ঢাকা ০৪:১৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞপ্তি :
সারাদেশের জেলা উপোজেলা পর্যায়ে দৈনিক স্বতঃকণ্ঠে সংবাদকর্মী নিয়োগ চলছে । আগ্রহী প্রার্থীগন জীবন বৃত্তান্ত ইমেইল করুন shatakantha.info@gmail.com // দৈনিক স্বতঃকণ্ঠ অনলাইন ও প্রিন্ট পত্রিকায় বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন ০১৭১১-৩৩৩৮১১, ০১৭৪৪-১২৪৮১৪

সুজানগর রাতের আঁধারে পদ্মানদীতে চলে বালু উত্তোলনের মহোৎসব

পাবনা প্রতিনিধি:
  • প্রকাশিত সময় ০৪:১৫:৪০ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩০ নভেম্বর ২০২২
  • / 195

সুজানগরে রাতে আঁধারে পদ্মা নদী থেকে গোপনের বালু তুলে ড্রামট্রাকে আপলোড করা হচ্ছে। ছবি: স্বতঃকণ্ঠ

দিনে আশপাশে কেউ থাকেন না, যেন সুনসান নিরবতা। কিন্তু দিনের আলো ফুরিয়ে গেলেই শুরু হয় জোর প্রস্তুতি, আর রাতের অন্ধকার নামতেই শুরু হয় বালু (লোকাল) উত্তোলনের বিশাল কর্মযজ্ঞ। প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে এভাবেই পাবনার সুজানগর উপজেলার সাতবাড়িয়া এলাকার পদ্মানদীতে চলছে অবৈধ বালু উত্তোলনের এই মহাউৎসব। এতে বর্ষাকালে পদ্মা নদীতে ভাঙনের আশঙ্কা করছেন নদীপাড়ের বাসিন্দারা। শত শত বিঘা ফসলি জমিও হুমকির মুখে।

কাঞ্চন পার্ক সংলগ্ন এই বালু পয়েন্টের কয়েকশ মিটার দূরেই পাবনা-২ (সুজানগর-বেড়ার একাংশ) আসনের সংসদ সদস্য আহমেদ ফিরোজ কবিরের বাড়ি। আর এই বালু উত্তোলনের কর্মযজ্ঞের নেতৃত্ব দিচ্ছেন পাবনা জেলা পরিষদের সদ্যনির্বাচিত সদস্য ও সংসদ সদস্যের ভাই ফররুখ কবির বাবু।

জানা গেছে, প্রশাসনের অনুমোদন না থাকলেও উপরের মহলকে ম্যানেজ করে এই কর্মযজ্ঞ চলছে। তারা অত্যন্ত প্রভাশালী হওয়ায় নদীপাড়ারের বাসিন্দা ও কৃষকরা ভয়ে মুখ খুলছেন না। দিনের বেলায় সেখানে কেউ থাকেন না, সন্ধ্যার পরপরই সাতবাড়িয়া বাজারে চলে প্রস্তুতি। বিভিন্ন জায়গা থেকে ছোট-বড় ৩০-৪০টি ট্রাক এনে সারিবদ্ধ করে রাখা হয় সাতবাড়িয়া বাজারের আশপাশে। এশার নামাজের পরপরই শুরু হয় বালু উত্তোলন। আশপাশের কঠোর নিরাপত্তার বলয়ে এই ট্রাকগুলো নির্ধারিত স্থানে বালু পৌছে দেয়।

নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কৃষকরা জানান, ‘দিনের বেলায় বোঝার উপায় নেই, এখানে বালু উত্তোলন হয় কিন্তু রাতে তারা এই কাজ করে। আমরা কিছু বলতে পারি না। অথচ যেখানে থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে তার সঙ্গেই আমাদের কৃষি জমি-জমা। সেখানে আমরা চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করি। জিওব্যাগ দিয়ে ভাঙন রোধ করা চেষ্টা করলেও তাদের এইভাবে বালু উত্তোলনের ফলে সেটি ভেঙে যাচ্ছে। তাতে আগামী বন্যায় এখানে নদী ভাঙন দেখা দিতে পারে।’

বিষয়টি স্বীকার করেন ফররুখ কবির বাবু তিনি বলেন, এখানে কিছু স্থানীয় গরিব মানুষ ড্রাম ট্রাক- দিয়ে রাতের বেলা তারা একটু টুকটাক (বালু) কাটে।
তবে নিজের সম্পৃক্ততার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ‘এই সবের পেছনে আমরা জড়িত নাই, ওরা নিজেরা নিজেরাই কাটে, মাঝে মাঝে আমাদের একটু বলে যে ভাই একটু দেখবেন, প্রশাসনকে একটু বলে দিয়েন আমাদের যেন ধরে না নিয়ে যায়- এই আরকি, অন্য কিছু না। কিন্তু আমরা বালু ব্যবসা করলে তো কোটি কোটি টাকার মানুষ হয়ে যেতাম। আমরা এইসব বালুর ব্যবসার সঙ্গে জড়িত নই।

বিষয়টি স্বীকার করেন সুজানগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হান্নান তিনি বলেন, সাতবাড়িয়ার মাছের আরতের পেছন দিয়ে রাতে এটি চলছিল, আমাদের কাছে তথ্য আসলে, ওখানে গিয়ে ধরেছি এবং ভ্যাকুসহ কারেন্টের তার ছিড়ে সেখানে বালু উত্তোলন বন্ধ করে এসেছি, আপাতত বন্ধ আছে।

এব্যাপারে পাবনা-২ (সুজানগর-বেড়ার একাংশ) আসনের সংসদ সদস্য আহমেদ ফিরোজ কবির মুঠোফোনে বলেন, আমি বিষয়টি জানতে পেরে, ওসিকে বলে বন্ধ করে দিয়েছি।

সুজানগর রাতের আঁধারে পদ্মানদীতে চলে বালু উত্তোলনের মহোৎসব

প্রকাশিত সময় ০৪:১৫:৪০ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩০ নভেম্বর ২০২২

দিনে আশপাশে কেউ থাকেন না, যেন সুনসান নিরবতা। কিন্তু দিনের আলো ফুরিয়ে গেলেই শুরু হয় জোর প্রস্তুতি, আর রাতের অন্ধকার নামতেই শুরু হয় বালু (লোকাল) উত্তোলনের বিশাল কর্মযজ্ঞ। প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে এভাবেই পাবনার সুজানগর উপজেলার সাতবাড়িয়া এলাকার পদ্মানদীতে চলছে অবৈধ বালু উত্তোলনের এই মহাউৎসব। এতে বর্ষাকালে পদ্মা নদীতে ভাঙনের আশঙ্কা করছেন নদীপাড়ের বাসিন্দারা। শত শত বিঘা ফসলি জমিও হুমকির মুখে।

কাঞ্চন পার্ক সংলগ্ন এই বালু পয়েন্টের কয়েকশ মিটার দূরেই পাবনা-২ (সুজানগর-বেড়ার একাংশ) আসনের সংসদ সদস্য আহমেদ ফিরোজ কবিরের বাড়ি। আর এই বালু উত্তোলনের কর্মযজ্ঞের নেতৃত্ব দিচ্ছেন পাবনা জেলা পরিষদের সদ্যনির্বাচিত সদস্য ও সংসদ সদস্যের ভাই ফররুখ কবির বাবু।

জানা গেছে, প্রশাসনের অনুমোদন না থাকলেও উপরের মহলকে ম্যানেজ করে এই কর্মযজ্ঞ চলছে। তারা অত্যন্ত প্রভাশালী হওয়ায় নদীপাড়ারের বাসিন্দা ও কৃষকরা ভয়ে মুখ খুলছেন না। দিনের বেলায় সেখানে কেউ থাকেন না, সন্ধ্যার পরপরই সাতবাড়িয়া বাজারে চলে প্রস্তুতি। বিভিন্ন জায়গা থেকে ছোট-বড় ৩০-৪০টি ট্রাক এনে সারিবদ্ধ করে রাখা হয় সাতবাড়িয়া বাজারের আশপাশে। এশার নামাজের পরপরই শুরু হয় বালু উত্তোলন। আশপাশের কঠোর নিরাপত্তার বলয়ে এই ট্রাকগুলো নির্ধারিত স্থানে বালু পৌছে দেয়।

নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কৃষকরা জানান, ‘দিনের বেলায় বোঝার উপায় নেই, এখানে বালু উত্তোলন হয় কিন্তু রাতে তারা এই কাজ করে। আমরা কিছু বলতে পারি না। অথচ যেখানে থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে তার সঙ্গেই আমাদের কৃষি জমি-জমা। সেখানে আমরা চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করি। জিওব্যাগ দিয়ে ভাঙন রোধ করা চেষ্টা করলেও তাদের এইভাবে বালু উত্তোলনের ফলে সেটি ভেঙে যাচ্ছে। তাতে আগামী বন্যায় এখানে নদী ভাঙন দেখা দিতে পারে।’

বিষয়টি স্বীকার করেন ফররুখ কবির বাবু তিনি বলেন, এখানে কিছু স্থানীয় গরিব মানুষ ড্রাম ট্রাক- দিয়ে রাতের বেলা তারা একটু টুকটাক (বালু) কাটে।
তবে নিজের সম্পৃক্ততার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ‘এই সবের পেছনে আমরা জড়িত নাই, ওরা নিজেরা নিজেরাই কাটে, মাঝে মাঝে আমাদের একটু বলে যে ভাই একটু দেখবেন, প্রশাসনকে একটু বলে দিয়েন আমাদের যেন ধরে না নিয়ে যায়- এই আরকি, অন্য কিছু না। কিন্তু আমরা বালু ব্যবসা করলে তো কোটি কোটি টাকার মানুষ হয়ে যেতাম। আমরা এইসব বালুর ব্যবসার সঙ্গে জড়িত নই।

বিষয়টি স্বীকার করেন সুজানগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হান্নান তিনি বলেন, সাতবাড়িয়ার মাছের আরতের পেছন দিয়ে রাতে এটি চলছিল, আমাদের কাছে তথ্য আসলে, ওখানে গিয়ে ধরেছি এবং ভ্যাকুসহ কারেন্টের তার ছিড়ে সেখানে বালু উত্তোলন বন্ধ করে এসেছি, আপাতত বন্ধ আছে।

এব্যাপারে পাবনা-২ (সুজানগর-বেড়ার একাংশ) আসনের সংসদ সদস্য আহমেদ ফিরোজ কবির মুঠোফোনে বলেন, আমি বিষয়টি জানতে পেরে, ওসিকে বলে বন্ধ করে দিয়েছি।