাদক ব্যবসায়ী রায়হান উদ্দিন বিশ্বাস জনি