রাণীনগরে তিন বিঘা খাস সম্পত্তি দখল করে পুকুর খননের অভিযোগ আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে
- প্রকাশিত সময় ০৭:০৯:২৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২ ডিসেম্বর ২০২২
- / 198
নওগাঁর রাণীনগর উপজেলায় সরকারি তিন বিঘা খাস সম্পত্তি দখল করে পুকুর খনন করার অভিযোগ উঠেছে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক মন্ডল রাজার বিরুদ্ধে।
উপজেলার ভাদালিয়া গ্রামের দক্ষিণ মাঠে ভাজালিয়া মৌজায় ওই তিন বিঘা জমি দখল করে নেতা রাজা অবৈধভাবে পুকুর খনন করেছেন। আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুর রাজ্জাক মন্ডল রাজা আত্রাই উপজেলার মনিয়ারী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নবগঠিত কমিটির সভাপতি বলে জানা গেছে।
তিনি আত্রাইয়ের দিঘীরপাড় গ্রামের বাসিন্দা। ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের পদ পাওয়ার কিছু দিনের মাথায় তিনি রাণীনগর উপজেলার সরকারি খাস সম্পত্তিতে পুকুর খনন করায় এলাকায় ব্যাপক আলোড়নের সৃষ্টি হয়েছে।
জানা যায়, রাণীনগর উপজেলার বড়গাছা ইউনিয়নের ভাদালিয়া গ্রামের দক্ষিণ মাঠে সরকারি বেশকিছু খাস সম্পত্তি রয়েছে। ওই মাঠের পার্শ্ববর্তী আত্রাইয়ের দিঘীরপাড় গ্রামের ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা
আব্দুর রাজ্জাক মন্ডল রাজারও ওই মাঠে জায়গা—জমি আছে। জমির পাশে জমি হওয়ার সুযোগে দীর্ঘদিন আগে ভাদালিয়া মৌজার মধ্যে একদাগে এক একর (তিন বিঘা) সরকারি মাটিয়াল খাস সম্পত্তি দখলে নেয় তারা। এতে করে স্থানীয় ভাদালিয়া গ্রামের অনেক ভূমিহীন সরকারি ওই সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।
স্থানীয়রা জানান, রাজার পরিবার ওই তিন বিঘা খাস সম্পত্তি সরকারিভাবে পত্তন নিয়েছেন বলে দাবি করে ভোগ দখল করে। এরমধ্যে জমির শ্রেণি পরিবর্তন না করেই অবৈধভাবে গত কয়েকদিন আগে থেকে ওই খাস সম্পত্তিতে স্কেবেটার (ভেকু) মেশিন দিয়ে দিন—রাতে মাটিয়াল জমিতে গভীর পুকুর খনন করেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভাদালিয়া গ্রামের কয়েকজন বলেন, সরকারি ওই খাস সম্পত্তিতে পুকুর খননের বিষয়টি প্রথম থেকেই স্থানীয় ইউনিয়ন ভূমি অফিস জানতো। কিন্তু রহস্যজনক কারণে স্থানীয় ভূমি অফিস কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি বলে অভিযোগ করেন স্থানীয়রা।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মনিয়ারী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক মন্ডল রাজা পুকুর খননের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, দীর্ঘদিন থেকে ওই সম্পত্তি আমরা লিজ নিয়ে ভোগ দখল করে আসছি। জমিটা আগে থেকেই গর্ত। তাই পুকুর খনন করে পাড় বেঁধে নিয়েছি। সরকারি মাটিয়াল জমি তারা কিভাবে লিজ পেলেন এবং শ্রেণি পরিবর্তন না করেই কিভাবে পুকুর খনন করলেন এমন প্রশ্নে তিনি কোন সদত্তর দিতে পারেননি।
এদিকে স্থানীয়দের অভিযোগ অস্বীকার করে উপজেলার পারইল—বড়গাছা ইউনিয়ন ভূমি অফিসের তহসিলদার মোস্তাফিজুর বলেন, সরকারি খাস সম্পত্তিতে পুকুর খনন করার বিষয়টি আমার জানা ছিল না। খবর পেয়ে সরিজমিনে তদন্ত করে এসেছি। তদন্ত রিপোর্ট দ্রুত ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে পাঠাবো।
রাণীনগর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ হাফিজুর রহমান বলেন, খবর পেয়ে ইউনিয়ন তহসিলদারকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছিল। সরকারি সম্পত্তিতে পুকুর খননের বিষয়ে সত্যতা পাওয়া গেছে। তদন্ত সাপেক্ষে পুকুর খননকারীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।