ঢাকা ০৪:৫৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞপ্তি :
সারাদেশের জেলা উপোজেলা পর্যায়ে দৈনিক স্বতঃকণ্ঠে সংবাদকর্মী নিয়োগ চলছে । আগ্রহী প্রার্থীগন জীবন বৃত্তান্ত ইমেইল করুন shatakantha.info@gmail.com // দৈনিক স্বতঃকণ্ঠ অনলাইন ও প্রিন্ট পত্রিকায় বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন ০১৭১১-৩৩৩৮১১, ০১৭৪৪-১২৪৮১৪

ভাঙ্গুড়ায় ইউএনও’র হস্তক্ষেপে বন্ধ হলো মাদ্রাসার গাছ কাটা

বার্তাকক্ষ
  • প্রকাশিত সময় ০৪:০৪:২১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯
  • / 87

চলনবিলাঞ্চল প্রতিনিধি:পাবনার ভাঙ্গুড়ায় মাদ্রাসার ব্যবস্থাপনা কমিটির বিরুদ্ধে নিয়ম বহির্ভূতভাবে মাদ্রাসার আঙিনা থেকে গাছ কাটার অভিযোগ উঠেছে।

ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলা সদরে অবস্থিত শরৎনগর সিনিয়ির ফাজিল মাদ্রাসায়। দীর্ঘদিন ধরে ওই মাদ্রাসার ব্যবস্থাপনা কমিটি এই অনিয়মের সাথে যুক্ত থাকলেও ইতোপূর্বে কোন প্রসাশনিক ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।

কিন্তু এবার এলাকাবাসীর অভিযোগ পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গাছ কাটা বন্ধ করে দিয়েছেন এবং অভিযোগ তদন্ত করে কমিটির বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার জানিয়েছেন উপজেলা প্রশাসন।

মঙ্গলবার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পনেরটি বড় ও মাঝারি আকৃতির মেহগনি গাছ দ্বারা বেষ্টিত মাদ্রাসা চত্বর। বর্তমান বাজার দরে এর আনুমানিক মূল্য পাঁচ লক্ষাধিক টাকা।

মাদ্রাসার ব্যবস্থাপনা কমিটি শ্রমিক লাগিয়েছেন এসব গাছ কেটে ফেলান জন্য। ইতোমধ্যে বড় আকারের মধ্যে দুইটি গাছ কেটে ফেলেছেন শ্রমিকরা।

একে একে বাকি গাছগুলো কেটে ফেলে হবে বলে জানায় কর্মরত শ্রমিকেরা। গাছ কাটতে দেখে এলাকাবাসী বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানান।

উপজেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম আহমেদ গাছ কাটার ভিডিও তার নিজ আইডি থেকে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে পোষ্ট করে লেখেন “প্রতিকার চাই।

ভাঙ্গুড়ার ঐতিহ্যবাহী শরৎনগর মাদ্রাসায় চেয়ার টেবিল তৈরির নামে প্রতি বছর এভাবেই গাছ নিধন করা হয়”।

ভিডিও ভাইরাল হলে উপজেলা প্রসাশন তাৎক্ষনিক উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাইফুল ইসলামকে প্রতিনিধি হিসেবে ঘটনাস্থলে যাবার নির্দেশ দেন।

শিক্ষা কর্মকর্তা মাদ্রাসায় গিয়ে অভিযোগের সত্যতা পেলে ইউএনওর পরামর্শে গাছ কর্তন বন্ধ করে দেন এবং আগামী তিন দিনের মধ্যে কারণ গাছ কাটার কারণ দর্শাতে মাদ্রাসার ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন।

কেটে ফেলা মেহগনী গাছ

এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলেন, গত কয়েক বছরে মাদ্রাসার ব্যবস্থাপনা কমিটি মাদ্রাসা চত্বর থেকে অন্তত ত্রিশটি মূল্যবান মেহগনি গাছ কেটে নিয়েছেন।

কথিত আছে গাছের কাঠ দিয়ে ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ও কমিটির সদস্যদের ব্যক্তিগত আসবাবপত্র তৈরি করা হয়েছে। মাদ্রাসার সভাপতি স্থানীয় আ.লীগ সাংসদের আত্মীয় হওয়ায় এ বিষয়ে এতদিন এলাকার সাধারণ মানুষ মুখ খুলতে সাহস পায়নি।

তবে উপজেলা প্রশাসনের কর্মতৎপরতায় খুশি এলাকার মানুষ।

উপজেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও মাদ্রাসার পাশের বাসিন্দা শামীম আহমেদ অভিযোগ করেন, মাদ্রাসা চত্বরে বড় হওয়া লাখ লাখ টাকা মূল্যের গাছ কেটে সাফ করে দিচ্ছে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ।

প্রশাসনের নাকের চোখের সামনে এমন ঘটনা ঘটলেও সংশ্লিষ্ট দপ্তর ব্যবস্থা নিচ্ছেন না।

মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ইসমাইল শরীফ গাছ কর্তনের অভিযোগের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, মাদ্রাসার ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে রেজুলেশন করে এই গাছ কাটা হচ্ছে।

গাছ কাটার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, মাদ্রাসায় চেয়ার-টেবিলসহ আসবাবপত্র সংকট রয়েছে সেগুলো তৈরীর জন্যই গাছগুলো কাটা হচ্ছিল।

এর আগে মাদ্রাসার গাছ কেটে ব্যক্তিগত আসবাবপত্র তৈরি করার অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি তা অস্বীকার করে বলেন, সেই গাছগুলো দিয়েও মাদ্রাসার আসবাবপত্র তৈরি করা হয়েছে।

মাদ্রাসার ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি আব্দুর রউফ বলেন, ‘আমাদের জানা ছিল না যে শুধু মাদ্রাসার ব্যবস্থাপনা কমিটির অনুমোদনে মাদ্রাসা চত্বরের গাছ কাটা যাবে না। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানানোর পরেই গাছ কাটা বন্ধ করা হয়েছে।। এছাড়া কেটে ফেলা গাছগুলোর ব্যাপারে ইউএনও’র পরামর্শে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ আশরাফুজ্জামান বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পরই গাছ কাটা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এই বিষয়টি অধিকতর তদন্ত করে পরবর্তীতে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ভাঙ্গুড়ায় ইউএনও’র হস্তক্ষেপে বন্ধ হলো মাদ্রাসার গাছ কাটা

প্রকাশিত সময় ০৪:০৪:২১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯

চলনবিলাঞ্চল প্রতিনিধি:পাবনার ভাঙ্গুড়ায় মাদ্রাসার ব্যবস্থাপনা কমিটির বিরুদ্ধে নিয়ম বহির্ভূতভাবে মাদ্রাসার আঙিনা থেকে গাছ কাটার অভিযোগ উঠেছে।

ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলা সদরে অবস্থিত শরৎনগর সিনিয়ির ফাজিল মাদ্রাসায়। দীর্ঘদিন ধরে ওই মাদ্রাসার ব্যবস্থাপনা কমিটি এই অনিয়মের সাথে যুক্ত থাকলেও ইতোপূর্বে কোন প্রসাশনিক ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।

কিন্তু এবার এলাকাবাসীর অভিযোগ পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গাছ কাটা বন্ধ করে দিয়েছেন এবং অভিযোগ তদন্ত করে কমিটির বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার জানিয়েছেন উপজেলা প্রশাসন।

মঙ্গলবার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পনেরটি বড় ও মাঝারি আকৃতির মেহগনি গাছ দ্বারা বেষ্টিত মাদ্রাসা চত্বর। বর্তমান বাজার দরে এর আনুমানিক মূল্য পাঁচ লক্ষাধিক টাকা।

মাদ্রাসার ব্যবস্থাপনা কমিটি শ্রমিক লাগিয়েছেন এসব গাছ কেটে ফেলান জন্য। ইতোমধ্যে বড় আকারের মধ্যে দুইটি গাছ কেটে ফেলেছেন শ্রমিকরা।

একে একে বাকি গাছগুলো কেটে ফেলে হবে বলে জানায় কর্মরত শ্রমিকেরা। গাছ কাটতে দেখে এলাকাবাসী বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানান।

উপজেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম আহমেদ গাছ কাটার ভিডিও তার নিজ আইডি থেকে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে পোষ্ট করে লেখেন “প্রতিকার চাই।

ভাঙ্গুড়ার ঐতিহ্যবাহী শরৎনগর মাদ্রাসায় চেয়ার টেবিল তৈরির নামে প্রতি বছর এভাবেই গাছ নিধন করা হয়”।

ভিডিও ভাইরাল হলে উপজেলা প্রসাশন তাৎক্ষনিক উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাইফুল ইসলামকে প্রতিনিধি হিসেবে ঘটনাস্থলে যাবার নির্দেশ দেন।

শিক্ষা কর্মকর্তা মাদ্রাসায় গিয়ে অভিযোগের সত্যতা পেলে ইউএনওর পরামর্শে গাছ কর্তন বন্ধ করে দেন এবং আগামী তিন দিনের মধ্যে কারণ গাছ কাটার কারণ দর্শাতে মাদ্রাসার ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন।

কেটে ফেলা মেহগনী গাছ

এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলেন, গত কয়েক বছরে মাদ্রাসার ব্যবস্থাপনা কমিটি মাদ্রাসা চত্বর থেকে অন্তত ত্রিশটি মূল্যবান মেহগনি গাছ কেটে নিয়েছেন।

কথিত আছে গাছের কাঠ দিয়ে ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ও কমিটির সদস্যদের ব্যক্তিগত আসবাবপত্র তৈরি করা হয়েছে। মাদ্রাসার সভাপতি স্থানীয় আ.লীগ সাংসদের আত্মীয় হওয়ায় এ বিষয়ে এতদিন এলাকার সাধারণ মানুষ মুখ খুলতে সাহস পায়নি।

তবে উপজেলা প্রশাসনের কর্মতৎপরতায় খুশি এলাকার মানুষ।

উপজেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও মাদ্রাসার পাশের বাসিন্দা শামীম আহমেদ অভিযোগ করেন, মাদ্রাসা চত্বরে বড় হওয়া লাখ লাখ টাকা মূল্যের গাছ কেটে সাফ করে দিচ্ছে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ।

প্রশাসনের নাকের চোখের সামনে এমন ঘটনা ঘটলেও সংশ্লিষ্ট দপ্তর ব্যবস্থা নিচ্ছেন না।

মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ইসমাইল শরীফ গাছ কর্তনের অভিযোগের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, মাদ্রাসার ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে রেজুলেশন করে এই গাছ কাটা হচ্ছে।

গাছ কাটার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, মাদ্রাসায় চেয়ার-টেবিলসহ আসবাবপত্র সংকট রয়েছে সেগুলো তৈরীর জন্যই গাছগুলো কাটা হচ্ছিল।

এর আগে মাদ্রাসার গাছ কেটে ব্যক্তিগত আসবাবপত্র তৈরি করার অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি তা অস্বীকার করে বলেন, সেই গাছগুলো দিয়েও মাদ্রাসার আসবাবপত্র তৈরি করা হয়েছে।

মাদ্রাসার ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি আব্দুর রউফ বলেন, ‘আমাদের জানা ছিল না যে শুধু মাদ্রাসার ব্যবস্থাপনা কমিটির অনুমোদনে মাদ্রাসা চত্বরের গাছ কাটা যাবে না। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানানোর পরেই গাছ কাটা বন্ধ করা হয়েছে।। এছাড়া কেটে ফেলা গাছগুলোর ব্যাপারে ইউএনও’র পরামর্শে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ আশরাফুজ্জামান বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পরই গাছ কাটা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এই বিষয়টি অধিকতর তদন্ত করে পরবর্তীতে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।