শ্রদ্ধা ভালবাসা ও চোখের জলে স্কয়ার মাতা অনিতা চৌধুরীকে শেষ বিদায়
- প্রকাশিত সময় ০৫:১৫:২৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ নভেম্বর ২০২২
- / 126
অনিতা চৌধুরীর অন্তেষ্টিক্রিয়া অনুষ্ঠানে মরহুমার পরিবারের সবাই হেমায়েতপুর ইউনিয়নের বৈকন্ঠপুরের এস্ট্রাস খামারবাড়িতে স্বামী স্যামসন এইচ চৌধুরীর সমাধির পাশের সমাধিতে পুস্পস্তবক অর্পনের মাধ্যমে শেষ শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন।
শ্রদ্ধা ভালবাসা ও চোখের জলে চির বিদায় নিলেন স্কয়ার মাতা অনিতা চৌধুরী। গতকাল সোমবার দুপুরে পাবনা সদর উপজেলার হেমায়েতপুর ইউনিয়নের বৈকন্ঠপুরের এস্ট্রাস খামারবাড়িতে স্বামী স্যামসন এইচ চৌধুরীর সমাধির পাশে তাকে সমাহিত করা হয়। তাঁর মৃত্যুতে স্কয়ার পরিবারসহ পাবনার সর্বস্তরের মানুষ ও স্বজনদের মাঝে নেমে আসে শোকের ছায়া।
এ সময় তার বড় ছেলে স্কয়ার গ্রুপের চেয়ারম্যান স্যামুয়েল এস চৌধুরী, মেয়ে স্কয়ার গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান রত্না পাত্র, মেজো ছেলে স্কয়ার ফার্র্মার ব্যবস্থাপনা পরিচালক তপন চৌধুরী, ছোট ছেলে অঞ্জন চৌধুরী পিন্টু, নুরুজ্জামান বিশ্বাস এমপি, এফবিসিসিআইর সাবেক সভাপতি একে আজাদ, বিসিআইএর সাবেক সভাপতি আলহাজ মাহবুবুর রহমান, ঢাকা চেম্বারের সভাপতি, পাবনার জেলা প্রশাসক বিশ্বাস রাসেল হোসেন, পুলিশ সুপার মো. আকবর আলী মুন্সি, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদেও সাবেক কমান্ডার হাবিবুর রহমান হাবিব, পাবনা প্রেসক্লাব সভাপতি এবিএম ফজলুর রহমান, মাছরাঙা টেলিভিশনের উল্টরাঞ্চলীয় বুরো প্রধান উৎপল মিজার্, প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সৈকত আফরোজ আসাদ, জেলা যুবলীগ যুগ্ম আহবায়ক শিবলী সাদিকসহ পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে সকালে ঢাকা থেকে পাবনার আতাইকুলা চার্চে অনিতা চৌধুরীর মরদেহ নিয়ে আশা হয়। সেখানে বিশেষ প্রার্থণা অনুষ্ঠিত হয়। সকালে তার মরদেহ নিজ আতাইকুলায় এসে পৌছালে সেখানে শোকের ছায়া নেমে আসে স্বজনদের মাঝে। পরে আতাইকুলা চার্চে অনুষ্ঠিত হয় মহয়সী এই নারীর অন্তষ্টিক্রিয়া। সেখনে বিশেষ প্রার্থন পরিচালনা করেন চার্চের ফাদার রুবেন সলিল বিশ্বাস। পরিবারের পক্ষ থেকে সেখানে বক্তব্য দেন তাঁর মেজ সন্তান স্কয়ার গ্রুপের পরিচালক তপন চৌধুরী। স্কয়ার গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান স্যামসন এইচ চৌধুরীর সহধর্মিনী স্কয়ারের প্রায় ৬৪ হাজার কর্মিকে নিজ সন্তানের মত আদর ভালবাসা দেওয়া তিনি ‘স্কয়ার মাতা’ হিসেবে পরিচিতি পান।
স্কয়ার পরিবারের সুত্র জানায়, স্যামসন এইচ চৌধুরীর ব্যবসায়িক সফলতার পেছনের কারিগর ছিলেন অনিতা চৌধুরী। ১৯৩২ সালের ৫ আগষ্ট জন্ম গ্রহণ করেন তিনি। ১৯৪৭ সালের ৬ আগষ্ট স্যামসন এইচ চৌধুরীর সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।
সন্তানদের লালন পালন করে স্বামীর সকল সুখে দুখে পাশে থেকে পরামর্শ দিতেন অনিতা চৌধুরী। তিনি পাবনার ধর্মবর্ণ সব মানুষের প্রিয়প্রাত্র ছিলেন। তিনি পরোপকারী ও দানশীল ছিলেন।
রোববার দুপুর ১ টা ৬ মিনিটে দেশের অন্যতম প্রধান শিল্পউদ্যোক্তা স্কয়ারের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান প্রয়াত স্যামসন এইচ চৌধুরীর সহধর্মিনী ‘স্কয়ার মাতা’ মিসেস অনিতা চৌধুরী ৯০ বছর বয়সে ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে পরলোকগমন করেন।
সুত্র জানায়, স্কয়ার মাতা অনিতা চৌধুরীর সরাসরি তত্ত্ববধানে পরিচালিত অনিতা-স্যামসন ফাউন্ডেশন কতৃর্ক বিনামুল্যে পরিচালিত ‘দিশারী কম্পিউটার টেনিং সেন্টার’ এর মাধ্যমে। স্কয়ার গ্রুপের ৬৪ হাজার কর্মকতার্ কর্মচারীকে তিনি মাতৃস্নেহে ভালবাসতেন। ‘স্কয়ার মাতা’ অনিতা চৌধুরীর মৃত্যুতে এই সব যুবক যুবতি ডুকরে ডুকরে কাদছে। পাবনা শহরের অন্নদা গোবিন্দ পাবলিক লাইব্রেরীর নিচতলায় প্রতি জনের জন্য একটি কম্পিউটার ও টেবিল। বছরে দুই সেশনে সম্পুর্ন বিনামুল্যে ১৮ জন মেয়ে এবং ১৩ জন ছেলেসহ ৩১ জনকে হাতে কলমে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। দিশারী কম্পিউটার ট্রেনিং সেন্টার নাম হলেও মুলত এটি সরাসরি তত্ত্বাবধান করতেন স্কয়ার মাতা অনিতা চৌধুরী ও স্যামসন এইচ চৌধুরী। স্যামসন এইচ চৌধুরীর মৃত্যুর পর অনিতা চৌধুরী এই প্রতিষ্ঠানের সবার খোজ রাখতেন। প্রশিক্ষণ শেষ হলে পরে তাদের চাকুরিরও ব্যবস্থা করতেন।
স্কয়ার ট্রয়লেট্রিজে কর্মরত আশা খাতুন বাতার্ সংস্থা পিপ‘কে বলেন, স্কয়ার মাতা আমাকে কম্পিউটার প্রশিক্ষণের পর নিজে স্কয়ার ট্রয়লেট্রিজে চাকুরির ব্যবস্থা করেন।
স্কয়ার ফুড এন্ড বেভারেজের কর্মচারী আবুল হাশেম বাতার্ সংস্থা পিপ‘কে বলেন, অনেক আগে থেকেই স্কয়ারে কর্মকতার্ কর্মচারীদের দুপুরেরর খাবার দেওয়া হতো।
কিন্তু ২০১৪ সালের দিকে স্কয়ার মাতার উদ্যোগে প্রায় এক হাজার কর্মচারী যাকে এক সঙ্গে টেবিলে বসে খেতে পারে সে ব্যবস্থা করেন তিনি। তিনি আমাদের সঙ্গে ঐ দিন দুপুরের খাবার এক সঙ্গে খান।
দিশারী কম্পিউটার টেনিং সেন্টারের প্রশিক্ষন ইনচার্জ টুটন কুমার সরকার বাতার্ সংস্থা পিপ‘কে বলেন, এই প্রতিষ্ঠান থেকে এ পর্যন্ত ২৩ টি ব্যাচে ৭১৩ জন গরীব ছেলে মেয়েকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। তারা সবাই এখন স্কিল। কোথাও না কোথাও কেউ চাকুরি করছে। কেউ বেকার নেই।
স্কয়ার পরিবারের সুত্র জানায়, স্যামসন এইচ চৌধুরীর ব্যবসায়িক সফলতার পেছনের কারিগর ছিলেন অনিতা চৌধুরী। ১৯৩২ সালের ৫ আগষ্ট জন্ম গ্রহণ করেন তিনি।
১৯৪৭ সালের ৬ আগষ্ট স্যামসন এইচ চৌধুরীর সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।
সন্তানদের লালন পালন করে স্বামীর সকল সুখে দুখে পাশে থেকে পরামর্শ দিতেন অনিতা চৌধুরী। তিনি পাবনার ধর্মবর্ণ সব মানুষের প্রিয়প্রাত্র ছিলেন। তিনি পরোপকারী ও দানশীল ছিলেন। – বার্তা সংস্থা পিপ (পাবনা)