পূর্ববিরোধের জের- জালিয়াতি করে চেকবই উত্তোলন, অতঃপর
সাক্ষর জাল করে চেক ডিজঅনার করিয়ে মামলার প্রস্তুতির অভিযোগ
- প্রকাশিত সময় ০৮:৪৩:৩৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩০ নভেম্বর ২০২২
- / 150
পূর্ব শত্রুতার জের ধরে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেড শাহজাদপুর থেকে জালিয়াতি করে অন্যের চেক বহি উত্তোলন অতঃপর চেকের পাতায় অন্যের স্বাক্ষর জাল করে স্বাক্ষর দিয়ে সেই চেক ডিজঅনার করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে, শাহজাদপুর উপজেলার কায়েমপুর ইউনিয়নের কায়েমপুর গ্রামে।
ভুক্তভোগী মওলানা রফিকুল ইসলামের আবেদন এবং গত সোমবার সরেজমিন ঘুরে জানা গেছে, বিগত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে ঘিরে একই কায়েমপুর গ্রামের আব্দুল আলী খা’র পুত্র মওলানা রফিকুল ইসলাম এবং তার আপন মামা মমতাজ প্রামানিক, পিতা- মৃত জোনাব আলী, মামাতো ভাই মাসুদ হোসেন, তার আত্মীয় পিতা- মৃত আয়নাল হক এর পুত্র ইকবাল হোসেন এবং নূর ইসলামের পুত্র শাহ জালালের সাথে সন্দেহের বশে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। ওই ৪ ব্যক্তি এলাকার সংঘবদ্ধ চক্র এবং এদের নেতৃত্ব দেন মমতাজ উদ্দিন প্রামানিক। উভয় আত্মীয়ের সুসম্পর্ক থাকাবস্থায় রফিকুল তার মামতো ভাই মাসুদের পরামর্শে ২০২১ সালে ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেড শাহজাদপুর শাখায় ৫ হাজার টাকা জমা দিয়ে একটি হিসাব খোলেন। যার হিসাব নং -৬১০১২০৪৭৮৫৫২৫০০১। এদিকে, ওই দ্বন্দ্বের জের ধরে মাসুদ ব্যাংক কর্মকর্তাদের সাথে যোগসাজসে রফিকুলের সাক্ষর এবং উপস্থিতি ছাড়াই ব্র্যাক ব্যাংক থেকে চেক বই উত্তোলন করে। পরে ওই চেক বইয়ের পাতায় রফিকুলের সাক্ষর জাল/নকল করে এ যাবৎ ৪টি চেক সংশ্লিষ্ট ব্র্যাক ব্যাংক এবং মিডল্যান্ড ব্যাংক লিমিটেড, শাহজাদপুর সাব-শাখা থেকে ডিজঅনার করিয়ে মামলা করার পূর্ব শর্তানুযায়ী রফিকুলকে উকিল নোটিশ পাঠিয়েছে।
চেক প্রদানের বিবরণে জানা যায়, মমতাজ প্রামানিকের অনুকূলে ১০ লাখ টাকার সিআরপি-৪৫০২৯৪১ নম্বর চেক এবং ৮ লাখ টাকার সিআরপি-৪৫০২৯৪৬ নম্বর চেক, ইকবাল হোসেনের অনুকূলে ৮ লাখ টাকার সিআরপি -৪৫০২৯৪৪ নম্বর চেক, শাহ জালালের অনুকূলে ১০ লাখ টাকার সিআরপি-৪৫০২৯৪৩ নম্বর চেক প্রদান করা হয়েছে। চেক প্রদানের কারণ উল্লেখ করা হয়েছে, মওলানা রফিকুলের সাথে ওই ৪ জনই ব্যবসা করেছে।
সাংবাদিকদের বরাবর আবেদনে রফিকুল উল্লেখ করেছেন, তিনি জীবনে কোন দিন ব্যবসা করেন নি। তিনি একটি হেফজখানা মাদরাসার দায়িত্বপ্রাপ্ত সুপার এবং দুটি মসজিদে ইমামতি করে জীবিকা নির্বাহ করেন। তিনি আরও বলেন, একাউন্ট করার দিন ছাড়া আর কোনদিনই ওই ব্যাংকে তিনি যাননি। মূলতঃ ওই নির্বাচনে শত্রুতার জের ধরে তাকে হয়রানি করার জন্য তার সাক্ষর জাল করে ওই সব চেক ডিজঅনার করানো হয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, মওলানা রফিকুল কখনও উপরোক্ত ব্যক্তিদের সাথে ব্যবসা করে নাই। সে কোনও দিন ব্যবসাই করেন নাই। এমনকি ভূয়া স্বাক্ষরের চেক গ্রহিতা উপরোক্ত ব্যক্তিবর্গেরও কোন ব্যবসা নাই। শুধু তারা প্রভাবশালী হওয়ায় মওলানা রফিকুলকে ফাঁসানোর জন্য এরকম হীন ও জালিয়াতি কাজ করে যাচ্ছে।
প্রশ্ন করা হলে ব্রাঞ্চ ম্যানেজার আবু সাঈদ বলেন, একাউন্ট হোল্ডার ছাড়াও চেক বহি প্রদান করা হয়। তবে, ব্যাংকের নির্দিষ্ট ফরমে প্রতিনিধি ব্যক্তির নাম উল্লেখ করে একাউন্ট হোল্ডারের একাধিক সাক্ষর থাকে এবং ব্যাংক থেকে মোবাইল করে একাউন্ট হোল্ডারের কাছ থেকে তা নিশ্চিত করা হয়। অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এও বলেন, উর্ধ্বতন কতৃর্পক্ষের সাথে পরামর্শ ছাড়া আমি সাক্ষাৎকার দিতে পারবো না।
এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে মমতাজ প্রামানিক জানান, চেকের বিষয় আদালত আলোচনা পর্যালোচনা করে বিচার করবে। এখানে তো অন্য কোন আলোচনা চলবে না।