ভাঙ্গুড়ায় কৃষককে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে জোরপূর্বক সাদা কাগজে নিলেন স্বাক্ষর
- প্রকাশিত সময় ১২:০৯:১৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৩ নভেম্বর ২০২২
- / 83
পাবনার ভাঙ্গুড়ায় দুই কৃষককে নিজ বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে জোরপূর্বক সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য হাবিবুর রহমানসহ আরও ৭ জনের বিরুদ্ধে।
আফাজ হোসেন ও আব্দুর রহিম নামের সহোদর দুই বৃদ্ধ কৃষককে সোমবার(২১ নভেম্বর) সকাল ৮টার দিকে উপজেলার ভাঙ্গুড়া ইউনিয়নের চরভাঙ্গুড়া সরকার পাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। তারা একই গ্রামের মৃত জাবেদ আলীর পুত্র।
এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দিলে দুই কৃষককে প্রাণে মেরে ফেলার ও হুমকি দেওয়া হয়েছে মর্মে ওই দুই কৃষক দাবী করেছেন। এঘটনায় ওই এলাকায় সাধারণ মানুষে মধ্যে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
ভুক্তভোগী দুই আফাজ হোসেন ও আব্দুর রহিম সাংবাদিকদের জানান, তারা ভুমিহীন হওয়ার সুবাধে দিলপাশার ইউনিয়নের পাটুল মৌজার সরকারের খাস খতিয়ান (ক— তপশীল ভুক্ত) দাগ নং ১৭০৭ এর ৫২শতক জমি ২০০১ সালে বিধি মোতাবেক ৯৯ বছরের জন্য সরকারের নিকট থেকে লিজ গ্রহণ করেন। ওই লিজকৃত কাগজের বলে পরবর্তীতে আফাজ হোসেন ও আব্দুর রহিম দুই ভাইয়ের নামে ২৬ শতক করে জমির পরিমান উল্লেখ করে স্থানীয় ভুমি অফিসের মাধ্যমে খারিজ—খাজনা সম্পন্ন হয়। এভাবেই তারা দুই ভাই মিলে ওই জমি প্রায় ৩০ বছর যাবৎ ভোগ দখল করে আসছেন। কিন্তু গত ২০/২৫ দিন ধরে ওই সরকারি সম্পত্তি সাবেক ভুমি অফিসের কর্মচারি ও চরভাঙ্গুড়ার বাসিন্দা আব্দুর রাজ্জাক তলাপাত্রও তার নিজের দাবী করেন। এরই ধারাবাহিকতায় বুধবার সকাল ৮টার দিকে অভিযুক্ত অবসর প্রাপ্ত পুলিশ সদস্য হাবিবুর রহমান,আনোয়ার হোসেন, তরিকুল ইসলাম, নায়েব আলী,সাগর হোসেন, মিলন ও মোস্তফা মিলে কৃষক আব্দুর রহিম ও আফাজ হোসেনকে জোরপূর্বক নিজ বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে মোস্তফার বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে তাদেরকে আটকে রেখে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে ছেড়ে দেন। এসময় অভিযুক্তরা কৃষক আব্দুর রহিম ও আফাজ হোসেনকে এঘটনায় থানায় অভিযোগ দিলে প্রাণ নাশেরও হুমকি দেন। এঘটনার সময় তাদের পরিবারের সদস্যদের আর্তনাদে আশ পাশের বহুলোক বিষয়টি দেখলেও রক্ষা করতে তাদের পাশে কেউ এগিয়ে আসে নি। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, আব্দুর রাজ্জাক তলা পাত্র অবসরপ্রাপ্ত ভুমি অফিসের কর্মচারি ও স্থানীয় প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা অধ্যক্ষ সাইদুল ইসলামের চাচা আত্মীয় হওয়ার সুবাদে সরকারি সম্পত্তি অনিয়ম করে নিজের নামে রেকর্ড করে নেওয়ার অভিযোগ তার বিরুদ্ধে রয়েছে।
ঘটনার বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি অধ্যক্ষ সাইদুল ইসলাম বলেন, রেকর্ড মূলে তার চাচা আব্দুর রাজ্জাক তলা পাত্র ওই জমির মালিক। সেই সাথে খাজনা খারিজও আছে। কিন্তু তারা (আফাজ হোসেন ও আব্দুর রহিম) কিভাবে সরকারের নিকট থেকে লিজ গ্রহণ করেছেন তা বোধগম্য নয়। তবে বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়ভাবে বসে আপোস-মীংমাসার কথা রয়েছে বলেও জানান।